নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উতস

আবু সায়েদ

student

আবু সায়েদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারাবীহ নামাজে রাকাত সমাচার

০৯ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৩৮

তারাবীহ নামাজের ঘটনাঃ একদা রমযানে নবীজী (সাঃ) এশার পরে বিশেষ কিছু নামাজ পড়লেন। পরের দিন আবার পড়লেন। এদিন অনেক সাহাবীরা মসজিদে জড় জয়ে নবীর সাথে এই সালাত আদায় করলেন। পরেরদিন আরো বহু সংখ্যক সাহাবী (রাঃ) নবীর সাথে এই নামাজ আদায় করলেন। কিন্তু তারপরে নবীজী এই নামাজ পড়তে মসজিদে এলেন না। সাহাবীরা এসে যে যার মত পড়ে চলে গেলেন।

নবীজী কেন এই নামাযে ছেদ ঘটালেন? দয়ার নবী ফরয হবার আশঙ্কা করেছিলেন। এই দীর্ঘ নামাজ ফরয হয়ে গেলে উম্মতের জন্য কষ্টকর হতে পারে, এই আশঙ্কায় নবীজী আপাতত এই নামাজ আর পড়লেন না। তবে এই বিশেষ নামাজ যে অতি বরকতময়, তার লক্ষন রেখে গেলেন।

আবু বক্বর রাঃ এর খেলাফত আমলঃ খলিফাতুর রাসুল আবু বক্বর রাঃ তার সংখিপ্ত খেলাফতকালে অনেক জটিল বিষয় নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ইরতাদেদর ঘটনা, ভন্ড নবীদের প্রতিহত, সিরিয়া ও ইরাক অভিযান ইত্যাদি সমাপ্ত করতে না করতেই খলিফা ইহকাল ত্যাগ করেন। এ জন্য, শরীয়তের বিভিন্ন মাছায়েলে শৃংখলা বিধানে পর্যাপ্ত সময় পান নাই।

হযরত ওমর রাঃ আমলঃ আমীরুল মুমিনিন ওমর রাঃ এর সুদীর্ঘ খেলাফতকালে শরীয়তের অনেক অস্পষ্ট বিষয়ে চূড়ান্ত ফায়সালা করে যান। এ কাজে তিনি বিশিষ্ট সকল সাহাবীদের ডেকে মতামত নিয়ে কোরান, হাদীস ও ইজমার ভিত্তিতে করতেন। এরকম একটা বিষয় হল রমযানের তারাবীহ নামাজ। যেহেতু নবীজীর আমলে বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না, তাই সকল বিশেষজ্ঞ সাহাবীদের নিয়ে তারাবীহ নামাজের রাকাত ও পদ্ধতি নির্ধারন করে দেন। তা হল, ২০ রাকাত, জামাতে হাফেযের পেছনে মসজিদে পড়া ও কোরান খতম দেওয়া।

সাহাবীদের চালু করা রীতি কি বেদাতঃ নবী (সাঃ) ও সাহাবীদের থেকে প্রমানিত কোন কাজ বেদাত হয় না, বরং তা শরীয়তের দলিল হিসেবে গন্য। যেহেতু, তারাবীহ নামাজ নবীর জমানায় অস্পষ্ট ছিল, তাই সাহাবীগন এটাকে বিন্যস্ত ও শৃংখলাবদ্ধ করেছেন মাত্র। তাই ২০ রাকাত তারাবীহ নামাজ শরয়ী দলিল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এর বিপরীত মত গ্রহনযোগ্য না। আর সাহাবীগণের কাজ হাদিসের মর্যাদা পায়।

২০ রাকাত, নাকি ৮ রাকাতঃ তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের পার্থক্যঃ
নবীজী সারাজীবন, রমযান ও রমযানের বাইরে, শেষ রাত্রিতে একটা নামায পড়তেন। এই নামায কোরান ও হাদীসের পরিভাষা অনুযায়ী ‘তাহাজ্জুদ’ বা ‘ কিয়ামুল লাইল’ নামায হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচিত। এই নামায নবীজী ৮ বা ১২ রাকাত পড়তেন।

অন্যদিকে, তারাবীহ নামাজ শুধু রমযানেই পড়েছেন। রমযানের বাইরে তারাবীহ প্রযোজ্য নয়। এই বিষয়টা সাহাবীরা (রাঃ) পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছেন ও সেভাবেই তারাবীহ নামাজ নির্ধারন করেছেন।

তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের হাদীস-কে গুলিয়ে ফেলাঃ অন্যদিকে, বর্তমানের কোন কোন আলেম (আহলে হাদীস ফেরকার) তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের হাদীস-কে গুলিয়ে ফেলেছেন। তারা তাহাজ্জুদ ও তারাবীহ এর মধ্যে পার্থক্য করতে না পেরে তাহাজ্জুদ/কিয়ামুল লাইলের হাদিস-কে তারাবীহ এর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন। এটা তাদের বিরাট জ্ঞানগত দুর্বলতা বা দুরভিসন্ধি কিছু একটা হবে।
প্রকৃত পক্ষে, দুটি নামাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন।

তাহাজ্জুদ/কিয়ামুল লাইল রমযানে বা রমযানের বাইরে সারা বছর পড়া হয়, এটা ৮ বা ১২ রাকাত হয়ে থাকে।
অন্যদিকে, তারাবীহ শুধুই রমযানের বিশেষ নামাজ, এটা সর্ব-সম্মতভাবে ২০ রাকাত।

শুদ্ধতার প্রচার জরুরীঃ তারাবীহ নামাজ সুন্নাত। কেউ অপারগ হলে না-ও পড়তে পারে। তবে জেনেশুনে বা না-বুঝে এটাকে ৮ রাকাত বলে প্রচার করা ঠিক নয়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:০৮

সনেট কবি বলেছেন: চমৎকার আলোচনা। আহলে হাদিসের ফিরকা মুসলমানদের এক ভয়াভয় দূর্ভাগ্য। এদের কারনে এখন মসজিদে মসজিদে ফাছাদ শুরু হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে এ ফিতনা থেকে হেফাজত করুন -আমিন।

২| ০৯ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
জানলাম।

৩| ০৯ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮

চোরাবালি- বলেছেন: সারা বছর যাদের মসজিদে খোজ পাওয়া যায় না তারাই শুধু তারাবি নামাজ নিয়ে ফালাফালি লাফালাফি করে।
# হযরত উমর রাঃ দেখলেন সবাই বিচ্ছিন্ন ভাবে নামাজ আদায় করছেন, উনি অভিমত ব্যাক্তি করলেন যদি জামায়াতে আদায় করা হয় তা হলে কতই না সুন্দর হত।
# হযরত উমর রাঃ ৮রাকাত নামাজ পড়াতে বললেন (ঈমাম মুয়াত্তা মালেক/ এ হাদিসের ব্যপারে আপনার ব্যাখ্যা কি?)
# হযরত উমর রাঃ কথায় যদি জামায়াতে নামাজ হতে পারে তা হলে ৮রাকাত হতে পারবে না কেন?
# আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত হযরত মুঃ সঃ ১১রাকাত এর বেশী নামাজ আদায় করতেন না যার সময় লাগত এশা থেকে সেহরীর আগ পর্যন্ত আর কম করে ৪ঘন্টা।
# সেটি যদি তাহাজ্জুত নামাজ হয় তার মানে হযরত মুঃ সঃ মসজিদে ৩দিন নামাজ আদায় করেছেন তারপর আর এ নামাজ আদায় করেন নাই?
# হযরত মুঃ সঃ যে ভাবে নামাজ আদায় করেছেন সেভাবে নামাজ আদায় করেন ৪জি বাদ দিয়ে।

যে নামাজের রাকাতের পক্ষে বা বিপক্ষে উভয়ই হাদিস আসে সেটি নিয়ে তর্ক করা অনুচিত। যার ইচ্ছে আদায় করবে কিন্তু যে বিষয় নিয়ে কোন বিতর্ক নেই যে নামাজ হবে সুন্দর স্পষ্ট কোরাণ তিলায়াতের মাধ্যমে ধীরে সুস্থে সুন্দর ভাবে সেটি প্রতিষ্ঠা করতে তো কোন বিতর্ক দেখি না?

০৯ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৯

আবু সায়েদ বলেছেন: আপনি সত্য থেকে অনেক দূরে সরে গেছেন। এবং বিক্ষিপ্ত কিছু হাদিস উল্লেখ করেছেন। আপনি আবারো সারা বছরের তাহাজ্জুদের হাদীস টেনে এনেছেন।

ওমর রাঃ যখন তারাবীহ নির্ধারন করেন, এবং সবার ঐক্যমতে, তখন কি আয়েশা রাঃ বেচে ছিলান না?

বস্তুতঃ স্বয়ং সাহাবীরা কি আপনাদের/আমাদের চেয়ে হাদীস কম বুঝতেন?

সাহাবীদের ইজমার পরে সে ব্যাপারে কোন ভিন্নমত একেবারেই গ্রহনযোগ্য না। সাহাবিদের ইজমা শরীয়তের অকাট্য দলিল।

৪| ০৯ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: চোরাবালির সাথে একমত। অন্য একটা পোস্টেও আমি বলেছি, তারাবীহ না পড়লেও রোজার কোন ক্ষতি হবে না। আগে সারা বছরের বেনামাজীদের নামাজী বানান তারপর তারাবীহ নিয়ে গবেষণা করুন। এখন যার যা খুশী পড়ুক। সমস্যা নাই...

০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৫

আবু সায়েদ বলেছেন: একটা ভাল কাজ দ্বারা আরেকটা ভাল কাজ বাতিল হয় না। ফরয নামাজ তো অবশ্যই সারা বছর জরুরী। এতে সন্দেহ নাই। তারাবীহ পড়া তো শুধু রমযানে। তবে এটা গুরুত্ত্বপূর্ন সুন্নাত।

এখানে নতুন কোন গবেষনা করা হয় নাই। শুধু পরিচিত কিছু কথাই পুনর্ব্যাক্ত করা হয়েছে।

নফল নামাজে যার খুশি যা পড়তে পারে। তবে তারাবীহ একটা বিশেষ রকমের সুন্নাত, যার রাকাত ও পড়ার পদ্ধতি ২য় খলিফার আমলেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা এর বিরোধিতা করে, তারাই বিতর্কিত।

৫| ১০ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

চোরাবালি- বলেছেন: আমি হাদিস উল্লেখ করেছি এবং সেটি সহিহ হাদিস, পারলে ব্যাখা দেন না হলে ফেতনা ফেসাদ থেকে দুরে থাকেন। আপনি ২০রাকাত গ্রহণ করেছেন আলহামদুলিল্লাহ, অন্যজন ৮রাকাত গ্রহণ করেছে বলে আপনি ভুল বলতে পারেন না যেহেতু তার পক্ষেও সহিহ হাদিস আছে। যে বিষয়ে দু'রকমই হাদিস আছে সেটি নিয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি করা বোকামী।

১০ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫

আবু সায়েদ বলেছেন: হাদিসে আছে, সেগুলি আহলে হাদিস ভাইয়েরা স্বল্প জ্ঞানের কারনে ভুল ব্যাখ্যা করছে। আমার লেখাতে বিস্তারিত সবই বলেছি।

৬| ১০ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

আবু ছােলহ বলেছেন:



সনেট কবি বলেছেন: চমৎকার আলোচনা। আহলে হাদিসের ফিরকা মুসলমানদের এক ভয়াভয় দূর্ভাগ্য। এদের কারনে এখন মসজিদে মসজিদে ফাছাদ শুরু হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে এ ফিতনা থেকে হেফাজত করুন -আমিন।

তিক্ত হলেও বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রেই এমন। দুর্ভাগ্য আমাদের। তিন চিল্লার সাথী, হানাফী মাযহাব মেনে সহীহ আমল করতেন। আমার পরিচিত। খপ্পড়ে পড়ে সর্বহারা হয়ে এখন 'মোবাইল মুহাদ্দিস' সেজেছেন। আমল আখলাকও তথৈবচ। আগের সেই শিক্ষা, সেই বিনয় নম্রতা, সেই আনুগত্য সব উধাও। নিজের দিকে তাকানোর যেন এখন তার সময় নেই। অপরের দোষ ধরতে গিয়ে নাক ছিটকাতে ছিটকাতে নিজের অবস্থারই বারোটা।

যারা তাহাজ্জুদের ৮ রাকাআতের হাদিসকে তারাবীহ ৮ রাকাআত সাব্যস্ত করার জন্য দলিল বানিয়ে সমাজে ফিতনার বিস্তার ঘটানোর অপপ্রয়াসে লিপ্ত, এরা মিথ্যাকে আকড়ে ধরে পড়ে আছেন। মূলত: ৮ রাকাআত তারাবীহর কোনো হাদিস নেই। ৮ রাকাআতের যে হাদিস পাওয়া যায় তা অবশ্যই তাহাজ্জুদের।

আল্লাহ পাক আমাদের ঈমান আমল হেফাজত করুন।

১০ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

আবু সায়েদ বলেছেন: জী। ধন্যবাদ।

৮ রাকাত নবীজী সারা জীবনই পড়েছেন। রমযানের সাথে এর কোন বিশেষ সম্পর্ক নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.