![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ওমরাহর কাজ হলো ৪টি। ১. ইহরাম বাঁধা, ২. তাওয়াক করা, ৩. সায়ী করা, ৪. মাথা মুন্ডন করা।
(তাওয়াফের মধ্যে ওমরাহর ফরয ও ওয়াজীব) দু’টি কাজ শেস হয়ে যায়।
ইহরাম বাঁধা
করণীয় কাজসমূহঃ
প্রথম কাজ
১। ওমরাহর ইহরাম বাঁধা (ফরজ)
মিকাতের এলাকা থেকে ইহ্রাম বেঁধে ওমরাহর নিয়ত করে রওয়ানা করুন।
ইহ্রাম বাঁধার নিয়ম
পবিত্র অবস্থায় ইহ্রামের কাপড় পরিধান করুন ।
দু’রাকাত ইহরামের সুন্নাত নামাজ আদায় করুন।
নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা কাফেরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা এখলাস পাঠ করুন।
ওমাহর নিয়ত করুনঃ
নিয়ত ঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী উরিদুল ওমরাহতা ফায়াসসিরহু-লী ওয়াতাক্বাব্বাল-হু-মিন্নী ওয়াআইন্নি আলাইহা ওয়াবারিকলি ফিহা নাওয়াইতুল ওমরাহতা ওয়া আহরামতু বিহা লিল্লাহি তায়ালা।
অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি ওমরাহর নিয়ত করছি, আমার জন্য তা সহজ করে দাও এবং তা আমার পক্ষ থেকে কবুল করে নাও এবং সহীহ শুদ্ধভাবে আদায় করার জন্য সাহায্য কর। এতে বরকত দান কর। আমি ওমরাহ করার নিয়ত করেছি এবং আল্লাহর জন্য তার ইহরাম বেধেছি।
ওমরাহর সংক্ষিপ্ত নিয়তঃ
নিয়তঃ “লাব্বাইকা ওমরাহতা কিংবা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা ওমরাহতা”।
অর্থাৎ আমি ওমরাহ আদায় করার জন্য তোমার দরবারে উপস্থিত হলাম।
তিনবার তালবিয়া পাঠ করুন :
তালবিয়াঃ “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা-শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক্ লা-শারিকা লাক”।
অর্থাৎ-আমি উপস্থিত হে আল্লাহ আমি উপস্থিত আমি হাজির তোমার কোন শরীক নাই, আমি হাজির। সমস্ত সৌন্দর্য ও নেয়ামত ও রাজত্ব তোমারই জন্য তোমার কোন অংশীদার নাই।
পুরুষদের ইহরাম
জোরে তালবিয়া পাঠ করা সুন্নত।
ইহরাম অবস্থায় কোনো অবস্থাতেই মাথা ও মুখ ঢাকতে পারবেন না।
সেলাই করা কাপড় পরা অবৈধ।
তাওয়াফের সময় রমি ইযতেবা করতে হবে।
মহিলাদের ইহরাম
মুখ ঢাকতে পারবেন না।
মোজা পরতে পাবেন।
মাথা ঢেকে রাখা ফরজ।
সেলাই করা কাপড় পরিধান করা বৈধ।
তালবিয়া আস্তে আস্তে পাঠ করবেন।
তাওয়াফের সময় রমি ইযতেবা করতে হবেনা।
ভিড়ের মধ্যে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা যাবেনা।
মক্কায় পৌঁছে করণীয়
মসজিদে হারামের দিকে অগ্রসর হওয়া
মক্কায় আসার পর শারীরিক ক্লান্তি বা ক্ষুধা থাকলে কিংবা অন্য কোন জরুরী কাজ থাকলে সব সেরে শান্ত হোন। অতঃপর গোসল অথবা ওজু করে মসজিদে হারামের দিকে অগ্রসর হোন। তালবিয়া পড়তে পড়েতে ডান পা রেখে এই দো’আ পড়ুনঃ “বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক”।
ক্বাবা দর্শন করামাত্র পড়ুনঃ
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া-লিল্লাহিল হামদু”।
তাওয়াক করা
দ্বিতীয় কাজ
২। তাওয়াফ করাঃ (ফরজ)
ওমরাহর তাওয়াফ করুন।
তাওয়াফ করা ফরজ এবং এ তাওয়াফের মাধ্যমেই ওমরাহর পূর্ণতা লাভ করে।
তাওয়াফের নিয়মঃ
তাওয়াফের নিয়ত করা।
নিয়তঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারামি ফা-ইয়াস্সিরহু লী ওয়া-তাক্কাব্বালহু মিন্নী, সাব্আতা আশওয়াতিন লিল্লাহি তায়ালা আজ্জ ওয়া-জাল্লা”।
অর্থাৎ হে আল্লাহ, আমি পবিত্র ঘর কাবা শরীফ তওয়াফ করার নিয়ত করলাম তুমি আমার জন্য এ কাজ সহজ করে দাও এবং কবুল কর।
কালো পাথর কাবা শরীফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে স্থাপিত। হাজরে আসওয়াদের কোণ এবং সাফা পাহাড়ের দিকে হারাম শরীফের দেয়ালে যে সবুজ রঙ্গের টিউব লাইট জ্বালানো আছে এ দুইটির মধ্যে অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদ বরাবর তাওয়াফের জায়গায় যে মোটা দাগ টানা আছে বর্তমানে তা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই হাজরে আসওয়াদ বরাবর এসেছেন কিনা তা নির্ণয় করবেন। হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার বরাবর ডান পাশে দাঁড়ান তারপর ক্বাবা শরীফের দিকে ফিরে হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করুন।
এরপর নামাজের মতো উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাবেন এবং বলবেন- “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লিল্লাহিল হামদ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” পড়–ন। পরে হাত ছেড়ে দিন এবং হাজরে আসওয়াদের দিকে হাত ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে ডান দিকে চলতে থাকুন, যাতে পবিত্র ক্বাবাঘর পূর্ণ বামে থাকে।
হাজরে আসওয়াদের ইস্তিলামের পর বায়তুল্লাহ শরীফের দরজার দিকে অর্থাৎ নিজের ডান দিকে অগ্রসর হবেন এবং তাওয়াফে হাতীমকেও শামিল করবেন।
তাওয়াফের সময় সহজ দোয়া পাঠ।
দোয়াঃ “সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহি লাইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদু, ওয়া-লাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম, ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম”।
তাওয়াফ আরম্ভ করার পর তালবিয়া পাঠ বন্ধ রাখুন।
রোকনে ইয়ামীনে দোয়াঃ
আপনি যখন রুকনে ইয়ামানীতে পৌঁছবেন, তখন সম্ভব হলে ডান হাত দিয়ে তা স্পর্শ করুন। তবে তাতে চুম্বন করবেন না এবং তা মাসেহও করবেন না। যেমন কতেক লোকেরা করে থাকে। কেননা নবী সাল্লøাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কাজ সাব্যস্ত হয় নি। আপনি আপনার তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করে রুকনে ইয়ামানীকে স্পর্শ করার কাজটি করবেন। আর রুকনে ইয়ামানীকে স্পর্শ করা সম্ভব না হলে সেদিকে কোনরূপ ইশারা না করে ও আল্লাহু আকবার না বলেই এগিয়ে যাবেন।
যখন রোকনে ইয়ামীনে অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদের আগের (বায়তুল্লাহ্র পশ্চিম-দক্ষিণ) কোণে পৌঁছবেন, তখন তাতে শুধু উভয় হাত অথবা ডান হাত লাগাবেন, চুমু দিবেন না।
যখন রোকনে ইয়ামীনে অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদের আগের (বায়তুল্লাহ্র পশ্চিম-দক্ষিণ) কোণে পৌঁছবেন, তখন নি¤েœাক্ত দোয়া পড়তে পড়তে হাজরে আসওয়াদের দিকে অগ্রসর হোন-
দোয়া ঃ “রাব্বানা-আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া-হাসানাতাওঁ ওয়া ফিল্ আ-খিরাতি হাসানাতওঁ ওয়া কিনা আযা-বান্ না-র। ওয়াদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার ইয়া-আজিজু ইয়া-গফ্ফারু ইয়া-রাব্বাল্ আলামীন”। এই দোয়া পড়তে পড়তে হাজরে আসওয়াদ বরাবর পৌঁছলে এক চক্কর পূর্ণ হয়ে গেল।
পুনরায় হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁিড়য়ে কান পযর্ন্ত দু’হাত উঁচু করে বলুন “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লিল্লাহিল হামদ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম”। এবার হাত নামিয়ে দুই হাতের তলুতে চুমু খেয়ে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করুন।
এভাবে মোট সাত চক্কর পূর্ণ করে নিন। প্রয়োজনে হিসাব রাখার জন্য ৭ দানার তাসবিহ ব্যবহার করুন।
সাত চক্কর পূর্ণ করার পর অষ্টমবারে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করবেন এতে তাওয়াফ সমাপ্ত হয়ে গেল।
১ম তিন সক্করে রমল করা অর্থাৎ বীরের মত হেলে দুলে জোর কদমে চলুন।
বাকী চার চক্কর সাধারণ গতিতে সম্পন্ন করুন।
তাওয়াফ শেষে আবার তালবিয়া পাঠ শুরু করুন।
সাত চক্কর শেষে মাকামে ইবরাহীমের দিকে অগ্রসর হবেন এবং বলবেন, “ওয়াত্তাখিযু মিম মাকামি ইবরাহীমা মুসাল্লা”। মাকামে ইবরাহীমকে তোমারা সালাতের স্থল বানাও।
তাওয়াফ শেষে আবার তালবিয়া পাঠ শুরু করুন।
তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করের জন্য বিশেষ কোন দোয়া নেই। কেননা নবী সাল্লøাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তাওয়াফের মধ্যে হাজারে আসাওয়াদের কাছে এসে তাকবীর পাড়া ছাড়া অন্য কোন যিকির বা দোয়া সাব্যস্থ হয় নি। তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করের জন্য বিশষ কোন দোয়া পাঠে নিজেকে বাধ্য না করাই নবী সাল্লøাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণেরই অন্তর্গত।
নবী সাল্লাল্লাহু আল্ইাহি ওয়াসাল্লাম হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী ছাড়া কা’বার অন্য কোনো অংশ স্পর্শ করেননি।
মাকামে ইব্রাহিমে নামাজ
তাওয়াফের পর মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে বা হারামের যে কোন স্থানে অথবা যে খানে স্থান পাওয়া যায় তাওয়াফের নিয়তে দুই রাকাত নামায পড়ুন।
এ নামাযে প্রথম রাকা’আতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফিরূন ও দ্বিতীয় রাকা’আতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস পড়া সুন্নাত।
যমযমের পনি
নামজ শেষে যমযমের পানি পান করা মুস্তাব। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করেছেন। (সহীহ বুখারী : ৩/৪৯১; সহীহ মুসলিম : ২/৮৯২)
সালাতুত তাওয়াফ আদায় শেষে যমযমের পানি পান করুন ও মাথায় ঢালুন।
যমযমের পানি পান করার সময় এই দোয়া পড়ুন-
দোয়াঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়ান ওয়া-রিযক্কান ওয়া-সিয়ান ওয়া-শিফায়ান মিন কুল্লি দায়িন”।
বিঃ দ্রঃ বর্তমানে যমযম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাই যমযম দেখার কোন সুযোগ নেই। তবে ক্বাবার ভিতরে বা বাইরে যে কোন স্থানে পানি খাওয়া যায়।
সাফা মারওয়ায় সায়ী
তৃতীয় কাজ
৩। সায়ী করাঃ (ওয়াজিব)
সাফা ও মাওয়া
তাওয়াফ শেষে নামাজ পড়ে সায়ীর জন্য সাফা পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হোন। তারপর সাফা পাহাড়ের কাছে যাবেন এবং এর উপর আরোহণ করবেন অথবা এর নিচে দাঁড়াবেন, তবে যদি সম্ভব হয় পাহাড়ের কিয়দংশে উঠা উত্তম। সাফা পাহাড়ের কিছুটা ওপরে উঠে (এখন আর পাহাড় নেই, মেঝেতে মার্বেল পাথর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) পাহাড়ের চিহ্নস্বরূপ উঁচু জায়গা রয়েছে। এখানে উঠলে আপনার নজরে ক্বাবা শরীফ আসবে। অতঃপর অন্তরের আবেগ অনুযায়ী দোয়া কালাম পাঠ করতে করতে মারওয়া পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হোন।
আপনি সাফা পাহাড়ের নিকটবর্তী হলে তাতে উঠার আগেই এ আয়াতটি পড়–ন : “ইন্নাচ্ছাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শা‘আ-ইরিল্লাহ আবাদাউ বিমা বাদাআল্লাহু বিহী”। অর্থাৎ নিশ্চয়ই সাফা এবং মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত। আমি শুরু করছি আল্লাহ যা দিয়ে শুরু করেছেন। (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৫৮, মুসলিম : ১/৮৮৮) প্রথম চক্করের শুরুতে আল্লাহর এ বাণী পাঠ করুন এর পর আর পাঠ করা লাগবে না।
সায়ীর নিয়তঃ
নিয়তঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুস সা’য়া বাইনাস সাফা ওয়াল মারওয়াতে সাবয়াতা আশওয়াতিন লিওয়াজহিকাল কারিম ফায়াসসিরহুলি ওয়াতাক্বাব্বালহু মিন্নি”।
সায়ীর দোয়াঃ সাফা পাহাড়ে উঠার পর ক্কিবলামুখী হয়ে প্রার্থনাকারীর ন্যায় দু’হাত উর্ধ্বে তুলে আল্লাহ্ তা‘আলার প্রশংসা করে তিনবার তাকবীরসহ নিম্নোক্ত দো‘আ পড়ুন:
১. “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, আনজাযা ওয়া’দাহু, ওয়া নাছারা আবদাহু, ওয়া হাযামাল আহজাবা ওয়াহদাহু”।
অর্থাৎ আল্লাহ বড়, আল্লাহ বড়, আল্লাহ বড়, একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই। তিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে বিজয় দিয়েছেন এবং তিনি একাই শত্রæকে পরাজিত করেছেন।
২. “সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহি আল্লাহু আকবার ওয়া লাহাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম”।
৩. “আলহামদু লিল্লাহি আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলে দোয়া করুন। তবে যে কোন দোয়া পড়া যায়। যেহেতু শরীয়তে এখানে বেশী বেশী করে দো‘আ করার কথা বলা হয়েছে সেহেতু যাবতীয় দো‘আই এখানে করতে পারেন।
অতঃপর সাফা হতে নেমে মারওয়ার দিকে যাবেন। সায়ীকালীন সময়ে সাফা ও মারওয়ার মাঝে সবুজ দুটি স্তম্ভ আপনার নজরে পড়বে। এই স্তম্ভদ্বয়ের মাঝখানে কিছুটা দ্রæতগতিতে চলুন এবং এই দোয়া পড়ুনঃ “সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লা-হাওলা, ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আ’লিয়্যিল আ’যীম, “রাব্বিগফির ওয়ারহাম ইন্নাকা আন্তাল আয়াযযুল আকরাম”।
পুরুষগণ দু’সবুজ আলোর মধ্যবর্তী স্থানে দ্রæত চলবেন এবং এর আগে ও পরে স্বাভাবিকভাবে চলবেন। মহিলাগণ কোথাও দ্রæত চলবেন না, কারণ মহিলাগণ পর্দা করবেন, দ্রæত হাঁটা মহিলাদের পর্দার বিপরীত।
এরপর যখন মারওয়ার কাছে যাবেন, তখন তার উপর আরোহণ করবেন অথবা নিচে দাঁড়াবেন এবং আল্লাহ্র প্রশংসা জ্ঞাপন করবেন এবং সাফায় যেমনটি করেছেন এখানেও তেমনটি করবেন। অর্থাৎ ঃ মারওয়ার উপরে উঠার পরে কা’বা শরীফকে সামনে রেখে প্রার্থনাকারীর ন্যায় দু’ হাত উর্ধে তুলে আল্লাহ্ তা‘আলার প্রশংসা করে তিনবার তাকবীরসহ নিম্নোক্ত দো‘আ পড়বেন -
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, আনজাযা ওয়াহদাহু, ওয়া নাছারা আবদাহু, ওয়া হাযামাল আহজাবা ওয়াহদাহু”। অর্থাৎ আল্লাহ বড়, আল্লাহ বড়, আল্লাহ বড়, একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই। তিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে বিজয় দিয়েছেন এবং তিনি একাই শত্রæকে পরাজিত করেছেন।
এতে সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত এক চক্কর হয়ে গেল। আবার মারওয়া থেকে সাফা পর্যন্ত পূর্বের নিয়মে যাবেন, তাতে দ্বিতীয় চক্কর হয়ে যাবে। এভাবে ৭ চক্কর পূর্ণ করুন।
সাফা মারওয়া পাহাড়ে সাতবার যাওয়া আসা করার সময় অজু না থাকলেও সায়ী সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে অজু থাকা ভাল।
সাফা মারওয়ায় হুঁশিয়ারী
সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের উঁচু জায়গার শেষ প্রান্তে পৌঁছা সুন্নতের খেলাফ।
সায়ীর পর নফল নামাজ
সায়ী শেষে মসজিদে হারামে এসে মাতাফে অথবা হাজরে আসওয়াদের সামনে অথবা তাওয়াফ করার স্থানে কিংবা যেখানে স্থান পাওয়া যায় সেখানে দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করুন।
এ নামাযে প্রথম রাকা’আতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফিরূন ও দ্বিতীয় রাকা’আতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস পড়া সুন্নাত।
হলক বা কছর করা
চতুর্থ কাজ
৪। হলক বা কছর করাঃ (ওয়াজিব)
সায়ী শেষে আপনি মাথা মুন্ডান বা চুল ছেঁটে ফেলুন।
ওমরাহর ইহরাম থেকে হালাল
মাথা মুন্ডানোর বা চুল ছেঁটে ফেলার মাধ্যমে আপনি এখন ওমরাহ ইহ্রাম থেকে সম্পূর্ণ হালাল হয়ে গেলেন।
পুরুষদের জন্য হলক করাই উত্তম, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলককারীদের জন্য তিনবার মাগফিরাতের দোয়া করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন - আল্লাহুম্মাগফির লিমুহাল্লিক্কি’ন, আল্লাহুম্মাগফির লিমুহাল্লিক্কি’ন, আল্লাহুম্মাগফির লিমুহাল্লিক্কি’ন। হে আল্লাহ! আপনি হলোককারীদের ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি হলককারীদের ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি হলককারীদের ক্ষমা করুন।
মহিলাদের সমগ্র চুলের অগ্রভাগ হাতের অঙ্গুলির এক কড়া পরিমাণ ছেঁটে হালাল হোন।
এখন আপনি গোসল করে সেলাইযুক্ত কাপড় পরিধান করুন।
সংক্ষেপে রওজা যিয়ারত
মসজিদে নববীতে প্রবেশের দোয়াঃ
“বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক”।
দুই রাকয়াত নামাজঃ মসজিদে প্রবেশের পর, বসার পূর্বে তাহিয়্যতুল মসজিদের দু’রাকাত সালাত আদায় করুন।
নকী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওযায় সালাম ঃ
নামাজ শেষে রওযা শরীফের পাশে আসবেন প্রথম ছোট ২টি জালির ছিদ্রের পর মোটা একটি ছিদ্র পড়বে সেখানে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুয়ে আছেন। সিথানের দেয়ালে কোণ হতে তিন-চার হাত তফাতে দন্ডমায়ন হবেন। জালি মোবারকের তত কাছ যাবেন না। আর দূরেও থাকবেন না। কেবলার দিকে পিঠ রেখে অল্প বাম দিকে আদবের সাথে দাঁড়াবেন।
অতঃপর পৃথিবীর যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা থেকে দিলকে মুক্ত করে একমনা হয়ে অত্যন্ত নম্্রতা ও আদবের সাথে মধ্যম আওয়াজে সালাম পেশ করুন। এ রকম খেয়াল করতে হবে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর মোবারকে কিবলার দিকে মুখ করে আরাম করছেন এবং সালাম কালাম শ্রবণ করছেন।
সালামঃ
আস-সালাতু আস-সালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া নাবীয়্যুল্লাহ।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া হাবিবাল্লাহ।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া খায়রী-খালকিল্লাহ।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া সাইয়্যিদিল মুরছালীন।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া খাতিমান নাবীয়্যিন।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া শাফিয়াল মুজনিবীন।
আস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলাইকা ইয়া রাহমাতাল্লিল আলামীন।
হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর রওযার সালামঃ
এরপর এক গজ পরিমাণ ডানদিকে এগিয়ে যান। এখানে হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু এর করব।
হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর চেহারা মোবারক বরাবর দাঁড়াবেন এবং এমনভাবে সালাম পেশ করুন।
সালাম ঃ আস্সালামু আলাইকা ইয়া খলিফাতু রাসূলুল্লাহি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু।
হযরত ওমর (রাঃ)-এর রওযার সালামঃ
এরপর এক গজ পরিমাণ ডানদিকে এগিয়ে যান। এখানে হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর করব।
হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর চেহারা মোবারক বরাবর দাঁড়াবেন এবং এমনভাবে সালাম পেশ করুন।
সালাম ঃ আস্সালামু আলাইকা ইয়া আমিরুল মু’মিনীন ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু।
ওহুদের ময়দান ও শহীদের কবর জিয়ারত করার সময় পড়া ঃ
সালাম ঃ আস্সালামু আলাইকা ইয়া স্যাইয়েদানা হামাযাহ, ইয়া মুজাহেদিনা ফি সাবিলিল্লাহ, ইয়া শুহাদায়ী ওহুদিন কাফ্ফাহু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
©somewhere in net ltd.