![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নফস শব্দটি আরবি। নফস শব্দের অর্থ প্রাণ, আত্মা। যা সকল প্রাণির দেহেই বিরাজমান। নফস হলো সেই অলৌকিক বস্তু, যা মানুষের দেহে ফুঁ দিয়ে প্রাণের সঞ্চার করা হয়। অথবা নফস সেটাই যা আল্লাহ মানব দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা বলছেনঃ- কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মউত। অর্থাৎ প্রত্যেক নফস তথা প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। (আলে-ইমরানঃ ১৮৫)
১. নফসে আম্বারাহ (প্রতারক আত্মা) : অর্থাৎ যে নফস মানুষকে কুপ্রবৃত্তি ও জৈবিক কামনার দিকে আকৃষ্ট করে। এর ব্যাপারে আল্লাহ্ কুরআন আল কারীমে বলেন- ''আমি নিজের নফ্সকে দোষমুক্ত করছি না। নিশ্চয়ই নফ্স তো খারাপ কাজ করতে প্ররোচিত করে, তবে যদি কারোর প্রতি আমার রবের অনুগ্রহ হয় সে ছাড়া। অবশ্যি আমার রব বড়ই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান।” (ইউসূফঃ ৫৩)
২. নফসে লাওয়ামাহ (অনুশোচনাকারী আত্মা) : যে নফস অন্যায় করার পর মানুষের হৃদয়ে অনুশোচনার উদ্রেক করে । আবার গুনাহে লিপ্ত হয় আবার লজ্জিত হয়,মোট কথা সে গুনাহ ছাড়তে ও চায় আবার জানায় বা অজানায় গুনাহে লিপ্ত হয়েও পেরেশানীতে থাকে। এ নফস থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্যেও চিকিৎসা করতে হবে। এই নফসের ব্যাপারে আল্লাহ্ বলেন- ''আরও শপথ করি নফসে লাওয়্যামাহর( সেই মনের, যে নিজেকে ধিক্কার দেয়) ।'' (আল কিয়ামাহঃ ২)
৩. নফসে মুতামায়িন্নাহ (প্রশান্ত আত্মা) : যে নফস সকল কালিমা থেকে মুক্ত এবং যাবতীয় মহৎ ভাবনায় পরিতৃপ্ত। তার কোন ভয় ও দুঃশ্চিন্তা থাকেনা। আল্লাহর প্রতি এই নফস রাজি থাকে সকল হালতে আর আল্লাহ্ এইসব নফসের উপর সব সময় রাজি থাকেন। এই প্রকৃতির নফসের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'লা বলেন- ''হে নফসে মুত্বমাইন্নাহ(প্রশান্ত মন), তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও রদ্বিয়ান (সন্তুষ্ট) ও মারদ্বিয়্যান (সন্তোষভাজন) হয়ে। অত:পর আমার (নেক) বান্দাদের অর্ন্তভূক্ত হয়ে যাও। আর আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।''(আল ফজরঃ ২৭-৩০)
৪. নফসে মুলহিমাহ : যে পরিশুদ্ধ নফস সর্বদা আল্লাহ হতে 'এলহাম' (আল্লাহ প্রদত্ত ইলম বা জ্ঞান) -এর দ্বারা পরিচালিত হয়; আপন ইচ্ছায় কোন কর্মই করে না তাকে 'নফসে মুলহিমাহ বলে। আল্লাহর প্রত্যক্ষ বানী দ্বারা তার প্রতিটি কর্ম-কান্ড পরিচালিত হয়। এই পর্যায়ের নফস পাপ পুন্যের ঊর্ধ্বে চলে যায়। কারন যা আদিষ্ট হয় তাই সে করে, মানবীয় কোন ইচ্ছা সেখানে থাকে না। এর ব্যাপারে কুরআনে উল্লেখ হয়- ''শপথ নফসের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন-তাঁর, অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের ইলহাম (তথা জ্ঞান) দান করেছেন।'' (আশ শামসঃ ৭-৮)
৫. নফসে রহমানিয়া : রহমান আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ গুণবাচক নাম। অর্থ- দয়া, করুনা ইত্যাদি। একজন সাধক এই পর্যায়ে এসে পূর্ন মুক্তি লাভ করে এবং পরম আত্মার স্বভাব লাভ করে অর্থাৎ সর্বদা বাকাবিল্লার স্তরে অবস্থান করে এবং আল্লহর জাতের সাথে মিশে গিয়ে পূর্ন অলিয়ত্ব অর্জন করে। যেমন কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- (বল), আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করলাম। আর রং এর দিক দিয়ে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক সুন্দর? আর আমরা তারই ইবাদাতকারী। (বারকারাঃ ১৩৮)
©somewhere in net ltd.