নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

i blog/therefore i exist

অচিন্ত্য

"জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ"

অচিন্ত্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

পোষাক বিড়ম্বনা :(

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১১

এই ক’দিনে যেই সকল কাণ্ড কারখানার সূত্রপাত হইয়াছে আর বলিবার নহে। তাই, ঘটনাপঞ্জি না বলিয়া লিখিবার সংকল্প করিয়াছি। ঘটনার গতি প্রকৃতি বিশ্লেষণপূর্ব্বক কদাচ নিজেকে মিস্টার বিন, কদাচ হুমায়ূন আহমেদ এর নাটকের কোন চরিত্র বলিয়া ভ্রম হইতেছে। না হইবেই বা কেন ? এই সকল চরিত্র তো আর অনন্ত মহাশূন্য হইতে আগন্তুকের ন্যায় উড়িয়া আসে নাই। তাহারা জীবন হইতেই সংগৃহীত। এই সকল চরিত্র নির্ম্মাতাগণ জীবনকে কতটা গভীর হইতে গভীরতররূপে পর্যবেক্ষণ করিয়াছেন, তাহা ভাবিয়া বিস্ময়াভিভূত হইয়া রহিলাম। বিস্ময়ের ঘোর কাটিতে দেখিলাম তাহারা যেন শতমুখে আমাকেই ফুটাইয়া তুলিতেছেন। তো ঘটনার প্রারম্ভ এইরূপেঃ

অফিস হইতে নির্দ্দেশ আসিয়াছে উত্তরাঞ্চলের এক জনবিরল পল্লীতে যাইতে হইবে। বেশ কথা। শীত অত্যাসন্ন, তায় উত্তারঞ্চল। প্রস্তুতি পর্বের প্রথমেই আসে শীতের পোষাকের বিষয়খানা। আমি বরাবরই কেনাকাটায় নিতান্ত অপটু। ছোটকাল হইতে যাবতীয় কেনাকাটা পিতা-ই করিয়া দিয়াছেন। বিবাহের পরে সেই স্থানটি দখল করিয়াছেন আমার পত্নী। সপ্তাহান্তে তিনি আমাকে লইয়া কাঁচা বাজারে যান। তিনি টুকটাক দামদর করেন এর এইটা সেইটা ক্রয় করেন। এই ক্ষেত্রে আমি তিনখানি অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করিয়া থাকি। আর সেইগুলি হইলঃ ওজনের ক্রমবর্ধমান চাপ উপেক্ষা করিয়া বাজারের ব্যাগখানা শক্ত হাতে ধরিয়া রাখা, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুযায়ী মানিব্যাগ হইতে টাকা বাহির করা এবং সময়মত একখানা ত্রিচক্রযান ডাকিয়া গৃহাভিমুখে যাত্রা করা। আমার নিজের পোষাক ক্রয়ের ক্ষেত্রেও আমার বা তাহার দায়িত্বে কোন পরিবর্তন আসে না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার পত্নী তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সক্ষম নহেন। কারণ সম্প্রতি আমরা পিতা-মাতা হইয়াছি এবং নবমাতা তাহার মাতৃত্বকালীন ধকল এখনো সম্পূর্ণরূপে কাটাইয়া উঠেন নাই।

এই দুর্যোগের মধ্যেও আশার বাণী হইল এই যে বর্তমানে শ্বশুরালয়ে অবস্থান করিতেছি এবং আমার শ্যালিকা কেনাকাটায় অতিব দক্ষ  । আমার অফিসের নির্দ্দেশনা এবং তৎসংলগ্ন পোষাকের বিষয়টি উত্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে ইহা স্থির হইয়া গেল যে নিকটতম সপ্তাহান্তে শ্যালিকা আমার পোষাক ক্রয়ের ব্যাপারে সাহায্য করিবে। উত্তম প্রস্তাব। সপ্তাহান্ত আসিল। আমরাও বাহির হইয়া পড়িলাম।

অনেক দেখিয়া শুনিয়া মোটামুটি পছন্দসই কেনাকাটা সারিয়া সহাস্যবদনে গৃহে প্রত্যাবর্তন করিলাম। কিন্তু হাসি দীর্ঘস্থায়ী হইল না। ট্রায়াল না দিয়াই কিনিয়াছিলাম। ফিরিয়া ট্রায়াল দিয়া দেখি সবগুলি পোষাকই আকারে কিঞ্চিৎ হ্রস্ব। কী করা যায় ভাবিতে ভাবিতে একখানা উপায়ও বাহির হইল। চারখানি বালিশ একত্র করিলাম। তাহার পরে একখানা পোষাক সেই বালিশপুঞ্জে পরাইয়া দিলাম। চব্বিশ ঘণ্টা পার হইয়াছে। আশা করি ইহার আকার কিঞ্চিৎ দীর্ঘ হইয়া আমার উপযোগী হইয়াছে। এইরূপে পরবর্তী পোষাকগুলিও দীর্ঘ করিয়া লইবার দীর্ঘ পরিকল্পনা করিতেছি।

গাত্রের ঊর্ধ্বাংশের পোষাকের আকৃতি এইরূপে পরিবর্তন করিতে পারিলেও অন্য অংশের ক্ষেত্রে এই কৌশল খাটিবে না। সেই ক্ষেত্রে সেইগুলি দুস্থদিগকেই দিয়া দিতে হইবে। অদ্য অফিস হইতে ফিরিবার সময় সেই জাতীয় একখানা পোষাক, অর্থাৎ একখানা ট্রাউজার আমি নিজে নিজেই ক্রয় করিয়া ফিরিয়া লইয়া আসিলাম। তাহার পর সেই ট্রাউজার পরিয়া পত্নী এবং শ্যালিকার সম্মুখে অবতীর্ণ হইলাম। তাহারা উভয়ে, বিশেষ করিয়া শ্যালিকা হাসিতে হাসিতে মরিবার উপক্রম। ব্যাপারখানা আঁচ করিতে পারিলাম না। পত্নী শীঘ্র আমাকে সেই স্থান হইতে টানিয়া লইয়া গিয়া বলিল- কী সর্বনাশ করিয়াছ ! ইহা তো পুরুষ মানুষের ট্রাউজার নহে, ইহা মহিলাদিগের ট্রাউজার।

ইহার পর আমার অনুভূতি যে ব্যক্ত করিব সেইরূপ শব্দ কোথায় ? কোথায় সেইরূপ অভিনব অভিধান ? কোথায় সেইরূপ বাক্যবিন্যাসের রীতি ? নাই, নাই। কিছু নাই। চারিদিকে নিকষ কাল তিমির। এই তিমিরে দাঁড়াইয়া প্রতিজ্ঞা করিলাম, নিজে নিজে তো প্রশ্নই আসে না, পত্নী বিনা আর কদাচ ক্রয়ের কথা মুখে আনিব না।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২০

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: বেশ কিছুদিন পূর্বে আমার বাবা- মা এইরকম ভুল করছে । আমার জন্যে শখ করে জামা আনছে কিন্তু সাইজ দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাই । !!!!!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৬

অচিন্ত্য বলেছেন: :)

২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০৯

সকাল হাসান বলেছেন: হাহাহা!

আপনার কাপড়ের সাইজ বড় করার জন্য কত কি করেন, আর আমি ভাই সাইজ ছোট করার জন্য পারফেক্ট দর্জি খুঁজে বেড়াই! :P

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৬

অচিন্ত্য বলেছেন: :p

৩| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: সেই ট্রাউজার পরা অবস্থায় একটা ছবি দেখতে চাই =p~

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৭

অচিন্ত্য বলেছেন: আন্নে কি মানুষ!?

৪| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৭

লেখোয়াড় বলেছেন:
ব্যাপার না।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৮

অচিন্ত্য বলেছেন: :) নেএক্সট টাইম

৫| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৬

সুমন কর বলেছেন: ইহা তো পুরুষ মানুষের ট্রাউজার নহে, ইহা মহিলাদিগের ট্রাউজার। :P

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৯

অচিন্ত্য বলেছেন: :(

৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:৩৩

নস্টালজিক বলেছেন: হা হা।

সাধু ভাষায় রম্যকথন সুস্বাদ্য হয়েছে অচিন্ত্য।


শুভেচ্ছা নিরন্তর।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১

অচিন্ত্য বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.