নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মো: সাদ্দাম আদিল

মো: সাদ্দাম আদিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মায়ের স্বপ্ন এবং মৃত্যু।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫৫





পরিবারটি চার সদস্য বিশিষ্ট। মা, বাবা এবং তারা দুই বোন। বলতে গেলে অনেক সুখের একটি সংসার। মেয়েগুলো ছিল অনেক পড়ুয়া এবং মেধাবী।বাবা মায়ের কথা ছাড়া একপা

ও নাড়াত না।পরিবারে একমাত্র মা ই ছিল যে কিনা মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু বেশী উদ্বিগ্ন ছিলেন। স্বপ্ন দেখতেন আমার মেয়ে একদিন বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরবে, উকিল হবে,জজ হবে।সেই সাথে মেয়েদের লেখাপড়া ও চলতেছিল।বড় মেয়ে সচরাচর বড় হতে লাগলো এবং একদিন এস এস সি পাস করল এরপর চট্টগ্রাম কলেজে এইস এস সি ১ম বর্ষে ভর্তি হল । এইস এস সির সময় মা থাকতেন দেশের বাড়িতে আর মেয়ে ছিল কলেজের ছাত্রী নিবাসে।মা প্রত্যেক দিন ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করত পড়ালেখা কেমন চলতেছে? ভাত খেয়েছে কিনা? কলেজে গিয়েছে কিনা? নামাজ পড়েছে কিনা? আরও অনেক কিছু যা কিনা সচরাচর একজন মা সবাইকে জিজ্ঞেস করে।

এভাবেই দিন অতিবাহিত হইতেছিল।একদিন মেয়ে এইস এস সি পাস করল এবং মায়ের স্বপ্নগুলো আস্তে আস্তে পূরণ হইতেছিল।মায়ের বড় আশা ছিল মেয়ে একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এল এল বি নিয়ে পড়বে এবং উকিল হবে।মেয়েরও বড় ইচ্ছা সে মায়ের আশা পূরণ করে মায়ের মুখ উজ্জ্বল করবে।

মায়ের স্বপ্ন পুরনের লক্ষে সে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিল। যথারীতি সে দুনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেল এবং সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হল। তার ভর্তির সংবাদ শুনে মা অনেক খুশি কারন তার বড় মেয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করেছে এবং তার মন কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে। মা মেয়েকে দেখার জন্য অস্তির হয়ে উঠল। কখন মেয়ে আসবে, কখন তাকে বুকে জড়াবে এবং বলবে “মা,তুই আমার জীবনের স্বপ্ন পূরণ করেছিস।” মেয়েও মাকে দেখার জন্য ব্যকুল।মা ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করল “আজকে ত ভর্তি শেষ কখন আসবি?” মেয়ে বলল,”মা, আজকে আমি অনেক ক্লান্ত আর এখনও ত তোমার জন্য কিছু কেনা হয়নি।আমি তোমার জন্য জুতো কিনে এরপর কাল সকালে বাসে রওনা দিব।“ এই বলেই মা মেয়ে ফোন রেখে দিল। ১০ মিনিট পর মেয়ে মা,র জন্য জুতো কিনার জন্য ছাত্রী নিবাস থেকে বের হল এবং মায়ের জন্য সুন্দর জুতো খুজতে লাগল এবং অবশেষে সুন্দরটা পেল।এরই মধ্যে তার মোবাইলে রিং বাজতে লাগলো। সে তার ব্যাগ থেকে মোবাইল নিয়ে কানে দিয়ে দেখল মোবাইলের অপর প্রান্তে কান্নার আওয়াজ!দেখল তার ছোট বোন কান্না করতেছে।সে জিজ্ঞেস করল “কি হয়েছে? তুই এইভাবে কাঁদছিস কেন?” ছোট বোন “আপু…….আম্মু আর নেই।” এই সংবাদ শুনে সে কান্নায় ভেঙে পড়ল এবং জুতো গুলো বুকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। অবশেষে তার আর মায়ের কাছে গিয়ে মায়ের বুকে গুজার ঠাই হলনা।মায়ের স্বপ্ন পূরণের সেই হাসিমাখা মুখখানা দেখার সুযোগ হলনা। মায়ের জন্য কেনা সুন্দর জুতো আজ সে কাকে পড়াবে? এই বলে কাঁদতে লাগলো।



পাদটীকা: মানুষের জীবনের একমাত্র আশা পূরণ হলে সে আর বেচে থাকে না।যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন সে আশার বলেই আশার মুখ দেখার জন্য বেচে থাকে।এই ঘটনাটিতে,মায়ের এক মাত্র আশা ছিল মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.