![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাড়ির উঠানে বসে রেডিও শুনছিলো লুৎফর। পাশে কান খাড়া করে বসে রয়েছে তার বাবা।লুতফর বললো, দেশের অবস্থা ভালো না।খানরা যেখানে যারে পাচ্ছে মারতেছে।
বাবা বললো- আমাদের গ্রামে আসবে না। রাস্তা থেকে এত দূরে খানরা আসতে পারবে না।
গ্রামটা আসলেই শহর আর মূল রাস্তা থেকে বেশ দূরে। একটা বড় জংলার আড়ালে।এই গ্রামে আসতে হলে বিশাল ধানি জমির পাথার পারি দিতে হয়। আঁকাবাকা সরু আইল ধরে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়-এই আইলে একসাথে দুইজন পাশাপাশি দাঁড়ানোও সম্ভব না।
লুৎফর রহমানের বয়স ছাব্বিশ-সাঁতাশ হবে। বাড়িতে তার বাবা ছাড়াও আছে মা, একটা ফুটফুটে বউ আর দুটো ছেলে-মেয়ে আছে
মা ওদের জন্যে এক থাল মুড়ি আর গুড় দিয়ে গেলো। খেতে শুরু করেছে কি করেনি -এই সময় কয়েকজন লোক বাড়ির সামমে দিয়ে দৌড় দিলো। আতংক নিয়ে লুৎফর দৌড়ে গেলো দরজার সামনে। ডাকলো
- দৌড়ান কেন আপনারা? কি হইছে?
- খান আসতেছে। আইল ধরে দশ বারোজনের একটা সাইর। পালাও জলদি !
ওরা সবাই মিলে বের হয়ে গেলো বাড়ি থেকে। লোকালয় থেকে দূরে,বাঁশঝাড়ের আড়ালে- স্কুল ঘরটায় গিয়ে লুকালো। আরো অনেকেই লুকালো ওদের আশে পাশের ঘরে। এইখানে অন্তত খানেদের আসা সম্ভব না। সবাই মনে মনে দোয়া দরুদ পড়তে লাগলো।
হঠাত দূর থেকে খানদের বুটের দুপদাপ শব্দ। স্কুলে ঘরে ঢুকে ওরা গ্রামের শিক্ষিত যুবকদের বের করে নিয়ে এলো। এক লাইন করে বন্দুক ধরে নিয়ে গেলো পেছনের মাঠে। স্কুল ঘরগুলো তথন মেয়েদের কান্না আর ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চিৎকারে গুমট হয়ে উঠেছে।
হঠাত জোরে জোরে স্টেনগানের শব্দ। যেন পেছনের মাঠটায় একটানা বাজ পড়ছে আ্কাশ থেকে। সাথে সাথে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো লুৎফরের বৃ্দ্ধ বাবা।গিয়ে দেখলো মাটিতে পরে আছে তার প্রানপ্রিয় ছেলের ঝাঝড়া হয়ে যাওয়া লাশ। পাশে সুশৃ্ংখল ভাবে এক সারিতে আরো দশ-পনেরোটা লাশ পরে আছে।একটা ধারালো তলোয়ার যেন তার কলিজার এদিক ওদিক চলে গেলো তার। প্রানপ্রিয় ছেলেকে হারানো বাবার আর্তনাদে হাহাকার করে উঠলো চারিদিক।
শহর থেকে এত দূরের একটা গ্রামে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আসা সম্ভব ছিলো না।সম্ভব হয়েছিলো রাজাকারদের কারনে। জংলার আড়ালের জরাজীর্ণ স্কুলঘর থেকে কাউকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিলো না। সম্ভব হয়েছিলো রাজাকারদের কারনে।
পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ যারা উঠানো এই রাজাকারদের অনেকেই যুদ্ধের পর আত্বগোপনেও যায়। দশ বারো বছর পর যখন সুযোগ বুঝে আত্বপ্রকাশ করে, দেখা যায় তারা হয়ে গিয়েয়েছে বিশাল ধনী।সারা বাংলাদেশেই যুদ্ধের বাজারে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া এরা এক সময় আত্বপ্রকাশ করে। প্রজন্ম আজ এদেরই বিচার করছে। ওই সন্তান হারানো বাবাকে-মাকে, বিধবা স্ত্রীকে,পিতা হারা সন্তানকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে চায় তারা। চায় এই রাজাকারদের সর্বোচ্চ শাস্তি। নাহলে যে এদের কেউ মাফ করবে না প্রজন্মকে।
** নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগারী গ্রামে দেশ স্বাধীন হওয়ার বিশ থেকে পঁচিশ দিন আগে নারকীয় হত্যাকান্ডে মারা যান লুৎফর রহমান ও পনেরো জন বাংলাদেশী। একজন বেচে যান গুলি শুরু আগে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে যাওয়ার জন্য। লুৎফর রহমানের স্ত্রী ও সন্তানেরা আজও বেঁচে আছেন।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৪
মুশাসি বলেছেন: ফাঁশি ফাঁশি ফাঁশি চাই,
ফাঁশি ছাড়া কথা নাই
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪৫
নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ বলেছেন: ফাসি চাই, ফাসিই......
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০৬
মুশাসি বলেছেন: দোয়া করেন।
ধন্যবাদ
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:১৫
মাক্স বলেছেন: দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: ফাঁশির অপেক্ষায়.......
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৫১
মুশাসি বলেছেন: আল্লাহ নিশ্চয়ই ন্যায় বিচার করবেন
৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৫৯
সাউন্ডবক্স বলেছেন: সাইদী সুয়রের বাচ্চার ফাসি চাই!!!!
এই কুত্তার বাচ্চা আমাদের অনেক ক্ষতি করছে
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:০৪
মুশাসি বলেছেন: সকাল হলো বলে
আমরা সূ্র্যের অপেক্ষায়...
৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১২
রেজোওয়ানা বলেছেন: আমরা অপেক্ষায় আছি.....
০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১৭
মুশাসি বলেছেন: আপু, দেশটার জন্য দোয়া করো
৬| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:১৮
কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: একমাত্র শাশ্তি ফাঁসী। নইলে কিছুতেই লুতফরের অতৃপ্ত আত্মা আর তাঁর বাবার কয়লা হয়ে যাওয়া অন্তর শান্তি পাবেনা।
ট্রিবিউটে প্লাস।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২০
দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: ফাঁশির অপেক্ষায়............
++++