নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেশ , মানুষ

জীবনের সব কিছু আললাহর সন্তুষ্টির জন্য

আল মাহদী ফোর্স

কোরান ও নবী পরিবারের আঃ অনুসারী।

আল মাহদী ফোর্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুখারী শরিফে আরও কিছু জাল হাদিস

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১১


অত্যাচারী শাসকের আনুগত্যের হাদিসঃ
বুখারী শরিফের অনেক হাদিসে অত্যাচারী শাসকদের আনুগত্য করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে(যেমনঃ ২ঃ২২৬৪-৬৫;৩-২৯২৬,৩৩৩৫-৩৭,৩৫১০-১২;৪ঃ ৩৯৮৭;৬ঃ৬৫৬২-৬৪,৬৫৭৫,৬৫৮৮-৮৯,৬৬১২,৬৬৪৪-৪৫,বুখারী শরিফ,আধুনিক প্রকাশনী)।এসকল হাদিসের সারাংশ এইঃরাসুল(সাঃ) বলেছেন,আমার পরে এমনও শাসক আসবে যারা আমার প্রদর্শিত পথে তোমাদেরকে পরিচালিত করবে না-আমার সুন্নাহও অনুসরন করবে না।সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন, “ ঐ সময় আমরা কি করব?” রাসুল (সাঃ) বললেন, “ ঐসব জালিম শাসকদের কথা তোমরা শুনবে ও তাঁদের আনুগত্য করবে।তারা যদি তোমাদের আঘাত করে এবং তোমাদের ধন-সম্পত্তি ছিনিয়েও নেয়,তবুও তোমরা তাঁদের অনুসরন ও আনুগত্য করবে”।অথচ কুরানে আল্লাহ বলেছেন,”এবং তাঁদের সাথে যুদ্ব কর যতক্ষন না সমস্ত অরাজকতা নির্মুল হয়ে যায় এবং দীন কেবল আল্লাহরই জন্যই হয়”......(সুরা বাকারাঃ১৯৩)।(এরকম আরও আয়াত আমরা কুরানে পাই,যেমনঃ ২ঃ১৯০,২১৬-১৭,২৪৪,৪ঃ৭৪-৭৫,৮৯-৯৪ ইত্যাদি)।আমরা জানি, যে হাদিস কুরানের আয়াতকে সমর্থন করে না সেটি জাল হাদিস(মুঃ আল বাকির,সহি আল কাফি,ভল্যুম-১,পাতা-৮,সংস্করন ১৪০২ হিজরী)।

আল্লাহর ক্লান্ত হওয়াঃ
“তোমরা ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ ক্লান্ত হন না।“(বুখার,১ম অধ্যায়,হাদিস# ৪১,আধুনিক প্রকাশনী)।এই হাদিসটির বিপরীত হচ্ছে আমরা ক্লান্ত হলে হলে আল্লাহ ক্লান্ত হন।এব্যাপারে আল্লাহ পাক কুরানে বলেনঃ “ ...... না তাঁকে তন্দ্রা আচ্ছন্ন করে ,আর না নিদ্রা;....(বাকারা,আয়াত# ২৫৫)।

রাসুলের(সাঃ) বন্দ্বু ও ভাইঃ
রাসুল(সাঃ) বলেছেন,উম্মতের মধ্যে তিনি কাউকে বন্দ্বু হিসাবে গ্রহন করলে হজরত আবুবকরকে(রাঃ) গ্রহন করতেন”(বুখারি,১৪৪৬ ও ৪৪৭,৩-৩৩৮২-৮৪-৮৬,আধুনিক প্রকাশনী)।কিন্তু আমরা জানি যে,রাসুল(সাঃ) মক্কায় ও মদীনাতে যখন আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ্ত্বের বন্দ্বন রচনা করেন,তখন রাসুল(সাঃ) আমিরুল মু’মিনিন হজরত আলীকে(আঃ) বন্দ্বু ও ভাই হিসাবে গ্রহন করেছিলেন।মদীনায় হিজ্রতের পর মুহাজিরদের কশট লাঘবের জন্য আনাসারদের সঙ্গে ভ্রাতৃ্ত্বের বন্দ্বন রচনা করেন।কিন্তু তিনি নিজে অন্য কাউকে না নিয়ে হজরত আলীকে(আঃ) বেছে নেন এবং তাঁকে বলেন,হে আলী,তুমি ইহকালে ও পরকালে আমার ভাই(তিরমিজি ইং ৬০৮৪)।

গুই সাপ খাওয়াঃ
হাদিস থেকে আমরা জেনেছি যে, হিংস্র ও নোংড়া প্রানী খাওয়া জায়েজ নয়,হারাম ( বুখারি,অধ্যায় ৫,হাদিস# ৫১২০-২৩,আধুনিক প্রকাশনী)।অথচ বুখারী, অধ্যায় ২,হাদিস# ২৩৮৮,অধায় ৫,হাদিস# ৪৯৯৯,৫০০১,৫১২৯,৫১৩০, আধুনিক প্রকাশনী , অনুযায়ী গুইসাপ হালাল।
বানরের ব্যভিচারঃ
বুখারি শরিফের অধায় ৩, হাদিস# ৩৫৬২ এ বর্নিত আছে যে, “ একটি বানর ব্যভিচারে লিপ্ত হবার কারনে অন্য বানররা তাঁকে প্রস্তর নিক্ষেপ করে মেরে হত্যা করে”।আমরা সকলেই জানি যে, প্রানিদের মধ্যে অবাধ মেলামেশা হয়ে থাকে বা এব্যাপারের শরিয়তগত কোন বিধান নেই।এধরনের উদ্ভট, বানোয়াট,জাল হাদিস রাসুলের(সাঃ) নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে।আশা করি বুদ্বিমান মানুষেরা এধরনের জাল হাদিসগুলো প্রত্যাখ্যান করবেন।

মাছির এক পাখায় আছে রোগ,আর অন্য পাখায় আছে সে রোগের ঔষধঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায় ৩,হাদিস# ৩০৭৪,অধ্যায় ৫,হাদিস# ৫৩৫৭) আবু হুরায়রা থেকে বর্নিত এক হাদিসে দেখা যায়,রাসুল(সাঃ) বলেছেন, “ যদি তোমাদের কারো পানীয়ের মধ্যে ঘরের কোন মাছি পড়ে,সে যেন পুরো মাছিটাকেই পানীয়ের মধ্যে চুবিয়ে নেয়”।কারন মাছির এক পাখায় আছে রোগ,আর অন্য পাখায় আছে সে রোগের ঔষঢ(বুখারি,ইং ৫৩৭,৪২৩)।পাঠক,চিকিতসা বিজ্ঞানে এর কোন ব্যাখ্যা আছে কি না আমার জানা নেই।তবে আমরা যেটা জেনেছি যে,রাসুল(সাঃ) বলেছেন,যে হাদিস কুরানের আয়াতকে সমর্থন করে না সেটি জাল হাদিস(মুঃ আল বাকির,সহি আল কাফি,ভল্যুম-১,পাতা-৮,সংস্করন ১৪০২ হিজরী)।কেউ কি পারবেন উপরে উল্লেখিত মাছির হাদিসটিকে কুরানের কোন আয়াত দ্বারা সত্যায়ন করতে?আমি মনে করি অসম্ভব।
আবুবকর(রাঃ) কতৃক নামাজে ইমামতি করাঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়১,হাদিস# ৬২৪,৬৩৭-৪৬,৬৬৯-৭০,৬৭৩,৭১০,১১২৬;অধায়-৩,৩১৩৪-৩৫,অধ্যায় ৪,হাদিস# ৪০৯২,৪০৯৫;অধ্যায় ৬,হাদিস# ৬৭৯৩) হাদিসগুলির মর্মার্থ হলঃ রোগাক্রান্ত হলে(যে রোগে তিনি সাঃ ইন্তেকাল করেন)হযরত আবুবকরকে নবীজী(সাঃ) নামাজের ইমামতি করতে বলেন এবং একবার তিনি নিজেও তাঁর সাথে নামাজ আদায় করেন।কিন্তু আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায় ৩,হাদিস# ৩৪৫১,অধায় ৪,হাদিস# ৩৯১৯,৪১১০-১১,অধ্যায় ৬,৬১৬৫,৬৬৮৪ এবং আরও অনান্য হাদিস গ্রন্থ থেকে জানা যায়,যে সময়ে নামাজে আবুবকরকে ইমামতি করতে বলা হয়,সে সময় আবুবকর উসামার(রাঃ) অধীনে ‘উবুনা’ যুদ্বের জন্য মদীনার বাইরে ‘জোরাফ’ নামক স্থানে সেনা শিবিরে অবস্থান করছিলেন।এসকল বানোয়াট হাদিস পয়সা দিয়ে বানিয়ে রাসুলের(সাঃ) নামে চালান হয়েছে আবুবকরের অবৈধ খলিফা নির্বাচনকে বৈধতা দেবার জন্য।

উষ্ট্রারোহিনী নারী সর্বোত্তমঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায় ৩,হাদিস# ৩১৮০,অধ্যায় ৪,হাদিস# ৪৭০৯,৪৯৬৫ অনুযায়ী সর্বোত্তম মহিলা হচ্ছেন উষ্ট্রারোহিনী এবং সতী-সাধবী হচ্ছে কুরাইশ মহিলারা।অনুচ্ছেদ ২৯ এ বর্নিত হাদিস অনুযায়ী মরিয়ম(সাআ) রমনীকুলের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ট।আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায় ৩,হাদিস# ৩১৮০ অনুযায়ী তিনি কখনও উটে চড়েননি।তাই প্রথমে উল্লেখিত হাদিসগুলি সত্য হলে(উষ্ট্রারোহিনী),মরিয়ম(সাআ)এর শ্রেষ্টত্ব সংক্রান্ত হাদিসগুলি মিথ্যা,কারন তিনি উটে চড়েননি। আসলে মুল ব্যাপারটি হল হজরত আয়েশা(রাঃ) উটের পিঠে চড়ে ‘জঙ্গে জামালের’ যুদ্বে অংশ নিয়েছিলেন। উষ্ট্রারোহিনী হিসাবে তিনি সর্বোত্তম নারীর স্বীকৃতি লাভ না হলে তো ‘জঙ্গে জামালের’ যুদ্বে নিহত মুসলমানদের দায় তাকেই নিতে হবে।আসলে হজরত আয়েশার(রাঃ) অপরাধ গোপন ও তাঁকে সর্বোত্তম স্থানে উঠানোর ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে এসমস্ত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন হাদিস রচনার মাধ্যমে।



জন্মের সময় শয়তানের টোকা মারাঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়-৩,হাদিস# ৩০৪৪,৩১৭৮,অধ্যায়-৪,হাদিস#৪১৮৮) আবু হুরায়রা(রাঃ) দ্বারা বর্ননা করা হয়েছে যে, “প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্মের সময় তাঁর পার্শ্ব দেশে শয়তান আঙ্গুল দ্বারা টকা মারে,ব্যতিক্রম শুধু ঈসা ইবনে মরিয়ম(আ)”।অদ্ভুত,বানোয়াট এসমস্ত মনগড়া হাদিস কি এই যুগে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে?হাদিসটির ভাষ্য যদি সঠিক হয় তবে হজরত ঈসা ইবনে মরিয়ম(আঃ) বাদে অন্য সব নবী রাসুল(সাঃ),ইমাম(আঃ) গনকেও তাহলে শয়তান টকা মেরেছিল?অসম্ভব,এটা সত্য হতেই পারে না।কারন নবী,রাসুল(সাঃ) ও ইমাম(আঃ) গন আল্লাহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও নিস্পাপ ছিলেন।
আরও একটি মৌলিক বিষয় হাদিসের ব্যাপারে,তা হল আমরা কিভাবে বুঝবো একটি হাদিস জাল বা সহী?সেটাও রাসুল(সাঃ) আমাদের বাতলে দিয়েছেন।আর তা হল, যে হাদিস কুরানের আয়াতকে সমর্থন করে না সেটি জাল হাদিস(মুঃ আল বাকির,সহি আল কাফি,ভল্যুম-১,পাতা-৮,সংস্করন ১৪০২ হিজরী)।
বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি বাংলাভাষী পাঠকের কাছে নিবেদন,কেউ কি পারবেন,উপরে উল্লেখিত হাদিসকে সত্য বলে প্রমান করতে?

ইল্মে হাদিসের কয়েকটি পরিভাষাঃ
তাওয়াতুর,মুতাওতির,সনদ,মতন,মারফু,মাওকুফ,মাক্তু,মুযতারাব,মুদ্রায,মুত্তাসিল,মুনকাতি,মুরসাল,মুয়াল্লাক,মারুফ ও মুনকার,সহী,হাসান,গারীব,যাঈফ,মাঊযু,মাতরুক,,খবরে ওয়াহেদ,মাশহুর,আযীজ,হাদিসে কুদসী ইত্যাদি।
খবরে ওয়াহেদের নামে আবুবকরের(রাঃ) জাল হাদিসঃ
রাসুল নাকি আবুবকরকে(রাঃ) বলেছেন, “ আমরা নবীগনের কোন উত্তরাধিকারী নেই;আমরা যা কিছু রেখে যাই তার সবই জাকাত হিসাবে বায়তুল মাল”( বুখারী,৪র্থ খন্ড,পৃঃ৯৬;৫ম খন্ড,পৃঃ২৫, ২৬,১১৫,১১৭;৮ম খন্ড,পৃঃ১৮৫; নায়সাবুরি, ৫ম খন্ড,পৃঃ১৫৩-১৫৫; তিরমিজী,৪র্থ খন্ড,পৃঃ১৫৭-১৫৮;তায়লিসী,৩য় খন্ড, পৃঃ১৪২-১৪৩; নাসাঈ, ৭ম খন্ড,পৃঃ১৩২;হাম্বল,৪র্থ খন্ড,পৃঃ৪,৬,৯,১০;শাফী,৬ষ্ট খন্ড,পৃঃ৩০০; সাদ,২য় খন্ড,পৃঃ৮৬-৮৭;তাবারী,১ম খন্ড,পৃঃ১৮২৫;বাকরী,২য় খন্ড,পৃঃ১৭৩-১৭৪)।
এ হাদিসটি উত্তরাধীকার সংক্রান্ত কোরানের নির্দেশের পরিপন্থী।নবীদের উত্তরাধিকার সম্বন্ধ্বে কোরানে বর্নিত হয়েছেঃ
“ এবং সোলায়মান ছিল দাউদের উত্তরাধিকারী”(সুরা নামল,আয়াত# ১৬)। “সুতরাং তোমরা নিজের থেকে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী দাও যে আমার উত্তরাধিকারী হবে এবং ইয়াকুবের পরিবারের উত্তরাধীকারী হবে-বললেন জাকারিয়া”(সুরা মরিয়ম,আয়াত# ৫-৬)।
উপরোক্ত আয়াতগুলোতে ভৌত সম্পদের উত্তরাধিকারীকেই বুঝানো হয়েছে।কেউ কেউ মনে করেন এমন আয়াত মানুষের নবুয়তের জ্ঞানের উত্তরাধিকারীকে বুঝানো হয়েছে।এটা একটা অসাড় যুক্তি এবং বাস্তব বিবর্জিত কথা।কারন নবীদের জ্ঞান উত্তরাধিকারের বস্তু হতে পারে না এবং এটা উত্তরাধিকারের মাধ্যমে হস্তান্তর যোগ্য নয়।এমনটি হলে সকল নবীর বংশধর নবী হতেন।সেক্ষেত্রে কোন কোন নবীর পুত্র নবী হয়েছিলেন এবং অন্যরা এটা থেকে বঞ্চিত হয়েছে-এরুপ ব্যবধানের কোন অর্থ হয় না।

বুখারি শরিফে মুশরিক আবু জাহেলকে রক্ষার ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছেঃ
আব্দুল্লাহ(রাঃ) বলেন,বদর যুদ্বের দিন(আহত) আবু জাহেল যখন ইন্তেকালের মুখোমুখী,সে সময় তিনি তাঁর কাছে গেলেন।যে লোকটিকে তোমরা হত্যা করলে( অর্থাৎ আমাকে) তাঁর চেয়ে অধিকতর নির্ভরযোগ্য(উত্তম) আর কোন লোক আছে কি?(হাদিস# ৩৬৭৫,সোলায়মান প্রকাশনি)।


ইমাম/খতিব্দের প্রতি অনুরোধ মসজিদের মিম্বরে বসে সত্য প্রচার করুন।কখনো প্রচার করবেন না,কুরানের পর বিশ্বের সবচেয়ে সহী গ্রন্থ বুখারী শরীফ।
কৃ্ষি যন্ত্রপাতির বিরুদ্বে বুখারীর মিথ্যা হাদিস সংকলনঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়-২,হাদিস# ২১৫৩) বর্ননা করা হয়েছে, “কৃ্ষি কাজের যন্ত্রপাতি যে জাতির ঘরে প্রবেশ করে,আল্লাহ সেখানেই হীনতা ও নীচতা ঢুকিয়ে দেন”। একটি জাতিকে পঙ্গু করে ফেলার জন্য এধরনের জাল হাদিসই যথেষ্ট ।কারন পবিত্র কুরানের সুষ্পষ্ট আয়াত-“তোমরা নামাজের পরে জমিনে ছড়াইয়া পড়”।অর্থাত আল্লাহ পাক আমাদেরকে কাজ করতে বলেছেন।সেই কাজ হতে পারে কৃ্ষি কাজ,পড়ালেখা,গবেষনা ইত্যাদি।আর কৃ্ষি কাজ প্রত্যেক জাতির উন্নয়নের একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি।এই হাদিসের বক্তব্য ইসলামের রীতিনীতির পরিপন্থী,যা মহাসম্মানিত আল্লাহর রাসুলের(সাঃ) নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে।
হজরত সোলায়মানের(আঃ) স্ত্রী সহবাস প্রসঙ্গেঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়-৩,হাদিস# ২৬০৯,৩১৭২,অধায়-৫,হাদিস# ৪৮৫৯,অধায়-৬,৬১৫৩,৬১৭৬,৬২৫৩) আবু হুরায়রা(রাঃ) দ্বারা বর্নিত হয়েছে যে, “হজরত সোলায়মান(আঃ) এক রাতে ৭০-১০০জন স্ত্রীর নিকট গমন করেছিলেন”(বুখারী,হাদিস# ৩১৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন,)।আমরা জানি,রাসুল(সাঃ) বলেছেন, যে হাদিস কুরানের আয়াতকে সমর্থন করে না সেটি জাল হাদিস(মুঃ আল বাকির,সহি আল কাফি,ভল্যুম-১,পাতা-৮,সংস্করন ১৪০২ হিজরী)।এই হাদিসের আলোকে আমি মনে করি উল্লেখিত বুখারীর হাদিসটি ডাহা মিথ্যা।

রাসুল(সাঃ) কি আল্লাহকে সেজদার সময় হজরত আয়েশার(রাঃ) পা টিপতেন?
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়-১,হাদিস# ৩৬৯,৪৮৩,৪৮৯,১১৩০) বর্নিত হাদিস অনুযায়ী রাসুল(সাঃ) আল্লাহকে সেজদার সময় হজরত আয়েশার(রাঃ) পা টিপতেন এবং হজরত আয়েশা(রাঃ) তখন পা গুটিয়ে নিতেন।
আমরা একথা নির্দ্বিধায় জানি,আল্লাহ পাকের সম্মানিত রাসুল(সাঃ) অসভ্য ছিলেন না,বরং উমাইয়া শাসকগন ছিল চরম অসভ্য।তাঁদের অসভ্যতা জায়েজ করার জন্য তারা রাসুলের(সাঃ) নামে এধরনের জাল হাদিস রাসুলের নামে চালিয়ে উমাইয়ারা তাঁদের অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা চালিয়েছে।
রাসুল(সাঃ) কি কাবাঘর মেরামতকালে উলংগ হয়েছিলেন?
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়-১,হাদিস# ৩৫১,অধ্যায়-২,হাদিস# ১৪৭৮ ও অধায়-৩,হাদিস# ৩৫৪৪) হাদিস অনুযায়ী রাসুল(সাঃ) কাবাঘর মেরামতকালে উলংগ হন।যেই রাসুল(সাঃ) জন্মের পর থেকেই আল্লাহ পাকের সম্মানিত ফেরেস্তা দ্বারা প্রহরাধীন থাকতেন এবং আল্লাহ দ্বারা protected ছিলেন,সেই আল্লাহর রাসুল(সাঃ) কি উলংগ হয়েছিলেন কাবাঘর মেরামতকালে?একথাও কি আমাদের বিশ্বাস করতে হবে?বিশ্বের বিবেকবান মুমিন-মুসলমানদের কি এখনো জেগে উঠার সময় হয় নি?
সবার কাছে অনুরোধ,মিথ্যা হাদিস গুলো ছুড়ে ফেলুন।রাসুলের(সাঃ) পরিবারের(আঃ) সদস্যদের দ্বরা বর্নিত হাদিস মেনে চলুন।

ইয়াজিদের বায়াতের সমর্থনে বুখারি শরিফে বর্নিত হাদিসঃ
নাফি(রাঃ) থেকে বর্নিত,তিনি বলেন,যখন মদীনার লোকেরা ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার (রাঃ) বায়াত ভংগ করলো,তখন ইবনে উমর(রাঃ) তাঁর বিশেষ ভক্তবৃন্দ ও সন্তানদের সমবেত করলেন এবং বললেন, আমি নবীকে(সাঃ) বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য একটি করে ঝান্ডা(পতাকা) উত্তোলন করা হবে আর আমরা এ লোকটির(ইয়াজিদের) প্রতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বর্নিত শর্তানুযায়ী বায়াত গ্রহন করার পর তাঁর বিরুদ্বে যুদ্বের প্রস্তুতি গ্রহনের চেয়ে বড় কোন বিশ্বাসঘাতকতা আছে বলে আমি জানি না।আমি যেন কারো সম্পর্কে ইয়াজিদের বায়াত ভংগ করেছে বা সে আনুগত্য করছে না জানতে না পাই।অন্যথায় তাঁর ও আমার সম্পর্ক বিচ্ছিন হয়ে যাবে।(বুখারি শরিফ,হাদিস# ৬৬২৬,অনুবাদঃ মওলানা আজিজুল হক,প্রকাশকঃ সোলেমানিয়া বুক ডিপো,৩৬,৪৫, বাংলাবাজার, ঢাকা-১০০০,প্রকাশকাল-২০০৬।

ওহুদের যুদ্ব ক্ষেত্র থেকে পালান হজরত আবুবকর(রাঃ) ও ওমরের(রাঃ) নামে শ্রেষ্টত্বের হাদিসঃ
আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী শরিফে(অধ্যায়-১,হাদিস#২২,৮২,৩৮৭,৪৪৬-৪৪৭,৪৯৪,১৩০২,অধ্যায় ৩, হাদিস# ২৬৩১,৩০০২,৩২১১,৩৩৬২,৩৩৮২-৮৮,৩৩৯০,৩৩৯২,৩৩৯৪,৩৩৯৬,৩৩৯৯,৩৪০০-০২,৩৪০৪-০৫,৩৪০৭-০৮,৩৪১০-২০,৩৪২৪,৩৬১৭;অধ্যায়-৪,হাদিস# ৪০১২,৪১২৫,৪৪২৫;অধ্যায়-৫,হাদিস# ৪৮৪৩-৪৪,৪৮৫৪,৫৭৯৮;অধ্যায়-৬,হাদিস# ৬১৭০,৬২৭০,৬৫২১-২৪,৬৫৩৩-৩৯,৬৯৫৭) আবুবকর ও ওমরের শ্রেষ্টত্ব বর্ননা করা হয়েছে এবং রাসুলের(সাঃ) নামে বলা হয়েছে,তিনি বলেছেন,”তারপরে আর কেহ নবী হলে ওমর নবী হতেন”(হাদিস# ৩৪১৪,বুখারী,আধুনিক প্রকাশনী)।অপর এক বর্ননায় পাওয়া যায় যে, “ আবুবকরের ঈমান একদিকে,আর সকল মুমিনের ঈমান একত্রে অন্যদিকে হলে,আবুবকরের একার ঈমান বেশী হবে”।হজরত আবুবকর(রাঃ) ও ওমরের(রাঃ) উভয়েই ওহুদের যুদ্ব ক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেছিলেন(মা’রেফুল কুরান,পাতা-২০০-০১,২০৮)।রাসুলকে(সাঃ) যুদ্ব ক্ষেত্রে একা ফেলে তারা চরম স্বার্থপরতার পরিচয় দিয়েছিলেন।অথচ পবিত্র কুরান বলছে, “ যুদ্ব ক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা হারাম( সুরা আনফাল,আয়াত# ১৫)।হাদিস জালকারীগন পরাস্ত হন,নীচের লেখাটি থেকে সুষ্পষ্ট প্রমান পাওয়া যায়ঃ



হজরত আয়েশার(রাঃ) হত্যাকারী মুয়াবিয়াকে(লা’নত) রক্ষার চেষ্টা করেছেন বুখারী সংকলক ইসমাইল বুখারী
হোমায়দ ইবনে আব্দুর রশিদ(রাঃ) বলেন,আমি হযরত মুয়াবিয়াকে(রাঃ) একদা খোতবার মধ্যে বলতে শুনেছি,তিনি বলেন,আমি রাসুলকে(সাঃ) বলতে শুনেছি,তিনি ইরশাদ করেছেনঃআল্লাহ যার কল্যান মঙ্গলের ইচ্ছা করেন তাঁকে দ্বীনি ইলম দান করেন।আমি বন্টনকারী এবং আল্লাহ হলেন দাতা।এ উম্মত সর্বদা আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্টিত থাকবে।যারা তাঁদের বিরোধীতা করবে,কেয়ামত আসা পর্যন্ত বিরোধীরা কখনও তাঁদের ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী,হাদিস# ৭১,প্রকাশক ঃসোলায়মানী বুক হাউস,একুশে বই মেলা,২০০৬)।
সম্মানিত পাঠক খেয়াল করুন,মুয়াবিয়া ছিল হজরত আয়েশার(রাঃ) হত্যাকারী।মুয়াবিয়া গর্ত খুড়ে গর্তের ভিতর গরম চুন ঢেলে তাতে হজরত আয়েশাকে(রাঃ) নিক্ষেপ করে হত্যা করে। মুয়াবিয়ার বাপ আবু সুফিয়ান রাসুলের(সাঃ) বিরুদ্বে ২২ বছরে ২৬টি যুদ্বের নেতৃ্ত্ব দেন।মুয়াবিয়ার মা হেন্দা ছিল রাসুলের(সাঃ) চাচা হামজার(রাঃ) কলিজা ভক্ষনকারীনি মহিলা এবং সে ছিল ততকালীন আরবের প্রতিষ্টিত পতিতা। মুয়াবিয়ার কুপুত্র ইয়াজিদ ছিল রাসুল(সাঃ) ঘোষিত বেহেস্তের নেতা হজরত ইমাম হুসাইনের(সাঃ) হত্যাকারী। হাদিসটির একটি অংশ-“এ উম্মত সর্বদা আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্টিত থাকবে।যারা তাঁদের বিরোধীতা করবে,কেয়ামত আসা পর্যন্ত বিরোধীরা কখনও তাঁদের ক্ষতি করতে পারবে না”।হাদিসের একথাটি মোটেই সঠিক না।কারন রাসুলের(সাঃ) উম্মত সর্বদা আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্টিত থাকেন নি।রাসুলের(সাঃ) ইন্তেকালের পরেই উম্মতের একটি অংশ রাসুলের(সাঃ) মনোনীত উত্তরাধীকারী ইমামকে ত্যাগ করে নিজেরা খলিফা হয়েছিল।এরপরের মুসলমানদের যে ক্ষতি উমাইয়া ও আব্বাসীয়রা করেছে ,ইতিহাস তাঁর সাক্ষী হয়ে আছে।আশা করি কুরান ও নবী পরিবারের(আঃ) অনুসারীরা এব্যাপারে আরও বিস্তারিত সবাইকে জানাবেন।ইনশাআল্লাহ-চেপে রাখা ইতিহাস থেকে মুমিন-মুসলমানেরা শিক্ষা গ্রহন করবেন।


রাসুল(সাঃ) কাচা রসুন খেতে নিষেধ করেছেন?
৩৯০০/আব্দুল্লাহ বিন ওমর(রাঃ) বলেন,খায়বার যুদ্বের সময় রাসুল(সাঃ) কাচা রসুন এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।রসুন খেতে নিষেধ করেছেন এ কথা নাফে(রঃ) এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন-একথা হজরত সালেম দ্বারা বর্নিত।(বুখারী,হাদিস# ৩৯০০,প্রকাশক ঃসোলায়মানী বুক হাউস,একুশে বই মেলা,২০০৬)।
বুখারী শরিফের হাদিসে হজরত আলীকে(আঃ) অপমান করা হয়েছে
হজরত আলী(রাঃ) থেকে বর্নিত,আমি এমন এক ব্যক্তি ছিলাম,যে,আমার ‘মযী’ অধিক বের হত।এ মাসয়ালা সম্পর্কে অবগত হবার জন্য আমি এক ব্যক্তিকে আদেশ করলাম,তিনি যেন রাসুলাল্লাহকে(সাঃ) প্রশ্ন করে জেনে নেন যেহেতু তাঁর বেটি আমার স্ত্রী(আ্মি তাঁকে এ মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করতে লজ্জা বোধ করছি)।অতপর তিনি এ মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করলে হুযুর(সাঃ) বললেন,মযী বের হবার পর অযু করতে হবে ও পুরুষাংগ ধুয়ে নিতে হবে।(বুখারী,হাদিস# ২৬৭,প্রকাশকঃসোলায়মানী বুক ডিপো,,২০০৬ সাল)।

সম্মানিত পাঠক,আমরা জানি হজরত আলী(আঃ) হচ্ছেন রাসুলের(সাঃ) প্রধান সাহাবী,২৩ বছরের কুরান লেখক,হাফিজ-ই-কুরান,রাসুল(সাঃ) ঘোষিত জ্ঞানের নগরীর দরজা,শেরে খোদা,রাসুলের(সাঃ) নেতৃত্বে সমস্ত যুদ্বের বিজয়ী বীর।রাসুলের(সাঃ) বানী,” জুলফিকারের মত কোন তরবারী নেই, আলীর মত কোন বীর নেই”।অথচ লক্ষ্য করুন,কিভাবে বুখারীর সংকলিত হাদিসে হজরত আলীকে(আঃ) অপমান করা হয়েছে।কুরান ও নবী পরিবারের ১ম ইমাম হজরত আলীর(আঃ) শানে এধরনের অসভ্য,নির্লজ্জ মিথ্যাচার কুরান বিরোধী।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.