নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেশ , মানুষ

জীবনের সব কিছু আললাহর সন্তুষ্টির জন্য

আল মাহদী ফোর্স

কোরান ও নবী পরিবারের আঃ অনুসারী।

আল মাহদী ফোর্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাসুল(সা:) ঘোষতি ৭ম ইমাম

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩১

ইমাম মুসা কাজিম(আঃ)-২

জ্ঞানগর্ভ বিতর্ক ও কথোপকথন ঃ
আমাদের ইমামগণ ঐশী জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন,ফলে †য †কান প্রশ্নই তাদেরকে করা হত তার সঠিক, পূর্ণ ও প্রশ্নকারীর †বাধগম্য তার পরিমাণে জবাব দিতেন। যে কেউ এমন কি শত্র“রাও যদি ইমাম (আ.) গণের সাথে জ্ঞানগর্ভ ও তত্ত্বীয় আলোচনায় বসত, স্বীয় অক্ষমতাকে স্বীকার করার পাশাপাশি তাঁদের (ইমাম (আ.) গণের) বিস্তৃত চিন্তা শক্তি ও সংশি−ষ্ট বিষয়ের উপর পূর্ণ দখলের কথা অকপটে স্বীকার করত।
হারুনুর রশিদ ইমাম কযিম (আ.) কে মদীনা থেকে বাগদাদ নিয়ে আসল এবং তাঁর সাথে বিতর্কে লিপ্ত হল। হারুন ঃ অনেকদিন যাবৎ ভাবছি আপনার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করব, যা আমার মনে †জগেছে। আজোবধি কাউকে জিজ্ঞাসা করিনি। আমাকে বলা হয়েছে †য, আপনি কখনোই মিথ্যা বলেন না। আমার প্রশ্নের স?িক ও সত্য জবাব প্রদান করুন! ইমাম (আ.) ঃ যদি আমাকে বাক স^াধীনতা দাও, তবে †তামার প্রশ্ন স¤পর্কে আমি যা জানি, তা †তামাকে অবহিত করব। হারুন ঃ আপনি স^াধীন। আপনার যা বলার মুক্তভাবে ব্যক্ত করতে পারেন... ...। যাহোক আমার প্রথম প্রশ্ন হলঃ †কন আপনি এবং জনগণ বিশ^াস করেন †য, আপনারা আবু তালিবের সন্তানরা, আমরা আব্বাসের সন্তানদের উপর শ্রেষ্টত্ব রাখেন। অথচ আমরা এবং আপনারা একই বৃক্ষের অংশ। আবু তালিব ও আব্বাস উভয়েই মহানবীর (সা.) চাচা ছিলেন এবং আত্বীয়তার দৃষ্টিকোণ †থকে তাদের মধ্যে †কান পার্থক্য †নই। ইমাম (আ.) ঃ আমরা †তামাদের †চয়ে মহানবীর (সা.) †বশী নিকটবর্তী। হারুন ঃ কিরূপে ? ইমাম (আ.) ঃ †যহেতু আমাদের পিত আবু তালিব ও মহানবীর (সা.) পিতা পরস্পর আপন ভাই (পিতা ও মাতা একই) ছিলেন কিন্তু আŸŸাস আপন ভাই ছিলেন না (†কবলমাত্র মাতৃকুল †থকে)। হারুন ঃ অন্য প্রশ্ন ঃ †কন আপনারা দাবী করেন †য, আপনারা মহানবী (সা.) †থকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবেন,অথচ আমরা জানি †য, যখন নবী (সা.) পরলোক গমণ করেছেন, তখন তার চাচা আŸŸাস (আমাদের পিতা) জীবিত ছিলেন। কিন্তু অপর চাচা আবু তালিব (আপনাদের পিতা) জীবিত ছিলেন না। আর এটা সকলের জানা †য, যতক্ষণ পর্যন্ত চাচা জীবিত আছেন, চাচার সন্তানের নিকট উত্তরাধিকার †পŠঁছে না। ইমাম (আ.) ঃ আমি স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারি †তা? হারুন ঃ আলোচনার শুরুতেই আমি বলেছি, মতামত ব্যক্ত করার ব্যাপারে আপনি স^াধীন। ইমাম (আ.) ঃ ইমাম আলী (আ.) বলেন ঃ সন্তানের উপস্থিতিতে, পিতা, মাতা ও স্বামী, স্ত্রী ব্যতীত †কউ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে না। আর সন্তান থাকলে চাচার উত্তরাধিকার লাভের ব্যাপারটি †কারানে কিংবা †রওয়ায়েতে প্রমাণিত হয়নি। অতএব, যারা চাচাকে পিতার নিয়মের অন্তর্ভূক্ত করে, তারা নিজ †থকেই বলে এবং তাদের কথার †কান ভিত্তি †নই। (অতএব, নবীকণ্যা যাহরার (সা.আ.) উপস্থিতিতে তাঁর চাচা আŸŸাসের নিকট উত্তরাধিকার †পŠঁছে না)। তাছাড়া আলীর (আ.) স¤পর্কে মহানবীর (সা.) পক্ষ †থকে বর্ণিত হয়েছে †য, আলী †তামাদের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট বিচারক। ওমর ইবনে খাত্তাব †থকে ও বর্ণিত হয়েছেঃ ‘‘আলী আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ট বিচারক।’’ এ বাক্যটি হল সামগ্রীক তাৎপর্যবহ যা হযরত আলীর (আ.) জন্য প্রমাণিত হয়েছে। কারণ, সকল প্রকারের বিদ্যা †য গুলোর মাধ্যমে স্বীয় সাহাবীগণকে প্রশংসা করেছেন †যমন ঃ কোরানের জ্ঞান, আহকামের জ্ঞানও সর্ব বিষয়ে জ্ঞান ইত্যাদি সবকিছুই ইসলামী বিচারের তাৎপর্যে নিহিত রয়েছে। যখন বলা হবে আলী (আ.) বিচারকার্যে সকলের †চয়ে উৎকৃষ্ট, তবে তার অর্থ হবে, তিনি সর্বপ্রকার জ্ঞানেই সকলের †চয়ে শ্রেষ্ট। (অতএব আলীর (আ.) এ উক্তি †য, সন্তানের বর্তমানে চাচা উত্তরাধিকার প্রাপ্য হবে না তা চূড়ান্ত দলিল রূপে পরিগণিত হবে। সুতরাং একে গ্রহণ করা উচিৎ, না কি তা †য বলে ঃ চাচা আইনগত ভাবে পিতার স্থানে। কারণ, নবী (সা.) এর বক্তব্য অনুসারে, আলী (আ.) দ্বীনের আহকাম স¤পর্কে সর্বাপেক্ষা †বশী জ্ঞাত)।
হারুন ঃ অপর প্রশ্ন ঃ কেন? আপনারা মানুষকে অনুমতি †দন আপনাদেরকে রাসূলের (সা.) সাথে স¤পর্কিত করতে এবং এ কথা বলতে ঃ আল−াহ্র রাসূলের (সা.) সন্তান। অথচ আপনারা হলেন আলীর (আ.) সন্তান। কারণ, প্রত্যেককেই তার পিতার সাথে স¤পর্কিত করা হয় (মাতার সাথে নয়)। আর মহানবী (সা.) হলেন আপনাদের নানা। ইমাম (আ.) ঃ যদি মহানবী (সা.) জীবিত হয়ে †তামার কণ্যাকে বিয়ে করতে চান, তবে তুমি কি †তামার কন্যাকে তাঁর সাথে বিয়ে দিবে? হারুন ঃ সুবহান আল−াহ, †কন †দব না। বরং ঐ অবস্থায় আরব, অনারব এবং †কারাইশদের সকলের উপর গর্ববোধ করব। ইমাম (আ.) ঃ কিন্তু নবী (সা.) জীবিত হলে আমার কন্যার জন্য প্রস্তাব দিবেন না, কিংবা আমি ও দিব না। হারুন ঃ †কন? ইমাম (আ.) ঃ কারণ, তিনি আমার পিতা (যদিও মাতৃদিক †থকে) কিন্তু †তামার পিতা নন। (অতএব, নিজেকে আল−াহর রাসূলের সন্তান বলে মনে করতে পারি)। হারুন ঃ তাহলে †কন আপনারা নিজেদেরকে রাসূলের (সা.) বংশধর বলে মনে করেন। অথচ বংশ পিতৃকুল †থকে নির্ধারিত হয়, মাতৃকুল †থকে নয়। ইমামঃ আমাকে এ প্রশ্নের জবাব প্রদান †থকে অব্যাহতি দাও। হারুনঃ না, আপনাকে জবাব দিতে হবে; আর †সই সাথে কোরান †থকে দলিল বর্ণনা করুন...। ইমাম ঃ তাহার বংশধর দাউদ, সুলায়মান, আয়্যুব, য়ূসুফ, মূসা ও হারুনকেও, আর এভাবে সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করি এবং যাকারিয়া, ইয়াহিয়া, ঈসা ... ( সূরা আনয়াম-৮৪,৮৫)। এখন †তামাকে প্রশ্ন করব ঃ এ আয়াতে †য, ঈসা (আ.) ইব্রাহীমের (আ.) বংশ বলে পরিগণিত হয়েছে, তা কি পিতৃকুল †থকে, না মাতৃকুল †থকে? হারুন ঃ কোরানের দলিল †মাতাবেক ঈসার (আ.) †কান পিতা ছিলেন না। ইমাম (আ.) ঃ তাহলে মাতৃকুল †খকেই বংশধর বলে পরিগণিত হয়েছে। আমরাও আমাদেও মাতা ফাতিমার (আল−াহ তাঁর উপর শান্তি বর্ষণ করুন) দিক †থকে রাসূলের বংশধর বলে পরিগণিত হই। অন্য একটি আয়াত পড়ব কি ? হারুন ঃ পড়ূন! ইমাম (আ.) ঃ মোবাহেলার আয়াতটি পড়ব ঃ “তোমার নিকট জ্ঞান আসার পর যে কেউ এ বিষয়ে তোমার সাথে তর্কে লিপ্ত হয়, তাকে বল; আস, আমরা আহবান করি আমাদের পুত্রগণকে ও তোমাদের পূত্রগণকে, আমাদের নারীগণকে ও তোমাদের নারীগণকে, আমাদের নিজ দিগকে ও তোমাদের নিজদিগকে; অতঃপর আমরা বিনীত আবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের উপর দেই আললাহর লা’নত (সূরা আল ইমরানÑ৬১)।”
কেউই এরূপ দাবী করেনি †য, মহানবী (সা.) নাজরানের নাসারাদের সাথে †মাবাহেলা করার জন্য আলী, ফাতিমা, হাসান ও †হাসাইন (আলাই হিমুচ্ছালাম ব্যতীত অন্য কাউকে নিজের সঙ্গী করেছেন। অতএব উলি−খিত আয়াতে আব না’য়ানার (আমাদের পুত্রগণ) দৃষ্টান্ত হলেন ইমাম হাসান (আ.) ও †হাসাইন (আ.), যদি ও তারা মাতৃ দিক †থকে নবীর (সা.) সাথে স¤পর্কিত এবং তাঁর কন্যার সন্তান। হারুন ঃ আমার নিকট কিছু চাইবেন কি? ইমাম ঃ না, আমার নিজের গৃহে প্রত্যাবর্তণ করতে চাই। হারুন ঃ এ বিষয়ে চিন্তা করে †দখব ... ... ।


ইবাদত ঃ
ইমাম মূসা কাযিমের (আ.) বিশেষ খোদা পরিচিতি, মহান প্রভুর প্রতি, তাঁর সত্তাগত †জ্যাতির প্রতি তাঁর আত্মিক আকর্ষণ যা পবিত্র ইমামগণের (আ.) বিশেষ বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি সকল কিছূই তাঁকে †প্রমময় ইবাদত ও উপাসনার দিকে ধাবিত করেছিল। তিনি ইবাদতকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য বলে মনে করতেন, যেরূপ মহান আললাহ বলেছেন ঃ সামাজিক কর্মকান্ডের অবসরে তিনি কিছুকেই এর সমকক্ষ বলে মনে করতেন না। যখন হারুনের নির্দেশক্রমে তিনি কারারুদ্ধ হয়েছিলেন, তখন বলেছিলেন ঃ প্রভূ হে! কতদিন তোমার নিকট চেয়েছি আমাকে (†কবল মাত্র) †তামার ইবাদতের জন্য অবসর দাও। এখন আমার প্রার্থণা তুমি গ্রহণ করেছ, সুতরাং এজন্য †তামার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
এ উক্তিটি কারাগারে আসার পূর্ব পর্যন্ত সামাজাকি কর্মকান্ডে ইমামের (আ.) অপরিসীম ব্যস্ততার প্রমাণবহ। যখন, ইমাম (আ.) রাবির কারাগারে ছিলেন, হারুন কখনো কখনো ইমামের (আ.) কারাগারের ছাঁদে আসত এবং কারাভ্যন্তরে উঁকি দিয়ে †দখত। যতবারই তাকাত, প্রত্যেকবারই †দখত একগুচ্ছ জামা কাপড়ের মত কারাগারের এককোণে পড়ে আছে এবং সেখান †থকে স্থানান্তরিত হচ্ছে না। একবার জিজ্ঞাসা করেছিল ঐ †পাশাকগুলো কার? রাবি বলল ঃ †পাশাক নয়, তিনি মূসা ইবনে জাফর (আ.) যিনি অধিকাংশ সময়ই প্রভুর ইবাদতের মধ্যে কাটান ও সিজদাবনত হয়ে মাটিতে চুম্বন করেন। হারুন বলল ঃ প্রকৃতই তিনি বনি হাশেমের ইবাদতকারীদের অন্তর্ভূক্ত। রাবি জিজ্ঞাসা করল ঃ তবে †কন কারাগারে তার উপর কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়ে থাকেন। হারুন বলল ঃ হায়! এছাড়াতো আমার †কান উপায় †নই!! একবার হারুন এক যুবতী দাসীকে তাঁর সম্মানে পা?িয়েছিল। আর এর আড়ালে এ কুমন্ত্রণা ছিল †য, যদি ইমাম ঐ দাসীর প্রতি আকৃষ্ট হন, তবে তা হবে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের উত্তম হাতিয়ার। ইমাম (আ.) ঐ কন্যার আনয়নকারীকে বললেন ঃ †তামরা এ উপহারের প্রতি প্রলুব্ধ এবং এ গুলোই †তামাদের দম্ভ, এ উপঢেŠকন ও এগুলোর মত কিছুই আমার প্রয়োজন †নই। হারুন (আল−াহর অভিশম্পাত তার উপর) ক্রুদ্ধ হল এবং ইমামকে (আ.) এ কথা বলার নির্দেশ দিল †য, আমরা আপনার খুশীমত আপনাকে কারাবন্দী করিনি। (অর্থাৎ এ দাসীর কারাগারে থাকাটাও আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না।) কালাতিপাত হয়নি, ইমাম ও ঐ দাসীর স¤পর্কের ব্যাপারে সংবাদদাতা গুপ্তচররা হারুনকে সংবাদ দিল †য,ঐ কন্যা অধিকাংশ সময়ই †সজাদাবনত থাকে। হারুন বলল ঃ আল−াহর শপথ মূসা ইবনে জা’ফর (আ.) ঐ কন্যাকে যাদু করেছে ... ...।
দাসীকে নিয়ে আসার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, †স ইমামের (আ.) সুনাম ব্যতীত কিছুই বলে নি। হারুন ঐ দাসীকে নিজেদের নিকট আটক রাখার জন্যে তার প্রহরীদেরকে নির্দেশ দিল যাতে †স কারো নিকট এ ব্যাপারে কিছু না বলতে পারে। ঐ দাসী অনবরত এবাদত ও উপসনায় মশগুল থাকত এবং ইমামের (আ.) শাহাদাতের কিছু দিন পূর্বে পৃথিবী †থকে বিদায় গ্রহণ করেছিল। ইমাম (আ.) এ †দায়াটি প্রায়ই পড়তেন ঃ প্রভূ †হ! আমি †তামার কাছে সহজ মৃত্যু কামনা করি, আর কামনা করি বিচার দিবসে সহজ হিসাব।
ইমাম মুসা কাযিম (আ.) এত সুন্দর ও সুললিত কন্ঠে কোরান পড়তেন যে, যে কেউ তাঁর কোরান পাঠ শুনত, ক্রন্দন করত। মদিনার অধিবাসীরা তাঁকে ‘যাইনুল মুতাহাজ্জেদীন’ অর্থাৎ ‘‘রাত্রি জাগরণকারীদের †সŠন্দর্য’’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।

মহানুভবতা, সহিষ্ণুতা ও নম্রতা ঃ
ইমামের (আ.) মহানুভবতা ও সহনশীলতা ছিল অতুলনীয় যা অপরের জন্য ছিল আদর্শ। তার ‘কাযিম’ উপাধিটি যা তাঁর নামের সাথে সংযোজিত হয়, তা তাঁর এ বৈশিষ্ট্য †থকেই উৎসারিত এবং †ক্রাধ অবদমনকারী ও সহিষ্ণু হিসেবে তার খ্যাতির প্রমাণবহ। যে দুঃসময়গুলোতে, আব্বাসীয়রা ইসলামী সমাজের সর্বত্র শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল এবং মানুষের ধন-স¤পদ বায়তুল মালের নামে হরণ করে নিজেদের আরাম-আয়াসের পথে ব্যয় করত। আর তাদের অন্যায় ও †স্বচ্ছাচারী তার ফলে দারিদ্র্যের মাত্রা বৃদ্ধি †পয়েছিল। অধিকাংশ মানুষ অসামাজিক, সংস্কতি বিবর্জিত ও দরিদ্র হয়ে পড়েছিল। অপরদিকে আলাভীদের বিরুদ্ধে আব্বাসীয়দের অপপ্রচার নির্বোধ মানুষের মন তাদের স¤পর্কে বিষিয়ে তুলেছিল। কখনো কখনো অজ্ঞতাবশতঃ †কউ †কউ ইমামের (আ.) সাথে দূর্ব্যবহার করত। কিন্তু ইমাম স^ীয় মহানুভবতা ও সমুন্নত আচরণের মাধ্যমে তাদের †ক্রাধ সংবরণ করতেন এবং সুšদর ভাষায় তাদেরকে উপদেশ দিতেন। মদিনায় বসবাসরত দ্বিতীয় খালিফার বংশধরদের মধ্যে এক ব্যক্তি ইমামকে (আ.) কষ্ট দিত এবং কখনো ইমামকে (আ.) †দখলে দুর্ণাম ও অবমাননা করত।
ইমামের সঙ্গীদের মধ্যে কেউ কেউ ঐ ব্যাক্তিকে হত্যা করতে পরামর্শ দিয়েছিল। ইমাম (আ.) তাদেরকে কঠোর ভাবে এ কর্ম †থকে বিরত রাখলেন। একদা ইমাম মদিনার বাইরে এক শস্যক্ষেতে ওকে †দখলেন। পশুর পৃষ্?ে আরোহণ করলেন ও তার নিকটবর্তী হলেন এবং পশুর পৃষ্?ে আরোহী অবস্থায়ই শস্য †ক্ষতে প্রবেশ করলে †স চিৎকার করে বলল ঃ আমার শস্য পদদলিত করবেন না! হযরত তার কথায় কান না দিয়ে তার কাছে †গলেন এবং যখন তার কাছে †পŠঁছলেন , উদার দয়াদ্র ভঙ্গিতে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন ঃ এ ফসলের জন্য কত খরচ করেছ? বলল ঃ একশত দিনার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন ঃ কতটা লাভ পাওয়ার আশা কর? বলল ঃ অদৃশ্যের ব্যাপার, আমি জানি না। ইমাম বললেন ঃ আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম কতটা তুমি আশাবাদী? বলল ঃ দুইশত দিনার লাভ পাওয়ার আশা করি। হযরত, তাকে তিনশত দিনার প্রদান করলেন এবং বললেন এ ফসল ও †তামার নিজেরই থাকল। মহান আল−াহ †তামাকে যা কামনা করছ তা দান করবেন। লোকটি উঠে দাঁড়াল এবং হযরতের মাথায় চুম্বন করল এবং তাঁর কাছে পূর্ববর্তী অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইল। ইমাম স্মিত হাসলেন এবং ফিরে আসলেন। পরদিন ঐ ব্যাক্তি মসজিদে বসেছিল। ইমাম (আ.) †সখানে প্রবেশ করলেন। ঐ ব্যাক্তি ইমামকে †দখেই বলতে লাগল ঃ মহান আল−াহ যথার্থই অবগত আছেন †য, স্বীয় রিসালাত কাকে দিবেন (অর্থাৎ ইমাম মূসা ইবনে জা’ফর (আ.) প্রকৃতই ইমামতের †যাগ্য।
তার বন্ধুরা আশ্চর্য হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল ঃ ঘটনা কী, পূর্বে †তা তুমি তার কুৎসা রটাতে? সে পূনরায় ইমামকে †দায়া করল এবং তার বন্ধুরা তার সাথে বিবাদে লিপ্ত হল .. ইমামের †য সকল সঙ্গীরা ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করতে †চয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন ঃ †কানটি উত্তম †তামাদের নিয়্যাত, না আমি †য স্বীয় ব্যবহারের মাধ্যমে তাকে পথে আনলাম তা?

ইমামের বদান্যতা ও দানশীলতা ঃ
ইমাম মূসা কাযিম (আ.) পৃথিবীকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে †দখতেন না। যদি †কান অর্থ স¤পদ তাঁর হস্তগত হত, তবে তার মাধ্যমে চাইতেন কল্যাণকর্ম স¤পাদন করতে, বিপর্যস্ত, পরিশ্রান্তদের আত্মাকে প্রশান্ত করতে, ক্ষুধার্তকে অন্ন দিতে আর বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দিতে। মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ বাকরী বলেন ঃ অর্থ নৈতিকভাবে খুব সংকটের মধ্যে ছিলাম এবং অর্থ ঋণ করার জন্য মদিনায় †গলাম। কিন্তু এ দিক ও দিক †ঘারা ফিরা করেও সফল হতে পারলাম না এবং খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আপন মনে ভাবলাম, আবুল হাসান মূসা ইবনে জাফরের (তাঁর উপর দূরূদ বর্ষিত †হাক) নিকট যাব এবং স^ীয় হতভাগ্য স¤পর্কে তার নিকট অভিযোগ করব। খুঁজতে খুঁজতে তাকে মদিনার বাইরে একটি গাঁয়ের শস্য †ক্ষত্রে কর্মরত অবস্থায় †পলাম। ইমাম আমাকে অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন করার জন্যে আমার নিকট আসলেন এবং আমার সঙ্গে আহার গ্রহণ করলেন। আহার গ্রহণ †শষে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার সাথে কি †কান কাজ আছে? তাঁকে সব ঘটনা খুলে বললাম।তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং শস্যক্ষেত্রের নিকটবর্তী একটি কু?রীতে †গলেন। ফিরে এসে আমাকে ছয়শত দিনার স্বর্ণমুদ্রা দিলেন। আমি আমার বাহনে আরোহণ করে গন্তব্যে ফিরে আসলাম। নব্বই বছর বয়স্ক ঈসা ইবনে মুহম্মদ বলেন ঃ একবছর খারবুজা ঃ (বাঙ্গী জাতীয় ফল), শশা ও কদুর চাষ করেছিলাম; †তালার সময়, পঙ্গপাল সব ফসল নষ্ট করে †ফলেছিল এবং আমার একশত বিশ দিনার ক্ষতি হয়েছিল। এ সময় হযরত ইমাম কাযিম (আ.) (†যন তিনি আমাদের সকলের অবস্থা স¤পর্কে অবগত) একদিন আমার নিকট আসলেন ও সালাম করলেন এবং আমার অবস্থা স¤পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন; সবিনয়ে নিবেদন করলাম পঙ্গপাল আমার সকল ফসল বিনষ্ট করে †ফলেছে। জিজ্ঞাসা করলেন ঃ কতটা ক্ষতি হয়েছে?
বললাম ঃ উটের খরচসহ ১২০ দিনার। ইমাম (আ.) আমাকে একশত পঞ্চাশ দিনার প্রদান করলেন। সবিনয়ে বললাম আপনি কল্যাণময় অস্তিত্ব, আমার শস্যক্ষেতে এসে একটু †দায়া করুণ। ইমাম আসলেন ও †দায়া করলেন এবং বললেন ঃ মহানবী (সা.) †থকে বর্ণিত হয়েছে †য, পঙ্গপালের উচ্ছিষ্ট এবং †য সকল স¤পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তার সাথে †লগে থাক (অর্থাৎ তা পরিত্যাগ করো না)। আমি ঐ জমিতে †সচ দিয়েছিলাম এবং মহান আল−াহ তাতে এমন বরকত দিয়েছিলেন †য দশ হাযার (দিনারের ফসল) বিক্রি করেছিলাম।

ইমামের বাণী ঃ
১। বিনয় হল তাতেই ঃ মানুষের সাথে সেরূপ আচরণ কর যেরূপ তুমি মানুষের কাছে আশা কর।
২। খোদা পরিচিতির পরই আলল্লাহর নৈকট্য লাভের সর্বোত্তম পন্থা হল নামায, পিতামাতার প্রতি সদাচরণ এবং হিংসা, স্বেচ্ছাচার, অহংকার ও দাম্ভিকতা পরিহার।
৩। যে প্রতারণা করে, কোন মুসলমানের নিকট কোন বস্তুর ত্র“টি †ঢকে রাখে কিংবা অন্য †কানভাবে তাকে প্রবঞ্চণা করে, †ধাঁকা †দয়, তার উপর আললাহর অভিস¤পাত অনিবার্য।
৪। কপট ও দ্বিমুখো হল আললাহর বান্দাদের নিকৃষ্টতম। দ্বীনী ভাইয়ের সম্মুখে তার প্রশংসা করে আর তার অবর্তমানে কুৎসা রটনা করে কিংবা যদি তার মুসলমান ভাই †কান বৈভব লাভ করে, তবে †স পরশ্রীকাতরতায় †ভাগে, আবার যখন তার উপর বিপদ আপতিত হয়, তবে তাকে সাহায্য করা †থকে বিরত থাকে।
৫। যদি †কউ পার্থিব জীবনের প্রতি আকৃষ্ট হয়, তবে তার হৃদয় †থকে আখেরাতের ভয় বিদায় গ্রহণ করে।
৬। মধ্যম ধরনের কর্ম হল সর্বোত্তম কর্ম।
৭। স্বীয় স¤পদসমূহকে যাকাত প্রদানের মাধ্যমে রক্ষা কর।

মহান আললাহর পক্ষ †থকে তার উপর দরূদ বর্ষিত †হাক, যিনি ছিলেন সত্য ইমাম; পথপ্রদর্শক হিসাবে ও ঐশী শিষ্টাচারে তিনি ছিলেন সর্বোত্তম। বিশ্বাসী ও শহীদগণের ঔষ্?াধার †থকে তার উপর বর্ষিত †হাক দরূদ।

ইমামের (আ.) ইমামত স¤পর্কে আলোচনা ঃ
আমাদের প্রিয় ইমামগণের রীতি ছিল নিজের পরবর্তী ইমাম (আ.), জ্ঞানগত, রাজনৈতিক ও দ্বীনী †কন্দ্ররূপে পরিচয় করানোর জন্য তাঁর (পরবর্তী ইমামের) নাম †ঘাষণা করতেন, যাতে একদিকে রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য এ পথের অপব্যাবহার করার মত †কান সুযোগ অবশিষ্ট না থাকে; অপরদিকে সত্য অনুসারীরা তাঁকে চিনে নিতে পারে। আর এ জন্যেই আŸŸাসীয়দের শ্বাসরূদ্ধকর দুঃশাসনের মধ্যেও তিনি নিজের পর ইমাম কাযিমের (আ.) ইমামত স¤পর্কে তাঁর মহান পিতা বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করেছেন। এখানে আমরা এরূপ কয়েকটি বিষয় উলে−খ করব ঃ
(১) আলী ইবনে জাফর (আ.) বলেন ঃ আমার পিতা ইমাম সাদিক (আ.) তাঁর একদল সাহাবীকে বলেছিলেন ঃ আমার সন্তান মূসা স¤পর্কে আমার আদেশ গ্রহণ কর, কারণ †স আমার সন্তানদের মধ্যে এবং যারা আমার স্মরণে আছে তাদের সকলের †চয়ে উত্তম। †স আমার উত্তরাধিকারী, আমার পর সকল বান্দাগণের উপর আল−াহর হুজ্জাত হবে।
(২) আমর ইবনে আবান বলেন ঃ ইমাম সাদিক (আ.) তাঁর পরবর্তী ইমামগণের (আ.) নাম বর্ণনা করেছিলেন। আমি তাঁর পুত্র ইসমাইলের নাম উলে−খ করলে, তিনি বললেন আললাহর শপথ এ কর্মে আমাদের †কান স্বাধীনতা †নই, এর দায়িত্ব আললাহর হাতে।
(৩) ইমাম সাদিকের (আ.) বিখ্যাত শীষ্যগণের মধ্যে যোরারাহ নামক একজন শীষ্য বলেন ঃ ঐ মহান ব্যক্তির (আ.) নিকট ছিলাম; তাঁর অন্যতম সন্তান মূসা (আ.) তাঁর ডান পার্শ্বে ছিলেন এবং একটি শবদেহ (যা তাঁর অন্য সন্তান ইসমাইলের) তাঁর সম্মুখে শায়িত ছিল। ইমাম জা’ফর সাদিক (আ.) আমাকে বললেনঃ যোরারাহ। যাও দাউদ রাকী, হোমরান ও আবু বাসিরকে (ইমামের তিনজন সহযোগী) †ডকে নিয়ে আস। আমি তাদেরকে †ডকে নিয়ে আসলাম। অন্যান্যরাও আসল এবং কক্ষ পরিপূর্ণ হয়ে †গল। ইমাম দাউদ রাকীকে বললেন ঃ শবদেহের উপর †থকে কাপড় সরিয়ে নাও। ইমাম যা বললেন, দাউদ তাই করল। অতঃপর তিনি বললেন ঃ দাউদ! †দখতো ইসমাইল জীবিত, না মৃত! সে বললঃ †হ আমার †নতা, মৃত। ইমাম একে একে প্রত্যেককে শবদেহ †দখালেন এবং সকলেই বলল †য ‘মৃত’। অতঃপর তিনি বললেন ঃ †হ প্রভু! তুমি সাক্ষী থাক (†য মানুষকে ভ্রান্তির হাত †থকে রক্ষা করার জন্য কতটা †চষ্টা করেছি)। অতঃপর মৃতকে †গাসল ও সুগন্ধি †মখে কাফন পরাতে নির্দেশ দিলেন। যখন সব কাজ স¤পন্ন হল পূনরায় †মাফাজ্জালকে আদেশ দিলেন ঃ তার মুখের কাফন খুলে দাও। মোফাজ্জাল তা-ই করল, যা ইমাম বললেন। অতঃপর জিজ্ঞাসা করলেন ঃ জীবিত না মৃত? †মাফাজ্জল সবিনয়ে জবাব দিল ঃ মৃত। পূনরায় উপস্থিত সকলকে জিজ্ঞাসা করলেন এবং সকলেই পূর্বের মত জবাব দিল। হযরত পূণরায় বললেন ঃ প্রভু †হ তুমি সাক্ষী থাক। কিন্তু তারপর ও একদল যারা আল−াহর †জ্যাতিকে নির্বাপিত করতে চায়, তারা ইসমাইলের ইমামতের বিষয়টি উত্থাপন করবে। এ সময় তার সন্তান হযরত মূসার (আ.) দিকে ইঙ্গিত করে বললেন ঃ
মহান আল−াহ স্বীয় †জ্যাতিকে নির্ধারণ করে থাকেন, যদি ও একদল তা না †চয়ে থাকে। ইসমাইলকে সমাধিস্থ করা হল। ইমাম উপস্থিত সকলকে জিজ্ঞাসা করলেন ঃ যাকে এখানে কবরস্থ করা হল †স †ক? সকলেই বলল ঃ আপনার সন্তান ইসমাইল। ইমাম বললেন ঃ প্রভু †হ! তুমি সাক্ষী থাক। অতঃপর স্বীয় সন্তান মূসাকে (আ.) ধরে বললেন ঃ সে সত্যের উপর ও সত্যের সাথে এবং কিয়ামত পর্যন্ত সত্য তার †থকে।
(৪) মানসূর ইবনে হাযিম বলেন †য ঃ ইমাম সাদিকের (আ.) নিকট নিবেদন করলাম ঃ আমার পিতা মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ †হাক, অহর্নিশ জীবন মৃত্যুর সম্মুখীন হয়; যদি আপনার †ক্ষত্রে এরূপ ঘটে তবে †ক আমাদের ইমাম হবেন? ইমাম তাঁর সন্তান আবুল হাসান মূসার (আ.) স্কন্ধে হাত রাখলেন এবং বললেন ঃ যদি আমার কিছু ঘটে আমার এ সন্তান †তামাদের ইমাম হবে। ইমাম মূসা কাযিম (আ.) তখন পাঁচ বছরের ছিলেন এবং ইমাম জাফর সাদিকের (আ.) অপর সন্তান আব্দুল−াহ (পরবর্তীতে †কউ †কউ তার ইমামতে বিশ্বাসী ছিল) †স সভায় আমাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন।
(৫) †শখ মুফিদ (আল−াহ তার পবিত্র আত্মার উপর অপরিসীম রহমত বর্ষন করুন) বলেন ঃ ষষ্? ইমামের (আ.) একদল সঙ্গী †যমন ঃ †মাফাজ্জল ইবনে ওমর, মা’ য়ায ইবনে কাসির, আব্দুর রহমান ইবনে হাজ্জাজ, ফাইয ইবনে †মাখতার, ইয়াকুব সিরাজ, †সালাইমান ইবনে খালিদ, সাফবানে জামাল এবং অন্যান্যরা (যাদের নাম উলে−খ করা সময়সাপেক্ষ) হযরত ইমাম কাযিমের (আ.) উত্তরাধিকারী হওয়ার ব্যাপারটি বর্ণনা করেছিলেন। অনুরূপ ইমামের (আ.) দু’ভাই ইসহাক ও আলী (যাদের তাকওয়া, ফযিলাত ও পরহেজগারীর ব্যাপারে †কান সšেদহ †নই) †থকেও বর্ণিত হয়েছে।
এছাড়া ষষ্? ইমামের পক্ষ †থকে এতটা গুরুত্ব ও সু¯পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে †য বিশেষ করে শীয়া এবং যারা ষষ্? ইমামের (আ.) সাথে সংশি−ষ্ট ছিলেন তাদের জন্য এটা সু¯পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট রূপে প্রতীয়মাণ ছিল †য, তাঁর পর তার প্রিয় পুত্র আবুল হাসান মূসা ইবনে জা’ফার আল কাযিম ইমাম হবেন, ইসমাইল (যিনি তাঁর পিতার বর্তমানেই পৃথিবী †থকে বিদায় নিয়েছিলেন) নন বা ইসমাইলের পুত্র মুহাম্মদ ও নন; কিংবা ইমাম সাদিকের (আ.) অন্য পুত্র আব্দুল−াহও নন। এতকিছুর পরও সত্য ইমাম জাফর সাদিকের (আ.) শাহাদাতের পর একদল তার পুত্র ইসমাইল বা ইসমাইলের পুত্র অথবা অন্য পুত্র আব্দুল−াহর ইমামতে বিশ্বাস স্থাপন করেছিল। আর তাঁদের জন্য †য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ করা হয়েছিল, তা †থকে বিচ্যুত হয়েছিল।

ছাত্রগণ ঃ
ইমামের জ্ঞান ও আচরণ, ইসলামের নবীর (আ.) ও তাঁর পবিত্র পূর্বপূরুষগণের জ্ঞান ও আচরণের প্রকাশ। সকল জ্ঞানপিপাসূ তার প্রতিষ্?ানের ঝর্ণাধারা †থকেই তৃষ্ণা নিবারণ করত এবং তাঁর ছাত্ররা এরূপে জ্ঞানার্জন করত †য স্বল্প সময়ে ইমান ও জ্ঞানের উ””তর মর্যাদায় অধিষ্?িত হতে পারতেন। তাঁর জীবনের প্রায় বিশ বছর অতিক্রম হলে, তাঁর প্রিয় পিতা পৃথিবী †তকে বিদায় গ্রহণ করেছিলেন। আর তখন †থকে তাঁর পিতার ছাত্রগণ তাঁর দিকে মুখ করেছিল এবং ত্রিশাধিক বছর তাঁর জীবন †থকে কল্যাণ গ্রহণ করেছিল।
তাঁর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা ফিকাহশাস্ত্র, হাদীস, কালাম ও বিতর্কে ছিলেন অনন্য। আর আখলাক, আমল ও মুসলমানদের †সবার †ক্ষত্রে তাঁরা তদানীন্তন যুগের আদর্শ ছিলেন। কালমশাস্ত্রের পন্ডিতগণ তাঁদের কারো সাথেই বিতর্কের ক্ষমতা রাখতনা এবং তাঁদের সাথে †কউ বিতর্কে লিপ্ত হলে অতিদ্রুত পরাভূত হত এবং স্বীয় অক্ষমতাকে স্বীকার করত। ইমামের এ ছাত্রদের মহান ব্যক্তিত্ব ও মহত্ব তাঁর বিরোধীদের, বিশেষ করে তদানীন্তন শাসকগোষ্?ীর †চাখে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল। শত্র“রা এ ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছিল †য, তাদের সামাজিক অবস্থান ও জনপ্রিয়তা নিয়ে তারা আন্দোলন শুরু করবে ও মানুষকে তাদের দিকে আকর্ষণ করবে। এখন আমরা এ প্রতিষ্?ানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকজনের কথা উলে−খ করব। যথা ঃ
১। ইবেন আবি উমাইর ঃ তিনি ২১৭ হিজরীতে পরলোক গমণ করেন। তিনি তিনজন ইমামকে (আ.) [ইমাম কাযিম, (আ.) ইমাম †রজা (আ.) ও ইমাম জা’ওয়াদ (আ.)] †দখতে †পয়েছিলেন এবং পবিত্র ইমাম (আ.) গণের খ্যাতিমান ছাত্রবর্গের অন্তর্ভূক্ত বলে পরিগণিত। বিভিন্ন বিষয় স¤পর্কে তার মাধ্যমে অনেক †রওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। তার উ””মর্যাদা শীয়া ও সুন্নি উভয় মাযহাবেই প্রসিদ্ধ এবং এ উভয় মাযহাবেই তার বিশ্বাসযোগ্যতা বিদ্যমান ছিল। যাহিয নামক আহলে তাসান্নুনের একজন মনীষী তার স¤পর্কে লিখেনঃ ‘ইবনে আবি উমাইর তার সমসাময়িক কালে সকল বিষয় অনন্য ছিলেন। ফাযল ইবনে শাযান বলেনঃ †কউ †কউ তৎকালীন প্রশাসনকে সংবাদ দিল যে, ইবনে আবি উমাইর ইরাকের সকল শীয়াদের নাম জানেন; প্রশাসন তার নিকট †চয়েছিল †য, তিনি তাদের নাম বলে দিবেন; কিন্তু তিনি বলতে অস্বীকৃতি জানালেন। ফলে তাকে উলঙ্গ করে দুই †খারমা গাছের মাঝে ঝুলিয়ে একশতটি চাবুক মারা হল। আর †সই সাথে তার একলক্ষ †দরহাম অর্থনৈতিক ক্ষতি করা হল। ইবনে বুকাইর বলেনঃ ইবনে আবি উমাইর কারাবন্দী হলেন এবং †সখানে তার উপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার চালানো হয়েছিল। তারপরও তার যা স¤পদ ছিল তা তার কাছ †থকে ছিনিয়ে †নয়া হয়েছিল। আর তার এ ধরনের কারাবন্দী ও সংকটাপন্ন হওয়ার ফলেই তার হাদীস গ্রন্থগুলো বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। শেখ মু’ফিদ বলেন ঃ ইবনে আবি উমাইর সতের বছর ধরে কারাবšদী ছিলেন, তার সকল স¤পদ-স¤পত্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এক ব্যক্তি দশ হাযার †দরহাম ইবনে আবি উমাইরের নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করেছিল। †স যখন বুঝতে পারল †য ইবনে আবি উমাইরের সকল স¤পদ নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তখন নিজের গৃহ বিক্রি করে তার (ইবনে আবি উমাইর) দশ হাজার †দরহাম তার নিকট নিয়ে এসেছিল। ইবনে আবি উমাইর জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ অর্থ †কাথা †থকে এনেছ? তুমি কি †কান উত্তরাধিকার †পয়েছ, না-কি গুপ্তধন †পয়েছ? সে বললঃ আমার গৃহ বিক্রি করেছি! ইবনে আবি উমাইর বললেন ঃ ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন †য, গৃহ আবাসস্থল যা প্রয়োজনীয় তা ঋণ ও কর্য বহির্ভূত। সুতরাং আমার প্রয়োজন থাকা সত্বেও এ অর্থ †থকে এক †দরহাম ও গ্রহণ করব না।
২। সাফওয়ান ইবনে †মহরান ঃ সাফওয়ান ছিলেন পবিত্র ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিগণের অন্তর্ভূক্ত। প্রখ্যাত আলেমগণ তার †রওয়ায়েতের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেন। তার আচার আচরণ এতটা মর্যাদাপূর্ণ স্থানে †ঁপŠছেছে †য, ইমাম এর স্বীকৃতি দিয়ে ছিলেন। †যমনটি ইতিপূর্বে উলে−খ করা হয়েছে, যখনই ইমামের নিকট শুনেছিলেন †য, অত্যাচারীদেরকে সাহায্য করা অনুচিৎ, তখন †থকেই তাদেরকে (হারুনকে) সকল প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করা †থকে বিরত থাকলেন। আর †য উটগুলো হারুনকে ভাড়া দিতেন, †সগুলো বিক্রি করে দিলেন, যাতে এ পথে অত্যাচারীদেরকে সাহায্য করতে বাধ্য না হন।
৩। সফওয়ান ইবনে ইয়াহিয়া ঃ তিনি ইমাম কাযিমের (আ.) অন্যতম সাহাবীগণের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। †শখ তুসী বলেন ঃ সাফওয়ান হাদীস জান্তাগণের নিকট তার সময়কালে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য এবং সর্বাপেক্ষা ধর্মপ্রাণ বলে পরিগণিত হতেন। সাফওয়ান অষ্টম ইমামকেও (আ.) †দখতে †পয়েছিলেন এবং তাঁর নিকট মর্যাদাপূর্ণ স্থানের অধিকারী ছিলেন। ইমাম জাওয়াদও (আ.) সাফওয়ানের প্রশংসা করেছিলেন এবং বলেছিলেন ঃ মহান আল−াহ তার প্রতি (আমি তার প্রতি †য সন্তষ্ট আছি) সন্তষ্ট হবেন, †স কখনোই আমার এবং আমার পিতার অবাধ্য হয়নি। ইমাম কাযিম (আ.) বলতেনঃ †কান রাখালবিহীন †মষদলের উপর দুটি হিংস্র †নকড়ের আক্রমণে যতটা ক্ষতি হয়, তা †কান ব্যক্তির ক্ষমতার প্রতি †লাভ তার দ্বীনের যতটা ক্ষতি করে,তার †চয়ে †বশী নয় এবং বলেনঃ কিন্তু এ সাফওয়ান ক্ষমতা †লাভী নয়।
৪। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন ঃ তিনি ১২৪ হিজরীতে কুফায় জম্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন শীয়া। তিনি নিজের ধন-সম্পদ †থকে ইমাম সাদিকের (আ.) জন্য পা?াতেন। মারওয়ান তার পিছু নিয়েছিল। তিনি পলায়ন করেছিলেন। তার দু’পূত্র আলী এবং আব্দুল−াহ মদীনায় গিয়েছিল। উমাইয়্যা শাসনের পতন ঘটার পর ইয়াক্বতীন আত্মপ্রকাশ করলেন এবং স্ত্রী ও দু’পুত্র সহ কুফায় ফিরে আসলেন। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন আŸŸাসীয়দের সাথে পরিপূর্ণ স¤পর্ক স্থাপন করলেন। ফলে হুকুমতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ তার ভাগ্যে জুটেছিল। আর একই সাথে তিনি শীয়াদের আশ্রয়স্থল ও সহযোগী হয়েছিলেন এবং এভাবে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতেন। হারুনুর রশিদ, আলী ইবনে ইয়াক্বতীনকে তার মন্ত্রী নিযুক্ত করেছিল। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন ইমাম কাযিমকে (আ.) নিবেদন করেছিলেন ঃ এদের কর্মকান্ডে অংশ গ্রহনের ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
ইমাম (আ.) বললেন ঃ যদি বাধ্য হয়ে থাক, তবে শীয়াদের ধনস¤পদ (নষ্ট করা) †থকে বিরত †থক।এ হাদীসের বর্ণনাকারী বলেন ঃ আলী ইবনে ইয়াক্বতীন আমাকে বললেন †য শীয়াদের মালামাল বাহ্যিক ভাবে সংগ্রহ করব। কিন্তু †গাপনে তাদের নিকট ফিরিয়ে দিব। একবার ইয়াকতীন ইমাম কাযিমকে (আ.) লিখেছিলেন, বাদশাহর কর্মকান্ডে আমার ধৈর্য্যরে বাঁধ †ভঙ্গে গিয়েছে; মহান আল−াহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গ করুন; যদি অনুমতি †দন, তবে আমি এ কর্মে ইস্তফা দিব। ইমাম জবাবে তাকে লিখেছিলেন ঃ †তামাকে এ অনুমতি দিবনা †য, কর্ম †থকে ইস্তফা দিবে আর আল−াহ †থকে দূরে সরে যাবে। একবার ইমাম তাকে বললেনঃ একটি কাজের অঙ্গীকার কর, আমি †তামার জন্য তিনটি জিনিস অঙ্গীকার করব। আর তা হলঃ তরবারি দিয়ে মৃত্যু হবেনা, দারিদ্র্য স্পর্শ করবে না এবং কারারূদ্ধ হবে না। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন বললেন ঃ আমাকে †য কর্মের অঙ্গীকার করতে হবে, তা কী? তিনি বললেন ঃ যখনই †তামার নিকট আমাদের †কান বন্ধু আসবে, তাকে সম্মান করবে। আব্দুল−াহ ইবনে ইয়াহিয়া কাহেলী বলেন ঃ ইমাম কাযিমের (আ.) নিকট উপস্থিত ছিলাম। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন তখন হযরতের দিকে আসছিলেন। ইমাম তাঁর সঙ্গীদের দিকে ফিরে বললেন ঃ যদি †কউ রাসূলের (সা.) †কান সাহাবীকে †দখতে চায়, তবে †য ব্যক্তি এ দিকে আসছে, তাকে †দখতে পারে। উপস্থিত একজন বললেনঃ তবে কি তিনি †বহেস্তী হবেন? ইমাম বললেন ঃ আমি সাক্ষ্য দিব †য, তিনি †বহেস্তবাসীদের মধ্যে একজন। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন ইমামের (আ.) আদেশ পালন করাতে কখনোই অবহেলা করতেন না। তিনি †য †কান আদেশ দিতেন, অবিলম্বে তা পালন করতেন, যদি ও তার রহস্য তিনি না জানতেন। একদা, হারুনুর রশিদ আলী ইবনে ইয়াক্বতীনকে কিছু †পাশাক উপহার হিসেবে দিয়েছিল। এ গুলোর মধ্যে একটি রাজকীয় †পাশাক ছিল। তিনি রাজকীয় †পাশাকসহ ঐ †পাশাকগুলো ও কিছু মালামাল ইমাম কাযিমের (আ.) জন্য পা?িয়েছিলেন। ইমাম ঐ রাজকীয় †পাশাক ব্যতীত আর সবকিছু গ্রহণ করলেন এবং আলী ইবনে ইয়াক্বতীনকে লিখেছিলেনঃ এ †পাশাকটি সংরক্ষণ কর এবং হাতছাড়া কর না। খুবশীঘ্রই তা †তামার প্রয়োজনে আসবে। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন অনুধাবন করতে পারেনি †য, †কন হযরত ঐ †পাশাক †ফরৎ দিয়েছিলেন। কিন্তু তা সংরক্ষণ করলেন। কিছু দিন †যতে না যেতেই আলী ইবনে ইয়াক্বতীন তার এক ঘনিষ্? †গালাম কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থ হলেন ও তাকে বহিস্কার করলেন। ঐ †গালাম ইমাম কযিমের (আ.) প্রতি তার দূর্বলতা স¤পর্কে জানত। এবং ইমামের জন্য †প্ররিত মালামাল স¤পর্কেও †স অবগত ছিল। †স হারুনের নিকট †গল এবং যা জানত তা হারুনকে বলল। হারুন ক্রুব্ধ হল এবং বলল আমি এ ব্যাপারে তদন্ত করব। যদি †তামার কথা সত্য হয়, তবে তাকে হত্যা করব। তৎক্ষনাৎ আলী ইবনে ইয়াক্বতীনকে †ডকে পা?াল এবং জিজ্ঞাসা করল ঃ †তামাকে †য রাজকীয় †পাশাক দিয়েছিলাম তা কি করেছ? তিনি বললেন ঃ তাকে সুগন্ধি †মখে, নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করেছি। হারুন বললঃ এখনই তা নিয়ে আস! আলী ইবনে ইয়াক্বতীন তার একজন খাদেমকে পা?ালেন; †পাশাকটি আনা হল এবং হারুনের সম্মুখে রাখা হল। হারুন †পাশাকটি †দখে তুষ্ট হল এবং আলী ইবনে ইয়াক্বতীনকে বলল ঃ †পাশাকটিকে যথাস্থানে ফিরিয়ে নাও এবং তুমিও নিরাপদে ফিরে যাও। এ মানহানির পর †তামার ব্যাপারে কোন কথা বিশ^াস করব না। †স ঐ †গালামকে একহাজারটি চাবুকাঘাত নির্দেশ দিল। †স (†গালাম) পাঁচশতটি চাবুকাঘাত †খতে না †খতেই †শষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। আলী ইবনে ইয়াক্বতীন ১৮২ হিজরীতে, যখন ইমাম মূসা ইবনে জা’ফর কারাগারে ছিলেন পৃথিবী †থকে বিদায় গ্রহণ করেন। তার কিতাবসমূহের মধ্যে †কান কোনটির নাম †শখ মুফিদ ও †শখ সাদুক উলে−খ করেছেন।
৫। মুমিন তা’ক ঃ মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে †না’মান যার কুনিয়াহ হল আবু জা’ফর এবং †খতাব মূমিন তা’ক, ছিলেন ইমাম সাদিক (আ.) ও ইমাম কাযিমের (আ.) সাহাবী। তিনি ইমাম সাদিকের (আ.) নিকট মার্যাদাপূর্ণ স্থানের অধিকারী ছিলেন। ইমাম (আ.) তাকে তাঁর †শ্রষ্? সাহাবীদের মধ্যে গণনা করেছেন। মু’মিন তা’ক এ †যাগ্যতার অধিকারী ছিলেন †য, যার সাথেই তিনি বিতর্কে লিপ্ত হন না †কন তাকে পরাস্ত করবেনই। ইমাম সাদিক (আ.) তাঁর †কান †কান সাহাবীকে অক্ষমতা ও স্বল্প †যাগ্যতার জন্য কালামি আলোচনায় অংশ গ্রহণ করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু মু’মিন তা’ককে এ আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। ইমাম সাদিক (আ.) তার (মু’মিন তা’ক) স¤পর্কে খালিদকে এরূপ বলেছিলেন ঃ তা' †কর মালিক মানুষের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয় এবং শিকারী বাজের মত শিকারের উপর অবতীর্ণ হয়। যদি †তামার পাখা ছিড়ে †ফলা হয়, তবে তুমি কখনোই উড়বে না। যখন ইমাম সাদিক (আ.) পরলোক গমণ করেন, আবু হানিফা মুমিন তা’ককে তিরস্কার করে বলেছিল †তামার ইমামতো বিদায় নিয়েছে। মু’মিন তা’ক তাকে তৎক্ষনাৎ জবাব দিলেন ঃ কিন্তু †তামার ইমামকে নির্দিষ্ট দিবস পর্যন্ত সময় †দয়া হয়েছে। অর্থাৎ, †তামার ইমাম হল শয়তান, যার স¤পর্কে মহান আল−াহ পবিত্র †কারানে বলেছেন ঃ “যাদেরকে অবকাশ প্রদান করা হয়েছে তুমি তাদের অন্তর্ভূক্ত হলে অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত (সূরা হিজর ৩৭-৩৮)।”
৬। হিশাম ইবনে হাকাম ঃ তিনি তর্ক, বিতর্কে ও কালাম শাস্ত্রে ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দী এবং অন্য সকলের †চয়ে এ বিদ্যায় তার †শ্রষ্?ত্ব ছিল। ইবনে নাদিম লিখেন †য, শিয়া মোতাকল্লেমিনের মধ্যে হিশাম এমন এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি ইমামতের বিষয় স¤পর্কে আলোচনা করতেন; তিনি কালাম শাস্ত্রে দক্ষ ও উপস্থিত বুদ্ধি-স¤পন্ন। হিশাম অনেক পুস্তক লিখেছিলেন। তিনি বিভিন্ন মাযহাব ও ধর্মের আলেমদের সাথে চমৎকার বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন।
ইয়াহিয়া ইবনে যালিদ বারমাকি হারুনের উপস্থিতিতে হিশামকে বলেছিল ঃ সত্য পরস্পর বিপরীত অবস্থানে দাঁড়াতে পারে কি? হিশাম বললেন ঃ না। ইয়াহিয়া বললেন ঃ তাহলে এমনটি নয় কি, যখন দু’ ব্যক্তির মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয় ও বিতর্কে লিপ্ত হয়, তখন হয় উভয়েই সঠিক, অথবা উভয়েই মিথ্যা, কিংবা একজন সত্য ও অন্যজন মিথ্যার পথে আছে? হিশাম বললেন ঃ হ্যাঁ এ তিন অবস্থার ব্যতিক্রম নয়, কিন্তু প্রথম অবস্থা সম্ভব নয় †য, উভয়েই সত্যের উপর থাকবে। ইয়াহিয়া বলল ঃ যদি আপনি একথা স্বীকার করেন †য, দ্বীনের †কান হুকুমের †ক্ষত্রে বিবাদরত দু’পক্ষের উভয়েই সত্য পথের উপর হতে পারে না, তবে আলী (আ.) এবং আŸŸাস †য, রাসূলের (সা.) উত্তরাধিকারের ব্যাপারে আবুবকরের নিকট এ†স ছিলেন তাদের বিবাদ মীমাংসা করে †দয়ার জন্য তাঁদের মধ্যে †ক সত্যের উপর ছিলেন? হিশাম বললেন, তাঁদের মধ্যে †কউই ভ্রান্ত পথে গমণ করেনি। তাদের ঘটনার দৃষ্টান্ত আর ও আছে। পবিত্র †কারানে দাউদের (আ.) ঘটনায় বর্ণিত হয়েছে †য, দু'ফেরেস্তার মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছিল এবং তারা দাউদের (আ.) নিকট এসেছিলেন, তাদের মধ্যে মীমাংসা করে †দয়ার জন্য, তাহলে ঐ †ফরেস্তাদের মধ্যে †ক সত্যের উপর ছিলেন? ইয়াহিয়া বলল ঃ উভয়েই সত্যের উপর ছিলেন এবং পর¯পর †কান বিরোধ ছিলনা। আর তাদের বিতর্ক ছিল সাজানো এবং †চয়েছিল এর মাধ্যমে দাউদকে (আ.) তার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিতে। হিশাম বললেন ঃ আলী (আ.) ও আŸŸাসের মধ্যেকার বিতর্কও এরূপই ছিল, তাদের মধ্যে †কান বিরোধ ছিলনা। †কবলমাত্র আবুবকরকে তার ভ্রান্তি স¤পর্কে স্মরণ করিয়ে †দয়ার জন্যে এ কাজ করেছিলেন। তাঁরা আবুবকরকে বুঝাতে †চয়েছিলেন, তুমি †য বল নবীর (সা.) স¤পদের উত্তরাধিকারী †কউ হয় না, এটা মিথ্যা এবং আমরা তার উত্তরাধিকারী। ইয়াহিয়া হতবাক হয়ে †গল এবং †কান জবাব †দয়ার ক্ষমতা তার থাকল না এবং হারুন হিশামকে প্রশংসা করল।
ইয়ূনুস ইবনে ইয়াকুব বলেন ঃ ইমাম সাদিকের (আ.) একদল সাহাবী †যমন ঃ †হামরান ইবনে আইন, মূমিন তা’ক, হিশাম ইবনে সালিম, তাইয়্যার ও হিশাম ইবনে হাকাম তার নিকট উপস্থিত ছিলেন। হিশাম ছিলেন যুবক। ইমাম (আ.) হিশামকে বললেনঃ বলবেনা, আমর ইবনে উবাইদের সাথে কী করেছ, কিরূপে তাকে প্রশ্ন করেছ? হিশাম বললেন ঃ আপনার সম্মুখে আমি লজ্জা করি এবং আপনার উপস্থিতিতে আমি ভাষা খুঁজে পাই না। ইমাম (আ.) বললেন ঃ যখন †তামাকে †কান কাজের নির্দেশ দিয়ে থাকি তখন তুমি কি তা কর? হিশাম বললেন ঃ শুনেছিলাম †য, আমর ইবনে ওবাইদ বসরার মসজিদে মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখে। আর এটা আমার জন্য খুব গুরুত্ববহ ছিল। জুমা’র দিবসে বসরায় প্রবেশ করলাম এবং মসজিদে †গলাম; †দখলাম আমর ইবনে ওবাইদ মসজিদে বসে ও †লাকজন তাকে ঘিরে বসে আছে এবং †কান কিছু স¤পর্কে তাকে প্রশ্ন করছে। †লাকের ভিড় †?লে গিয়ে তার নিকট বসলাম এবং বললাম, †হ বিদ্বান, আমি একজন
আগন্তুক, আমাকে প্রশ্ন করার সুযোগ দাও! আমাকে অনুমতি দিল। আমি বললাম ঃ †তামার †চাখ আছে কি? বলল ঃ ওহে বৎস, †কমন প্রশ্ন? বললাম আমার প্রশ্ন এরূপই হবে। বলল ঃ জিজ্ঞাসা কর, যদিও †তামার প্রশ্ন নির্বোধের মত। পূনরায় জিজ্ঞাসা করলাম ঃ †তামার †চাখ আছে কি? বলল ঃ হ্যাঁ, আছে। বললাম ঃ তা দিয়ে কী †দখ? বলল ঃ রংসমূহ এবং আকৃতি সমূহ। বললাম ঃ †তামার নাক আছে কি? বলল ঃ হ্যাঁ, আছে। বললাম ঃ তা দিয়ে কী কর? বলল ঃ বিভিন্ন গন্ধ গ্রহণ করি। বললাম ঃ মুখ আছে কি? বলল ঃ হ্যাঁ, আছে। বললাম ঃ তা দিয়ে কী কর? বলল ঃ খাবারের স্বাদ আস্বাদন করি। বললাম ঃ †তামার মস্তিস্ক ও অনুভূতি †কন্দ্রও আছে কি? বলল ঃ হ্যাঁ, আছে। বললাম ঃ তা দিয়ে কী কর? বললঃ তা দিয়ে আমার অনুভূতিতে যা কিছু বিদ্যমান †সগুলোকে স্বতন্ত্র ভাবে উপলব্ধি করি। বললাম ঃ এ অনুভূতি †তামাকে †তামার অনুভূতি †কন্দ্র্রের অভাব মুক্ত করে কি? বলল ঃ না। বললাম ঃ কিরূপে? অথচ †তামার †দহের সকল অঙ্গ ও অনুভূতি স?িক রূপে বিদ্যমান! বলল ঃ যখনই এ অনুভূতি †কান কিছু স¤পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে তখন মস্তিস্কের দিকে প্রত্যাবর্তণ করে, যাতে তাদের সšেদহ দূরীভূত হয়ে বিশ্বাস অর্জিত হয়। বললাম ঃ তাহলে মহান আল−াহ অনুভূতির সন্দেহ দূরীভূত করার জন্য মস্তিস্ক ও অনুভূতি †কন্দ্র দিয়েছেন। বলল ঃ হ্যাঁ, তাই। বললাম ঃ সুতরাং মস্তিস্ক ও অনুভূতি †কন্দ্র আমাদের জন্য অপরিহার্য ভাবে প্রয়োজন। বলল ঃ হ্যাঁ, তাই। হিশাম বললেন ঃ মহান আল−াহ †তামার ইন্দ্রিয়কে ইমাম (বা পরিচালক) বিহীন সৃষ্টি করেনি; যা সঠিক বিষয়কে, সঠিক নয় এমন বিষয় †থকে স্বতন্ত্র করে। তবে, এ সমগ্র বিশ্বকে সৃষ্টির মধ্যে বিদ্যমান এতসকল বৈসাদৃশ্য, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধের উপস্থিতিতে ইমামবিহীন সৃষ্টি করবে †য বিরোধ, দ্বিধার সময় তার শরণাপন্ন হবে? !! আমর ইবনে উবাইদ নিশ্চুপ রইল এবং কিছুই বলল না। অতঃপর আমার দিকে তাকাল ... ... এবং বলল ঃ তুমি †কাথাকার অধিবাসী? বললাম ঃ কুফা বলল ঃ তুমি কি হিশাম? †স আমাকে নিজের নিকট বসাল এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আমি †স স্থান ত্যাগ না করেছি, †স †কান কথা বলেনি। ইমাম সাদিক (আ.) স্মিত হাসলেন এবং বললেন ঃ †তামাকে এ যুক্তি †ক শিখিয়েছে? হিশাম বললেন ঃ ওহে আললাহর রাসূলের (সা.) সন্তান, আমার মুখ দিয়ে এমনি রূপেই †বর হয়েছে। ইমাম বললেন ঃ ওহে হিশাম! আললাহর শপথ এ যুক্তি ইব্রাহীম ও মূসার (আ.) সহীফাতে লিপিবদ্ধ আছে।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.