![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইমাম রেজা(আঃ)
কোন কাজ করতে বলি) এবং তুমি আহার গ্রহণে ব্যস্ত থাক, তবে যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার আহার গ্রহণ সম্পন্ন না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত উঠে দাঁড়াবে না। এ জন্যে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটেছে যে ইমাম আমাদেরকে ডেকেছেন, আর আমরা জবাবে বলেছিলাম ঃ আহার গ্রহণ করছি। তিনি বলতেন ঃ তোমাদের আহার গ্রহণ স¤পন্ন হতে দাও। একদা এক আগন্তুক ইমামের নিকট আসল এবং তাকে সালাম করার পর বললেন ঃ আমি আপনার, আপনার পূর্ব পূরুষ ও পিতামহগণের ভক্ত; হজ্জ্ব থেকে ফিরেছি এবং পথিমধ্যে আমার সকল অর্থ শেষ হয়ে গিয়েছে; যদি আমাকে কিছু দান করতেন, তবে আমার গন্তব্যে পৌছতে পারতাম এবং সেখানে পৌছে গরীব দুঃখীদেরকে ঐ পরিমাণ অর্থ সাদকা করব। কারণ আমার শহরে আমি দরিদ্র নই কিন্তু এখন আমি অভাবে পতিত হয়েছি। ইমাম উঠে দাঁড়ালেন এবং অন্য কক্ষে প্রবেশ করলেন। দু’শত দিনার সাথে নিয়ে আসলেন এবং দ্বার থেকে ঐ ব্যক্তির দিকে হস্ত প্রসারিত করে তাকে ডাকলেন এবং বললেন ঃ তোমার পথ খরচ হিসেবে এ দু’শত দিনার গ্রহণ কর এবং বরকত রূপে মনে কর। আমার পক্ষ থেকে এর পরিবর্তে সদকা করার প্রয়োজন নেই। ঐ ব্যক্তি দিনারগুলো গ্রহণ করল এবং চলে গেল। ইমাম ঐ কক্ষ থেকে পূর্বস্থানে ফিরে গেলেন। তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করার সময় আপনাকে দেখতে না পায়। বললেন ঃ যাতে তার অভাবগ্রস্থতা লজ্জাবণত মুখ দেখতে না পাই ... ...।
আমাদের পবিত্র ইমামগণ (আ.) তাদেঁর অনুসারীদের আধ্যাত্মিক পরিচর্যা ও পথপ্রদর্শনের ক্ষেত্রে শুধু বক্তব্য দিয়েই ক্ষান্ত থাকতেন না, বরং তাদের (অনুসারীদের) কর্মকান্ডের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখতেন এবং জীবন চলার পথে তাদের ভুল-ভ্রান্তি স¤পর্কে অবহিত করতেন যাতে তারা বিচ্যুতির পথ থেকে সঠিক পথে ফিরে আসতে পারে। আর সেই সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হিসাবে থাকে। সোলাইমান জা’ফারী, ইমাম রেজার (আ.) সম্পর্কে বলেন ঃ ইমামের নিকট কিছু কাজ নিয়ে গেলাম, যখন আমার কাজ †শষ হল তখন ফিরে আসতে চেয়েছিলাম ইমাম বললেন ঃ আজ রাতে আমাদের নিকট থাক। ইমামের সাথে তাঁর গৃহে গেলাম। তখন, সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। তাঁর, গোলামরা নানান কর্মে ব্যস্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন আগন্তুক ছিলেন। ইমাম বললেন ঃ এ ব্যক্তি কে? বলল ঃ এ ব্যক্তি আমাদেরকে সাহায্য করছে এবং তাকে কিছু প্রদান করব। বললেন ঃ তার পারিশ্রমিক নির্ধারণ করেছ কি? বলল ঃ না, যা দিব তা-ই গ্রহণ করবে। ইমাম ক্ষুব্ধ হলেন। আমি হযরতকে বললাম ঃ আপনার জন্য উৎসর্গ হব, অসন্তষ্ট হবেন না। তিনি বললেন ঃ আমি একাধিকবার তাদেরকে বলেছিলাম যে, পারিশ্রমিক নির্ধারণ ও চুক্তি না করে কাউকে কাজে এনো না। যদি কেউ চুক্তি ব্যতীত কাজ করে, আর কাজ শেষে তাকে তিনগুণ বেশী পারিশ্রমিকও দাও তারপরও মনে করে যে, তাকে কম দেয়া হয়েছে। কিন্তু যদি চুক্তি কর এবং নির্ধারিত পারিশ্রমিক তাকে প্রদান কর তবে সে তোমার উপর তুষ্ট হবে যে, তুমি চুক্তি অনুসারে কাজ করেছ। আর এ অবস্থায় যদি তুমি নির্ধারিত পরিমাণের বাইরে অতিরিক্ত কিছু প্রদান কর তবে তা যত সামান্যই হোক না কেন, ভাববে যে তাকে তার প্রাপ্য প্রদান করেছে এবং এ জন্যে সে কৃতজ্ঞ থাকবে।
ইমাম রেজার (আ.) বিশিষ্ট সাহাবী বলে পরিগণিত আহমাদ ইবনে মুহম্মদ আবি নাসের বাযানতি বলেন ঃ আমি ইমামের অপর তিনজন সঙ্গী সহ ইমামের নিকট গেলাম এবং এক ঘণ্টা ইমামের নিকট বসেছিলাম। যখন ফিরে আসতে চাইলাম ইমাম আমাকে বললেন ঃ ওহে আহমাদ! তুমি বস। আমার সঙ্গীরা চলে গেল এবং আমি ইমামের নিকট থাকলাম। আমার কিছু প্রশ্ন ছিল। সেগুলো ইমামের নিকট উপস্থাপন করলাম এবং ইমাম জবাব দিলেন। ইতিমধ্যে রাত্রির একাংশ অতিবাহিত হল। ফিরে আসতে চাইলে, ইমাম বললেন ঃ যাবে, না আমাদের সাথে থাকবে? বললাম ঃ যা আপনি বলেন। যদি থাকতে বলেন, তবে থাকব, আর যদি যেতে বলেন তবে যাব। তিনি বললেন ঃ থাক, আর এটা হল তোমার বিছানা (একটি লেপের দিকে ইঙ্গিত করলেন) তখন ইমাম উঠে দাঁড়ালেন এবং স্বীঁয় কক্ষে গেলেন। আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে সেজদাবনত হলাম এবং বললাম ঃ সেই মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যার হুজ্জাত ও নবীর জ্ঞানের উত্তরাধিকারী, আমাদের মধ্যে †য কয়জনই তার †খদমতে ছিলাম, তাদেরকে এতটা †স্নহ ও মমতা করেন। তখনো †সজদাবনত ছিলাম। বুঝতে পারলাম ইমাম ফিরে এসেছেন সুতরাং উ?ে বসলাম। হযরত আমার হাত ধরে বললেন ঃ †হ আহমদ! আমীরুল মূমিনীন (আ.) সা’সাত ইবনে সূহানের (যিনি তাঁর বিশেষ সহচর ছিলেন) সাথে †দখা করতে গিয়েছিলেন। যখন উঠে দাঁড়াতে চাইলেন, বললেন ঃ হে সা’সা’ত! আমি যে তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি তার জন্য †তামার সাথীদের সাথে অহংকার কর না (আমার সাক্ষাৎ যেন, তাদের উপর †তামার শ্রেষ্টত্ব আছে বলে মনে করার কারণ না হয়)। মহান আল্লাহকে ভয় কর ও পাপাচার †থকে দূরে থাক এবং আল্লাহর নিকট অবনত হও; মহান আল−াহ †তামাকে মর্যাদাবান করবেন। ইমাম তার একর্ম ও বক্তব্যের মাধ্যমে সর্তক করে দিলেন †য, আত্মগঠন ও সৎকর্মের মত কোন কর্ম নেই। কোন প্রকার শ্রেষ্টত্বের কারণেই অহংকার করা উচিৎ নয়। এমন কি ইমামের সং¯পর্শ, করুনা দয়া ও মহত্ব †যন দম্ভ, আত্মশ্লাঘা ও অপরের উপর শ্রেষ্টত্ব দাবি করার কারণ না হয়।
প্রশাসনের বিপরীতে ইমামের (আ.) ভূমিকা ঃ
ইমাম আলী ইবনে মূসা রেযার (আ.) ইমামত ছিল হারুন ও তার দু’পুত্র আমিন ও মামূনের †খলাফতের সমসাময়িক। তিনি দশ বছর হারুনের শাসনামলের †শষ দিক, পাঁচ বছর আমিনের হুকূমতের ও পাঁচ বছর মামূনের শাসনকালে অতিবাহিত করেছিলেন।
হারুনের শাসনামলে ইমাম ঃ
ইমাম রেযা (আ.) ইমাম কাযিমের (আ.) শাহাদাতের পর ইমামত লাভ করেন ও তাঁর দাওয়াতের কাজ প্রকাশ্যে শুরু করেন এবং নির্ভয়ে উম্মতের †নতৃত্ব প্রদান করেন। হারুনের সময় সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা এতটা শ্বাসরুদ্ধ কর ছিল †য এমন কি ইমামের অতি নিকটবর্তী †কান শহরে তাঁর এ দ্ব্যর্থহীন ও প্রকাশ্য কর্মের জন্য তার জীবনের ব্যাপারে শংকিত ছিলেন। সাফওয়ান ইবনে ইয়াহিয়া বলেন ঃ ইমাম রেযা (আ.) তাঁর পিতার শাহাদাতের পর এমন সকল বক্তব্য †রখেছিলেন †য আমরা তার জীবন স¤পর্কে আশংকাগ্রস্থ ছিলাম এবং তাঁকে বললাম ঃ এ বিরাট ব্যাপারটি প্রকাশ করে দিয়েছেন, আমরা এ তাগুতের (হারুন) মাধ্যমে অপনার জীবন নাশের ব্যাপারে শংকিত। তিনি বললেন ঃ যা করার চেষ্টা করে করুক, আমার বিরুদ্ধে তার কিছুই করার †নই। মুহম্মদ ইবনে সানান বলেন ঃ হারুনের শাসনকালে ইমাম রেযাকে (আ.) বললাম ঃ আপনি নিজেকে এ ব্যাপারে (ইমামতের ব্যাপার) সাধারণের নিকট প্রকাশ করে দিয়েছেন এবং আপনার পিতার স্থানে বসেছেন। অথচ হারুনের তরবারি থেকে রক্ত ঝরছে। তিনি বললেনঃ যা আমাকে এ †ক্ষত্রে নির্ভীক করেছে তা হল মহানবীর (সা.) বক্তব্য †য তিনি বলেছিলেন ঃ যদি আবু জাহল আমার মাথার একটি চুলও কম করতে পারে,তবে মনে রেখ আমি নবী নই। আর আমি বলব ঃ যদি হারুন আমার মাথার একটি চুল ও কম করতে পারে, তবে সাক্ষী থাক আমি ইমাম নই। ইমাম যা বলেছিলেন তা-ই হয়েছিল। কারণ ইমামের উপর আঘাত হানার কোন সুযোগই পায়নি। অবশেষে পূর্ব ইরানে যে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়েছে তা দমন করার জন্য হারুন তার সৈন্য বাহিনী সহ খোরাসানের দিকে যেতে বাধ্য হয়েছিল এবং পথিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৯৩ হিজরীতে তূসে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। আর †সই সাথে ইসলাম ও মুসলমানরা তার নিকৃষ্ট অস্তিত্বের হাত †থকে নিস্তার পেল।
আমীনের সময়ে ইমাম ঃ
হারুনের পর আমীন ও মামূনের মধ্যে †খলাফতের ব্যাপারে কঠোর বিরোধ সৃষ্টি হয়। হারুন, আমীনকে তার পর †খলাফতের উত্তরাধিকারী নিযুক্ত করেছিল এবং তার নিকট †থকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিল †য, তার (আমীন) পর মামূন খলিফা হবে। এছাড়া আমীনের খেলাফতকালে খোরাসানের শাসন ভার মামূনের হাতে থাকবে। কিন্তু আমিন হারুনের পর ১৯৪ হিজরীতে মামূনকে ওয়ালী আহাদের পদ †থকে চ্যূত করে এবং স্বীয় পূত্র মূসাকে এ পদে নিযুক্ত করে। অবশেষে আমীন ও মামূনের মধ্যে সংগঠিত এক রক্তাক্ত যুদ্ধে ১৯৮হিজরীতে আমীন নিহত হলে, মামূন †খলাফতের অধিকারী হয়। ইমাম রেযা (আ.) এ †খলাফতের আভ্যন্তরীন কোন্দল ও তাদের ব্যস্ততার সুযোগে সময়ের সদ্ব্যবহার করেছিলেন এবং নির্ঝঞ্ঝাট বক্তব্য, জ্ঞান বিতরণ ও অনুসারীদের পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন।
খলিফা মামূনের যুগে ঃ
মামূন বনি আব্বাসীয় খলিফাদের মধ্যে সবচেয়ে ধূর্ত ও কপট ছিল। †স পড়াশুনা করেছিল এবং ফিকাহ ও অন্যান্য শাস্ত্রের জ্ঞান তার ছিল। সে কোন কোন বিদ্বান ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা ও বিতর্কেও বসত। তবে, তার সমকালীন বিশ^ স¤পর্কিত জ্ঞান তার মানবতা-বিরোধী রাজনীতির সহায়ক হয়েছিল। নতূবা †স কখনোই দ্বীন ও ইসলামের উপর ছিল না। †স আরাম- আয়াশ, দূর্নীতি, অত্যাচার, অবিচার অশ্লীলতায় অন্যান্যদের চেয়ে কোন অংশেই কম ছিল না। পার্থক্য এটুকু যে, সে অন্যান্য খলিফাদের চেয়ে সতর্কতর, কপট ও প্রতারণামূলক আচরণ করত। স্বীয় হুকুমতের ভিত্তি দৃঢ় করার জন্য সে ফকীহ্দের সাথেও বসত এবং দ্বীনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে কথাও বলত।
কাজী ইয়াহীয়া ইবনে আকসাম নামক নিকৃষ্ট ও কুৎসিত চরিত্র ব্যক্তির সাথে মামূনের যোগাযোগ ও আন্তরিকতা মামূনের ধর্মহীনতা, কুৎসিৎ ও কপট চরিত্রের উত্তম দৃষ্টান্ত। ইয়াহীয়া ইবনে আকসাম এমন এক ব্যক্তি ছিল যে, শঠতা ও কপটতায় তার কুখ্যাতি ছিল; কলম তার দুষ্ট চরিত্রের বর্ণনা দিতে লজ্জিত হয়। আর মামূন এমন এক ব্যক্তির সাথেই এতটা আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়েছিল যে, পরস্পরের মসজিদের বন্ধু, এবং পুস্প কাননের বন্ধু বলে পরিচিতি লাভ করেছিল। তার চেয়ে আক্ষেপের বিষয় হল এই যে, মামূন তাকে ইসলামী সমাজের ‘বিচারকের বিচারক’ পদে ভূষিত করেছিল এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বিষয়ে তার সাথে শলা-পরামর্শ করত। মামূনের সময় বাহ্যিকভাবে জ্ঞান ও বিশ্বাসের প্রসার ঘটেছিল। জ্ঞানী, গুণীজন †খলাফতের †কন্দ্রস্থলে নিমন্ত্রিত হতেন এবং মামূন তাদেরকে †যভাবে পুরস্ক্রিত করত, তা জ্ঞানী ও জ্ঞান পিপাসূদেরকে তার দিকে আকর্ষণ করার জন্য উপযুক্ত †ক্ষত্র ছিল। শিক্ষা, আলোচনা ও বিতর্কের ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং বিতর্কের বাজার রমরমা ছিল।
এছাড়া মামূন তার কিছু কর্মকান্ডের মাধ্যমে শীয়া ও ইমামের (আ.) অনুসারীদেরকে আকর্ষণ করার †চষ্টা করেছিল। †যমন ঃ †স নবীর (সা.) উত্তরাধিকারী হিসাবে অমীরুল মূমিনীন আলীর (আ.) যথার্থ উপযুক্ততা স¤পর্কে কথা বলত এবং †মায়াবিয়ার উপর অভিশ¤পাত বর্ষণ করা আইনগতভাবে বৈধ করেছিল। ফাতিমা যাহরার (সা.) নিকট থেকে যে ফিদাক কেড়ে নেয়া হয়েছিল তা আলাভীদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছিল এবং বাহ্যিকভাবে আলাভীদের সাথে সুস¤পর্ক রক্ষা করত। প্রকৃতপক্ষে, মামূন মানুষের অন্তরে হারুনের কুকর্ম ও প্রতারণার কুফল মোচন করে বিপ্লব ও আন্দোলনের †ক্ষত্র বিনষ্ট করে, তাদেরকে তুষ্ট করতঃ স্বীয় †খলাফতের আসনে অনঢ় ও নিশ্চিন্ত থাকতে †চয়েছিল। এ জন্যে বলতে হবে সময়ই তাকে ঐ স্বল্পতা ও অসন্তুষ্টির স¤পূরক হিসেবে সংস্কার কর্মে বাধ্য করেছিল এবং †দখাতে হয়েছিল †য, অন্যান্য খলিফার সাথে তার পার্থক্য বিদ্যমান ... ...।
মামুনের প্রতিনিধি স্বরূপ ইমাম ঃ
মামূন তার ভাই আমিনকে হত্যা করার পর ও হুকুমতের মসনদে আরোহন করার পর ¯পর্শকাতর অবস্থার সম্মুখীন হল। কারণ তার অবস্থান বিশেষ করে বাগদাদে যা আব্বাসীয়দের রাজধানী ছিল, †সখানে এবং আব্বাসীয়দের মধ্যে যারা আমীনের পক্ষ ছিল ও মামূনের হুকুমতকে তাদের স্বার্থের পরিপন্থী বলে মনে করত তাদের নিকট নড়বড়ে অবস্থা ছিল। অপরদিকে আলাভীদের আন্দোলন মামূনের হুকুমতের জন্য এক বিরাট হুমকি বলে পরিগণিত হত। †কননা ১৯৯ হিজরীতে আলাভীদের প্রিয় মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহীম তাবাতাবা আবুস সারয়াহির সহযোগিতায় আন্দোলন করেছিলো। আলাভীদের অপর একদল ইরাকে ও হেজাজে আন্দোলন করেছিল এবং মামূন ও আমীনের আভ্যন্তরীন †কান্দলের ফলে আব্বাসীয়দের দূর্বলতার সুযোগ নিয়েছিল। কোন কোন শহর তারা দখল করেছিল। প্রায় কুফা †থকে ইয়েমেন পর্যন্ত সর্বত্র বিদ্রোহ ও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছিল এবং মামূন অপরিসীম †চষ্টা চালিয়ে এ বিদ্রোহ গুলো দমন করতে †পরেছিল। অনুরূপ- ইরানীরা আলাভীদের সাহায্যে বিদ্রোহ করার সম্ভাবনা ছিল। কারণ, ইরানীরা আমীরুল মূমিনীন আলী (আ.)-এর আইনগত অধিকারে বিশ্বাসী ছিল। আর আব্বাসীয়রা শুরুতেই বনি উমাইয়্যাদের নির্মূল করার জন্য নবীর (সা.) পরিবারবর্গ ও সম্মানিত আমীরুল মূমিনীনের (আ.) পরিবার বর্গের প্রতি দূর্বলতার সূযোগ নিয়েছিল। সুচতুর ও কপট মামূন ওয়ালী আহাদীর নামে (খেলাফত হস্তান্তর করত ঃ অথবা ইমাম রেযার (আ.) মত ব্যক্তিত্বকে ওয়ালী আহাদ নির্বাচন করে তার অস্থিতিশীল খেলাফতকে সুস্থিত করার নীল নকশা আঁটল। কারণ, সে আশা করেছিল যে, এ কর্মের উদ্যোগ নিয়ে সে আলাভীদের বিদ্রোহ দমনে সক্ষম হবে এবং সেই সাথে তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে ও ইরানীদেরকে নিজের খেলাফত নেয়ার †ক্ষত্র প্রস্তুত করতে পারবে। স্পষ্টতঃই ইমামকে †খলাফত অর্পণ বা ইমামের †বলায়েতে আহাদী একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল মাত্র। নতূবা †য ব্যক্তি এ †খলাফতের জন্য স্বীয় ভাইকে হত্যা করেছিল এবং ব্যক্তিগত জীবনেও যে কোন প্রকার অন্যায় ও নিকৃষ্ট কর্ম স¤পাদনে কুন্ঠাবোধ করত না, হ?াৎ করে এতটা ধর্মানুরাগী হয়ে যায় নি †য †খলাফত ও রাজত্বের লোভ পরিহার করবে। মামূনের শঠতা ও কপটতার উৎকৃষ্ট প্রমাণ হল ইমাম কর্তৃক তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা। †কননা যদি মামূন তার কথা ও কর্মে সততা রক্ষা করত, তবে ইমাম কখনোই †স †খলাফতের দায়িত্ব গ্রহনে অনিহা প্রকাশ করত না, যার উপযুক্ত অধিকারী তিনি ব্যতীত †কউ নন।
ইতিহাসের পাতায় অন্য †য সকল প্রমাণ রয়েছে তাও মামূনের অসৎ উদ্দেশ্যের অবগুন্?ন খুলে †দয়। আমরা উদাহরণ হিসেবে এরকম কয়েকটি ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করব। মামূন ইমামের বিরুদ্ধে কিছু গুপ্তচর নিয়োগ করেছিল, যারা ইমামের সকল কর্ম-কান্ডের উপর দৃষ্টি রাখত। এবং মামূনকে প্রতিবেদন দিত। এটিই স্বয়ং ইমামের প্রতি মামূনের শত্র“তা এবং অবিশ্বাস ও অসৎ চিন্তার দলিল। ইসলামী উৎস †থকে আমরা পাই ঃ হিশাম ইবনে ইব্রাহীম রাশেদী ইমাম রেযার (আ.) নিকটতম ব্যক্তিবর্গের একজন ছিলেন যার উপর ইমামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্বও ন্যস্ত ছিল। কিন্তু যখন ইমামকে মার্ভে নিয়ে আসা হল, তখন হিশাম দ্বিপদাধিকারী ফাযল ইবনে সাহল (মামূনের মন্ত্রী) ও মামূনের সাথে স¤পর্ক স্থাপন করেছিল। সে কোন কিছুই তাদের †থকে জ্ঞোপণ করত না।
মামূন তাকে ইমামের দ্বাররক্ষী (ও গণযোগা†যাগ কর্মকর্তা) নিযুক্ত করেছিল। হিশাম †কবলমাত্র †য সকল ব্যক্তি তার পছন্দমত ছিল, তাদেরকেই ইমামের সাথে †দখা করতে দিত। †স ইমামের উপর কঠোরতা বজায় রাখত এবং ইমামের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করত। ইমামের নিকটজন ও প্রিয়জনের সাথে ইমাম †দখা, সাক্ষাৎ করতে পারত না। ইমাম তাঁর গৃহে যা কিছু বলত, তা-ই †স মামূন ও ফাযল ইবনে সাহলের নিকট প্রতিবেদন করত। আবা সালাত ইমামের সাথে মামূনের শত্র“তা প্রসঙ্গে বলেন ঃ ইমাম (আ.) পন্ডিতদের সাথে বিতর্ক করেন এবং তাদেরকে পরাজিত করেন। আর মানুষ বলতঃ আল−াহর শপথ করে বলতে পারি তিনি (ইমাম) মামূনের †চয়ে †খলাফতের জন্য অধিকতর উপযুক্ত। গুপ্তচররা মামূনকে এ স¤পর্কে অবহিত করত।
জা’ফর ইবনে মুহম্মদ ইবরিল আশয়াস, যখন ইমাম †খারাসানে মামূনের নিকট ছিলেন, ইমামকে সংবাদ দিলেন †য তার চিঠিগুলো পড়ার পর ইমাম যেন পুড়িয়ে ফেলেন, যাতে অন্য কারো হাতে না পড়ে। ইমাম তাকে নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন ঃ †তামার পত্রগুলো পূড়িয়ে †ফলব। ইমাম যখন মামুনের নিকট এবং বাহ্যিকভাবে ওয়ালী আহদ ছিলেন, তখন আহমদ ইবনে মুহম্মদ বাযানতির প্রশ্নের জবাবে লিখেন ঃ- তবে আমার সাথে সাক্ষাতের জন্য যে অনুমতি †চয়েছিলে (তার জন্য বলব) আমার কাছে আসা এখন কঠিন ব্যাপার। এরা আমার উপর এখন কঠোরতা অবলম^ন করছে, আপাতত †তামার জন্য (এ কর্ম) অসম্ভব। ইনশা আল্লাহ খুব শীঘ্রই সাক্ষাৎ করা সহজ হবে।
সর্বাধিক স্পষ্ট ব্যাপার হল এই †য, মামূন কখনো কখনো স^য়ং তার কোন কোন নিকটজন ও অধঃস্তনদের নিকট স্বীয় প্রকৃত উদ্দেশ্য ইমামের ব্যাপারে স্বীকার করত এবং সু¯পষ্ট রূপে আপন নিকৃষ্ট বাসনার পর্দা উন্মোচন করত। মামূন হামিদ ইবনে মেহরানের (মামূনের সভাসদদের মধ্যে একজন) প্রশ্নের জবাবে বলেছিল ঃ এ ব্যক্তি (ইমাম (আ.)) আমাদের দৃষ্টির বাইরে ছিল এবং নিজের দিকে মানুষকে আহবান করছিল। আমরা তাঁকে এ জন্যে নিজের ওয়ালী আহদ করেছি †য তাঁর আহবান আমাদের পক্ষে হয় এবং আমাদের রাজত্ব ও বাদশাহীর স্বীকৃতি হয়। আর †সই সাথে তাঁর ভক্তরা অনুধাবন করবে †য, যা তিনি দাবী করেন তা তাঁর নয় এবং এ বিষয়টি (†খলাফত) বিশেষ করে আমাদের জন্যে তাঁর জন্যে নয়। আমরা আশংকাগ্রস্থ ছিলাম †য, যদি তাকে তার উপর †ছড়ে †দই তবে আমাদের বিরুদ্ধে এমন বিদ্রোহ সৃষ্টি করবেন, †য তা প্রতিরোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না কিংবা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করবেন †য তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর †কান শক্তি আমাদের থাকবে না। মামূন, একদল আব্বাসীয় যারা তাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছিল ও ইমামকে ওয়ালী আহদ করার জন্য ভৎর্সনা করেছিল, তাদের জবাবেও এ একই কথা বলেছিল।
সুতরাং ইমামের নিকট †খলাফত অর্পন বা তাঁকে ওয়ালী আহাদ নিযুক্ত করার পশ্চাতে মামূনের †কান সৎ উদ্দেশ্য ছিল না। আর এ রাজনৈতিক কূট †কŠশলের পশ্চাতে অপর কিছু উদ্দেশ্য বিরাজ করছিল। এর মাধ্যমে †স একদিকে †চয়েছিল ইমামকে আপন রঙে রঞ্জিত করতে, অপর দিকে ইমামের তাক্বওয়া ও পবিত্রতাকে তুচ্ছ জ্ঞাপণ করতঃ কলুষিত করতে, অপরদিকে †চয়েছিল যদি ইমাম মামূনের †দয়া শর্তসাপেক্ষে †খলাফত বা ওয়ালী আহাদীত্ব গ্রহণ করতেন তবে তা মামূনের জন্যেই লাভ জনক হত।
কারণ, যদি ইমাম †খলাফত গ্রহণ করত মামূন নিজের জন্য ওয়ালী আহদের পদ শর্ত করত এবং এর মাধ্যমে নিজের হুকুমতের বৈধতার নিশ্চয়তা লাভ করত। অতঃপর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে †গাপণে ইমামকে হত্যা করত এবং যদি ইমামি ওয়ালী আহাদী গ্রহণ করতেন তবে মামূনের হুকুমত যথাস্থানে থাকত ও স্বীকৃতি †পত। ইমাম প্রকৃত পক্ষে তৃতীয় পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। যদিও ইমাম বাধ্য হয়ে ওয়ালী আহাদীত্ব গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি এক বিশেষ পদ্ধতিতে কাজ করেছিলেন যাতে মামূন তার উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে না †পŠঁছে এবং ইমামের নিকটবর্তী হতে না পারে ও বৈধতা লাভ না করতে পারে। আর †সই সাথে সমাজে তার হুকুমত স্বৈরাচারী হিসেবেই পরিচিত থাকে।
মদিনা ঠেকে মার্ভ (খোরাসান) ঃ
ইতিপূর্বে আমরা †যমনটি উলে−খ করেছিলাম †য, মামূন রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্যে ও আলাভীদেরকে তুষ্ট করার জন্যে যাদের মধ্যে অনেক বীর, জ্ঞানী, গুণী ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন, বিশেষ করে ইরানীরা, যারা তাঁদের ভক্ত ছিলেন, তাদেরকে তুষ্ট করার জন্য সিদ্ধান্ত নিল †য ইমামকে মদিনা থেকে মার্ভে নিয়ে আসবে যেন এরূপ দেখানো যে সে আলাভী ও ইমামের (আ.) শুভাকাংখী। মামূন এতটা সূনিপুনভাবে একর্ম স¤পাদন করত †য কখনো কখনো †কান †কান ধর্ম প্রাণ শিয়ারাও প্রবঞ্চিত হত। এ কারণে ইমাম †রযা (আ.) তাঁর অনুসারীদের মধ্যে যারা মামূনের বাহ্যিক ও †লাক দেখানো কর্মকান্ডে প্রতারিত হতে পারে তাদেরকে বলেন ঃ তার (মামূন) কথায় পুলকিত হইয়ো না, প্রতারিত হইরো না আল্লাহর শপথ মামূন ব্যতীত †কউই আমার হন্তা হবে না, কিন্তু আমি †স সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করব।
মামূন ওয়ালী আহাদ করার জন্য ২০০ হিজরীতে ইমাম †রযাকে (আ.) মদীনা †থকে মার্ভে নিয়ে আসতে আদেশ দিল। †রজা ইবনে আবি যাহাক মামূনের বিশেষ দূত বলেঃ মামূন আমাকে মদিনা †যতে ও আলী ইবনে মূসা †রযাকে (আ.) নিয়ে আসতে আদেশ দিয়েছিল এবং অহর্নিশ তার প্রতি দৃষ্টি রাখতে ও তার রক্ষীর দায়িত্ব অন্য কারো উপর ন্যস্ত না করতে বলেছিল। আমি মামূনের আদেশানুসারে মদিনা †থকে মার্ভ পর্যন্ত সর্বদা হযরতের সাথে ছিলাম। আল্লাহর শপথ, আল্লাহর দরবারে তার মত ধর্মভীরু ও †খাদাভীরু কাউকে দেখিনি; দেখিনি তার চেয়ে †বশী কেউ খোদাকে স্মরণ করতে। মদিনা †থকে মার্ভ পর্যন্ত এমন †কান শহর দেখিনি †যখানে মানুষ তার সাক্ষাত লাভের আশায় তাঁর দিকে ধাবিত হয়নি এবং দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চায়নি বা প্রশ্ন করেনি। হযরত যথার্থ জবাব প্রদান করতেন এবং তার পিতা †থকে নবী (সা.) পর্যন্ত সকল পূর্ব পূরুষ †থকে হাদীস বর্ণনা করতেন।
আবু হাশিম জা’ফারী বলেন ঃ রেযা ইবনে আবি যাহাক ইমামকে (আ.) আহওয়াযের পথে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার নিকট ইমামের আগমণের সংবাদ †পŠঁছলে আমি আহওয়ায †গলাম এবং ইমামের †খদমতে উপস্থিত হয়ে, নিজের পরিচয় দিলাম। এ প্রথমবারের মত আমি ইমামকে †দখলাম। তখন গৃষ্মকালীন গরম চূড়ান্ত মাত্রায় পড়ছিল এবং ইমাম (আ.) স্বয়ং অসুস্থ ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন ঃ আমার জন্য একজন চিকিৎসক নিয়ে আস। তাঁর জন্য একজন চিকিৎসক নিয়ে আসলাম। ইমাম চিকিৎসকের জন্যে বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করলেন। তাবিব বলল ঃ আমি আপনাকে ব্যতীত কাউকে চিনিনা এ বৃক্ষ চিনে; আপনি কিরূপে এ বৃক্ষ স¤পর্কে জানলেন? এ বৃক্ষ এ সময়ে এ স্থানে †নই। ইমাম বললেন ঃ তাহলে আমার জন্য ইক্ষু নিয়ে আস। বলল ঃ আখ পাওয়া প্রথম †য-টির নাম বলেছেন তার †চয়ে ও †বশী কষ্টকর। কারণ, বছরের এ সময় আখ পাওয়া যায় না। ইমাম বললেন ঃ এ দুটি বস্তুই †তামাদের এলাকায় এ সময়ে পাওয়া যায়। এর সাথে যাও (আবু হাশিমের দিকে ইঙ্গিত করলেন) পানি বাঁধের দিকে যাবে এবং তা অতিক্রম করলে খড়ের স্তুপ †দখতে পাবে, †স দিকে †গলে †দখবে একজন কৃষ্ণকায় †লাক †দখতে পাবে ... তার নিকট আখ †ক্ষত্রের ও ঐ বৃক্ষের কথা জিজ্ঞাসা করবে। আবু হাশিম বলেনঃ ইমামের (আ.) দেয়া দিকনির্দেশানুসারে সেখানে †গলাম এবং আখ সংগ্রহ করে ইমামের (আ.) নিকট আনলাম। ইমাম (আ.) মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন চিকিৎসক আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন ঃ এ ব্যক্তি কে? বললাম ঃ নবী গণের সর্দারের (হযরত মূহম্মদ (সা.)) সন্তান। চিকিৎসক বলল ঃ নবীগণের (আ.) জ্ঞান ও †গাপন তথ্যের †কান কিছু তাঁর নিকট বিদ্যমান। বললাম ঃ হ্যাঁ, এ ধরনের বিষয়সমূহ তার নিকট †দখেছি, তবে তিনি নবী নন। বলল ঃ তিনি কি মহানবীর (সা.) ওয়াসী? বললাম ঃ হ্যাঁ, তিনি মহানবীর (সা.) ওয়াসীগণের (আ.) একজন।
এ ঘটনার সংবাদ †রজা ইবনে আবি যাহাকের নিকট †পŠঁছল। †স তার সঙ্গীদেরকে বলল যদি ইমাম এখানে থাকেন তবে †লাকজন তাঁর দিকে ছুটে আসবে। আর এ কারণেই হযরতকে নিয়ে আওয়বায †থকে যাত্রা শুরু করেছিল।
নিশাপূরে ইমাম ঃ
নিশাপূরের এক মহিলা যার পিতামহের গৃহে ইমাম (আ.) প্রবেশ করেছিলেন বলেন ঃ ইমাম রেযা (আ.) নিশাপূরে আসলেন। পশ্চিম দিকে অবস্থিত লাশাবাদ নামে পরিচিত একস্থানে আমার পিতামহ ‘পাসাšেদর' গৃহে প্রবেশ করেছিলেন। আমার পিতামহকে এ জন্যে পাসান্দে নামকরণ করা হয়েছিল †য ইমাম তাকে পছন্দ করত ঃ তার গৃহে পদধুলি দিয়েছিলেন। ইমাম তাঁর বরকতময় হাতে আমাদের গৃহের এক †কাণে একটি বাদাম গাছ †রাপন করলেন। ইমামের বরকতে একবছরের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষের পরিণত হয়ে বাদাম ধারণ করল। মানুষ এ বৃক্ষেও বাদাম †থকে শাফা কামনা করত। †য †কান অসূস্থ ব্যক্তিই এ বৃক্ষের বাদাম শাফা লাভের আশায় ভক্ষণ করত, আরোগ্য লাভ করত। আবা সালত হারভী নামক ইমামের নিকটবর্তী একজন সাহাবী, বলেন ঃ আমি ইমাম আলী ইবনে মূসার রেযার (আ.) সাথে ছিলাম। যখন ইমাম নিশাপূরে †থকে †যতে চাইলেন এবং তিনি একটি ধূসর বর্ণের খচ্চরের উপর আরোহী ছিলেন, তখন মুহম্মদ ইবনে রাফি, আহমদ ইবনিল হারেস, ইয়াহিয়া ইবনে ইয়াহিয়া, ইসহাক ইবনে রাহিভিয়্যাহ ও একদল আলেম ইমামকে পরিবেষ্টন করে দাঁড়ালেন। তারা ইমামের খ””রের লাগাম ধরে বললেন ঃ আপনাকে আপনার পবিত্র পিতৃব্যগণের (আ.) সম্মানের কসম দিব †য, আপনার পিতার নিকট শুনেছেন এরূপ একটি হাদীস আমাকে বলুন ইমাম মাহমাল থেকে মাথা †বর করে বললেন ঃ আল্লাহর †যাগ্য বান্দা আমার পিতা মূসা ইবনে জা’ফর (আ.) আমাকে বললেন যে তার পিতা জা’ফর ইবনে মুহম্মদ সাদিক (আ.) তাঁর পিতা মুহম্মদ ইবনে আলী বাকির (আ.) তাঁর পিতা আলী ইবনে হুসাইন (আ.) সাইয়্যেদুল আবেদীন তার পিতা †বহেস্তে যুবকদের সর্দার হুসাইন (আ.) তার পিতা আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) †থকে বর্ণনা করেছেন †য, মহানবী (সা.) †থকে শুনেছিলাম, তিনি বলেন ঃ আল্লাহর †ফরেস্তা জিব্রাইল বলেন মহান আল−াহ বলেছেন ঃ আমি একক ও একমাত্র প্রভু, আমি ব্যতীত অন্য †কান প্রভূ †নই। আমার উপাসনা কর, †য ব্যক্তি নির্মল হৃদয়ে এখলাসের সাথে সাক্ষ্য দিবে †য, আল্লাহ ব্যতীত অন্য †কান প্রভূ †নই। †স আমার দূর্গে প্রবেশ করবে, আর আমার দূর্গে †য প্রবেশ করবে †স আমার আযাব †থকে নিরাপদে থাকবে। অন্য এক †রওয়ায়েতে ইসহাক ইবনে রাহভিয়্যাহ, যিনি স্বয়ং ঐ জন সমষ্টির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বলেন ঃ “†য সাক্ষ্য দিবে †য, আল্লাহ ব্যতীত †কান ইলাহ †নই †স আমার দূর্গে প্রবেশ করবে আর †য, আমার দূর্গে প্রবেশ করবে †স আমার আযাব †থকে নিরাপদে থাকবে” ইমাম উপরোক্ত উক্তিটি বলার পর স^ীয় বাহনে বসে কিছুটা পথ চললেন অতঃপর বললেনঃ অর্থাৎ একক প্রভূর উপর আস্থা স্থাপন †য প্রভুর আযাব †থকে নিরাপদে থাকার কারণ হয়, তার জন্য কিছু শর্ত আছে এবং ইমামগণের (আ.) †বলায়েতে স্বীকার করে †নয়া এ শর্তগুলোর মধ্যে একটি।
অন্য আরো কিছু ইতিহাসে বর্ণিত হয়েছে †য, যখন ইমাম এ হাদীসটি বলেছিলেন নিশাপূরের মানুষ (তখন †খারাসানের বিভিন্ন বড় বড় শহর †যগুলো জনাকীর্ণ ও আবাসস্থল ছিল, পরবর্তীতে †মাগলদের আক্রমনে তা ধ্বংস হয়েছিল) এত পরিমাণে সমবেত হয়েছিল †য মধ্যাহ্ন পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে জনকোলাহল ইমামের দর্শন লাভের আনন্দে ক্রন্দন ধ্বনির তীব্রতায় হাদীস বলা সম্ভব হচ্ছিল না বিভিন্ন †গাত্র পতিগণ উচ্চস্বরে †ঘাষণা করলেন ঃ ওহে †লাক সকল শ্রবন করুন, নবীকে (সা.) তার সন্তানকে (কষ্ট দিয়ে) কষ্ট দিয়ো না, চুপ করুন ... ...।
অবশেষে ইমাম মানুষের আনন্দ ও অভ্যর্থনার মধ্যে হাদীসটি বর্ণনা করলেন এবং চŸিŸশ হাজার †লাক ইমামের কথাগুলো লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল।
হার্ভী বলেন ঃ ইমাম নিশাপূর †থকে †বরিয়ে আসলেন এবং দাহে †সারখে ইমামকে বলা হলঃ যোহর হয়েছে, নামাযের আয়োজন করবেন কি? ইমাম তাঁর বাহন †থকে অবতরণ করলেন এবং পানি চাইলেন। আমাদের নিকট পানি ছিলনা। ইমাম নিজ হস্ত †মাবারক দিয়ে মাটি খনন করলেন এবং †সখান †থকে ঝর্ণা ধারা প্রবাহিত হল। অতঃপর ইমাম ও তাঁর সকল সঙ্গী সাথী বর্গ অযু করলেন। আজও এ ঝর্ণাধারা প্রবাহমান (নিশাপূরে)। যখন সানাবাদ †পŠঁছলেন, †সই পাহাড়ের সাথে †হলান দিয়ে বসলেন, যার পাথর দিয়ে পাত্র তৈরী করা হত এবং বললেন ঃ প্রভু †হ! এ পাহাড় †থকে মানুষকে লাভ বান কর, আর এ পাহাড় †থকে †য পাত্র তৈরী হয় তাতে যা রাখা হয় তাতে ও বরকত দান কর। অতঃপর তিনি ঐ পাহাড়ের পাথর †থকে তার জন্য কিছু পাত্র তৈরী করার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন †য তাঁর খাবার †যন এ পাত্র ব্যতীত অন্য †কান কিছুতে রান্না না করা হয়। খাবারের ব্যাপারে তাঁর কোন কথা ছিলনা এবং খুব কম পরিমাণে আহার গ্রহণ করতেন। অতঃপর তূসে হামিদ ইবনে কাহতাবেহ তায়ীর গৃহে প্রবেশ করলেন। অতঃপর হারুনকে †যখানে সমাহিত করা হয়েছিল †সখানে †গলেন এবং হারুনের কবরের একপাশের্^ হস্তমোবারক দিয়ে †রখা অংকন করলেন এবং বললেন ঃ এটিই হল আমার (সমাধি) স্থল এবং এখানেই আমি সমাহিত হব। খুব শীঘ্রই মহান আল্লাহ এ স্থানকে যিয়ারতের স্থানরূপে পরিণত করবেন এবং তা আমার অনুসারীদের ও ভক্তদের গমনাগমনের স্থানে পরিণত হবে। অবশেষে ইমাম (আ.) মার্ভে †পŠঁছলেন। মামূন তাকে একটি বিশেষ ও অন্য সকলের †চয়ে স্বতন্ত্র করে একটি গৃহে স্থান দিল ও সম্মান প্রদর্শন করল।
©somewhere in net ltd.