![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মামুনের প্রস্তাব ঃ
ইমাম (আ.) মার্ভে প্রবেশের পর, মামূন সংবাদ †প্ররণ করল †য, †খলাফত †থকে পদত্যাগ করতে চাই এবং তা আপনার উপর ন্যাস্ত করতে চাই, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী? ইমাম (আ.) মামূনের প্রস্তাব গ্রহণ করলেন না। পূনরায় মামূন সংবাদ †প্ররণ করল †য †যহেতু আমার প্রথম প্রস্তাবটি গ্রহণ করেননি তাই অবশ্যই আপনাকে আমার ওয়ালী আহদী গ্রহণ করতে হবে। ইমাম তীব্রভাবে তার এ প্রস্তাবটিও প্রত্যাখ্যান করলেন। মামূন ইমামকে নিজের কাছে †ডকে পাঠাল এবং তাঁর সাথে রুদ্ধদ্বার কক্ষে বৈঠক করল। দ্বিপদাধিকারী ফাযল ইবনে সাহল ও ঐ বৈঠকে উপস্থিত ছিল।
মামূন বলল ঃ আমার মত হল †খলাফত এবং মুসলমানদের শাসনকার্য আপনার হাতে অর্পণ করব। ইমাম গ্রহণ করলেন না। মামূন ওয়ালী আহাদীর প্রস্তাবটি পূনর্ব্যক্ত করল। পূণরায় ইমাম তা গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করলেন। মামূন বলল ঃ ওমর ইবনে খাত্তাব নিজের পর †খলাফতের জন্য ছয় সদস্য বিশিষ্ট পরিষদ গঠন করেছিল। আর ঐ ছয় সদস্যের মধ্যে একজন ছিলেন আপনারই পিতামহ আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)। ওমর নির্দেশ দিয়েছিল এ ছয় জনের মধ্যে †য বিরোধিতা করবে তাকে শিরোচ্ছেদ করবে।
এখন আমি যা কামনা করেছি তা গ্রহণ করা ব্যতীত অপনার কোন পথ নেই। কারণ, আমার এছাড়া অন্য কোন উপায় বা পথ নেই। মামূন তার এ বক্তব্যের মাধ্যমে বস্তুত ঃ ইমামকে (আ.) হত্যার হুমকি দিল। ইমাম চাপের মুখে বাধ্য হয়ে ওয়ালী আহাদীত্ব গ্রহণ করলেন এবং বললেন ঃ †বলায়েতে আহাদী গ্রহণ করব এ র্শতসাপেক্ষে †য, †কান প্রকার হুকুমকারী, আদেশ-নিষেধকারী মুফতী, কাজী হব না এবং কাউকে পদচ্যুত করব না, কাউকে নিয়োগ দিবনা, †কান কিছু পরিবর্তন করব না। মামূন ইমামের এসকল র্শত †মনে নিল। এভাবে মামূন তার †বলায়েতে আহাদী ইমামের উপর চাপিয়ে দিল যাতে এ চক্রান্তের মাধ্যমে ইমামের উপর খবরদারী করতে পারে এবং ইমাম যাতে মানুষকে নিজের দিকে আহবান করতে না পারে। আর †সই সাথে আলাভী ও শিয়াদেরকে শান্ত করতে পারে এবং তার বাদশাহীর ভিত্তি দৃঢ় করতে পারে। কেন ইমাম †বলায়েতে আহাদীকে গ্রহণ করেছিলেন?
রিয়ান ইবনে সালত বলেন ঃ ইমাম রেযার (আ.) নিকট †গলাম এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ঃ হে আল্লাহর রাসূলের (সা.) সন্তান! কেউ কেউ বলে যে আপনি মামূনের †বলায়েতে আহাদী গ্রহণ করেছেন, যদিও পার্থিব ভোগ-বিলাস †থকে নিজেকে দূরে রাখেন বলে প্রদর্শন করে থাকেন। তিনি বললেন ঃ আল্লাহ সাক্ষী আছেন †য, একর্ম আমার খুশীমত ছিল না। তবে †বলায়েতে আহাদী গ্রহণ অথবা মৃত্যু এ দুয়ের মাঝে বাধ্য হয়ে গ্রহণ করেছিলাম...। তুমি কি শুননি ইউসুফ (আ.) আল্লাহর নবী ছিলেন এবং প্রয়োজনের তাগিদে মিশরের সম্রাটের †কাষাধ্যক্ষ পদ গ্রহণ করেছিলেন। এখনও আমাকে জরুরী অবস্থা বাধ্য করেছে †বলায়েতে আহাদী গ্রহণ করতে, তাই বাধ্য হয়ে গ্রহণ করলাম। তাছাড়া আমি কাজে মাথা †দয়নি †কবলমাত্র তার মত †য, তা †থকে বাইরে (†য সকল র্শত আমি দিয়েছি তা এরকম †যন আমি এ কাজে †নই)। মহান আল্লাহর দরবারে অভিযোগ করব, আর তাঁর নিকট সাহায্য কামনা করব।
মুহম্মদ ইবনে আরাফা বলেন ঃ ইমামের নিকট জানতে চাইলাম যে, হে আল্লাহরর রাসূলের (সা.) সন্তান! †কন ওয়ালী আহাদীকে গ্রহণ করেছেন? তিনি বললেন ঃ সেই যুক্তিতে যে যুক্তিতে আমার পিতামহকে পরিষদে অংশ গ্রহণ করতে হয়েছিল।
ইয়াসির খাদেম বলেন ঃ ইমাম ওয়ালী আহাদী গ্রহণ করার পর তাঁকে দেখছিলাম আকাশের দিকে হস্তপ্রসারিত করতে এবং বলছিলেন ঃ প্রভু হে ! তুমি জান যে আমি বাধ্য হয়ে ও জবরদস্তির মুখে গ্রহণ করেছি; অতএব আমাকে তুমি শাস্তি দিওনা যেরূপে তুমি তোমার বান্দা ইয়ূসুফকে শাস্তি প্রদান করনি, যখন মিশরের বিলায়াত গ্রহণ করেছিল।
ইমাম রেযা (আ.) তাঁর এক একান্ত সঙ্গী, †য ইমাম কর্তৃক †বলায়েতে আহাদী গ্রহণ করাতে আনন্দিত হয়েছিল, তাকে বলেন ঃ পূলকিত হইওনা, এ কর্ম স¤পন্ন হবে না এবং এ অবস্থায় থাকবে না।
ইমামের পদক্ষেপ সমূহ ঃ
ইমাম বাহ্যিকভাবে ওয়ালী আহাদীকে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু কার্যতঃ তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কারণ, তিনি শর্ত দিয়েছিলেন যে, †কোন প্রকার দায়িত্ব তিনি গ্রহণ করবেন না এবং কোন কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না।
মামূন †স সকল শর্ত মেনে নিয়েছিল। কিন্তু কখনো কখনো কোন কোন কর্মের দায়িত্ব ইমামের (আ.) উপর চাপিয়ে দিতে ও ইমামকে স্বীয় উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ার বানাতে †চয়েছিল। কিন্তু ইমাম কঠোরভাবে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এবং কখনোই তার সাথে সহযোগিতা করেননি।
মোয়াম্মার ইবনে খালিদ বলেন ঃ ইমাম রেযা (আ.) আমার জন্য বর্ণনা করেছেন †য মামূন আমাকে বলেছিল ঃ আপনার বিশ্বস্ত কয়েকজনের পরিচয় দিন যাতে †য সকল শহরে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে সেগুলো তাদের উপর ন্যাস্ত করতে পারি। তাকে বললাম ঃ যদি ঐ সকল শর্ত যে গুলো তুমি গ্রহণ করেছ পালন করে চল, তবে আমিও আমার প্রতিশ্র“তি রক্ষা করব। আমি এ কাজে এ শর্তে প্রবেশ করেছি †য, আদেশ ও নিষেধ, পদচ্যুত ও নিয়োগদান করবনা এবং পরামর্শদাতাও হব না। আমি †তামার পূর্বেই পৃথিবী †থকে বিদায় নিব। আল্লাহর শপথ, †খলাফত এমন এক বিষয় যার স¤পর্কে আমি চিন্তা করতাম না। যখন আমি মদিনায় ছিলাম আমার বাহনে আরোহণ করতাম, আসা যাওয়া করতাম, শহরের অধিবাসী ও অন্যান্যরা আমার নিকট তাদের প্রয়োজনের, অভাব অনটনের কথা বলত,আমি তাদের অভাব অনটন দূর করতাম। তারা এবং আমি পর¯পর আত্মীয় স্বজনের মত আন্তরিক ছিলাম। আমার চিঠিপত্র নগরে বন্দরে গ্রহণ†যাগ্য ও সমাদৃত ছিল। তুমি আমার জন্য তদপেক্ষা অতিরিক্ত †কান বৈভবের ব্যবস্থা করনি যা মহান আল্লাহ আমাকে দিয়েছিলেন, এবং আমার জন্য যতটুকুই বৃদ্ধি করতে চাও না কেন, তা-ও মহান আল্লাহর পক্ষ থেকেই, যা তার পক্ষ থেকে আমাকে অনুগ্রহ করা হয়। মামুন বলল ঃ আমি আমার অঙ্গীকারাবদ্ধ আছি।
বেলায়েতে আহাদীর অভিষেক ঃ
ইমাম (আ.) কর্তৃক বর্ণিতরূপ †বলায়েতে আহাদী পদ গ্রহণ করার পর মামুন মানুষকে এ স¤পর্কে অবহিত করার ও রাজনৈতিক সুবিধা ভোগের জন্য এবং বাহ্যতঃ দেখানোর জন্য যে সে খুব খুশী, ও †সŠভাগ্যবান, অভিষেক অনুষ্টানের ব্যবস্থা করল। বৃহ¯পতিবার †স তার সভাসদের জন্য অনুষ্টানের ব্যবস্থা করেছিল। ফাযল প্রাসাদ বহির্ভাগে যেয়ে ইমাম রেযার (আ.) ওয়ালী আহাদী স¤পর্কে মামূনের মতামত মানুষের নিকট তুলে ধরল এবং মামূনের এ আদেশ †পŠঁছাল যে সকলকে সবুজ †পাশাক (যা আলাভীদের পোশাক ছিল) পরিধান করতে হবে এবং পরর্বতী বৃহ¯পতি বারে ইমামের হাতে বাইয়্যাত করার জন্য উপস্থিত হতে হবে।
নির্ধারিত দিবসে সকল †শ্রণীর ব্যাক্তিবর্গ †যমন ঃ সভাসদ, সেনা প্রধান, বিচারক ও অন্যান্যরা সকলেই সবুজ †পাশাক পরিধান করে উপস্থিত হল। মামুন বসল এবং ইমামের (আ.) জন্যও বিশেষ স্থানের ব্যবস্থা করা হল। ইমামও সবুজ †পাশাক পরিধান করলেন ও মাথায় আমামাহ পরলেন এবং তরবারি সাথে নিয়ে বসলেন। মামুন আদেশ দিল †য তার পূত্র আব্বাস ইবনে মামূনই হবে ইমামের কাছে প্রথম বাইয়াত কারী। ইমাম তাঁর হস্ত উচুঁ করলেন এমন ভাবে †য হাতের পশ্চাৎ দিক নিজদিকে এবং হাতের তালু বাইয়াতকারীর দিকে অবস্থান করছিল।
মামূন বলল ঃ বাইয়াতের জন্য আপনার হস্ত প্রসারিত করুন। ইমাম বললেন ঃ আল্লাহর রাসূল (সা.) এরূপেই বাইয়াত গ্রহণ করতেন। তখন মানুষ ইমামের হাতে বাইয়াত করল এবং তাঁর হস্ত একই রূপে হস্ত সমূহের উপর ছিল। এ সভায় অর্থের থলি বিতরণ করা হয়েছিল। ভক্তরা, কবিরা ইমামের মর্যাদা স¤পর্কে ও মামূনের কর্মের প্রশংসা করে বক্তব্য ও কবিতা আবৃতি করেছিল।
অতঃপর মামূন বলল ঃ আপনি ও †খাৎবা পড়ূন এবং বক্তব্য প্রদান করুন। ইমাম আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করার পর উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বললেন ঃ মহানবীর (সা.) দিক †থকে আপনাদের উপর আমার কিছু অধিকার আছে, আবার আমার উপরও আপনাদের কিছু অধিকার আছে মহানবীর (সা.) দিক †থকে। অতএব, যখন আপনারা আমার অধিকার রক্ষা করলেন, আমারও আপনাদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা অপরিহার্য, অতঃপর ঐ সভায় তিনি আর কিছু বললেন না। মামূন ইমাম †রযার (আ.) নাম †দরহামের উপর মোহরাংকিত করার নির্দেশ দিল।
ঈদের নামাযের আয়োজন ঃ
ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আযহার মত †কান এক ঈদে মামূন ইমামের (আ.) জন্য সংবাদ †প্ররণ করল †য, তিনি †যন ঈদের নামাযের ইমামতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং নামায স¤পন্ন করেন। ইমাম জবাবে তাকে বললেন ঃ †তামার ও আমার মধ্যে †য শর্ত সে স¤পর্কে অবহিত আছ, সুতরাং আমাকে নামায আয়োজনের দায়িত্ব †থকে অব্যাহতি দাও। মামুন বলল ঃ আমার এ কাজের অর্থ হল, মানুষ যাতে নিশ্চিত হতে পারে এবং আপনার মর্যাদা স¤পর্কে জানতে পারে। দূত একাধিকবার ইমাম ও মামুনের নিকট আসা যাওয়া করল। †যহেতু মামূন খুব পিড়াপিড়ী করছিল, ইমাম জবাবে বললেন ঃ আমি অধিকতর পছন্দ করি †য, আমাকে এ কর্ম †থকে অব্যাহতি দাও। কিন্তু যদি তা গ্রহণ না কর এবং আমি এ কর্ম স¤পাদন করতে বাধ্য হই, তবে আমি আল্লাহর রাসূল (সা.) ও আমিরুল মূমনীন আলীর (আ.) মত †খালা আকাশের নীচে যাব। মামুন তা গ্রহণ করল এবং বলল ঃ আপনি †য ভাবে ইচ্ছা বাইরে †যতে পারেন। †স আদেশ দিল যাতে †সনাপতিবর্গ, সভাসদগণ ও সাধারণ জনগণ ঈদের দিবসে প্রভাতে ইমামের গৃহের সম্মুখে উপস্থিত হন।
ঈদের প্রভাতে সূর্যোদ্বয়ের পূর্বেই পথ প্রান্তর ভক্ত মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং এমন কি শিশু ও নারীরাও উপস্থিত হয়েছিলেন এবং ইমামের বাইরে আসার অপেক্ষায় অপেক্ষমান ছিলেন। †সনাপতিগণ †সনাবাহিনী সহ বাহনে আরোহিত অবস্থায় ইমামের গৃহের সম্মুখে দাঁড়িয়ে ছিল।
সূর্যোদয় হল, ইমাম স্নানান্তে †পাশাক পরিধান করলেন, তুলার তৈরী শুভ্র আমামা মাথায় পরলেন। আমামার এক প্রান্ত স্কন্ধের উপর ও অপর প্রান্ত পিঠ †থকে এনে স্কন্ধের উপর রাখলেন। সুগন্ধি মাখলেন এবং যষ্টি হাতে নিলেন সঙ্গীদেরকে বললেন ঃ আমি যা করি, †তামরা তা-ই করবে।
অতঃপর নাঙ্গা পায়ে এবং পাজামা পায়ের †গাড়ালী †থকে কিছুটা উপরে পরিধান করত ঃ যাত্রা শুরু করলেন। কিছু দুর যাওয়ার পর মাথা আকাশের দিকে তুলে তাকবীর বললেন তাঁর সাথীরাও তার তাকবীরের জবাবে তাকবীর বলল...। ইমাম একটি প্রান্তরে †পŠঁছলেন এবং দাঁড়ালেন। সেনা ও †সনাপতিরা ইমামকে এরূপ করতে †দখলে তারাও বাহন †থকে অবতরণ করল এবং পাদুকাসমূহ খুলে নাঙ্গা পায়ে মাটির উপর দাঁড়িয়ে ছিল।
ইমাম উক্ত প্রান্তরে তাকবির বললেন এবং জনসমষ্টিও তার সাথে তাকবীর বলল। এত সুন্দর আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল †যন গগন ধরা তাঁর সাথে তাকবীর ধ্বনি দিচ্ছিল। মার্ভের সর্বত্র (অনান্দাশ্র“) কান্নার ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ছিল। ফাযল ইবনে সাহল এ অবস্থা †দখে মামূনকে সংবাদ দিল ঃ হে আমীর! ইমাম রেযা (আ.) যদি এ ভাবে নামাযের স্থানে যায় তবে †ফতনা ও বিদ্রোহ সৃষ্টি হবে এবং আমরা সকলেই আমাদের প্রাণের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত, তাঁকে ফিরে আসার সংবাদ দিন। মামুন ইমামকে সংবাদ দিল ঃ আমরা আপনাকে কষ্ট দিয়েছি, আপনার কষ্ট †হাক তা আমরা চাই না, আপনি †লাকজন সহ ফিরে আসুন, ইতিপূর্বে †য নামায পড়াত, †সই নামায পড়াবে। ইমাম তাঁর পাদুকা নিয়ে আসার নির্দেশ দিলেন। তিনি পাদুকা পরে বাহনে আরোহণ করে গৃহে প্রত্যাবর্তণ করলেন।
মানুষ মামূনের প্রকৃত †চহারা ও প্রবঞ্চনা স¤পর্কে জ্ঞাত হল। জানল †য মামুন ইমামের ব্যাপারে যা কিছূ করে তা †কবলমাত্র একটি বাহ্যিক রূপ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে †পŠঁছা ব্যতীত তার অন্য †কান লক্ষ্য †নই।
তর্ক ও বিতর্ক সভা ঃ
ইমামের বিরুদ্ধে মামূনের স্বেচ্ছাচারী নীতির বাইরে †স অন্যান্য চক্রান্তমূলক ফন্দিও এঁটেছিল। †স মানুষের নিকট ইমামের আধ্যাত্মিক মর্যাদায় ক্ষুব্ধ ও মনক্ষুন্ন ছিল। ফলে ইমামকে পন্ডিতদের মুখোমুখি করে বিতর্ক ও আলোচনা এবং ইমামের জ্ঞান †থকে লাভবান হওয়ার বাহানায় তাঁকে পরাজিত করতে †চষ্টা করেছিল; হয়ত এ ভাবে ইমামের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাবে এবং মানুষের দৃষ্টিতে ইমামকে তুচ্ছ ও অবাঞ্ছিত প্রমাণ করতে পারবে, এ দূরাশা তার অন্তরে লালন করছিল। কিন্তু এ চক্রান্ত, ইমামের সম্মান বৃদ্ধি পাওয়া ও মামূনের লজ্জা ও গ্লানি বৃদ্ধি পাওয়া ব্যতীত তাকে †কান ফল দিল না। ঐশী জ্ঞানের রবি জ্ঞানের দরবারে এতটা উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছিল †য মামূনের মত প্রতারক নিশাচরের অন্তরে হিংসার আগুন দাউ-দাউ করে জ্বলছিল; আর ধীরে ধীরে তার দৃষ্টি শক্তি †কড়ে নিচ্ছিল।
সহস্রাব্দীকাল পূর্বে মহান শীয়া ফকীহ ও হাদীসবিশারদ †শখ সাদুক লিখেন ঃ মামূন পথভ্রষ্ট ব্যক্তি সকল ও বিভিন্ন স¤প্রদায়ের কালামশাস্ত্রবিদদেরকে নিমন্ত্রন করেছিল এবং তার প্রত্যাশা ছিল তারা ইমামকে পরাভূত করবে। আর এটা ইমামের প্রতি মামূনের হিংসা ও পরশ্রীকাতরতা প্রসূত যা †স তার কলুষিত হৃদয়ে লালন করছিল। কিন্তু ইমাম এমন কারো সাথে বিতর্কে উপনীত হননি †য অবশেষে ইমামের মর্যাদাকে স্বীকার করেনি বা ইমামের যুক্তির কাছে পরাভূত হয়নি।
এক নওফেল বলে ঃ মামূন আব্বাসী ফাযল ইবনে সাহলকে নির্দেশ দিল যাতে সে বিভিন্ন মাযহাবের প্রধানদেরকে নিমন্ত্রন করে। †যমন ঃ ক্যাথোলিক ধর্মযাজক, ইহুদী আলেমদের প্রধান আল জালুত, সাবেয়ীদের প্রধান, যারথুষ্ট্র ধর্মের প্রধান ও অনুসারীরা †রামীয় তার্কিক ও কালামশাস্ত্রবিদ একত্র করতে বলল। ফাযল তাদেরকে একত্র সমবেত করল। মামূন ইমামের বিশিষ্ট সহকারী ইয়াসিরের মাধ্যমে ইমাম †রযাকে (আ.) এ মর্মে অনুরোধ করেছিল †য, যদি তিনি রাজী থাকেন, তবে বিভিন্ন মাযহাবের প্রধানগণের সাথে আলোচনায় বসতে পারেন। ইমাম জবাব দিলেন ঃ আগামী কাল আসব। ইয়াসির ফিরে গেলে ইমাম আমাকে বললেন ঃ †হ নওফেলী! তুমি হলে ইরাকের অধিবাসী এবং ইরাকীরা খুব সচেতন। মামূন †য মুশরিক ও বিভিন্ন ধর্মের পন্ডিতদেরকে নিমন্ত্রন করেছে, †স ব্যাপারে তুমি কী বুঝতে পারছ? বললাম ঃ আপনার জন্য উৎসর্গ হব; †স চায় আপনাকে পরীক্ষা করতে এবং আপনার জ্ঞানের গভীরতা স¤পর্কে জানতে। ইমাম বললেন ঃ তুমি কি ভয় পাচ্ছ †য, তারা আমার যুক্তিকে অসার প্রতিপন্ন করবে? বললাম ঃ আল্লাহর শপথ কখনোই আমি এ ব্যাপারে সন্ত্রস্ত নই। বরং আমি আশা করি মহান আল−াহ আপনাকে তাদের উপর জয়যুক্ত করবেন। বললেন ঃ †হ নওফেলী! তুমি কি জানতে চাও মামূন কখন অনুতপ্ত হবে? বললাম ঃ জী হ্যাঁ। বললেন ঃ যখন †তŠরতের অনুসারীদের সাথে তাদের †তŠরত †থকে, ইঞ্জিলের অনুসারীদের সাথে তাদের ইঞ্জিল †থকে, যবুরের অনুসারীদের সাথে যবুর †থকে, সাবেয়ীনের সাথে তাদের হির্রু ভাষায় যারথুষ্ট্র পুরোহিতদের সাথে তাদের ফার্সী ভাষায়, রূমীদের সাথে তাদের ভাষায় এবং প্রত্যেকের ভাষায়, তাদেরকে যুক্তি প্রদর্শন করব, যখন প্রত্যেক দলকে পরাভূত করব এবং তাদের যুক্তিকে অসাড় প্রমাণ করব এবং তারা স্বীয় বিশ্বাস ও রীতি †থকে বিরত হয়ে আমার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করবে।
মামূন নিজেই জানে যে, সে যে মসনদের উপর অধিষ্টিত হয়ে আছে, তার অধিকারী সে নয়। আর এ সময় মামূন অনুতপ্ত হবে। তারপর ইমাম বলেন ঃ পরবর্তী প্রভাতে ইমাম তাদের সভায় উপস্থিত হলেন। ইহুদীদের আলেম প্রধান জালুত বললঃ আমরা †তামার নিকট †থকে †তŠরাত, ইঞ্জিল, দাউদের যাবূর, সহুফে ইব্রাহীম ও মূসা ব্যতীত †কান কিছুর উদ্ধৃতি গ্রহণ করব না।
তিনি তার প্রস্তাব গ্রহণ করলেন। মহানবীর (সা.) নবুয়্যাতের প্রমাণের জন্য ইমাম তাদের সাথে †তŠরাত,ইঞ্জিল ও যাবূর †থকে বিস্তারিত দলিল উপস্থাপন করেছিলেন; তারা ইমামকে সত্যায়িত করল। অতঃপর অন্যদের সাথেও কথা বললেন যখন সকলেই নিশ্চুপ হয়ে †গল তখন ইমাম বললেন ঃ ওহে †লাক সকল! যদি †তামাদের মধ্যে কারো বিরোধিতা †থকে থাকে কিংবা প্রশ্ন †থকে থাকে, তবে নিঃসংকোচে ও নির্ভয়ে প্রশ্ন করতে পার।
ইমরানী সাবী †য বিতর্কে ও কালামশাস্ত্রে অতুলনীয় ছিল, সে বলল ঃ হে মহাজ্ঞানী! যদি আপনি প্রশ্ন করার জন্যে আহবান না জানাতেন, তবে প্রশ্ন করতাম না। কারণ, আমি কুফা, বসরা, শাম ও আলযেরিয়া গিয়েছিলাম এবং ঐ শহরসমূহের কালামশাস্ত্রবিদদের সাথে কথা বলেছিলাম, কিন্তু এমন কাউকে পাইনি †য আল্লাহর একত্বকে আমার জন্য প্রমাণ করতে †পরেছিল। ইমাম (আ.) বিস্তারিত দলিল উপস্থাপনের মাধ্যমে একক প্রভুর অস্তিত্বের প্রামাণ তার জন্য বর্ণনা করলেন। ইমরান তুষ্ট হল এবং বলল ঃ হে আমার †নতা, আমি অনুধাবন করতে †পরেছি এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি †য মহানআল্লাহর, আপনি †যরূপে বর্ণনা করেছেন †সরূপই আছেন; আর মুহম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা যাকে তিনি মানব স¤প্রদায়ের হিদায়েতের জন্য সঠিক দ্বীন সহ †প্ররণ করেছেন। অতঃপর সে কেবলামুখী হল এবং †সজাদবনত হল ও ইসলাম গ্রহণ করল। মোতাকালে−মরা ইমরান সাবীর বক্তব্য শুনার পর, আর কিছু জিজ্ঞাসা করল না। দিবস †শষে মামূন উঠে দাঁড়াল এবং ইমামের (আ.) সাথে অন্দর মহলে †গল। †লাকজন বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ল।
শাহাদাত ঃ
অবশেষে মামূন ইমামকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিল। কারণ, সে অনুধাবন করতে পেরেছিল যে ইমামকে (আ.) †কোন ভাবেই নিজের হাতের পূতূল বানানো সম্ভব নয়। অপরদিকে জনগণের নিকট ইমামের মর্যাদা ও গ্রহণ†যাগ্যতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ইমামের ব্যক্তিত্বহীন করতে মামূন তার সর্বশক্তি নিয়োগ করলে ও ইমামের সম্মান ও ব্যক্তিত্ব দিনের পর দিন চূড়ান্ত মাত্রায় বৃদ্ধি †পতে থাকল। মামূন জানত †য, যতই সময় গড়াবে ইমামের সত্যতা তত †বশী প্রকাশ পাবে এবং তার (মামূনের) কপটতা ততবেশী ¯পষ্টতর হবে। অপরদিকে আব্বাসীয়রাও তাদের †দাসররা ইমামকে ওলী আহদ নিযুক্ত করার ব্যাপারে মামূনের কর্মকান্ডে অসন্তষ্ট ছিল এবং এমনকি তারা তাদের প্রতিবাদস^রূপ আব্বাসীয়দের বিরুদ্ধবাদী ইব্রাহীম ইবনে আব্বাসীর হাতে বাগদাদে বাইয়াত করেছিল। আর এ ভাবে মামূনের হুকুমত বিভিন্ন দিক †থকে বিপজ্জনক অবস্থায় পতিত হয়েছিল। সুতরাং †গাপনে ইমামকে হত্যা করাতে উদ্যত হল। এবং বিষ প্রয়োগ করল। যাতে এ পন্থায় একদিকে †স মুক্তি †পতে পারে, অপরদিকে বনি আ্ববাস ও তাদের †দাসরদেরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতে পারে। ইমামের (আ.) শাহাদাতের পর মামূন বনী আব্বাসকে লিখেছিল ঃ †তামরা আমাকে অভিযোগ করেছ, †কন †বলায়েতে আহাদীর পদ আলী ইবনে মূসা রেযার (আ.) উপর ন্যাস্ত করেছিলাম। †জনে রাখ †য তিনি পৃথিবী †থকে বিদায় নিয়েছেন। সুতরাং আমার আনুগত্য প্রকাশ কর।
মামূন †চয়েছিল ইমাম †রযার (আ.) অনুসারীরা যাতে ইমামের শাহাদাত স¤পর্কে অনবগত থাকে। সে শঠতা ও প্রবঞ্চণার মাধ্যমে স্বীয় অপকর্মকে †গাপন রাখতে এবং ইমামের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করতে চাইল। কিন্তু সত্য †গাপন রইল না এবং ইমামের বিশেষ সঙ্গী ও স্বজনরা প্রকৃত ঘটনা স¤পর্কে অবগত হলেন।
আবা সালত হার্ভী, যিনি ইমাম †রযার (আ.) নিকটবর্তী সাহাবীদের অন্তর্গত তিনি মামূন ও ইমামের মধ্যে কথপোকথন ও অবশেষে তাঁর শাহাদাতের ঘটনা আমাদের জন্য বর্ণনা করেছেন। আহমদ ইবনে আলী আনসারী বলেন †য, আবা সালতের নিকট জিজ্ঞাসা করেছিলাম, মামূন ইমামের প্রতি সম্মান ও বন্ধুত্ব প্রদর্শন করত এবং তাঁকে নিজের ওয়ালী আহাদ নিযুক্ত করেছিল, এমতাবস্থায় কিরূপে ইমামকে হত্যার পরিকল্পনা করতে পারে? আবা সালত বলেন ঃ †যহেতু মামূন ইমামের মহত্ব ও মর্যাদা †দখতে †পয়েছিল †সহেতু বাহ্যতঃ ইমামকে সম্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন করত এবং তাঁকে ওয়ালী আহাদ নিযুক্ত করেছিল, যাতে মানুষ বুঝে †য ইমাম পার্থিব সুখ-সম্মৃদ্ধি পছন্দ করেন এবং মানুষের নিকট তার মর্যাদাহানী হয়। কিন্তু †যহেতু †স †দখল †য, ইমামের তাক্বওয়া ও সংযমের †কান ক্ষতি করতে পারেনি এবং মানুষ ইমামের নিকট তাঁর পবিত্রতা ও তাক্বওয়ার ব্যতিক্রম কিছুই †দখতে পায়নি। আর এ কারণে মানুষের নিকট ইমামের মর্যাদা ও সম্মান উত্তর উত্তর বৃদ্ধি †পতে থাকল। মামূন বিভিন্ন শহরের কালামশাস্ত্রবিদ জড়ো করল। †স প্রত্যাশা করেছিল †য, সম্ভবতঃ তাদের মধ্যে †কউ তাত্বিক আলোচনায় ইমামের উপর বিজয়ী হতে পারবে, এবং ইমামের জ্ঞানগত মর্যাদা পন্ডিতদের নিকট ক্ষুন্ন হবে। অতঃপর তাদের মাধ্যমে তা সাধারণ মানুষের নিকট ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু ইহুদী, খ্রীষ্টান,অগ্নিপূজক, সায়েবীন, ব্রাম্মন, নাস্তিক ও দাহরী মাযহাবের †কউই এবং †কান ইসলামী মাযহাবের তার্কিকই ইমামের সাথে আলোচনায় আসেনি †য পরাজিত হয়নি এবং ইমামের দলিলের স্বীকৃতি †দয়নি।
†যহেতু এরূপ ঘটেছিল মানুষ বলত ঃ আল্লাহর শপথ, †খলাফতের জন্য ইমাম মামূনের †চয়ে †যাগ্য ও উপযুক্ততর। মামূনের নিযুক্ত ব্যক্তিরা মামূনকে এ স¤পর্কে অবহিত করত। †স ভীষন ক্রুদ্ধ হল এবং তার হিংসার দাবানল দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগল। অনুরূপ ইমামও (আ.) মামূনের বিপরীতে সত্য বলার †ক্ষত্রে ছিলেন নির্ভীক। কোন †কান বিষয়, যা মামূনের জন্য খুবই অসহণীয় ছিল তা-ও বর্ণনা করতেন। এটাও ইমামের প্রতি মামূনের †ক্রাধ ও পরশ্রীকাতরতার কারণ হয়েছিল। অবশেষে যখন মামূনের বিভিন্ন কপটতা ও শ?তামূলক কর্মকান্ড তাকে †কান ফল দিতে পারেনি, তখন †স চুপিসারে ইমামকে বিষ প্রয়োগ করেছিল।
আবা সালত, যিনি স্বয়ং ইমামের (আ.) সাথে ছিলেন এবং ইমামের †শষ কীর্তিতেও উপস্থিত ছিলেন, বলেনঃ মার্ভ †থকে বাগদাদে ফিরে আসার পথে তুসে মামূন ইমামকে আংগুরের মধ্যে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছিল।
ইমামের (আ.) পবিত্র †দহ †মাবারক †য সমাধিস্থলে হারুনকে দাফন করা হয়েছিল, †সখানেই হারুনের কবরের সম্মুখে সমাহিত করা হয়েছিল। ইমাম রেযা (আ.)-এর শাহাদাতের ঘটনা ঘটেছিল ২০৩ হিজরীর সফরের †শষ দিনে এবং তখন ইমাম (আ.) পঞ্চান্ন বছর বয়স্ক ছিলেন। তাঁর পবিত্র আত্মার উপর মহান আল্লাহর দরুদ বর্ষিত †হাক, বর্ষিত †হাক নবীগণের উপর ও পবিত্র গণের।
ইতিহাসের নিরব ও নিশ্চুপ ভূমিকা কোন কোন স্বৈরাচারী ও অত্যাচারীর অন্যায় ও অপরাধ †যমন ঃ মামূন আব্বাসীর অত্যাচার ও অপকর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষের জন্য সু¯পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে। মামূন তার কপট ও শ?কারিতাপূর্ণ কর্মের মাধ্যমে †কবলমাত্র ইমামকেই বিষ প্রয়োগ ও হত্যা করেনি, বরং ইমামের অনেক আত্মীয়-স্বজন ও বিশ্বস্ত শিয়াদেরকেও হয় হত্যা করেছিল নতূবা গৃহহারা করে পাহাড় পর্বতে নির্বাসন দিয়েছিল। তাদের †যাগাযোগ এত সংকীর্ণ করে †ফলেছিল যে, তাঁরা †গাপনে †কান এক †কাণে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। অবশেষে কেউ কেউ শাহাদাতের †পয়ালা পান করেছিলেন, আবার †কউ †কউ অখ্যাত ও অপরিচিত অবস্থায় জীবনাতিবাহিত করতঃ মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাঁদের অনেকেরই জীবনেতিহাস আজ বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গিয়েছে এবং †কবলমাত্র ছড়ানো ছিটানো কিছু সংবাদ শিয়াদের মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়েছে।
ইমামের কিছু বাণী ঃ
বরকত ও কল্যাণ হিসেবে ইমাম আলী ইবনে মূসা রেযার (আ.) বক্তব্য থেকে লাভ বান হওয়ার জন্য এখানে আমরা তাঁর কিছু বক্তব্য তুলে ধরব ঃ (১) পৌরুষ তার জিহ্বার নীচে লুক্কায়িত থাকে, যখন কথা বলে তখন প্রকাশিত হয়। (২) কর্মের পূর্বেই (কর্মফল স¤পর্কে) চিন্তা †তামাকে অনুতপ্ত হওয়া থেকে নিরাপদে রাখে। (৩) অন্যায় ও অপকর্ম কারীদের সঙ্গ সৎকর্মশীলদের প্রতি বিরূপ ভাবাপন্ন হওয়ার কারণ হয়। (৪) আল্লাহর বান্দাগণের সাথে শত্র“তা পোষণ করা হল আখেরাতের জন্য নিকৃষ্ট পাথেয়। (৫) যে ব্যক্তি তার ক্ষমতা ও মর্যাদা স¤পর্কে অবগত, সে কখনোই ধ্বংস হবে না। (৬) উপহার, হৃদয়সমূহ থেকে হিংসা বিদূরিত করে। (৭) কিয়ামতে সে আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে, যে সদাচরন করে এবং তার পরিবারের সাথে সদ্ব্যবহার করে। (৮) যদি কেউ কোন মুসলমানকে প্রতারণা করে, তবে সে আমাদের কেউ নয়। (৯) মূমিন ক্রধান্বিত হলেও, ক্রোধ তাকে (অপরের) অধিকার সংরক্ষণ †থকে বিরত করে না। (১০) মহান আল্লাহ (অনর্থক) কথপোকথন, স¤পদের অপব্যয় ও (অপ্রাসঙ্গিক ভাবে) অধিক প্রশ্ন করাকে অপছন্দ করেন। (১১) মানুষকে ভালবাসা বুদ্ধিবৃত্তির অর্ধাংশ। (১২) তিনটি কর্ম সর্বাপেক্ষা কঠিনঃ ন্যায় পরায়ণতা ও সত্যবাদিতা যদিও (এর ফল) নিজের বিরুদ্ধে যেয়ে থাকে, সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণে থাকা, ঈমানদার ভাইকে (স্বীয়) স¤পদের অংশীদার করা। (১৩) উদার ব্যক্তি, মানুষ তার জন্য যে খাদ্য প্রস্তুত করে সে তা থেকে পানাহার করে, যাতে অন্যরা তার তৈরীকৃত খাবার থেকে পানাহার করে। (১৪) কোরান আল্লাহর কালাম, তা ত্যাগ করনা এবং তা ব্যতীত হিদায়াত কামনা করনা, নতূবা পথ ভ্রষ্ট হবে।
ইমাম (আ.) কর্তৃক কয়েকটি প্রশ্নের জবাব ঃ
প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ আল্লাহ কোথায় এবং কিরূপে? ইমাম বলেন ঃ প্রকৃতপক্ষে এ ধারণাটি ভূল। কারণ, মহান আল্লাহ স্থান সৃষ্টি করেছিলেন এবং তিনি কোন স্থান দখল করেননি; তিনি বিভিন্ন অবস্থার সৃষ্টি করেছেন অথচ তিনি সকল অবস্থার বাইরে। অতএব, মহান আল্লাহকে কোন অবস্থা ও স্থানের মাধ্যমে চিনা সম্ভব নয় এবং ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তাকে উপলব্ধি করা যায় না, তিনি কোন কিছুর সদৃশ নন এবং কোন কিছুর সমতুল্য নন।ক্সক্স
মহান আল্লাহ কখন অস্তিত্বে এসেছেন? ইমাম বলেন ঃ বল, কখন তিনি ছিলেন না। তবে বলব যে কোন সময় অস্তিত্বে এসেছেন। ইমাম বলেন ঃ তুমি ছিলেনা, অতঃপর অস্তিত্বে এসেছ। তুমি স্বয়ং জান যে নিজেকে সৃষ্টি করনি এবং তোমার মত যে আছে সে-ও তোমাকে অস্তিত্বে আনেননি।
আমাদের জন্য মহান আল্লাহর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারবেন কি?
ইমাম বলেন ঃ মহান আল্লাহকে অনুমানের ভিত্তিতে যে বর্ণনা করা হয়, সর্বদা তা ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্টতা এবং যা বলা হয় তা অপছন্দনীয়। আমি মহানআল্লাহকে স্বয়ং তিনি নিজেকে যেরূপে বর্ণনা করেছেন, কোন প্রকার দৃশ্য ও আকার মস্তিষ্কে ধারণ ব্যতীত সেরূপেই বর্ণনা করব ঃ খোদাকে (সৃষ্টির) ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপলব্ধি করা যায় না। মানুষের সাথে তাঁর কোন তুলনা হয় না। কোন প্রকার সাদৃশ্য ব্যতীতই তাকে অনুধাবন করা যায়। তাঁর সমুন্নত মর্যাদা সত্বেও তিনি সকলের অতি নিকটে তার সদৃশ কোন কিছুই নেই, তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে তাঁকে উপমিত করা যায় না। বিচারের ক্ষেত্রে তিনি স্বয়ং কারো প্রতি অন্যায় করেন না। তাঁর সৃষ্ট নিদর্শন থেকে তাঁকে চিনা যায়।
বিশ্ব হুজ্জাত ও ইমাম ব্যতীত থাকতে পারে কি?
ইমাম ঃ যদি একপলকও বিশ্ব হুজ্জাত ও ইমামবিহীন অবস্থায় থাকে, তবে সমস্ত বিশ্ব ব্রহ্মান্ড ধ্বংস হয়ে যেত।
ইমামে যামান বা তাঁর আবির্ভাব স¤পর্কে কিছু বলতে পারেন কি?
©somewhere in net ltd.