![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুরতে ভালবাসি। সময়-সুযোগ-টাকা তিনটা খাপে খাপ মিলে গেলে আমাকে পাওয়া যায় না কখনোই। কম খরচে ট্রাভেলিং একটা আর্ট মনে করি। যা জানি তা জানানোর চেষ্ঠা করি আর যারা জানে তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্ঠা করি।
ইদানিং শোনা যাচ্ছিল, চেংরাবান্ধা পোর্ট ওপেন করে দিয়েছে কিন্তু হাইকমিশন থেকে কোন অফিসিয়াল নোটিশ এখনো আসে নি। যার কারণে জল একটু বেশি ঘোলা হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ বলছে যাওয়া যায় আর কেউ কেউ বলছে এটা অসম্ভব। আবার কেউ কেউ বুদ্ধিজীবীদের মতো এটা বলছে যাওয়া যাবে কিন্তু পরবর্তীতে ভিসা পেতে ঝামেলা হবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে যারা বলছে যাওয়া যাবে- তাদের মধ্যে কয়েকজন নিয়ে গিয়েছেন বা পরিচিত কেউ গিয়েছেন আর যারা যারা বলছে যাওয়া যাবে না তারা নিজেরাও কউ কোনদিন যাওয়ার ট্রাই করেন নি এবং পরিচিত কাউকে চেংরাবান্ধা পোর্ট থেকে ফেরত আসতে দেখেননি। এখন আসি যারা যারা বলছে যাওয়া যাবে কিন্তু পরবর্তীতে ভিসা পাবেন না তারা তো বিরাট মাপের বুদ্ধিজীবী। বর্ডার ক্রস করার বৈধ অবৈধ উপায় তাদের হয়তো জানা নেই।
এবার আসি মূল কাহিনীতে। আসল কথা হচ্ছে চেংরাবান্ধা পোর্ট এখন যেকোন ভারতীয় ভিসাধারীদের জন্য ওপেন। ওদের ওই পোর্টের নেটওয়ার্কিং কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে। হাইকমিশন থেকে নোটিশ না আসার বিষয়টা হচ্ছে- উচ্চমার্গিয় ব্যাপার স্যাপার। সরকারী কাজ একটু সময় লাগবেই।
আমরা গত 16 তারিখ দার্জিলিং যাওয়ার জন্য চেংরাবান্ধা পোর্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করি। আমাদের টিমে 14 জনের মধ্যে 4 জনের হরিদাশপুর পোর্ট এন্ট্রি/এক্সিট ছিল। চেংরাবান্ধা এমন একটা পোর্ট যেখানে আপনার সব কাগজপত্র লিগ্যাল থাকলেও আপনাকে ঘুষ দিয়ে করাতে হবে। যদি দালাল দিয়ে কাজ করান তাহলে লাইন কম পাবেন আর 200-250 টাকা ঘুষ দিতে হবে (আমাদের 200 করে লাগছিল যেহেতু মানুষ অনেক)। আর যদি নিজে নিজে কাস্টমস ইমিগ্রেশন ফর্মালিটি করতে চান তাহলে ইমিগ্রেশন 40 টাকা আর কাস্টমসে 100 টাকা অলিখিত ঘুষ দিতে হবে। সাথে তো ব্যাগ চেকিং, ডলার চেকিং এর নামে অযথা হয়রানী আছেই।
যাদের হরিদাশপুর দিয়ে ভিসা করা আছে প্রথমেই ইমিগ্রেশন অফিসার (এ এস আই, পুলিশ) তাদের পাসপোর্ট গুলো আলাদা রেখে দিয়েছিল। তারপর দালাল এসে আমাদের জানিয়েছিল যাদের অন্য পোর্ট তাদের 1000 টাকা করে লাগবে (কাস্টমস ইমিগ্রেশন 200 টাকার মধ্যে আর ইমিগ্রেশন অফিসারের জন্য 1000 তার ক্লিয়ারেন্সের জন্য)। পরে অনেক কথাবার্তা বলার পর 200+500 টাকায় ব্যাপার সেট করার পর তারা ইমিগ্রেশন সিল মেরে আমাদের ডিপার্চার করে দিয়েছিল। কাস্টমসে কোন ঝামেলা হয়নি যেহেতু আগেই তাদের অলিখিত সার্ভিস চার্জ দালালের কাছে দিয়ে দিয়েছিলাম।
ভারতে প্রবেশের পর প্রথমেই একজন পুশিল অফিসার আপনার পাসপোর্ট চেক করে কাস্টমসে পাঠাবে। সেখানে সে ভিসার মেয়াদ দেখে কোন কথা না বলেই আমাদের সবাইকে কাস্টমসের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছিল। এখানে আপনাকে 100 রুপি স্পিড মানি দিতে হবে। গতবার আমি একাএকা কাস্টমস ইমিগ্রেশন পার হয়েছিলাম যার কারণে ইমিগ্রেশন 30 রুপি আর কাস্টমসে 50 রুপি দিয়ে হয়েছিল আর টাইম আর প্যারা লেগেছিল অনেক। দালালকে 100 রুপি দিলে ও খুব তারাতারি ব্যাপারগুলা কমপ্লিট করে দিবে কোন ডলার চেকিং ছাড়াই। আর কাস্টমস লামসাম ব্যাগ চেক করবে ফর্মালিটি হিসেবে।
কাস্টমসের পর সবার ইমিগ্রেশনে যেতে হবে ভারতে এন্ট্রি করার জন্য। সেখানে আপনার এ্যারাইভাল ফরম ফিলাপ করে পাসপোর্ট ভিসা স্ক্যান করে কম্পিউটারে এন্ট্রি করে আপনাকে সিল দিয়ে দিবে। যেহেতু আমি এই পোর্ট দিয়ে আগেও 3 বার ভারতে প্রবেশ করেছিলাম তাই ইমিগ্রেশনের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর আমার মোটামুটি পরিচিত (গতবার মারা খেয়েছিলাম সেখানে তাই সে আমার চেহারা মনে না রাখলেও আমার ঘটনাটা তার মনে আছে)। তারসাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পর কনফার্ম হলাম যে, এখন বর্ডার ওপেন সবার জন্য। ইন্ডিয়ার তরফ থেকে কোন সমস্যা নাই। অনেকেই বাংলাদেশ থেকে এক্সট্রা টাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করছে বলে তাদের কাছে আমার মতো বলেছে কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের কিছুই করার নেই। চেংরাবান্ধা দিয়ে প্রবেশ করা 100% লিগ্যাল।
শুধু তাই নয়, আমাদের সাথে যে 4 জনের অন্য পোর্টে ভিসা ছিল তাদের মধ্যে 2 জন গতকাল কোলকাতা হয়ে প্লেনে করে ঢাকা চলে আসছে। এয়ারপোর্টেও তাদের কোন প্রশ্নের/ঝামেলার সম্মুখিন হতে হয়নি।
যারা বলছেন যাওয়া যাচ্ছে না, তারা কেউ এখন পর্যন্ত এমন কাউকেই দেখাতে পারবে না যে, কেউ অন্য পোর্ট থাকায় চেংরাবান্ধা দিয়ে গত এক দেড় মাসের মধ্যে ফেরত এসেছে। আর যারা বলছেন ঢুকা যাচ্ছে টাকা দিয়ে। সেটা অবৈধ। পরে 2/4/5/10 বছরের মধ্যে ভিসা পাবে না সেই সমস্ত বুদ্ধিজীবীদের কিছুই বলার নেই। যদি ঘুষ দিয়ে অবৈধ উপায়ে ইন্ডিয়া যেতে হয় তাহলে ভিসার দরকার থাকতো না। যেকেউ 700-1000 টাকা দিয়ে ঢুকে যেতে পারতো। আর পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমসের সীল থাকতো না। কাটাতারের নিচ দিয়ে গর্ত করে চালান করে দিতো। তাছাড়া যারা বলছেন এটা 700-1000 টাকা ঘুষ দেয়ার কারণে যাওয়া যাচ্ছে, তারা একটু খোজ নিয়ে দেখবেন 700-1000 টাকায় কাটাতারের নিচ দিয়ে/রাতের অন্ধকারে অবৈধভাবে যাওয়া যায় কিনা আর গেলেও আসা যায় কিনা??
ও হ্যা। আমাদের বাংলাদেশে আসতে কোন ঝামেলায় পড়তে হয়নি। সব ফর্মালিটি শেষ করে সীল ছাপ্পড় মেরেই বাংলাদেশে ঢুকেছিলাম। ফেরত আসার সময় স্পীডমানি (ঘুষ) ভারতে 100 রুপি আর বাংলাদেশে প্রত্যেকে 200 টাকা করে দেয়া লাগছিল।
বিঃদ্রঃ বুদ্ধিজীবীরা নিজে ট্রাই করে দেখুন অথবা দূরে থাকুন। আর যার যাওয়ার সে অনায়াসেই যেতে পারবেন এ নিয়ে টেনশনের কিছুই নাই। আর যদি অফিসিয়াল স্ট্যাটমেন্টের জন্য অপেক্ষা করতে চান তাহলে কিছু দিন অপেক্ষা করুন। ও হ্যা.. চেংরাবান্ধা দিয়ে ঢুকে আবার ভিসা পাইছে এমন মানুষও আমার পরিচিত আছে কোন রকম খোজ খবর না নিয়ে আমরা হুট করেই 4 জন অন্য পোর্টের মানুষ নিয়ে সেখানে আমরা যাইনি।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২
নাহিদুল আলম নীল বলেছেন: ট্যুরিস্ট ভিসায় ই্ন্ডিয়া থেকে নেপাল বা ভূটান গেলে তার দায়ভার তারা নিবে না। তারা স্বাধীন দেশ তাদের স্বতন্ত্র ব্যবস্থায় তারা আপনাকে অন-এরাইভাল ভিসায় তাদের দেশে ঢুকতে দিবে। প্রবলেম করবে ই্ন্ডিয়া যেহেতু ট্রানজিট ছাড়া ই্ন্ডিয়ার উপর দিয়ে অন্যদেশে যাওয়া লিগ্যাল না। কিন্তু চ্যাংরাবান্ধা ওপেন পোর্ট। বাংলাদেশী পুলিশ সার্ভিস চার্জ বলে ৫০০ টাকা ঘুষ নিয়ে থাকে। ই্ন্ডিয়ার কাস্টমস ইমিগ্রেশন বা পুলিশ থেকে কোন বিধি নিষেধ নেই এই পোর্ট ব্যবহারে।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৩
রাজীব বলেছেন: টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ঘুষ দিয়ে সিল ছাপ্পর সহ নেপালেও যাওয়া যায় তবে যারা যায় তাদের পরেরবার ভিসা পেতে সমস্যা হয়।