নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আফনানের নিকেশ জগৎ.....।

আফনান আব্দুল্লাহ্

প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প তার আঙ্গুলের ছাপের মতই ভিন্ন। দূর থেকে এক মনে হলেও যতই তার গভীরে যাবে কেউ ততই বৈচিত্রময় বিভিন্নতা পাবে। নিজের জীবনের গল্পে চরে বেড়ানো মানুষগুলো সবাই’ই যার যার জগতে বন্ধী। সহস্র বছর বাঁচতে পারলে পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আমি শুনতাম।নিজের দেখা জগৎ দেখা আদেখা মানুষদের জগতের সাথে গেঁথে নিতেই লিখি এবং আন্যের লিখা পড়ি। কেউ যদি মিথ্যুক বা ভন্ড না হয় তাহলে তার যে কোন ভিন্ন মতের কারন তার চার পাশের ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন শিক্ষা। তাই মানুষকে বুজতে হলে তার জগৎটাকে জানতে হবে, তার গল্পগুলো শুনতে হবে।আফনান আব্দুল্লাহ্

আফনান আব্দুল্লাহ্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈশ্বরেরা কেন অভিশা‌পের মত আমা‌দের উপর নাজিল হ‌চ্ছেন!

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৩

অনেকগুলো ঈশ্বর একত্র হয়ে এক জন দাসকে মেরে-পুড়িয়ে প্রাণদন্ড কার্যকর করেছেন। ময়মিনসিংহের ভালুকায় ঐ ঈশ্বরেরা এই ঐশ্বরীক বিচার সম্পন্ন করেন। দেশে পুজারির চেয়ে ঈশ্বরের সংখ্যা বাড়ছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাদের বিচারে মানুষ বলি দেয়া।
.
খোদার নামে মানুষ পুড়িয়ে দেয়া মানুষের পুরনো অভ্যাস। নতুন কিছু নয়—মধ্যযুগে ইউরোপে, প্রাচীন ভারতে, “divine justice” দেখাতে মানুষকে আগুনে পোড়ানো হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে ইসলামে আগুনে পোড়ানো ব্যাপারটা নিষেধ করা আছে। “আগুনে শাস্তি দেওয়ার অধিকার কেবল আগুনের রবের।“ (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং 3016) তবু এর খাদেম দাবী করা মব জীন্দা মানুষ যেমন পোড়াচ্ছে, মরা লাশ তুলেও পোড়াচ্ছে।
.
ইসলামিক স্কুলের বাল্য শিক্ষা হলো- শিরক আল্লাহর সাথে করা মহা পাপ। যে পাপ তিনি কখনোই ক্ষমা করেন না। "শিরক্" নামের এই মহা পাপ কি? গন উত্তর হলো হীন্দুরা যে দেব দেবী পূজা করে উহাই শীরক। - এই খানেই আছে অর্ধ শিক্ষা। মূলত শিরক্ নামের এই মহা পাপের আছে মহা ব্যাপ্তি। মানুষ দেব দেবীর মূর্তি দিয়ে যতটা না শীরক করে তার থেকে বেশি করে অন্য মানুষকে খোদার জায়গায় বসিয়ে। আর প্রায়ই নিজেকেই নিজে খোদা মনে করে আর নিজেকেই নিজে পুজা করতে থাকে। ইসলামী ফিকহে শিরক কেবল মূর্তি পূজায় সীমাবদ্ধ নয় - ক্ষমতা, বিচার, আর আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াও শিরকের গুরুতর রূপ।
.
শিরকের যে রুপ গুলোর বর্ননা আছে (lordship (rubūbiyyah) -সকল কিছুর সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ, worship (ʿibādah)- ইবাদতের এক মাত্র হকদার আল্লাহ, or exclusive rights (ḥukm & tashrīʿ)-আইন এবং বিচারের এক মাত্র মালিক আল্লাহ) তার মধ্যে ḥukm & tashrīʿ ব্যপারেই দেখা যাচ্ছে আমাদের মানতে কষ্ট বেশী। কেউ যদি শরীয়াহ আইন না বুঝে সেটা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু সে যদি জানে যে শরীয়াহ আইনে এটা নাই, তবুও তার বিপরিতে বিচার করলো। অথবা সে জানতেই চাইলো না শরীয়াতে কি আছে তখন তা স্পষ্ট শীরক।
আর এই শরীয়াহ বিচারের জন্যে থাকতে হবে রাষ্ট্র পরিচালিত শরীয়াহ্ বিচার ব্যবস্থা। তা না থাকলে পথে ঘাটে সবার বিচার করার ধর্মীয় ভাবেই কোন অধীকার নাই। হুকুম আহকামের বেলায় দেখা যাচ্ছে সবাই নিজেকে হাশরের মাঠের বিচারক ভাবতেই আরাম পাচ্ছে। কোন শরীয়া বোর্ড নাই, বিচার ব্যবস্থা নাই, আইন কানুনে কি আছে তার বালাই নাই। স্বাক্ষী প্রমাণ, শুনানী কিচ্ছু দরকার নাই। স্পটেই মামলা, বিচার, রায় আর রায় কার্যকর- কি তুগলুকি কান্ড। হাশরের বিচারেও বলা হচ্ছে স্বাক্ষী প্রমাণ থাকবে। অপরাধীর শুনানীর সুযোগ থাকবে।


ছবিতে গ্রেফতার হওয়া 'আল্লামা'দের দেখা যা‌চ্ছে।

এই মব গোষ্ঠী ঠিক কোন জায়গা থেকে নাজিল হওয়া ইশ্বর, যারা আমাদের উপর ভর করতেছে কোন এক আদিম অভিশাপ এর মত। প্রস্রয় পেলে এই আস্ফালন বাড়তেই থাকবে। যত বড় মূর্খ আর যত বড় গান্ডুই হোক, অন্য জনের মাথায় চড়ে বসার জন্যে ধর্মকে বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করা সহজ হচ্ছে। দীপু দাসকে পুড়িয়ে মারার পরে সে সত্যিই কোন ধর্মীয় কূটুক্তি করেছিলো কিনা এই অনুসন্ধান হলো এই মব গোষ্ঠীর জন্যে সেই “প্রশ্রয়”। বিশ্বজীতকে মারার পরে যেমন খোঁজা হয়েছিলো সে আসলে শিবির ছিলো কিনা। ব্যাপারটা ছিল - ইশ্। পোলাটা স্রেফ হীন্দু না হলেই জাশি বলে চালিয়ে দেয়া যেতো। যেন জাশি হলে কুপিয়ে মারাটা ঠিক হয়ে যেত। এই সব “প্রশ্রয়” এর তবারক ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। দ্রুত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.