নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নরসুন্দা নদের হাওয়া

আফরোজা সোমা

নরসুন্দা নদের হাওয়া

আফরোজা সোমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শান্তির মৃত্যু

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৬

আত্মজাকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন শান্তি।

কিন্তু এইসব মৃত্যুর হিসেব কোথাও লেখা থাকবে না। থাকে না।

অথচ এরাও অমনোযোগের বলি। এরাও সিস্টেমের গলতির বলি।

দিনমজুর উত্তম মন্ডলের স্ত্রী শান্তি রানীর বয়স আমার চেয়ে মোটে এক বছর বেশি। মোটে ৩৬। কিন্তু শান্তির জীবনে যে প্রশান্তির পরশ বিশেষ একটা ছিল না তা এই 'তাড়াহুড়োর সাহিত্য' পাঠেও বেশ বোঝা যায়।

'প্রতিবন্ধী' সন্তান নিয়ে শান্তির যে কষ্টটা গেছে তা কল্পনা করছিলাম।

কাহাতক সওয়া যায়! কাহাতক বয়ে নিয়ে যাওয়া যায় ভার!

আমাদের রাজনৈতিক ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার উচ্চাভিলাসী শব্দবন্ধ 'ভিন্নভাবে সক্ষম' মানুষ হবার সুযোগ শান্তির 'প্রতিবন্ধী' মেয়েটি পায়নি। সমাজ সেই সুযোগ উত্তম-শান্তির দ্বার গোরায় পৌঁছে দিতে পারেনি।

উন্নয়ন কাজীর গরু। কিতাবে আছে। মাথাপিছু আয়ে আছে। শিল্পপতির ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা আছে উন্নয়নের খতিয়ান। কিন্তু শান্তিরা, একইরকম আছে। অভাব তাদের পিছু ছাড়ে না। শান্তি তাদের দেখা দেয় না। জীবনের দৌড়ে গরীব শান্তিরা সিসিফাস। বোঝা যতই ঠেলে একটু সরাতে চায়, তা সরে না। নেমে আসে। ঘাড়ের উপর।

তবে, সিসিফাসের সাথে শান্তিদের ফারাকটা হলো, সিসিফাস ছিল দৈবের বলি। আর শান্তিরা সমাজের, সিস্টেমের। তাদেরকে কেন্দ্রে রেখে সমাজের উন্নয়ন-ভাবনা করা হয় না। উন্নয়ন ভাবনায় থাকে, বড় বড় কলকারখানা। আর সেই সব বড় বড় চাকার নিচে অগোচরে পিষ্ট হয় শান্তিদের ছোটা-সা-প্রাণ।

ব্যক্তিগতভাবে আমি একটি পরিবারকে চিনি। তারা আমার নিকটজনও বটে। গ্রামের সহজ-সরল-লেখাপড়া না জানা-কৃষক সমাজের মানুষ তারা। সেই পরিবারে এক শিশু-কন্যা আছে। প্রতিবন্ধী। কানে শোনে না এবং কথা বলতে পারে না।

প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার একটি কার্ড রেখেছে। এই কার্ডের আওতায় বছরে কিছু টাকা আর কিছু সুবিধাদি মেলে।

কিন্তু আমি যেই কৃষক পরিবারটির কথা বলছি, তারা আজো এই 'প্রতিবন্ধী কার্ডের' দেখা পায়নি। কার্ড করতে একবার খবর নিতে গিয়ে পরিবারের কর্তা নাকি শুনেছেন, ৫ হাজার না কত টাকা যেনো ঘুষ লাগবে।

আর এই শিশুর জন্য থেরাপি বা চিকিৎসা বা বিশেষায়িত স্কুল তো কোন দূর কি বাৎ!

অতএব, এই শিশুটি যখন বড় হবে, বড় হতে-হতে তার পরিবার এবং সে যে বিরাট ঝক্কির ভেতর দিয়ে যাবে তা কি উত্তম-শান্তি ও তমালিকার চেয়ে কম হবে কিছু?

কী জানি ছাই! বুঝি না অতো।

সাত সকালে এই সব ছাইপাশ খবর দেখে যত সব বেহুদা কথা লিখছি।

মেয়েকে ‘বিষ খাইয়ে’ মায়ের বিষপান, দুজনের মৃত্যু

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১৭

বিজন রয় বলেছেন: নিদারুন কষ্ট, বেদনা!
সমাজের সিস্টেমেই গলদ।
আমরা সবাই বুঝি, করতে পারি না কিছুই।

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৯

হাবিব বলেছেন: সমাজের গলদ বলবো না, কিছু স্বার্থলোভী মানুষ নামক জীবদের কারনে আজ এই দশা।

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:১২

রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছু নষ্টদের দখলে চলে গেছে।

৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৪০

ঢাকার লোক বলেছেন: প্রতিদ্বন্দ্বী কার্ড করতে ৫০০০ টাকা ঘুষ লাগে! সত্যি সব কিছু নষ্টদের দখলে চলে গেছে !! তাদের আল্লাহকে ভয় করা উচিত, তাদের ঘরেও যে এমনি প্রতিদ্বন্দ্বী চলে আসবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে ?

৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:১০

ঢাকার লোক বলেছেন: দুঃখিত, প্রতিদ্বন্দ্বী না, প্রতিবন্দী হবে !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.