![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দরজায় কড়া নাড়ছে স্বাধীনতা দিবস। গণমাধ্যমগুলোতে চলছে বিশেষ আয়োজনের প্রস্তুতি। বিদ্যালয়গুলোতে চলছে উদযাপনের মহড়া।
২৫শে মার্চ রাত থেকেই অলি-গলি-রাজপথে বাজতে থাকবে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত। বাজতে থাকবে আমার বোকা চোখে পানি এনে দেয়া গান: ও মা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি। আমার এই দেশে-তে জন্ম যেনো এই দেশে-তে মরি।
২৫শে মার্চ রাত থেকেই মুখবই ছেয়ে যাবে সবুজে ও লালে। মুখবই ভরে উঠবে পলাশ ফুলের মতন টুকটকে লাল বৃত্তের ভেতর সোনালি রেখায় আঁকা মানচিত্রের মায়ায়।
এই ২৬ আর ১৬ এলে আজকাল আমার খুব উন্মুল লাগে। কান্না-কান্না লাগে। মনে হয়, অনেক উৎসব আর অনেক আয়োজনের তলে চাপা-স্বরে কোথাও বুঝি গোঙাচ্ছে ৭১-এর স্বপ্ন। কোনো কিছু লিখতে গিয়ে যখন আজকাল নিজেই নিজের উপর আরোপ করি সেন্সরশিপ তখন মনে হয়, 'এক নদী রক্ত পেরিয়ে' যে গন্তব্যে যাবার কথা ছিল সেই ঠিকানাটা বুঝি হারিয়ে গিয়েছে অকস্মাৎ।
তবু, আমি আশায় থাকি। জাপানের সেই রেলগাড়িটার মতন আমাদের দেশেও একদিন মানবিক হয়ে উঠবে রেলগাড়িগুলো। মাত্র একজন যাত্রীকেও গন্তব্যে পৌঁছে দিতে তারা দরদ বোধ করবে।
তবু, আমি আশায় থাকি। ইউরোপে ট্রামের নিচে এক যাত্রীর আটকে যাওয়া একটি পা-কে অক্ষত রাখতে আস্ত ট্রামটিকেই যেমন সরিয়ে দেয় আর সব যাত্রীদের সম্মিলিত শক্তি, তেমন মানবিক দিন একদিন আমাদেরো আসবে। ভুল করে কোনো যাত্রী মাঝরাস্তায় চলে গেলেও নিজের গতি থামিয়ে মানবিক হৃদয় নিয়ে অপেক্ষা করবে বাস ও ট্রাক।
তবু, আমি আশায় থাকি। যত বড়ই অপরাধী হোক না কেন, গুলি খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকবে না লাশ। যত বড়ই অপরাধী হোক না কেন, তাকে খুন করে গলায় নোটিশ ঝোলাতে পারবে না হারকিউলিস। যত বড়ই অপরাধী হোক না কেন, আইনি প্রক্রিয়ায় তার ন্যায্য বিচার হবে।
তবু আমি আশায় থাকি। এদেশের নিরন্ন শ্রমিকেরা, ধুকপুক করে বেঁচে থাকা কৃষাণ ও কৃষাণীরা একদিন উন্নয়নের ন্যায্য হিস্যা পাবে।
বাংলার শেষ নবাব বড় নিরাশায় বলেছিলেন, ‘কে তাকে আশা দেবে’! রাজ্যপাটহীন এই আমার আশার কমতি নেই। কিন্তু এই সব আশাগুলোকে বাস্তবায়নের জন্য আজ ভরসা যোগাবে কে?
দেশের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে মেধাবীরা, স্বপ্নবাজেরা, কর্মঠরা পরদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। আমার চেনা কোনো মেধাবী ও স্বপ্নবাজ মানুষ যখন বিদেশে চলে যায় বা চলে যাবার প্রস্তুতি নেয় আমার বড্ড খালি-খালি লাগে।
সাহসীরা, স্বপ্নবাজেরা চলে গেলে এ পোড়ার দেশ কাকে আগলে বাঁচবে? আপনারা যারা বিদেশে চলে গেছেন, যারা বিদেশে চলে যাবার প্রস্তুতি পাকা করে ফেলেছেন, যারা নির্বিঘ্নে চলে যাবার জন্য কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছেন তাদের কাছে আজ বোকার মতন একটা অনুরোধ: আপনারা যাবেন না, প্লিজ।
দেশটা যখন স্বাধীন হয়েছিল তখন অনেক স্বপ্নবাজ দেশকে স্বাধীন করার জন্য বিদেশ থেকে ফিরে এসেছিল নিজের বিস্রস্ত ভূমির বুকে। দেশটা যখন স্বাধীন হয়েছিল তখন রুমীর মতন তরুণ বিদেশে না গিয়ে দেশের জন্য লড়েছিল।
তারা লড়ে এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছে বটে। কিন্তু এই দেশ সাজাবে কে? গোছাবে কে? এদেশের জঞ্জাল সরাবে কে? এই দেশকে নিউ জিল্যান্ডের মতন মানবিক, অসাম্প্রদায়িক, সুন্দর আর বাসযোগ্য করবে কে?
আপনারা যারা বিদেশে পড়তে গেছেন তারা পড়ালেখা শেষ করে দেশে চলে আসুন, প্লিজ। আপনাদের অনেক মেধা, অনেক স্বপ্ন, অনেক প্রাণের স্পর্শে এই দেশ সজীব হয়ে ওঠুক। আপনাদের জীয়ন কাঠির স্পর্শে একদিন সত্যিই সোনার বাংলা হয়ে উঠুক এই দেশ
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:০৬
আফরোজা সোমা বলেছেন: রাফা, নেই। কিচ্ছু নেই। যা থাকার কথা তা নেই। যা হবার কথা তা হচ্ছে না। এর সমাধান কোথায়? পলায়নে? নিজের আখের গোছানোয়? ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় স্বদেশীরা কী না করেছে ভারতকে গড়ে তুলতে! আজকের টাটা সেই স্বদেশী আন্দোলনের সময় গড়ে উঠা একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান ছিল।
যারা দল বেঁধে চলে গেছেন-- ভয়ে, শংকায়, চাপে পড়ে, অনিশ্চয়তায়, উন্নত জীবনের স্বপ্নে-- তারা সকলে যদি এই দেশে থাকতো! গত ২৫ বছরে বুয়েট, মেডিকেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ যত তরুণ-তরুণী দেশ ছেড়ে চলে গেছেন তারা সব যদি এক যোগে দেশে ফিরে আসে, তাদেরক দেশে ফেরানোর জন্য যদি সরকার একটা স্পেশাল স্কিম চালু করে, দেশের সকল উচ্চপদে যেখানে বিদেশী ও ভারতীয়রা কাজ-বাজ করছে তাদেরকে হটিয়ে দিয়ে আমাদের বিদেশ ফেরতা যোগ্য লোকদের বসানো হয় দশ বছরেরে মধ্যে এই দেশে পরিবর্তন আসবে। সবাই মিলে যদি দেশের ভেতরে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে, সবাই মিলে যদি ওয়াচডগ হিসেবে কাজ করে পরিবর্তন আসতে বাধ্য।
জাফর ইকবাল, ড. মাকসুদুল আলম, বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম--- এঁরা সবাই বিদেশে সুশিক্ষিত হয়ে দেশে এসে ছিলেন। কেউ আগে বা কেউ পরে। এঁদের মতন আর সব উজ্জ্বল মানুষেরা যদি দেশে ফিরে আসে তাহলে মিথ্যেবাদী, দুর্নীতিবাজদের এই সমাজে সংখ্যায় গুটিকয় হলেও তো সৎ আর পরিবর্তনকামীদের সংখ্যা বাড়বে।
এইসব সাত-পাঁচ আমার মাথায় ঘোরে সারাক্ষণ। তাই, সেই বোধ থেকেই এই আকুতি। সব প্রদীপ জ্বললে আলোর পরিমাণ বাড়ে, অন্ধকার কমে। আর আমাদের প্রদীপেরা চলে যায় এবং চলে গিয়ে দূরে থেকে বলে, এই দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত!
২| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৫৫
মা.হাসান বলেছেন: চুলোয় চাল চড়িয়ে আগুন জ্বেলে তারপর আশা করা যায় ভাত হবার। চাল নেই- চুলো নেই- আগুন নেই এ অবস্থায় কেউ যদি ভাতের আশা করে তবে তা অলীক, অবাস্তব, ভ্রান্ত।
বাস্তবে ফিরে আসুন।
মরূভুমিতে পানির অভাবে ফনিমনসার পাতা কাঁটায় পরিনত হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে পরিবর্তন করে নেয়াই বেশি বাস্তব সম্মত।
হঠাৎ উদয় হন আবার অনেক দিনের গ্যাপ, কিন্তু এবার যে ৩ দিনের ব্যবধানেই পোস্ট দিলেন বড়? আমার ধৈর্য কম বলে বাংলা সিনেমা দেখি না, কাজেই আপনার আগের পোস্টে শিরোনামের পর আর যাইনি।
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:১১
আফরোজা সোমা বলেছেন: মা. হাসান, চাল কে যোগাবে? চুলো কে বানাবে? আগুন কে যোগাবে? দেশের কি হাত আছে? কাজ করতে পারে? দেশের কি মাথা আছে? ভাবতে পারে? মানুষই তো দেশ। যে দেশের মানুষেরা যেমন স্বপ্ন দেখে ও কর্ম করে সেই দেশটা সেরকম হয়।
এই পোড়ার দেশ অযোগ্য বলে যদি সব যোগ্যরা চলে যায়, যদি সব যোগ্যরা আর ফিরে না আসে এই ভাঙা ভিটেয় তবে এই ভূমিকে কে উজ্বল করবে? এই দায়িত্ব কার?
আগ্রহ না থাকলে শিরোনামের পর আর না যাওয়াই উত্তম। আমার ধৈর্য আছে। বনের মোষ তাড়ানোর কাজকেও আমি ভালোবাসি।
আপনার কল্যাণ হোক।
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে এই দেশ তো পচে গলে নষ্ট হয়ে গেছে।
সুযোগ থাকলে আমি নিজেই পালিয়ে যেতাম।
দম বন্ধ হয়ে আসে আমার এদেশের মানূষের জটিলতায়, কুটিলতায়।
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৫
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: পড়লাম।
৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:২১
চাঁদগাজী বলেছেন:
শেষ প্যারায় আপনার বুদ্ধমত্তার স্বাক্ষর আছে।
৬| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪২
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: জামাল নজরুল ইসলাম আমাদের জন্য একজন দৃষ্টান্ত হতে পারতেন, কিন্তু ওনাকেই মনে রেখেছে খুব কম মানুষ...
৭| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:৪৯
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার কথাগুলো ভালো এবং যুক্তিযুক্ত; তবে এর সাথে সাথে অনেক যদি, কিন্তু আর প্রশ্নবোধক চিহ্ন-ও আছে। একটা ব্যাপার জানবেন, শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে জীবন চলে না।প্রতিটা মানুষেরই প্রবাসী হওয়ার পিছনে একটা গল্প আছে। আপনি যা যা বলেছেন, তা কিন্তু প্রতিটা সুস্থ্য মানসিকতা-সম্পন্ন বাংলােদেশীর মনের কথা। তারপরও কেন তারা দেশান্তরী হয়?
অন্যভাবে নিয়েন না। দেশত্যাগের পক্ষে আমি হাজারটা যুক্তি দিতে পারবো। তবে আপনি কিন্তু আবেগপূর্ণ কথা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারবেন না। শুধু একটা কথার উত্তর দেন দেখি? ''আমিই যদি না বাচি, তাহলে দেশ বাচবে কিভাবে?''
আজ যদি অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা বা কানাডা বলে, আমাদের দেশ অনেক বড়। যে কোনও বাংলাদেশী শুধু টিকেট কেটে চলে আসতে পারবে, এদেশে বিনা বাধায় থাকতে পারবে। আমরা সবাইকে জায়গা দিতে পারবো। তাহলে নিশ্চিত থাকেন যে, বাংলাদেশ খালি হয়ে যাবে। এটাই বাস্তবতা।
এই বাস্তবতাকে আপনি কি অস্বীকার করতে পারেন? ভাবুন......ভেবে ভেবে উত্তর দিন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:২৯
রাফা বলেছেন: যা বলতে চাই , তা কি বলতে পারছি ?
যা করতে চাই ,তাও কি করতে পারছি?
যা লিখতে চাই ,তাওতো লিখতে পারছিনা।
তার উপরে থাকছে ঐ যে বললেন বেওয়ারিশ লাশ হয়ে পড়ে থাকার কথা।নিউজিল্যান্ডের মানুষের মানবিকতা দেখে অনবরত ভেবেই চলেছি ৭১ আমাদের ঠিক এই স্বপ্নটাই দেখিয়েছিলো।অথচ এখন স্বদেশ শুধুই হাটছে উল্টো পথে।
ধন্যবাদ,আ.সোমা চমৎকার আহ্বানের জন্য।