![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাসায় পত্রিকা বন্ধ আজ কয়েক দিন। সকালে উঠে চোখ দরজার নিচে যেতে অভ্যস্ত।
প্রতিদিন খুব যে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পত্রিকা পড়া হয়, এমন না। অত সময় বা ধৈর্য্য বা আগ্রহ বা আটকে রাখার কন্টেন্ট কই! প্রধান খবরগুলোর সবই আগের দিন অনলাইনে জেনে যাওয়া। পুরনো খবর। তবু, তিন দিনেরটা একত্রে জমিয়ে হলেও পত্রিকায় একসাথে নজর বুলাতে ভালো লাগে। মনে হয়, যেনো নিজের কিছু নবায়ন হলো। আদতে কিছু হয় কিনা, জানিনা।
সেই পুরানা আমি। আমার পুরানা জীবন। জীবনের পুরানা গল্প। স্বপ্ন-জখম-ব্যর্থতা। পুরানা জীবনে করোনাই শুধু নতুন গল্প।
রোজ একটু একটু করে মরতে আমাদের খেদ নেই। যেনো এটাই নিয়ম। ফুল ফোটে, ঝরে যায়।
কিন্তু জীবনটাকে 'টেকেন ফর গ্র্যান্টেড' করে নেবার মানুষের যে এটিচিউড, সেইখানে আচমকা করোনার ছেদ টেনে দেয়াটা নতুন।
এই যে আচম্বিতে মরে যাবার ভয়, মরবার সময় এমনকি প্রিয়মানুষের মুখটাও দেখতে বা ছুঁতে না পাবার ভয় এ্ই ভয়টাই যা নতুন।
সব নতুন ফাগুনের মাতাল হাওয়া নয়। কিছু নতুন কালবোশেখী ঝড়। ওলট-পালট করে দিয়ে যায়।
মৃত্যুভয় মাঝে মাঝে ভালো। মানুষকে আবার জীবনের দিকে তাকাতে শেখায়। যতি টেনে বিরতি নিতে বলে।
মরনের কপাটে খিল তুলে দিয়ে কেউ সংসারে আসেনা। যাবার সময়টাই যা আলাদা। এখন বা পরে। এই যা ফারাক।
পরিকল্পনার ছক ধরে ভ্রমণে যাবার মতন করে মৃত্যু সবসময় আসে না। মৃত্যু প্রেমের মতন। আচমকা আসে। একবারে এক হ্যাঁচকা টান দেয়।
মৃত্যুর সময় কোনো প্রিয়জনকে পাশে চাইনা আমি। তাদের স্মৃতির মধ্যে কষ্টস্মৃতি হয়ে জমা থাকতে চাই না। কারো স্মৃতির মধ্যেই আমি রেখে যেতে চাই না আমার ব্যথাতুর নীল মুখ।
ঘুমের মধ্যে টুপ করে করে মরে যেতে চাই। এটাই সহজ। এরচেয়ে সহজ হতে পারে এনেস্তেশিয়ার কড়া ডোজ।
প্রথমবার অপারেশানের টেবিলে পেয়েছিলাম এনেস্তেশিয়ার অভিজ্ঞতা। কেমন ঘুম আসে। ধীরে। লীলুয়া বাতাসের মতন। শরীর পালকের মতন হালকা হয়ে আসে। আবেশে চোখ মুদে যায়।
জার্মানীর বনে ওই হাসপাতালটা ছিল একটা টিলার মতন উঁচু জায়গায়। চারদিকে ছিল অনেক গাছ। একটা রুম। আমি একা। মোট তিন রাত । জানলা দিয়ে গাছ-গাছালি দেখা যায়। অপারেশানের আগের রাতে ওখানে ছিলাম। মন ভরা ছিল সবুজের রেশ। পরদিন সকালে এনেস্থেশিয়া। আবেশে পালকের অনুভূতি। কী নির্ভার!
ধীরে অচেতনে চলে যাবার আগে মনে হচ্ছিলো, প্রত্যেক মানুষের নিজ-নিজ ইচ্ছায় নিজের পছন্দ মতন সময়ে নিজের মৃত্যুর পরিকল্পনা করতে পারার অধিকার থাকা উচিত। করোনার মত জীবাণুর হাতে মানুষ মারা পড়তে চায় না। তাই, ভ্যাকসিনের জন্য খোঁজ খোঁজ রব পড়েছে। অথচ, নিয়তির হাতে মারা পড়বার জন্যে মানুষ বসে থাকে।
নিজের জন্ম মানুষের নাগালের মধ্যে নয়। কিন্তু প্রস্থানের উপরে মানুষের নিয়ন্ত্রন থাকার অধিকার থাকা উচিত।
জীবন নিজেই একটা জুয়া। সেই আশরে জুয়ারীর হাতের শক্তিমান তাস হয়ে থাকার চেয়ে এমনকি দূর্বল খেলোয়াড় হয়ে চালে ভুল করে ব্যর্থ হওয়াটাও বুঝি আনন্দের।
২৫.০৩.২০
২| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:১৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: এই ভাইরাস পরাজিত হবেই। তবে সময়ের ব্যাপার ।
৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৩:১৯
মা.হাসান বলেছেন: আপনি বাঁচিয়া আছেন দেখিয়া ভালো লাগিলো। অনেক দিন পর ব্লগে আসলেন।
মানুষের কষ্ট স্মৃতির মধ্যে জমা না থাকতে চাইলে প্রচুর গন্ডগোল করুন, চলে গেলে আনন্দের বিষয়ে হবে, আনন্দ স্মৃতি হয়ে থাকতে পারবেন।
প্রস্থানে নিয়ন্ত্রন নেয়ার একটাই উপায় আমার জানা আছে, আত্মহত্যা। আগ্রহ নাই। অন্য উপায় আপনার জানা হলে জানিয়ে যাবেন, অনুরোধ থাকলো।
অনেক শুভকামনা।
২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:০৬
আফরোজা সোমা বলেছেন: হুমম। বেঁচে তো আছি...
ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: জীবনকে জুয়া ভেবে হেসে খেলে উড়িয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানে রকাজ হবে না।