নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, আমি প্রান্তিক জনতার কথা বলতে এসেছি.......!
ডিসক্লেইমারঃ এই লেখার সাস্টেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত সকল ধারনা আমার উদ্ভট মস্তিস্কের উদ্ভট বোঝাবুঝির ফসল মাত্র। অতিগিয়ানী মাত্র দূরে থাকুন।
বিগত কয়েক বছর আগে একটা রিউমার ছড়েছিল। ৫ মে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে শিরোনামে। তখন সাম্প্রতিক সময়ের মত প্রচার মাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দৌরাত্ব এত বেশি ছিল না যে সেই বিষয় সম্পর্কে জনমনের কৌতুহল কিংবা ভীতি নিরসনে সচেষ্ট হবে অথবা তা উস্কে দিবে বিধায় জনমনে সেই খবর বেশ একটা ভীতির সঞ্চার তৈরি করেছিল বৈকি! সাম্প্রতিক সময়ে রিউমার নয় কিন্তু অবশ্যই হতাশা, আমার মত উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কিছু কুচো কর্মীদের মনে আবারো কৌতুহল কিংবা ভীতির সঞ্চার করে তুলেছে এবং ঘটনাটা যে ৫ মে-র পৃথিবী ধ্বংসের চেয়েও মারাত্মক তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আসলে, ২০১৫-র ডিসেম্বরের পর বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কি হতে চলেছে!
জাতিসংঘ ২০০০ সালে , ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মৃত্যু মুক্ত শিক্ষিত, সুস্থ, সমতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বিশ্ব গঠনের উদ্দেশ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) ঘোষনা করে যার ধারাবাহিকতায় ‘উন্নয়নশীল’ দেশ হিসেবে আমাদের দেশের এনজিও/উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলো হত দরিদ্র মানুষের সেবার নিমিত্ত্বে বেশ কিছু অর্থ হাতে পেয়ে যায় এবং তাদের ঘিরে আবর্তিত হতে থাকি আমরা সরকারী/অন্য চাকুরী না পাওয়া অথবা তাতে নাক সিটকানো কিছু মানুষ। ১৫ টা বছর অতিক্রান্ত হবার পর, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এমডিজি প্রোজেক্টের ক্রান্তিলগ্নে এসে, লক্ষ্যমাত্রাগুলো পূরন হল কি হল না- তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার আগেই নিজের চাকুরিটার সাস্টেইনেবিলিটি নামক একটা দুশ্চিন্তা এসে হাজির হয়েছে এই সেক্টরে নিরলস কাজ করে যাওয়া হাজারো মানুষের মনে যদিও ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা’ নামক একটা গুনগুণ আওয়াজ ভাসছিল আকাশে- বাতাসে। দাতারা আবার ফান্ডিং করবে কিনা, চাকুরিটা থাকবে কিনা এই ভীতি এবং হতাশার আগুনে ঘি ঢেলেছে, ব্র্যাকের মত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী ছাটাই, দাতা রাষ্ট্র এবং সংস্থাদের বিগত ৫ জানুয়ারী জাতীয় নির্বাচন মেনে না নেয়া এবং বর্তমান ক্ষমতাসীনদের তাদের সাথে সু-সম্পর্কের অভাব, হঠাত করেই দেশের জিডিপি বৃদ্ধি এবং বিশ্ব ব্যাংকের মধ্য আয়ের দেশ ঘোষনা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়গুলোর মধ্য দিয়ে।
যাই হোক, আশার কথা হল বিগত জুন ২০১২ রি ও ডি জেনিরোতে United Nations Conference on Sustainable Development এ বা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল এর রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে সাস্টেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট গোল নিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয় যার ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের দিকে UN General Assembly –র একটা ওপেন ওয়ার্কিং গ্রুপ ৭০ টি দেশের প্রতিনিধী, ৮৩ জন জাতীয় কনসাল্ট্যান্ট, ডোর টু ডোর এবং অনলাইন সার্ভের মাধ্যমে ক্ষুধা এবং দারিদ্র নিরসন, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, টেকসই নগরী, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সাগর ও জঙ্গল সূরক্ষা সংক্রান্ত ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১৬৯ টা টার্গেট সম্বলিত ১৭ টি লক্ষ গৃহিত হয়। কিন্তু এখানে প্রশ্ন এসে যায়, এই সাস্টেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট গোল এর জন্য বাংলাদেশ যেটি কিনা মধ্য আয়ের দেশ ঘোষনা, ঘোষিত টেকসই অর্থনীত ও নির্বাচন গ্রহনযোগ্যতা সহ নানা প্রশ্নের সম্মুখীন তারা যোগ্য কিনা?
সাম্প্রতিক সময়ের দাতা সংস্থা ডিএফআইডি-র হঠাত তৎপরতায় সাস্টেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) নিয়ে আমার বিস্তর বিস্তর কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। যেটার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, চাকরিডা হয়তোবা আছে অর্থ্যাত দাতারা ২০১৭ সালের দিক হতে আবারো বাংলাদেশে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ফান্ডিং করতে আগ্রহী।
ভাই সব, বগল বাজানোর কুন কারন নাই। আগে এইডা ভাবেন- চাকুরিডা থাকলেও ১৬৯ টা টার্গেটের ১৭ টা গোল ইমপ্লিম্যান্ট করতে অবস্থাডা কি হবে। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলের ১৮ টা টার্গেট ক্লিয়ার বোঝা গেলেও সাস্টেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট গোল এর টার্গেটগুলো বেশ দূর্বোধ্য কেমুন জানি পলিটিক্যাল স্ট্যাটমেন্ট টাইপ। খুব হিজিবিজি আর উচ্চাভিলাসী তো অবশ্যই। লোকাল কনটেক্সটকে কোন ধরনের পাত্তা না দিয়ে সকলের জন্য একই নীতি অনুসরন করা হয়েছে। ওপেন ওয়ার্কিং গ্রুপ এর মাই ওয়ার্ল্ড নামক সার্ভে, ওডিআই এর কয়েকজন গবেষক এবং ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট বারবার এই সাস্টেইনিবিলিটির জন্য ইমপ্লয়ম্যান্ট এর কথা বলে যাচ্ছেন আর এর সাথে দাতারা যুক্ত করেছেন মার্কেট লিংকেজ, ভ্যালু চেইন আর সফট লোনের মত বিষয়গুলো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সকলের জন্য ইমপ্লয়মেন্ট তৈরি করা কি আদৌ সম্ভব অথবা মার্কেট লিংকেজ কিংবা সফট লোন দিয়ে সর্বস্তরের দারিদ্রতার টেকসই নিরসন আদৌ সম্ভব কিনা?
কিছু গোল অথবা টার্গেট তার লক্ষমাত্রা অর্জনে (আদৌ কি সম্ভব?) সফলকাম হলেও বেশির ভাগ ই ব্যার্থতায় পর্যবসিত হবে বলে আমার বোঝাবুঝি। আর ব্যার্থ হলেই অবশ্য ভাল। নাহলে ২০৩০ এর পর খামু কি? ‘ফহিন্নি’ নাই তো চাকুরী ও নাই।
©somewhere in net ltd.