![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মুয়াবিয়ার আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত পরিত্যাগকারী রাসুলের(সাঃ) শিয়া।শিয়া মানে অনুসারী।আমি আল্লাহর অনুসারী,রাসুলের(সাঃ) অনুসারী।ডঃ তিজানী সামাভী বলেন,শিয়ারা রাসুলের(সাঃ) সুন্নত পালন করছে।
(মুল শিরোনামঃহযরত আলীর(আঃ) কাছ থেকে যেভাবে বাইয়াত আদায় করা হয়- বইঃবেলায়েতের দ্যুতি,লেখকঃআয়াতুল্লাহ জাফর সুবহানী, প্রাপ্তিস্থানঃ ইরানী কালচারাল সেন্টার,ধানমন্ডি,ফোনঃ০১৭১২১৬৯৪৯১)
ইসলামের ইতিহাসের এ অংশটুকু সবচেয়ে তিক্ত ও বেদনাদায়ক অধ্যায়ের অন্ত্ররভুক্ত যা জাগ্রত ও সচেতন অন্তরগুলোকে নির্মমভাবে যন্ত্রনাকাতর করে তোলে এবং শোক্তাপে পুড়িয়ে মারে।ইতিহাসের এ অংশটি আহলে সুন্নাতের মিনীষীগন সংক্ষেপে ও ছোট কলেবরে তাদের গ্রন্থাবলীতে লিপিবদ্ব করেছেন,আর শিয়া মনীষীগন সবিস্তারে তা বর্ননা করেছেন।সম্মানিত পাঠকদের মধ্যে হয়তো এমন কেউ থাকতে পারেন যারা ওহীর ঘরে আক্রমন করার কাহিনীকে আহলে সুন্নাতের হাদীসবেত্তা ও ইতিহাস লেখকদের মুখ থেকে শুনতে চান। একারনে,এ অংশটুকু তাদের সুত্রাবলী ও দলীল প্রমানের ওপর নির্ভর করেই লিখব যাতে সন্দেহপ্রবন ও বিলম্বে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাও এ তিক্ত ঘটনাবলীর কথা বিশ্বাস করতে পারে।এ ব্যাপারে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে কুতাইবা দীনাওয়ারী তাঁর “ আল-ইমামাহ ওয়াস-সীয়াসাহ” গ্রপ্নথে যা বর্ননা করেছেন এখানে আমরা তার অনুবাদ উল্লেখ করছি।আর এ বিষয়ে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষনের কাজটি পরবর্তী অংশে তুলে ধরা হবে।
আহলে সুন্নাতের লেখকগন এ ব্যাপারে একমত যে,তখনো সাক্কীফার বায়াতের পর বেশী সময় অতিবাহিত হয় নি, এমন সময় খলিফার পক্ষ থেকে সিদ্বান্ত নেয়া হয় যে,হযরত আলী(আঃ),আব্বাস,যুবাইর ও বনী হাশেমের অন্যান্য লোকের কাছ থেকে আবুবকরের খেলাফতের অনুকুলে বাইয়াত গ্রহন করতে হবে যাতে তাঁর খেলাফত ঐক্য ও সর্বসম্মত রুপ লাভ করে এবং এর ফলে খেলাফতের পথ থেকে সর্বপ্রকার অন্তরায় ও বিরোধিতা অপসারিত হয়ে যায়।
সাক্কীফার ঘটনার পর বনী হাশিম ও মুহাজিরদের একটি দল ও ইমাম আলীর(আঃ) ভক্তবৃন্দ প্রতিবাদস্বরুপ হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরে আশ্রয় নেন।হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরে-যা রাসুলের(সাঃ) যামানায় বিশেষ সম্মান ও মযার্দার অধিকারী ছিল-তাঁদের আশ্রয় গ্রহন,খেলাফতের পক্ষে সেখানে আক্রমন চালানো এবং তাঁদেরকে জোরপুর্বক মসজিদে হাজির করে তাঁদের কাছ থেকে বাইয়াত গ্রহনের পরিকল্পনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু শেষ পরযন্ত ক্কক্সমতা বিস্তারের মোহ যা করার তা-ই করে বসলো।ওহীর ঘরের মরযাদা উপেক্ষা করা হলো।খলিফা আবুবকর হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরে আশ্রয় গ্রহনকারীদের কাছ থেকে বাইয়াত আদায়ের উদ্দেশ্যে তাঁদেরকে যেকোন মুল্যে সেখান থেকে বের করে আনার উদ্দেশ্যে একদল লোক নিয়ে সেখানে যাবার জন্য ওমরকে নির্দেশ দিলেন। ওমর এ আদেশ পেয়ে উসাইদ ইবনে হুযাইর,সালমাহ ইবনে সালামাহ,ছাবেত ইবনে কায়েস ও মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিমাহসহ একদল লোককে নিয়ে ফাতিমার(আঃ) গৃহ অভিমুখে যাত্রা করলেন।উদ্দেশ্য,সেখানে আশ্রয় গ্রহনকারীদেরকে খলীফার হাতে বাইয়াত হবার জন্য আহবান জানানো,আর আহবানে সাড়া নয়া দিলে তাঁদেরকে জোর করে ঘর থেকে বের করে এনে মসজিদে হাজির করানো ।
খলিফার আজ্ঞাবাহী(ওমর) হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে উচ্চৈস্বরে চিৎকার করে বললেনঃ “ ঘরে শ্রয়গ্রহনকারীরা!যত শীঘ্র সম্ভব খলিফার হাতে বাইয়াত হবার জন্য ঘরের ভিতর থেকে বের হয়ে এসো।“কিন্তু তার হুঙ্কার ও চিৎকারে কোন লাভ হলো না।কেউ ঘর থেকে বের হলো না।
খলিফার আজ্ঞাবাহী (ওমর) এসময় ঘরে আগুন দেয়ার জন্য কাঠ আনতে বললো যাতে আশ্রয় গ্রহনকারীরদের মাথার উপরেই ঘরটি জ্বলে যায়।তাঁর সঙ্গীদের মধ্য থেকে একজন এগিয়ে এসে খলিফার আজ্ঞাবাহীকে এ অপরাধকর্ম থেকে বিরিত রাখার চেষ্টা করলেন এবং বললেন, “ আপনি কিভাবে এ ঘরে আগুন জ্বালাতে পারেন যখন নবী দুলালী হযরত ফাতিমা(আঃ) এর মধ্যে অবস্থান করছেন?উত্তরে তিনি ঠান্ডা মাথায় বললেন, “ঘরের ভিতর ফাতিমার অবস্থান এ কাজে বাধা হবে না।“
এসময় ফাতিমা(আঃ) দরযার পিছনে দাঁড়িয়ে বললেনঃ
“আমি এমন কোন সমষ্টিকে দেখিনি যারা কখনো তোমাদের মতো নিকৃ্ষট অবস্থায় পতিত হয়েছে।তোমরা রাসুলাল্লাহর(সাঃ) লাশকে আমাদের মাঝে ফেলে রেখে গেছো এবং নিজেরা মিলে খেলাফত সম্পর্কে সিদ্বান্ত নিয়ে ফেলেছো।কেন তোমরা তোমাদের ফয়সালা আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছ, আর খেলাফত আমাদের ন্যায্য অধিকার তা আমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছ না” ?
ইবনে কুতায়বা বলেনঃ
এ দফায় খলিফার আজ্ঞাবাহী আশ্রয় গ্রহনকারীদেরকে ঘর থেকে বের করে আনার কাজ থেকে সরে এলেন এবং খলিফার কাছে উপস্থিত হয়ে সব কথা তাকে অবগত করালেন।খলিফা যেহেতু জানতেন যে,আশ্রয় গ্রহনকারীরা বনী হাশেমের এবং আনসার ও মুহাজিরদের মধ্য থেকে এমন সব বিশিষ্ট ব্যক্তি যাদের বিরোধিতা থাকলে তার হুকুমতের ভিত্তি দৃঢ় ও মযবুত হবে না,এ কারনে এবার তিনি তার গোলাম কুনফুযকে পাঠালেন আলীকে(আঃ) মসজিদে নিয়ে আসার জন্য।সে-ও দরযার সামনে এসে দাড়ালো এবং আলীকে(আঃ) ডাক দিয়ে বললো, “আপনাকে রাসুলাল্লাহর(সাঃ) খলিফার নির্দেশে মসজিদে যেতে হবে”।আলী(আঃ) যখন কুনফুযের এ কথা শুনলেন তখন বললেন, “ তোমরা এতো শীঘ্রই কেন রাসুলুল্লাহর(সাঃ) নামে মিথ্যা রচনা করলে? রাসুলুল্লাহ(সাঃ) কখন তাকে স্বীয় খলিফা নির্ধারন করলেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহর(সাঃ) খলিফা হবেন?”গোলাম নিরাশ হয়ে ফিরে গেলো এবং খলিফাকে ঘটনা অবগত করালো।
খেলাফতের পক্ষ থেকে আসা আহবান আশ্রয় গ্রহনকারীদের দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হবার কারনে খলিফা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।অবশেষে হযরত ২য় বারের মত একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরে হাযির হলেন।নবী কন্যা যখন আক্রমনকারীদের শব্দ শুনতে পেলেন তখন দরযার পিছনে উচ্চৈঃস্বরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন এবং বললেনঃ
“বাবা!হে আল্লাহর নবী!আপনার ইন্তেকালের পর ইবনে খাত্তাব আর ইবনে কুহাফার দ্বারা আমরা এ কি বিপদে আক্রান্ত হলাম!“
হযরত ফাতিমা(আঃ)-যিনি তখনো পিতৃবিয়োগের শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি,তাঁর এ মর্মবিদারী ক্রন্দন শুনে হযরত ওমরের সাথে আসা একদল লোক ফাতিলার(আঃ) ঘরে আক্রমন করা থেকে বিরত থাকে এবং সেখান থেকেই কাঁদতে কাঁদতে ফিরে যায়।
কিন্তু হযরত ওমর ও বাদ বাকী লোকেরা- যারা আলী(আঃ) ও বনী হাশেমের কাছ থেকে বাইয়াত গ্রহনের জন্য পীড়াপীড়ি করছিল,তারা বল প্রয়োগ করে হযরত আলীকে(আঃ) ঘর থেকে বের করে আনলো এবং হযরত আবুবকরের হাতে বাইয়াত গ্রহনের জন্য চাপ সৃষ্টি করলো।হযরত আলী(আঃ) বললেন, “ যদি বাইয়াত না হপি তাহলে কি হবে?তারা বললো”ঃ “ তাহলে নিহত হবেন”।হযরত আলী(আঃ) বললেন,”কোন সাহসে তোমরা আল্লহর বান্দা ও তাঁর রাসুলের ভাইকে হত্যা করবে?”
হযরত আলীর(আঃ) তীব্র বাধা ও প্রতিরোধের মুখে খলিফার লোকজন বাধ্য হয়ে তাঁকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দিল।ইমাম আলী(আঃ) এ সুযোগ কাজে লাগালেন এবং অত্যাচারের বিরুদ্বে নালিশ হিসাবে রাসুলুল্লাহর কবরের কাছে গেলেন।সেখানে তিনি হযরত হারুন(আঃ) হযরত মুসাকে(আঃ) যে বাক্যটি বলেছিলেন সেই কথাটি উচ্চারন করলেনঃ
“ হে ভাই!(আপনার অবর্তমানে) এই দলটি আমাকে অসহায় করে ফেলেছে এবং আমাকে প্রায় হত্যা করে ফেলেছিল”(সুরা আল-আরাফঃ১৫০।আল-ইমামাহ ওয়াস-সিয়াসাহ,১ম খন্ড,পৃঃ১২-১৩)।
ওহীর ঘরে আক্রমন সম্পর্কে ইতিহাসের বিচার
সাক্কীফার পরবর্তী ঘটনাবলী ইসলামের ইতিহাসের এবং আমিরুল মু’মিনিনের(আঃ) জোবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ও তিক্তকর ঘটনার মধ্যে একটি।এক্ষেত্রে সত্য প্রকাশ করা হলে ও খোলামেলা কথা বলা হলে তা একদল লোকের বিরক্তির কারন হয়-যারা এসব ঘটনার স্রষ্টা ও নিয়ন্তাদের ব্যাপারে ভক্তিতে গদ্গদ হয়ে যথাসম্ভব চেষ্টা করে যাতে তাদের গায়ে কোন রকম কালিমা স্পর্শ না করে এবং তাদের পাক-পবিত্রতা বজায় থাকে,যদিও সত্যকে গোপন করা এবং তা উলটো করে প্রকাশ করে ইতিহাস ও ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রতি একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা মাত্র।একজন সত্যনিষ্ট,বস্তুনিষ্ট ও স্বাধীন লেখক কখনো সত্যকে পদদলিত করেন না।
হযরত আবুবকরের খেলাফতে অধিষ্টিত হবার পর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো ওহীর ঘরে এবং ফাতিমার(আঃ) ঘরে আক্রমন চালানো।যে আক্রমনের উদ্দেশ্য ছিল ফাতিমার ঘরে আশ্রয় গ্রহনকারীদের থেকে বাউয়াত আদায়ের জন্য তাঁদেরকে মসজিদে হাজির করা।এ বিষয়ের সঠিক ব্যাখ্যা ও মুল্যায়নের জন্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সুত্রাবলীর ওপর নির্ভর করে নিম্নোক্ত ৩টি বিষয়ের সত্যাসত্য যাচাই করা আবশ্যক।বিষয় ৩টি হলোঃ
১/ এটা কি সঠিক যে,খলিফার লোকজন হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার সিদ্বান্ত গ্রহন করে?এপথে তারা কতদুর অগ্রসর হয়?
২/এটা কি সঠিক যে আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলীর(আঃ) কাছ থেকে বাইয়াত আদায় করার জন্য তাঁকে নির্মম ও হ্রদয়বিদারকভাবে মসজিদে নিয়ে যায়?
৩/এটা কি সঠিক যে,এ আক্রমনকালে নবী দুলালী হযরত ফাতিমা(আঃ) আক্রমনকারীদের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং এর ফলে তাঁর গর্ভপাত ঘটে তাঁর গর্ভস্থ সন্তান মারা যায়?
এ ৩টি বিষয় হলো এ ঘটনার সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয়।আমরা আহলে সুন্নাতের মনীষীদের সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সুত্রাবলীর সাহায্যে এগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করবো।
ইসলামের একটি জীবন্ত শিক্ষা হলো,কোন মুসলমান পুর্ব-অনুমতি না গ্রহন করা পরযন্ত কারো ঘরে প্রবেশ করবে না।আর গৃহকরতা যদি অপারগতা প্রকাশ করে এবং অতিথি গ্রহনে সম্মত না হয় তাহলে তা মেনে নেবে এবং তাকে বিরক্ত না করে সেখান থেকে ফিরে আসবে(সুরা আন-নুরঃ২৭-২৮)।
কোরান মজীদ উপরোক্ত এ চারিত্রিক নির্দেশনা ছাড়াও যে ঘরে সকাল-সন্ধায় আল্লাহর নাম স্মরন করা হয় এবং তাঁর ইবাদাত করা হয় সেটাকে সম্মানিত বলে গন্য করেছে।এরশাদ হচ্ছেঃ
“আল্লাহ যেসব ঘরকে মরযাদায় উন্নিত করা এবং সেগুলোতে তাঁর নাম উচ্চারন করার আদেশ দিয়েছেন,সেখানে সকাল সন্ধ্বায় তাঁর মহিমা ঘোষনা করে।“(সুরা আন-নুরঃ৩৬।অনেক মুফাসসিরই বলেছেন যে,এ আয়াতে মসজিদের কথা বলা হয়েছে,অথচ ব্যাপার হচ্ছে,মসজিদ এধরনের ঘরের অন্যতম ও সর্বোত্তম উদাহরন,এধরনের একমাত্র ঘর নয়।)।
এসব ঘরের সম্মানের কারন হলো আল্লাহর সেই ইবাদাত ও স্মরন যা এগুলোর মধ্যে করা হয় এবং সেই সকল ঐশী ব্যক্তিদের কারনে যারা এর মধ্যে আল্লাহর মহিমা ও প্রশংসায় রত থাকেন।নতুবা কাঠ আর কাদামাটির কখনো সম্মান ছিল না,থাকবেও না।
মুসলমানদের সকল ঘরের মধ্য থেকে কোরান মজীদ রাসুলাল্লাহর(সাঃ) ঘরের ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশ প্রদান করেছে।এরশাদ হচ্ছেঃ
“হে মুমিনগন!তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে নবীর ঘরে প্রবেশ করো না।“(সুরা আল-আহযাবঃ৫৩)।
নিঃসন্দেহে হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরও সম্মানার্হ ও উন্নীত ঘর সমুহের অন্যতম ছিল যেখানে ফাতিমা যাহরা(আঃ) ও তাঁর সন্তানবর্গ আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষনা করতেন।এটা বলা যাবে না যে,হযরত আয়েশা বা হাফসার ঘর রাসুলাল্লাহর(সাঃ) ঘর ছিল।কিন্তু তাঁর মহীয়সী দুলালী বিশ্বের নারীকুল শ্রেষ্ট, তাঁর ঘর নিশ্চিতভাবে রাসুলাল্লাহরই(সাঃ) ঘর।
এখন দেখা যাক খলিফার লোকজন রাসুলাল্লাহর(সাঃ) এ ঘরটিকে কিভাবে রক্ষা করেছিল।খেলাফতের ১ম দিনগুলোর ঘটনাবলী পরযালোচনা করলে দেখা যাবে যে,খলিফার লোকজন এসব আয়াতের সবগুলোর নির্দেশই অমান্য করে এবং রাসুলাল্লাহর(সাঃ) ঘরের মরযাদা মোটেও রক্ষা করেনি।
আহলে সুন্নাতের ঐতিহাসিকবৃন্দের অধিকাংশই ওহীর ঘরে আক্রমনের ঘটনা অষ্পষ্টরুপে আর তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ কিছুটা ষ্পষ্ট্রুপে লিপিবদ্ব করেছেন।
ত্বাবারী-যিনি খলিফাদের প্রতি বিশেষভাবে দুর্বল,তিনি শুধু এতটুকু লিখেছেন যে,হযরত ওমর একদল লোককে নিয়ে হযরত ফাতিমা যাহরার(আঃ) ঘরের সামনে আসেন বলেন,”আল্লাহর শপথ,আমি এঘর জ্বালিয়ে দেবো যদি না শ্রত গ্রহনকারীরা বাইয়াত হবার জন্য ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে”(তারিখে ত্বাবারী,৩য় খন্ড,পৃঃ)।
কিন্তু ইবনে কুতায়বা দীনওয়ারী আরো বেশী পর্দা উন্মোচন করেছেন এবং বলেনঃ “সেই আল্লাহর শপথ যার হাতে ওমরের প্রান,হয় ঘর ছেড়ে বের হবে,না হয় তাতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেবো”।যখন তাকে বলা হলো যে নবী দুলালী হযরত ফাতিমা যাহরা(সাঃ) এ ঘরের মধ্যে রয়েছেন তখন তিনি বললেন, “থাকুক”।(আল-ইমামাহ ওয়াস-সীয়াসাহ,২য় খন্ড,পৃঃ১২;শরহে নাহজুল বালাগাহঃইবনে আবীল হাদীদ,১ম খন্ড,পৃঃ১৩৪;আ’লামুন নিসা,৩য় খন্ড,পৃঃ১২০৫)।
‘ইক্কদুল ফারীদ গ্রন্থের রচয়িতা(ইবনে আব্দে রাব্বিহ আন্দালুসী,ওফাত ৪৯৪হিজরী) আরো এক ধাপ অগ্রসর হয়ে বলেনঃ
খলিফা হযরত ওমরকে দাইত্ব প্রদান করেন যে,(হযরত ফাত্মার ঘরে)আশ্রয় গ্রহনকারীদের সে ঘর থেকে বের করে আনবেন,আর তাঁরা যদি প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তাহলে তাঁদের বিরুদ্বে যুদ্ব করবেন।একারনে হযর ওমর ঘর পুড়িয়ে দেয়ার জন্য আগুন আনলেন।এ সময় তিনি হযরত ফাতিমার মুখোমুখি হন।নবী দুলালী বললেন, “ হে ইবনে খত্তাব!আমাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতে এসেছো?”তিনি বললেন, “হ্যা, যদি না তারা অন্যদের মতো খলিফার হাতে বাইয়াত হয়।“(ইক্কদুল ফরীদ,৪র্থ খন্ড,পৃঃ২৬০।আরো দেখুনঃতারিখে আবুল ফিদা,১ম খন্ড,পৃঃ১৫৬;আলামুন নিসা,৩য় খন্ড, পৃঃ১২০৭)।
আমরা যখন একই বিষয়ে শিয়া আলেমদের গ্রন্থে দেখবো তখন ঘটনা আর ষ্পষ্ট ও পরিপুর্ন্রুপে দেখতে পাবো।সুলাইম ইবনে কায়েস( সুলাইম বিন ক্কায়স কুফী তাবেইন গনের অন্যতম।তিনি আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলীর(আঃ) যুগ থেকে শুরু করে ইমাম সাজ্জাদের(আঃ) যুগ পরযন্ত দেখেছেন।তিনি হিজরী ৯০ সালে ইন্তেকাল করেন) তাঁর গ্রন্থে ওহীর ঘরে আক্রমনের ঘটনাকে সবিস্তারে লিখেছেন এবং সত্যের উপর থেকে পরদা অপসারিত করেছেন।তিনি লিখেছেনঃ
“খলিফার আজ্ঞাবাহী আগুন প্রজ্বলিত করলেন এবং তারপর দরযার ওপর ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলেন।কন্তু তিনি হযরত ফাতিমার(আঃ) প্ররতিরোধের সম্মুখীন হলেন”।(আছলু সুলাইম,পৃঃ৭৪,নাজাফ থেকে মুদ্রিত)।
চলবে.....
২৭ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯
আল-মুনতাজার বলেছেন: কোনটি মিথ্যা,বিস্তারিত জানালে জবাব পাবেন।এধরনের বানোয়াট কথা বার্তা আপনার মত আমিও বলতাম।কিন্তু আল্লাহ পাক আমাকে হেদায়াত নসীব করেছেন খাটী মুহাম্মদী ইসলামকে জানার জন্য।
২| ২৭ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮
দূর প্রবাসী বলেছেন: বেলয়াতের দ্যুতি বইটি আমি কিছু অংশ পড়েছিলাম, এবং আপনি যে অংশ তুলে ধরেছেন তাও পুরোটাই সত্য।প্রকৃত সত্য হলো এই যে ইমাম আলী (রা ই ছিলেন দয়াল রাসুল (স
এর সিরাজাম মুনীরা তথা হেদায়েতের নুরের প্রকৃত এবং মনোনীত উত্তরসূরী।কিন্তু ক্ষমতার লোভে মানুষ যে কি করতে পারে তা আসলে এই বইটি না পড়লে হয়তো কখনোই কিছু জানতে পারতামনা। ইসলামের অনেক কিছুই আমাদের অজানা, কিন্তু দেরিতে হলেও মহান মালিকের বিশেষ দয়ার বদৌলতে কিছু জানার সুযোগ হচ্ছে।
২৭ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
আল-মুনতাজার বলেছেন: সসালামু আলাইকুম। আপনার গঠনমুলক মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।চেপে রাখা অনেক সত্য ইতিহাস যা কিনা চাপা ছিল তা এখন আমরা সহজেই জানতে পারছি।আমার অন্য লেখা গুলোও পড়ুন,জানুন মহাসত্য ও খাটি ইসলামকে।
৩| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৪১
মুহাম্মদ যিয়ান ইলাহী বলেছেন: যদি আপনি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে সালাম এবং পরবর্তি অংশ পড়াটা আপনার জন্য যুক্তিযুক্ত।
শেষ পরযন্ত ক্কক্সমতা বিস্তারের মোহ যা করার তা-ই করে বসলো।ওহীর ঘরের মরযাদা উপেক্ষা করা হলো।খলিফা আবুবকর হযরত ফাতিমার(আঃ) ঘরে আশ্রয় গ্রহনকারীদের কাছ থেকে বাইয়াত আদায়ের উদ্দেশ্যে তাঁদেরকে যেকোন মুল্যে সেখান থেকে বের করে আনার উদ্দেশ্যে একদল লোক নিয়ে সেখানে যাবার জন্য ওমরকে নির্দেশ দিলেন।
আল্লাহর দুই প্রিয় বান্দা এবং রাসুল স: এর দুই প্রিয় সাহাবী যারা দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন তাদের ব্যাপারে এতবড় নির্লজ্জ মিথ্যাচার অসহনীয়।
ইসলামকে কিন্তু আমরা বিভেদ করি নি। আমরা সব সময় চেয়েছি একসাথে থাকতে। হজরত আলী (রা {(আ
নয়, কেবল নবী গন এই উপাধি পাবার যোগ্য } নিজে কখনো বিভেদ তৈরী করেন নি। বরং খেলাফতের ব্যাপারে তিনি অপরাপর মুসলমানদের সিদ্ধান্ত প্রাধান্য দিয়েছেন।
এবং এটা মনে রাখবেন আমরা মুসলিমরা সব সময় ৪ খলিফাকেই মেনেছি। কেবল শিয়ারাই সবসময় আলী (রা কে প্রাধান্য দিতে বিশিষ্ট সাহাবী গনের নাম ঘৃণ্য মিথ্যাচার করেছে। ইসলামে তাজিয়া মিছিলের মত বিদাত শিয়ারাই এনেছে। এমনকি যখন আলী রা: এর সাথে তাদের বনিবনা হয় নি তখন তাদের এক অংশ মুরতাদ খারেজি হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেছে।উপরন্তু রাসুল স: এর রওজা যার গৃহে অবস্থিত সেই উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা: এর ব্যাপারেও তারা কম মিথ্যাচার করে নি।
সময়ের অভাবে REFERENCE দিতে পারলাম না। আল্লাহ চাইলে পরে এই ব্যাপারে কোন পোস্ট দিব ইনশাল্লাহ।
আল্লাহ পথভ্রান্তদের হিদায়াত দান করুন।
৪| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৪৬
মুহাম্মদ যিয়ান ইলাহী বলেছেন: sorry for the stupid emoticons which came up as a result of typing : ).
BTW hope you are being well paid for writing up these posts. I have seen your blog and found that you have posted more than 2 posts simultaneously. That means you have already put a huge effort to keep those writings prepared.
STOP BUGGING ISLAM OR I HAVE TO REPORT YOUR BLOG.
৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১৪
শেরশাহ০০৭ বলেছেন: এবং এটা মনে রাখবেন আমরা মুসলিমরা সব সময় ৪ খলিফাকেই মেনেছি। কেবল শিয়ারাই সবসময় আলী (রা কে প্রাধান্য দিতে বিশিষ্ট সাহাবী গনের নাম ঘৃণ্য মিথ্যাচার করেছে। ইসলামে তাজিয়া মিছিলের মত বিদাত শিয়ারাই এনেছে। এমনকি যখন আলী রা: এর সাথে তাদের বনিবনা হয় নি তখন তাদের এক অংশ মুরতাদ খারেজি হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেছে।উপরন্তু রাসুল স: এর রওজা যার গৃহে অবস্থিত সেই উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা: এর ব্যাপারেও তারা কম মিথ্যাচার করে নি
৬| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:২১
প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: সাহাবী পরবর্তী অধিকাংশ ইমামদের বইয়ে শিয়াদের ভ্রান্ত বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে।
স্টাডি যেহেতু করছেন সেগুলোও পড়বেন। একতরফা বই পড়লে তো আর হবে না। কে কি বলে সব জানতে হবে। ................ তারপর সিদ্ধান্তের প্রশ্ন।
৭| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৩২
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: সাহাবী পরবর্তী অধিকাংশ ইমামদের বইয়ে শিয়াদের ভ্রান্ত বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে।
স্টাডি যেহেতু করছেন সেগুলোও পড়বেন। একতরফা বই পড়লে তো আর হবে না। কে কি বলে সব জানতে হবে। ................ তারপর সিদ্ধান্তের প্রশ্ন।
৮| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫৬
চুক্কা বাঙ্গী বলেছেন: আপনার লেখা অনেক ত্যানা প্যাচানো এবং আল্লাহর রাসূলের সাহাবাদের প্রতি বিদ্ধেষে পরিপূর্ণ। আপনি কি জানেন হাদীসে আছে, আমাদের মহানবী বলেছেন, গীবত করা মৃত ভাইয়ের মাসং ভক্ষন করার সমতুল্য। সেখানে আপনি সাহাবাদের সম্পর্কে বাজে কটুক্তি করছেন এটা কি ঠিক হচ্ছে কিনা ভেবে দেখবেন।
বর্তমান বিশ্বের সর্বাধিক শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র ইরান যা কিনা পূর্বে পারস্য নামে পরিচিত ছিল তা কিন্তু মুসলমানদের হাতে আসে হযরত ওমর (রা.) এর খিলাফত আমলে। তিনি যদি মুসলমানদের জামাত সেখানে না পাঠাতেন তাহলে আজকে ইরানের শিয়া ধর্মাবলম্বীরা অগ্নী উপাসক থাকত।
হযরত আব্দুল্লহ ইবনে মাসউদ রদিয়াল্লহু আ’নহু বলিতেন, “যে ব্যক্তি দ্বীনের পথে চলিতে চাহে সে যেন সেই সকল লোকদের অনুসরণ করে যাঁহারা অতীত হইয়া গিয়াছেন আর তাঁহারা হইলেন হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাহ রদিয়াল্লহু আ’নহুম। কারণ তাঁহারা এই উম্মতের শ্রেষ্ঠ ভাগ। তাঁহাদের অন্তর ছিল অত্যন্ত পবিত্র এবং তাঁহাদের জ্ঞান ছিল সর্বাপেক্ষা গভীর। তাঁহাদের মধ্যে কোন কৃত্রিমতা ছিল না, আল্লহ তায়া’লা আপন নবীর সাহচর্য ও তাঁহার দ্বীন প্রচারের জন্য তাঁহাদিগকে বাছাই করিয়াছিলেন। অতএব তাঁহাদের সম্মানকে স্বীকার করিয়া তাঁহাদের পদাঙ্ক অনুসরণ কর। তাঁহাদের আখলাক ও আদর্শকে মজবুত করিয়া ধর। কারণ তাঁহারা হেদায়েতের উপরে ছিলেন।”
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:২৮
আলী খান বলেছেন: শিয়ারা সব সময় মিথ্যাচারে উস্তাদ