![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যুদ্ধাপরাধী বিচার
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউশনের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্ধারণ করে দেয়া সময়ের মধ্যে তা শেষ না হওয়ায় আজকের মধ্যে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করার আদেশ দেয়া হয়। এদিকে যুক্তিতর্কে প্রসকিউশন সুলতান মুহাম্মদ সীমন বলেছেন, সালাউদ্দিন কাদের ও তার বাবা ফজলুর কাদের চৌধুরীর নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় রাজাকার ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বোয়ালখালী থানাধীন হিন্দু অধ্যুষিত শাখাপুরা গ্রামে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৭৬ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। সাক্ষীদের সাক্ষ্যে এটা প্রমানিত হয়েছে। যুক্তিতর্কে আরও বলা হয়, রাউজান পৌরসভার শহীদ সতীশ চন্দ্র পালিতকে হত্যার আগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাকিস্তানী সেনাদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলেছিলেন, এই লোকটা ডেঞ্জারাস, একে মেরে ফেল’। এরপরই পাকিস্তানী সৈন্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। প্রসিকিউশন পক্ষ আজ আবারও যুক্তিতর্ক শুরু করবেন। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ যুত্তিতর্কে প্রসিকিউটর এ কথা জানিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দু’সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
মঙ্গলবার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোট ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ১৭টিতে যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন করা হয়। তৃতীয় দিনে ষষ্ঠ অভিযোগের অসমাপ্ত যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন প্রসিকিউটর সুলমান মাহমুদ সীমন। এরপর ১৪তম অভিযোগ পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে রাউজান পৌরসভার সতীশ চন্দ্র পালিতের বাড়িতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীসহ গিয়ে তাকে হত্যা ও বাড়ি পোড়ানো, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহমেদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে চিনিয়ে দেয়া এবং পরবর্তীতে তাদের হত্যায় সহায়তা করা, বোয়ালখালী সিও অফিসে রাজাকারদের ক্যাম্পে উপস্থিত থেকে কদুরখালির বণিকপাড়া ও হিন্দুপাড়ায় লুটপাট চালানোর ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া এবং মুন্সীরহাটের শান্তি দেবকে বণিকপাড়ায় নিয়ে হত্যা, রাউজান থানাধীন ডাবুয়া গ্রামে আর্মি জিপ নিয়ে গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান সাধন ধরের বাড়িতে লুটপাট চালানো এবং অগ্নিসংযোগ করার ঘটনা।
১১তম অভিযোগ অনুযায়ী, সালাউদ্দিন কাদের ও তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীর নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় রাজাকার ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বোয়ালখালী থানাধীন হিন্দু অধ্যুষিত শাখাপুরা গ্রামে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৭৬ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ১২তম অভিযোগ অনুযায়ী, রাউজানের জগৎমলপাড়ায় সালাউদ্দিন কাদেরের উপস্থিতিতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বিজয় কৃষ্ণ চৌধুরী রাখাল, বিভূতিভূষণ চৌধুরী ও হরেন্দ্র লাল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া ঘাসী মাঝিপাড়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়িতে লুটপাট চালানো, ছয়জনকে হত্যা ও দুজনকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদের, তার বাবা ফজলুল কাদের এবং তাদের সহযোগী রাজাকার অলি আহমেদের জড়িত থাকার কথা বলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন।
এছাড়া পাথেরহাটের কর্তাদিঘীরপাড় থেকে আরেক আওয়ামী লীগ সমর্থক মোঃ হানিফকে ধরে গুডস হিলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদের জড়িত ছিলেন। মোঃ হানিফকে পরবর্তীতে পাওয়া যায়নি। রবিবার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। ওইদিন প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। তৃতীয় অভিযোগের যুক্তিকর্ত অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে সোমবার পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
©somewhere in net ltd.