![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথা ছিল প্রধান শিক্ষকই সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র পাবে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলে দেয় ওই প্রধান শিক্ষকের হাতে। কিন্তু প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষার হলে আর বসা হলো না ওই শিক্ষার্থীদের। গতকাল রবিবার শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে প্রতারণার শিকার ওই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে, ঘেরাও করেছে থানা। কিন্তু জামায়াত নেতা ওই শিক্ষকের খোঁজ মিলছে না। গতকাল ময়মনসিংহের গফরগাঁওবাসী এমন ঘটনাই প্রত্যক্ষ করল।
জানা গেছে, উপজেলার রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, গফরগাঁও পৌর জামায়াতের সাবেক আমির ও উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি মারুফ আহম্মেদ দুই শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে তাঁর বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দেওয়ানোর কথা বলে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে প্রায় কোটি টাকা আদায় করেন। গতকাল রবিবারের পরীক্ষায় অংশ নিতে আগের দিন শনিবার ওই শিক্ষার্থীরা রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশপত্র নিতে আসে। কিন্তু তারা এসে দেখে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই জামায়াত নেতারও কোনো খোঁজ নেই। পরে শিক্ষার্থীরা সারা রাত বিদ্যালয়ের মাঠে ও পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সকালে তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়েও তাঁকে খুঁজে না পেয়ে গফরগাঁও ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে। কিন্তু তাদের প্রবেশপত্র না থাকায় পরীক্ষা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। এ সময় তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে তারা পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং প্রধান শিক্ষক মারুফ আহম্মেদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গফরগাঁও থানা ঘেরাও করে। গফরগাঁও থানার ওসি আছাবুর রহমান আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।
টঙ্গী এলাকার ছফির উদ্দিন সরকার একাডেমির শিক্ষার্থী হুমায়রা হোসেন জানায়, তারা ওই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহম্মেদকে ৪০ হাজার করে টাকা দেয় ফরম পূরণের জন্য। কিন্তু প্রবেশপত্র নিতে এসে তারা জানতে পারে যে, ওই প্রধান শিক্ষক টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন। ঢাকার বারিধারা চিলড্রেন একাডেমির শিক্ষার্থী শাম্মী আক্তার, সুমা, মুগদা স্ট্যান্ডার্ড একাডেমির মিনহাজ আলম, মৃদুল, সোমা আক্তার, শিমু, আঁখি, মীম, সুমাইয়াও একই রকম অভিযোগ তোলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশাপাশি উপজেলার আরো পাঁচ-ছয়টি উচ্চ বিদ্যালয়ে একইভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহিরাগত শিক্ষার্থী এনে ফরম পূরণ করে গফরগাঁও ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, খায়রুল্লাহ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কান্দিপাড়া আস্কর আলী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ানো হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, রৌহা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র পেয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহম্মেদ অবৈধ উপায়ে ফরম পূরণ করে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। ওইসব শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র আসেনি। তিনি বলেন, মারুফ আহম্মেদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, 'বিক্ষুব্ধ কয়েকজন ছাত্রকে আমি ডেকে জিজ্ঞেস করেছি তারা বিদ্যালয়ের নাম বলতে পারেনি। বোঝা যায় এরা প্রত্যেকে বহিরাগত। গত বছর শিক্ষা বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় মারুফ আহম্মেদ উচ্চ আদালতে রিট করে কয়েক শ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করেছিলেন। কিন্তু চলতি পরীক্ষায় বোর্ড এসব পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে তাদের প্রবেশপত্র ইস্যু করেনি।
উল্লেখ্য, একই অভিযোগে দুই বছর আগে দশম শ্রেণীর শিক্ষা কার্যক্রম বাতিল করে শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উচ্চ আদালতের মাধ্যমে তা ফিরে পান। ২০১২ সালে কালের কণ্ঠে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছি। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেট প্রতি বছর ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের পাসের নিশ্চয়তা দিয়ে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়সহ পাঁচ-ছয়টি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ায়।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬
"চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য, উচ্চ সেথা শির" বলেছেন: সে জামাতি নয় তাকে জামাত থেকে বহিস্কৃত করা হয়েছে। ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়।