নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন দেখি..স্বপ্ন দেখাই ...

আমি খুব সাধারন .......

আমি আহমদ মুসা বলছি

আহমদ মুসা

আমি আহমদ মুসা বলছি › বিস্তারিত পোস্টঃ

_________রক্তেলেখা দিনলীপি ヅ [২]

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪২

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ বৃহস্পতিবার । সেদিনের সুবেহ সাদিকটা ছিলো বড় বেশি রক্তিম। বাড়ীর পেছনের বিশাল জমিনটাতে খুনে সূর্যের ছটা পড়তে শুরু করেছে। পাখিদের কলাকাকলির বদলে সূর্য়ের রক্তিমতাটাই চোখে খুব ধরা দিচ্ছিল। না না আজ কি পাখি তার সুর পাড়তে পারে ? আর আমি কুরআন নিয়ে বসে আছি। কিন্তু চিরচায়িত ভাবে দড়াজ সূড়ে তেলাওয়াত করতে পারছিলাম না । কোরানের পাখির সুর কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে যেন দুনিয়ার তাবত সুর তার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে । চোখের পানিও ধরে রাখা যাচ্ছেনা । একা মানুষ .... কারও সাথে শেয়ার করবো তারও কোন উপায় নেই। তাই কথা হচ্ছিল যেন কোরানের আয়াতে করীমা গুলোর সাথেই । বেলা গড়াতে থাকলো ......বেশ কয়েকবার ফেবুতে বসেও বসা হয় না। ফেবু ফিডে কি না কি অপেক্ষা করছে ?...



বেলা এগারোটার দিকে স্কুল জীবনের এক বন্ধু ফোন করলো ....মাওলানার সাথে কাটানো অতিতের দিন গুলো স্বরণ করে দুই বন্ধুই কান্না করছিলাম । আমি ইসলামী সমাজকল্যান পরিষধ ,চট্টগ্রাম পরিচালিত একটি মাদ্রাসার পরিচালক ও সে ছিলো ওই মাদ্রাসার এতিমখানার সবচেযে সিনিয়র ছাত্র। সেই হিসেবে প্রতিটা তাফসির মাহফিলের প্রায় একমাস আগ থেকে আমারা মাদ্রাসায় মাহফিলের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিতাম। আর মাহফিল চলাকালে আমার কর্মীরাই মেহমানদের ফায়ফরমাস ও ছোটখাট কাজ গুলো করতো ,শিবিরের পরিচালক হিসেবে আমাকেও তাদের সাথে থাকতে হত। সেই সুবাদে ইসলামী আন্দোলনের অনেক সিনিয়র দায়িত্বশীলের সাথে সেই স্কুল জীবন থেকেই পরিচয়। আর মাওলানার সাথে কাটানো ছিটেফোটা সময় গুলোইতো জীবনের অন্যতম সেড়া সময় । বারবার চোখের পর্দায় সেই সোনালী দিন গুলো মনে পড়ছিলো । সেই মানুষটিকে আজ বাতিল স্তব্ধ করে দিতে চাইছে !!!



বেলা গড়িয়ে দুপুর । ঘোষিত হয়ে গেছে মানব ইতিহাসের র্নিলজ্ব মিথ্যাচার রায়। যোহর পরে তখনো জায়নামাজে , টেবিলে আপু দুপুরের খাবার রেখে গেছেন । গড়ম খাবার জুড়িয়ে ঠান্ডা হয়ে গেল ,কিন্তু মুখে রোচাতে পাড়লাম না......একজন ‘কাপ’ সদস্য ভাইকে ফোন দিলাম । “ কি ভাই কোন প্রতিবাদ হবে না ....? এভাবে চেয়ে চেয়ে দেখবো ...? ভাইটি আমার কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন .......ভাই প্রতিবাদ শুরু হয়ে গেছে ...সাতকানিয়াতে দুই ভাই শহীদ ...রায় ঘোষণার আগ থেকে কেরানীহাটে-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দখল করে সেখানে কোরআন তিলাওয়াত শুরু করে আমাদের ভাইয়েরা....

সেই মুর্হুত থেকেই বদলে গেল চিরচেনা বাংলাদেশ। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুফাসসিরে কোরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে সারাদেশ।চলতে থাকে ইতিহাসের নৃশংস গণহত্যা ,যা ৭১ সালের হানাদার বাহিনীর গণহত্যা কেও ছাড়িয়ে গেছে । হায়েনার বুলেট একে একে কেড়ে নিতে লাগলো প্রতিবাদী মানুষের কন্ঠস্বর গুলো ......



রাত ৯টা ...মিছিল শেষে ফিরেই বসলাম ফেবুতে । বাশের কেল্লার পোষ্ট : সারা দেশে শহীদ অষ্টআশি !!!

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ....ঢাকার মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ চলছিল। বিভিন্ন সূত্র মতে ,সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালিয়ে কমপক্ষে শতাধীক নেতাকর্মী হত্যা করেছে। পুলিশের গুলিতে সাতক্ষীরায় ১০, রংপুরে ৭, পঞ্চগড়ে ৭, চট্টগ্রামে ৩, কক্সবাজারে ৪, সিরাজগঞ্জে ৩, নারায়ণগঞ্জে ৩, দিনাজপুরে ৩, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪, নোয়াখালীতে ৩, মৌলভীবাজারে ৩, গাইবান্ধায় ৩, ঢাকার মিরপুরে ১, উত্তরায় ১, কুমিল্লা, নাটোর, যশোর, লক্ষ্মীপুরে ১ জন করে নিহত হয়েছে।সারাদেশে পুলিশের গুলিতে ৫ হাজারের মতো সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে। তার মধ্যে গুলিবিদ্ধ অন্তত ৫০০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।সারাদেশে আহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। গুলিবিদ্ধ হয়েছে শত শত মানুষ। বৃষ্টির মতো গুলিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এক নজিরবিহীন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের কর্মী ও মাওলানা সাঈদীভক্তরাও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে .....গাইবান্ধায় বিক্ষুব্ধ জন তার পিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছে তিন পুলিশ সদস্য। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পিকেটারদের ইটের আঘাতে মারা গেছে একজন পুলিশ কনস্টেবল। থানা অবরোধ, পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও, রেললাইন উপড়ে ফেলা, যানবাহন ভাংচুরসহ পুরো দেশ হয়ে পড়েছে রণক্ষেত্র।



রাত এগারোটা আবারো বেরুবো ....খবর এল ঢাকার মিরপুর ১ নম্বর ও ১০ নম্বরসহ পুরো মিরপুর এলাকা পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মিরপুরে অসমর্থিত খবরের সূত্র থেকে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া উত্তরায় জামায়াতের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে । রাত বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন দিক থেকে গণহত্যার খবর গুলো আমাকে দুমড়েমুচরে ছাড়খার করে দিচ্ছিলো ....বাসা থেকে বারবার ফোন দিচ্ছে আমি তখন মিছিলে .....



কখন বাসায় ফিরেছিলাম মনেই নেই , তবে ফজরের আজান চলছে এমন সময়ে একটা ফোন আসলো ঢাকা সেনানিবাস থেকে । অনেক আসা নিয়ে বললাম ...“তোরা কি এখনো মাঠে নামবি না ???

বড় করুন ছিলো সে জবাব :

“নাহ....তা হবে না..... তোর তো আজ মড়ছিশ আমরা অনেক আগেই মড়ে গেছি...... আমি তোকে ফোন করছি ওয়াস রুম থেকে ........ ”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.