![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত পরশু হাবিব সাহেবের শ্বশুড় মারা গেছে। আজ হাবিব সাহেব তার শ্যালক,শ্যালিকা, ভায়রা সহ গেছে কবর জিয়ারত করতে। মিরপুর ১১ নম্বর কবরস্থানের সামনে গাড়িতে শ্যালিকাকে রেখে কবরস্থানে ঢুকে জিয়ারত করছে। জিয়ারত শেষে বের হয়ে গাড়ির কাছে এসে দেখে শ্যালিকা তখনও গাড়িতে বসে কোরআন থেকে দোয়া পড়ছে।
মোকলেশ কবরস্থানের পাশে গাড়িটা থামতে দেখেই উত্তেজনা বোধ করছে।সে গাড়ির কাছে যেয়ে হাবিব সাহেবের কাছে জানতে চাইলো আশুলিয়া কেমনে যাবে। হাবিব সাহেব তাকে বললো এখান থেকে বাসে উঠে বিশ্বরোড যাও, বিশ্বরোড থেকে বাসে উঠে আশুলিয়া। মোকলেশ জানতে চাইলো পায়ে হেটে গেলে কতখন লাগবে। হাবিব সাহেব বললো হেটে যেতে পারবেনা অনেকদূর।
মোকলেশ একটু দূরে দাড়িয়ে কাদছে। কবর জিয়ারত করে হাবিব সাহেবের মন জীবনের ক্ষণস্থায়ীত্বার কথা চিন্তা করে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। মোকলেশকে দূরে দাড়িয়ে কাদতে দেখে তার মায়া লাগলো। সে মোকলেশকে কাছে ডাকলো। জানতে চাইলো কেনো সে কাদছে। মোকলেশ চোখ মুছতে মুছতে জানালো সে কুষ্টিয়ার কুমরখালি থেকে ঢাকায় আসছে কাজের খোজে, কোন কাজ পায় নি। সে এখন কারওয়ান বাজার থেকে এ পর্যন্ত হেটে আসছে আশুলিয়া যাবে বলে। আশুলিয়ায় যেয়ে দুইদিন কাজ করে টাকা জমিয়ে সে কুমারখালি যাবে ঢাকায় আর থাকবেনা। তার কাছে ১২ টাকা ছিলো ক্ষুধার জ্বালায় সে টাকায় সে খাবার খেয়েছে, এখন আশুলিয়া যাবার বাস ভাড়াও নেই। হাবিব সাহেবের লোকটার অসহায়ত্ব দেখে খারাপ লাগলো, সে তাকে ১০০ টাকা দিলো,তার ভায়রাও তাকে ১০০ টাকা দিলো। মোকলেশ টাকা পেয়ে দ্রুত হাটা শুরু করলো।
কবরস্থানের পাশে মোটরপার্টসের দোকানের কর্মচারী ঘটনা দেখে মালিককে বললো ওস্তাদ ওই লোক আবার আইছে। দোকানের মালিক মিল্টন, হাবিব সাহেবের কাছে ঘটনা শুনে জানালো, তাকে সপ্তাহখানেক আগে এ কথা বললে সে লোকটিকে পেট ভরে খাওয়াছে এবং ১০০ টাকা দিছে। আরো একজনের কাছ থেকে সে এভাবে টাকা নিছে। তারা লোকটাকে পেছন থেকে ডাকা শুরু করলে লোকটা আরো দ্রুত হেটে চলে যায়।
মোকলেশ দ্রুত যেতে যেতে ভাবে এ এলাকায় আর এ কাজ করা যাবে না, ঢাকা শহরের লোকগুলো আসলে বোকা, কুমারখালিতে এ অভিনয় করে কোন লাভ হতো না।
এটি একটি সত্য ঘটনা, প্রতারণার এ ঘটনা আমার এক কলিগের সাথে ঘটেছে।
©somewhere in net ltd.