![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি কবিতা লেখা শিখানোর কোন পাঠশালা থাকত তাহলে সে পাঠশালার আজীবন অবৈতনিক ঝাড়ুদার হইতাম।
নীরা-নোমান এখন বসুন্ধরার সাত তলায়। প্রথমেই এক্সট্যাসিতে ঢুকল। ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে নোমান কে একটা শার্ট গিফট করবে সে। অবশ্য ইতিমধ্যেই নোমান নীরার জন্য একটা শাড়ি গিফট করেছে। শাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে নীরার। নোমান কে পছন্দমতো একটা শার্ট কিনে দেয়ার জন্যই এখানে আসা।
- দেখতো এটা কেমন লাগে?
- সুন্দর
- না না এটা স্যুট করবে না তোমাকে। তোমার লাগবে উজ্জল কোন কালার
- কই এটা খারাপ নাতো
- ওটা বাদ। এটা দেখতো, লম্বা এসট্রাইপ আছে। কালারটাও সুন্দর। ক্রিম কালার
- হুম সুন্দর। তুমি চুজ করো তো। আমার দেখা লাগবে না। তোমার যেটা ভাল্লাগবে সেটাই
- আচ্ছা এটা ট্রায়াল দিয়ে আসো
নোমান ট্রায়াল দিতে ভিতরে গেল। নীরা সেলসম্যানকে শার্টটার দাম জিজ্ঞেস করলো। ২৪৫০ +ভ্যাট।
মনটাই খারাপ হয়ে গেল নীরার। তার কাছে টাকা আছে ২০০০। সে সেলসম্যানকে কণ্ঠটা নিচু করে জিজ্ঞেস করলো, এরকম আরেকটু কম দামের ভিতরে নেই ? ২০০০ এর মধ্যে?
সেলসম্যান বলল, না এরকম একটাই।
সেলসম্যানের পুরো ব্যাপারটা বুঝতে সময় লাগল না। পছন্দের শার্টটার দাম হয়তো মেয়েটার ভ্যানিটি ব্যাগে নেই। হাস্যজ্জ্বল মেয়েটার মুখ মুহূর্তেই কাল হয়ে গেল যেন।
নোমান বেড়িয়ে এসেছে শার্ট পরে। তাকে দারুণ লাগছে। মুখে কৃত্তিম হাসি ফুটিয়ে তুলল নীরা। শার্টটা একদম মনমতো হয়েছিল নীরার তবুও সে আরেকটি শার্ট তুলে নোমানকে দিল ট্রায়াল করতে। নোমান ট্রায়ালে গেল। এই শার্টটার দাম অবশ্য ১৮০০ টাকা। নোমানকে পাঠিয়ে নীরা মুখ কাল করে দাঁড়িয়ে রইলো।
- আপু, আপনি ওই শার্টটাই নিন ভাইয়ার জন্য। বাকি টাকা নাহয় আমার কাছ থেকে ধার হিসেবে নিন। অন্য একদিন এসে টাকাটা আমাকে ফেরত দিয়ে যাবেন। কোন সমস্যা নেই। আর আমাকে এখানেই পাবেন। টাকাটা নিলে আমারও খুব ভালো লাগবে। ভাই হিসেবেই না হয় নিন
লজ্জায় নীরার মুখ লাল হয়ে গেল। সে কোনভাবেই টাকাটা নিবে না এরকম একজন অপরিচিতর কাছ থেকে। আর সেলসম্যান বলতে গেলে জোর করেই টাকাটা দিতে চাইছে। পরে নীরা ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নিয়ে আর তার ছোট্ট ভালো লাগার কথা চিন্তা করে টাকাটা নিল।
সেলসম্যান শার্টটি ব্যাগে পুরে দিয়ে নীরার হাতে দিল। নীরার মুখে হাসি। খুব ভালো লাগার হাসি। এই হাসিতে কোন কৃত্তিমতা নেই। যাওয়ার আগে একবার ঘুরে একটা মৃদু হাসি দিয়ে চলে গেল নীরা। সেলসম্যান যেন এই হাসি দেখার অপেক্ষাতেই ছিল। এই হাসি দেখার সৌভাগ্য সবার হয় না। তবুও মেয়েটার যে চোখের কোণের কাজলটা ভিজে উঠবে হঠাৎ করে তা সেলসম্যানটি একদমই ভাবেনি।
কিছু ভালোলাগার কোন সংজ্ঞা হয় না। কিছু ভালোবাসার কোন সংজ্ঞা হয় না। এদের সংজ্ঞা খুঁজতেও নেই। খুঁজতেও হয় না।
(এই সেলসম্যানটি ছিল আমার বন্ধু। নাম দুটি কাল্পনিক। বাকি সব সত্য ঘটনা। গত রাতে যখন চায়ের আড্ডায় ঘটনাটা বলছিল ও, আমার নিজের চোখেই পানি এসে গিয়েছিল কেন জানি)
©somewhere in net ltd.