নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আহসান মুহাম্মাদ www.facebook.com/ahsan.muhaammad

অতঃপর নীরবতা

যদি কবিতা লেখা শিখানোর কোন পাঠশালা থাকত তাহলে সে পাঠশালার আজীবন অবৈতনিক ঝাড়ুদার হইতাম।

অতঃপর নীরবতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আউটডোরের দিনগুলো

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২২


তখন মিরপুরে আউটডোর বলে একটা জায়গা ছিল। যেখানে শুক্রবার খুব ভোঁরে উঠে আগে এসে ষ্ট্যাম্প পুঁতে ক্রিজ দখল করে রাখতাম। পরদিন খেলা ভেবে আগের রাতে উদ্বেগে ঠিকমতো ঘুমাতে পারতাম না। ধুলোমাখা হলুদ পা নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। সে মাঠ আর এখন নেই।

প্রচুর এফ এম শুনতাম। একটা অনুষ্ঠান হতো সবাই বলতো লাভগুরু। বৃহস্পতিবার আসার অপেক্ষা করতাম। তখন লাভগুরু ছিল রাজিব নামে একজন। তারপর আসল এহতেসাম ভাই। সাথে আরজে রাজু। এমনও কতো হয়েছে বন্ধুদের টুকটাক সমস্যার সমাধানে একটু গুরু গুরু টাইপ গম্ভীর কথাবার্তা বলে ভাব নিতাম। দিনগুলোই ছিল অন্যরকম।

স্কুলের গেট টপকে স্কুল ফাঁকি দেয়া এখন মনে হয় জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলোর শ্রেষ্ঠ সময়। হেঁটে হেঁটে তখন নতুন নতুন রাস্তা আবিষ্কার করতাম স্কুল ফাঁকি দিয়ে। জায়গা পেলেই ব্যাগ থেকে কাঠের টুকরাটা বের করে ক্রিকেট শুরু করে দিতাম। কারো সাথে উনিশ বিশ হলেই, 'ছুটির পর আসিস বেলাল স্যারের চিপায়' বলে বিশাল হুমকি ছাড়তাম। আজ আমরা এখন সবাই বন্ধু। রাস্তায় দেখা হলে এখনো বলাবলি করি সেই দিনগুলোর কথা। কাঁধে হাত দিয়ে বলে উঠি, চল বেলাল স্যারের চিপায়। খুব মিস করি দিনগুলো।

অংকে ০৪ পেয়ে সেটা বাসায় ৪৪ বলে দিব্যি চালিয়ে দিতে পারতাম। হয়তো আব্বা কখনো পেজ উল্টাতেন না বলেই।

শামসুন্নাহার ম্যাডামের ক্লাসে ঘুম চলে আসতো এতটাই নীরব থাকতো বলে। মাসুদ পারভেজ স্যারের কড়া এসেম্বলি। এসেম্বলি না করে বাথরুমে পালিয়ে থাকা, ক্লাসে আতিক স্যার আসার আগে নাক মুখ বন্ধ করে উপপাদ্য মুখস্থ করা, মনিরুজ্জামান স্যারের লাত্থি, শামিম স্যারের শুদ্ধভাষী গান। এখন সব ওসব প্রিয় অতীত।

টং দোকানে ঠোঁটে খালিদের গান না থাকলে যেন মনে হতো চা পানসে আজ। আইয়ুব বাচ্চুর 'সেই তুমি' শুনে মনে হতো প্রেমে বুঝি শুধু কষ্টই কষ্ট। পহেলা বৈশাখে বড় ভাইরা কনসার্ট আয়োজন করতো। চেয়ার দখল করে গিয়ে বসে থাকতাম। হাতে থাকতো পাঁচ টাকার বাদামবাহার। সেই ছোট্ট মাঠে এখন বিশাল অ্যাপার্টমেন্ট।

চাঁদ রাতে বারান্দায় গিয়ে চাঁদ দেখতাম। বিটিভিতে শুনতাম দলবদ্ধভাবে কতো কতো শিল্পীর মুখে একসাথে গাওয়া নজরুলের গান। ঈদ কার্ডের ছোট ছোট দোকান বসতো। সেখান থেকে গান বাজত। আমরা উপভোগ করতাম আমাদের কৈশোরবেলা।

বড় হয়েছি। ভালো আছি। খুব যে কষ্টে কাটছে দিন ব্যাপারটা ওরকম না। তবুও কেন যেন কি নেই নেই। কেন যেন কিছুই ভালো লাগে নাহ। কোন কিছুই না। বেড়াতে যাই- ভাল্লাগে না, বিরিয়ানি খাই- ভাল্লাগে না, গান শুনি- ভাল্লাগে না, নাচি কতক্ষন- ভাল্লাগে না। কোনকিছুই ভাল্লাগে না। বড় হলে কি এমন হয় নাকি! আলাদিনের দৈত্যকে কাছে পেলে বলতাম, আমার একটাই ইচ্ছা আমাকে ছোট করে দাও যেন আর বড় না হই। যেন ফিরে পাই আউটডোরের দিনগুলো। যেন ফিরে পাই এফ এমের দিনগুলো। যেন ফিরে পাই স্কুল ফাঁকির দিনগুলো। যেন ফিরে পাই আমার ছোট্টবেলার শৈশব।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪

সোহানূর রহমান সোহান বলেছেন: অসাধারণ

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৫

অতঃপর নীরবতা বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.