নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতিচারণঃ ওপরওয়ালা

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২৩



চাকরিজীবনে আমার কিছু অম্লমধুর অভিজ্ঞতার কথা শুনুন। চাকরিতে ঢোকার মাত্র কয়েক মাস পরে আমাদের এক কলিগ বললেন, ‘হেনা সাহেব, আপনারা ইয়ংম্যান। অফিস ডেকোরাম মানতে চান না। কিন্তু এটা তো সরকারি অফিস। নিয়ম কানুন মেনে না চললে আপনার সমস্যা হতে পারে।’

আর একজন বললেন, ‘ভাই, চাকরি মানে চাকরের কাজ। চাকরের কোন স্বাধীনতা থাকেনা। ওপরওয়ালা যা বলবে, বিনা প্রশ্নে তা মেনে চলতে হবে। সরকারি অফিসে দুটো অলিখিত রুল আছে। রুল নাম্বার ওয়ান-বস ইজ অলওয়েজ রাইট। রুল নাম্বার টু-ইফ ইউ থিংক দ্যাট বস ইজ নট রাইট, দেন প্লিজ সি রুল নাম্বার ওয়ান। চাকরি করতে চাইলে হাংকি পাংকি ছেড়ে রেগুলার হোন। না হলে কিন্তু খবর আছে।’

আর একজন সিনিয়র বড়ভাই মোস্তাইন বিল্লাহ সাহেব বললেন, ‘হেনা সাহেব, এদের কথা শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। এই ডিপার্টমেন্টে নতুন যারা আসে, তাদেরকে এরা এভাবেই ভয় দেখায়। ওপরওয়ালারা নিজেরাই অফিস ডেকোরাম মানেনা। চাকরি যখন করছেন, তখন আস্তে ধীরে সবই বুঝতে পারবেন। আপনি তরতাজা শিক্ষিত যুবক। এদের কথা শুনে ঘাবড়াবেন কেন?’

এইরকম ভয় ভীতি আর সাহসের যোগানের মধ্যে কয়েক বছর কেটে গেল। তেমন কোন বিপদ আপদের দেখা পেলাম না। তবে এ্যাকাউন্টেন্ট হওয়ার পর আমার ঘাড়ের আশেপাশে বিপদের ঘণ্টা বাজতে লাগলো। অফিসারদের টি এ, ডি এ, বিল এবং ঠিকাদারদের বিলে নানারকম অনিয়ম। বরাদ্দকৃত বাজেটের অতিরিক্ত খরচ। ভুয়া ওভারটাইম বিল। উপযুক্ত বিল ভাউচারের অভাব। বিল পাস না করে আটকে দিলে ওপরওয়ালাদের ধমক আর ঠিকাদারদের হাত কচলানো প্রলোভন। আমি কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে এ্যাজ পার রুলস এ্যান্ড রেগুলেশনস কাজ করে যেতে লাগলাম।

প্রথম ধাক্কাটা এলো বদলী অর্ডারের মাধ্যমে। আমি বদলী হয়ে চলে গেলাম নতুন কর্মস্থলে। সেখানেও কম বেশি একই অবস্থা। আমিও আপোষহীন নেত্রীদের মতো অনড়। দুই বছরের মধ্যে সাত বার বদলী হলাম। মোস্তাইন বিল্লাহ সাহেবের সাথে দেখা করে বললাম, ‘বড়ভাই, আর তো পারি না।’
বিল্লাহ সাহেব হেসে বললেন, ‘এই বয়সে পারি না বললে চলবে? হেনা সাহেব, একটা কথা মনে রাখবেন। কুকুর যখন শেয়ালকে তাড়া করে, তখন শেয়াল একাই হাঁপায়না, কুকুরও হাঁপায়।’

আমি বিল্লাহ ভাইয়ের কথায় অনুপ্রানিত হয়ে পূর্ণ উদ্যমে মাথা উঁচু করে চাকরি করে যেতে থাকলাম। এরপর শুরু হল নানারকম শো কজ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পারমিশন ছাড়া ছুটির সময় আমি স্টেশন (কর্মস্থল থেকে পাঁচ মাইল পর্যন্ত) ত্যাগ করলাম কেন? ট্রেনিং থেকে ফিরে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য আমার দুই দিন ট্রানজিট পাওয়ার কথা, আমি তিন দিন ভোগ করলাম কেন? বাড়ি থেকে ছুটির দরখাস্ত পাঠানোর নিয়ম নেই, আমি তা’ পাঠালাম কেন? দরখাস্তে ডায়রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, অথচ মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি কেন? আমাকে সিভিল সার্জেনের কাছে রেফার করা হল। চিঠি চালাচালি হতে হতে আমার ডায়রিয়া ভালো হয়ে গেল। সিভিল সার্জেন রিপোর্ট দিলেন, আমি সুস্থ। ওপরওয়ালাদের কাছে আমি মিথ্যেবাদী হয়ে গেলাম। পরদিন অফিসে গিয়ে ‘এবারকার মতো আপনাকে সতর্ক করিয়া দেওয়া হইল’ মর্মে একখানা চিঠি এবং আবার পাণ্ডব বিবর্জিত স্থানে বদলীর অর্ডার পেয়ে গেলাম। ওপরওয়ালাদের মনে কি আনন্দ আকাশে বাতাসে!

ছুটির আবেদন করলে সরাসরি নাকচ। ইনক্রিমেন্ট, টাইম স্কেল, এরিয়ার বিল ইত্যাদি পাওনার ব্যাপারে প্রশাসনিক আদেশ জারির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা। প্রমোশনের ব্যাপারে অহেতুক গড়িমসি। এ সি আর যাচ্ছে তাই। সার্ভিস বই লালে লাল। এরকম নানা অত্যাচারে আমি জর্জরিত। তবে বিল্লাহ ভাইয়ের কথা একটুও ভুল ছিলনা। ওপরওয়ালাদের কাছে আমার উপস্থিতি ছিল মূর্তিমান আতংক। যত দ্রুত সম্ভব আমাকে বিদায় করতে পারলেই তারা বাঁচে।

এভাবে পঁচিশ বছর চাকরি করার পর ২০০৬ সালে পূর্ণ পেনশন ও গ্র্যাচুইটি নিয়ে আমি স্বেচ্ছা অবসরে গেলে আমার ওপরওয়ালারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। ২০০৫ সালের শেষের দিকে আমার একটা হালকা হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল। তা নাহলে হয়তো আমার জন্য তাদেরকে আরও কিছুদিন ভুগতে হতো। এই পঁচিশ বছরে, বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমি যতবার বদলী হয়েছি তার চেয়ে বেশি বার বদলী হওয়া লোক অন্ততঃ আমার ডিপার্টমেন্টে কেউ নেই। মন্দের ভালো একজন অফিসার আমার স্বেচ্ছা অবসরের কাগজপত্র প্রসেসিংয়ের সময় বলেছিলেন, ‘হেনা সাহেব, আপনি কেন স্বেচ্ছা অবসরে যাচ্ছেন তা’ আমি জানি। ওপরওয়ালাদের সাথে একটু মানিয়ে চললে আপনাকে এত হেনস্থা হতে হতোনা। আরও ছয় সাত বছর চাকরি করতে পারতেন।’

আমার বয়স তখন পঞ্চাশ পার হয়ে গেছে। তবু পঁচিশ বছরের যুবকের মতো আমি সিনা টান করে বলেছিলাম, ‘এইসব মেরুদণ্ডহীন ওপরওয়ালাদের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাবান একজন ওপরওয়ালা আছেন। তিনিই আমার সহায়। আপনার উপদেশ আপনার নিজের পকেটেই রেখে দিন। আমার কোন প্রয়োজন নাই।’
*********************************************************************************************************************
রি-পোস্ট
ছবিঃ নেট

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আপনি কোন ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতেন?

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বাংলাদেশ ডাক বিভাগে।


ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৩

দারাশিকো বলেছেন: খুবই ভালো লাগলো আপনার এই লেখা পড়ে। আপনাকে স্যালুট।

তবে এই লড়াই সবাই বেশিদিন চালিয়ে যেতে পারে না। লড়াইয়ের কারণে যখন পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে, তখন অনেকেই হাল ছেড়ে দেয়। মুখ বুজে সহ্য করতে শুরু করে সব কিছু। অবশ্য, আপনার বিল্লাহ ভাইয়ের মত সহযোগী সবার থাকে না। আপনাদের মত মানুষ আরও অল্প কিছু বেশি হলেই সিস্টেমকে পাল্টে দেয়া যেতো।

পাল্টাবে একদিন - এই স্বপ্ন দেখি।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমিও তো এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারিনি ভাই। বড় ক্ষতির ভয়ে বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছা অবসরে যেতে হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আমার কোন ছোট খাটো ত্রুটি বিচ্যুতিকে হাইলাইট করে আমাকে বরখাস্ত করে দিলে পেনশন গ্র্যাচুইটি কিছুই পেতাম না।

ধন্যবাদ ভাই দারাশিকো।

৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমার অল্প কিছুদিনের অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশে সরকারী চাকুরীতে কাজ করলে, আপনি বাকী কর্মচারীদের শত্রু হয়ে যাবেন।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: একদম সঠিক কথা। বিশেষ করে ওপরওয়ালাদের মন জুগিয়ে চলতে না পারলে মহা বিপদ।


ধন্যবাদ ভাই চাঁদগাজী।

৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার ধারণা ছিল সরকারী চাকরী অনেক আরামের। তবে স্রোতে গা ভাসাতে পারেননি বলে মনে হয় বারবার বিপদে পরেছেন। নিজেকে কি সংখ্যালঘু মনে হতো?

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: তা তো বটেই। আক্ষরিক অর্থেই আমি ছিলাম সংখ্যালঘু। আমার অনেক কলিগ ভয়ে আমার সাথে মেলামেশাই করতো না। আমার মতো বেয়াদপের সাথে মেলামেশার কারণে যদি তাদের চাকরি নিয়ে টানাহেঁচড়া পড়ে। অবশ্য এদের কেউ কেউ আমার রিটায়ারের পরে বলতো, 'হেনা ভাই, আপনি সত্যিকারের বাঘের বাচ্চা।' হাঃ হাঃ হাঃ।

ধন্যবাদ ভাই সাড়ে চুয়াত্তর।

৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১

শাহ আজিজ বলেছেন: দুর্নীতি বাংলাদেশে মহামারী রুপে অবস্থান করছে আগে থেকেই । আমি প্রবাস থেকে এসে ৯৬ সাল হতে এই দুর্যোগের মুখোমুখি কাজ করে গেছি ১৩ সাল পর্যন্ত । বিদেশি আর স্থানীয় চীনা প্রকল্পের দেড় ডজন কাজে শ্রম দিয়েছি ভাল মুল্যে । স্থানীয় শিল্পপতিরা বেশ্যা । চাইনিজগুলা নানান বদমায়েশি করতে চায় যেমন একটা কাজকে এক মাসের জায়গায় চার মাস করলে তাদের পে বেশি হবে । কিন্তু আমিতো অসৎ হতে শিখিনি । সময় শেষ হওয়ার আগেই ছেড়েছি অনেক প্রজেক্ট । পরে অনেক বাংগালি মালিক ডেকেছে উদ্ধার করতে , যাইনি । আমাকে টাকা পরিশোধ না করার জন্য কোর্টে পর্যন্ত দাঁড়িয়েছি । অনেক গল্প ছোট এই জীবনে , আপনি আপনার গল্প বলে মনে করিয়ে দিলেন ।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সেসব গল্প লিখুন না আজিজ ভাই। বাস্তব জীবনের ঘটনাগুলো কাল্পনিক গল্পের চেয়েও আকর্ষণীয় হয়।


ধন্যবাদ শাহ আজিজ ভাই।

৬| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




ভাল লাগল আপনার চকুরী জীবনেরিছু অভিজ্ঞতার কথা শুনে।
আপনার অভিজ্ঞতর সাথে আমার নীজের অভিজ্ঞতারএকটি
অদ্ভুত মিল খুঁজে পেলাম । পরে একদিন সময় সুযোগ পেলে
খুলে বলব। প্রিয় লেখাটি প্রিয়তে তুলে রাখলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: অবশ্যই বলবেন। আমরা শুনতে চাই।


ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী।

৭| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯

একাল-সেকাল বলেছেন:
সরকারী ভুত প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানেও চুইয়ে চুইয়ে ঢুকছে বন্যার জলের মত। দেশটা সৎ লোকের বসবাস যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে আমার তেমন অভিজ্ঞতা নাই। তবে এটা তো সত্যি যে সারা দেশেই নৈতিকতা ও মূল্যবোধে ধ্বস নেমেছে।

ধন্যবাদ ভাই একাল-সেকাল।

৮| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
লেখক বলেছেন: বাংলাদেশ ডাক বিভাগে।

ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

খুবই ভালো করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগে কোন কাজ নেই। কেবল অফিসে যাওয়া আর বেতন তোলা।
আমার এক বন্ধু আছে সিলেট ডাক বিভাগের অনেক বড় কর্মকর্তা। একবার দেখি, ডাক দিবসে টিভিতে বক্তব্য রাখছিল।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আজ (৯ অক্টোবর) বিশ্ব ডাক দিবস। আমাদের সময়েও এই দিনটি আমরা পালন করেছি। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি হওয়ায় ডাক ব্যবস্থার গুরুত্ব অনেক কমে গেছে। টেলিগ্রাম অফিস তো উঠেই গেছে। টেলিফোন সার্ভিসেরও মরি মরি অবস্থা।

ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

৯| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি নগদ টাকার লেনদেন হয় এজি অফিসে। ওখানকার চেয়ার-টেবিল এমনকি দরজা-জানালাও টাকা খায়।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন। আর একটা অফিস আছে। ভুমি অফিস। ঘুষ না দিলে কোন কাজ হয় না।


ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।


১০| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:০০

শুভ_ঢাকা বলেছেন: আজকের গল্পের কল্যাণে হেনা ভাই আপনার জীবনের আরও একটা অধ্যায় জানা হল। সঠিক সময়ে (স্বেচ্ছায় অবসর) সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও একটা বিচক্ষণতা। যা জীবনকে স্বাচ্ছন্দময় করে।

আপনার ছোট গল্পের একটা ধরন হল তার পরিমিত সাইজ। প্রায় সব গল্পের মাপই কম বেশি একই রকমের। খুব বড়ও না আবার একদম ছোটও না। কখনও পড়ে মনে হয়নি আপনি কম লিখেছেন বা সংক্ষেপিত। আবার এমনও মনে হয়নি আপনি অযাচিতভাবে কোন কিছু drag করছেন। আপনার লেখার এই পরিমিতবোধ আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করে।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:০৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সেই সময় স্বেচ্ছায় অবসর না নিলে নানারকম সমস্যায় আমার পঁচিশ বছরের চাকরি জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারতো। এমনকি বিনা দোষে বা সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য চাকরি চলেও যেতে পারতো। অবসর গ্রহনের কয়েক মাস আগে আমার হার্ট এ্যাটাকও হয়েছিল। হিসাব রক্ষকের মতো জটিল কাজে ওই শরীর নিয়ে ভুল ভ্রান্তি ঘটার সমুহ সম্ভাবনা ছিল। সব দিক বিবেচনা করে আমি স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।

পরিমিতি বোধ না থাকলে লেখার মান উন্নত হয় না এবং পাঠকও বিরক্তি বোধ করে। আসলে শুধু লেখা নয়, আমার সব কাজেই পরিমিতিবোধ রক্ষা করে চলি। বিষয়টি আপনি লক্ষ্য করেছেন দেখে খুশি হলাম।

ধন্যবাদ ভাই শুভ_ঢাকা।

১১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশে কোনো চাকরীজীবি সুখে নাই। চাকরি পাওয়ার চেয়ে চাকরী টিকিয়ে রাখা বেশি কষ্টের। অফিস পলিট্রিক্স খুব খারাপ জিনিস। আজকে আমি বেকার কারন আমি আমার চাকরিটা টিকিয়ে রাখতে পারি নি। চাটুকারিতা পারলে আমি আমার চাকরি হারাতাম না।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:১৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনি কোথায় চাকরি করতেন? আপনার চাকরি টিকিয়ে রাখতে পারেননি জেনে দুঃখ পেলাম।


ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

১২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: স্যালুট আপনাকে। ভালো লোকের আল্লাহ সহায়। ডাক বিভাগের প্রধান কি যেন নাম টাকা পাচারকারি।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:১৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বর্তমানে ডাক বিভাগের ডিজির নাম এই মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে না। তবে তার এই কেলেঙ্কারির কথা শুনেছি।


ধন্যবাদ ভাই নেওয়াজ আলি।

১৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম,




নদীতে নেমেছেন, স্রোতে গা ভাসাবেন না, তা তো হয়না!!!!!!

"কুকুর যখন শেয়ালকে তাড়া করে তখন শেয়াল একাই হাঁপায় না, কুকুরও হাঁপায়।"
বিল্লাল সাহেব এই এক বাক্যে আপনার এই কাহিনীর সারমর্ম বলে দিয়েছেন।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:১৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: "কুকুর যখন শেয়ালকে তাড়া করে তখন শেয়াল একাই হাঁপায় না, কুকুরও হাঁপায়।"
বিল্লাল সাহেব এই এক বাক্যে আপনার এই কাহিনীর সারমর্ম বলে দিয়েছেন।



চমৎকার কোট করেছেন ভাই। ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ ভাই আহমেদ জী এস।

১৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমার জীবনে আমি চাকরি করেছি পনের দিন।উদ্দেশ্য ছিল তিন মাস করবো,কিন্তু পনের দিনের বেশি টিকতে পারিনি।মেট্রিক পরীক্ষার পর তিন মাস অবসর ভাবলাম কিছু একটা করি।ষ্টোর কিপারের চাকরি অস্থায়ী নিয়োগ,এক বছর পর স্থায়ী।পনের দিনেই হাঁপিয়ে উঠেছিলাম।ঐ আমার প্রথম চাকরী ঐ আমার শেষ।চাকরী সবার জন্য না।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:২১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কথাটা ঠিক। চাকরি সবার জন্য নয়।


ধন্যবাদ ভাই নুরুলইসলা০৬০৪।

১৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১০

মা.হাসান বলেছেন: বদলি হওয়াটা ভালো। পরিবারের সহযোগিতা থাকলে সমস্যা হয় না। বদলির আলাদা টিএ-ডিএ, জয়নিং টাইম মন্দ কি। লাভের মধ্যে নতুন জায়গা দেখা। পোস্টাল ডিপার্টমেন্ট নিজেদের টাকা হ্যান্ডেল করে বলে অর্থনৈতিক ভাবে অন্য অনেক ডিপার্টমেন্টের চেয়ে কিছুটা স্বাধীনতা পাওয়া যায়। দূরে বদলি হলে অবশ্য ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার কিছুটা কষ্ট হয়।

আমার প্রথম চাকরিতে বরাবর ভালো বসদের পেয়েছিলাম। তবে একটু উপরের এক কর্তা কোনো কারণে একটু নাখোশ হওয়ায় ৭ মাসের মত সময় বদলি জনিত সমস্যা হয়েছে। ঈদের দু দিন আগে ঢাকায় মিটিঙের জন্য আসতে হয়েছে, আসার পরে জানানো হয়েছে মিটিং ক্যানসেল, ঈদের পরের সপ্তাহে আসতে হবে এরকম , ঐ ডিপার্টমেন্টে সবচেয়ে দূর্গম জায়গায় বদলি, আরো কিছু অত্যাচার। বয়স কম ছিলো, একা ছিলাম, কেয়ার করি নি।

এখন শুনছি যারা আপোষহীন বলে পরিচিত তারাও আপোষ করছেন B-) । আপনার ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা পেলাম।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:৩০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপোষহীন বলে পরিচিতরা আসলে আপোষহীন নয়। শক্ত মেরুদণ্ডের মানুষ কখনো অনৈতিক কোন কিছুর সাথে আপোষ করেন না। সাহস ও নৈতিক মূল্যবোধ না থাকলে মানুষের কিছুই থাকে না। একশো বছর বেড়ালের মতো বাঁচার চেয়ে একদিন সিংহের মতো বাঁচা ভালো- এই কথাটা আমি সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি।


ধন্যবাদ ভাই মা, হাসান।

১৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:২৫

চাঙ্কু বলেছেন: প্রশাসন ক্যাডারে আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব আছে যারা প্রচন্ড সৎ আর রুলস এন্ড রেগুলেশনের ব্যাপারে আপনার মত আপোষহীন। তারাও দেখি অনর্থক হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছে। প্রশাসনের উচ্চপদের দূর্নীতিগুলোর ব্যপারে শুনলে মনে হয় বাংলাদেশের পাওয়ার বাবলের লোকগুলোর সীমাহীন টাকা আর তারা লাগাম ছাড়া ক্ষমতার মালিক!!

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:৩৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ, এটাই বাস্তব। আপনার ওই বন্ধুদেরকে বলবেন, শুধু আপোষহীন হলে চলবে না। সেই সাথে কৌশলীও হতে হবে। কোন অবস্থাতেই তারা যেন নিজেদের বিকিয়ে না দেন। আল্লাহ নিশ্চয় তাদেরকে সাহায্য করবেন।

ধন্যবাদ ভাই চাঙ্কু।

১৭| ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:০২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশে এক জন মানুষ যে দিন ক্যাডার সার্ভিসে ঢুৃকে সেই দিনই সে অন্যরকম মানুষ হয়ে যয়।
তাকে আর সাধারণ অর্থে মানুষ বলা সাজে না।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সবাই এরকম হয় না। তবে বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই আপনার এই মন্তব্য সঠিক।


ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

১৮| ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অভিভাদন ভায়া

সত্যি কর্মক্ষেত্রে সৎ থাকা এক যুদ্ধ বটে।
যাপিত জীবনে সো কল্ড সামাজিকতা যেমন একটা চাপ, অফিসে প্রলোভন এবং চাপ তাকে আরো দুর্বষহ করে তোলে বৈকি!
এর মাঝে টিকে থাকতে পারে অল্প ক'জনই।
আপনি তাদের মাঝে একজন জেনে ভাল লাগছে।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সত্যি কর্মক্ষেত্রে সৎ থাকা এক যুদ্ধ বটে।
যাপিত জীবনে সো কল্ড সামাজিকতা যেমন একটা চাপ, অফিসে প্রলোভন এবং চাপ তাকে আরো দুর্বষহ করে তোলে বৈকি!
এর মাঝে টিকে থাকতে পারে অল্প ক'জনই।

ঠিক বলেছেন। এমন পরিবেশে টিকে থাকা সত্যিই কঠিন। টিকতে না পেরেই তো আরও ছয় বছর চাকরি থাকা সত্ত্বেও স্বেচ্ছা অবসরে চলে গেছি। তবু অনৈতিকতা ও প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার করিনি।

ধন্যবাদ ভাই বিদ্রোহী ভৃগু।

১৯| ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনি কোথায় চাকরি করতেন? আপনার চাকরি টিকিয়ে রাখতে পারেননি জেনে দুঃখ পেলাম।
ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

আমি পত্রিকা অফিসে চাকরি করতাম।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:২৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ও, আচ্ছা। ধন্যবাদ।

২০| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:০৯

জাফরুল মবীন বলেছেন: সৎ ও সাহসী এবং লড়াকু মনের মানুষদের জীবন কাহিনি অনূজদের জন্য পাথেয়।এ ধরনের লেখাই সমাজের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী।আপনাকে অভিনন্দন সৎও সাহসী জীবন যাপনের জন্য এবং ধন্যবাদ লেখাটি সেয়ার করার জন্য।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:১৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ জাফরুল মবীন ভাই। ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইল।

২১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:৪৬

সোহানী বলেছেন: আসেন ভাই আসেন কোলাকুলি করি। আপনারে পাইয়া শান্তি শান্তি লাগছে। মনে করছিলাম আমি আর আমার বাবাই পৃথিবীর সবচেয়ে বেকুব শ্রেণীর প্রাণি.... এখন দেখি আপনে ও আছেন।..................হাহাহাহা

আপনি অবসর নিসেন আর আমি মুখের উপ্রে ঝাঁড়ু মাইরা কানাডা সিফট করছি। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক অনেক ভালো আছি।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:১৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: খুব ভালো করেছেন। রিটায়ারের পর আমিও খুব ভালো আছি বোন। চাকরির পাশাপাশি দুটো ব্যবসাও করতাম। রিটায়ারের পর ব্যবসা দুটোতে মনোযোগ বাড়াই। ফলে আল্লাহর রহমতে ব্যবসায় যথেষ্ট উন্নতি হয় এবং চাকরির বেতনের চাইতে অনেক বেশি আয় হতে থাকে। আমার দুই ছেলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের পর এখন দু'জনেই ভালো চাকরি করছে। দু'জনেরই বিয়ে দিয়েছি। আমার চেয়ে সুখী মানুষ আর কতজন আছে?

তাহলে বেকুব হওয়া ভালো, তাই না? হাঃ হাঃ হাঃ।

ধন্যবাদ বোন সোহানী। ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা রইল। এক বেকুবের প্রতি আর এক বেকুবের শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.