নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একে৪৭

জানি না!

একে৪৭

মনে প্রাণে মানি আমাদের পরিবর্তন দরকার। জানি এমনটা আরও লক্ষ কোটি মানুষ ভাবেন। আর সবাই ভাবেন বলেই আমরা বড্ড বিক্ষিপ্ত। তাই বিশ্বাস করি একজনই পারেন আমাদের পথ দেখাতে, বিক্ষিপ্ত আমাদের একত্রিত করতে। সেই একজন হতে না পারলেও তাকে অন্তত দেখে যেতে চাই।

একে৪৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মরন লাফ!

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩০

তখন ক্লাস সিক্স/সেভেন এ পড়ি। নদীতে গোসলে গেলে বিভিন্নভাবে পানিতে লাফিয়ে পরতাম। লাফ দেয়ার কমন বৈশিষ্ট ছিল যে যতটা দুরে গিয়ে পরা সম্ভব সেভাবে পরা। সাধারনত লাফানোর জন্য নদীর পাড়ের সেই অংশটি বেছে নেয়া হত যে অংশের কিনরা বেশ উচু।

বেশ কিছু অদভুত নামও ছিল লাফের। (ওরকম নামের কারন আসলে জানা নেই, অন্যরা বলতো, আমরাও বলতাম।)

১. ডুলাঃ দৌড়ে এসে লাফ দিয়ে দুই হাটু জরো করে দুহাত দিয়ে বেধে ফেলা। ওই লাফের ভেতরই পেছনে ঘুরার চেষ্টা থাকতো। এটা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ লাফ ছিল। জড়ো হয়ে পা এবং পশ্চাদেশে নিচে অসমান থকাতে পানির সারফেস টেনসন ভেদ করতে কোনরুপ ব্যাথা পেতে হতো না।

২. ডিগবাজি/পল্টিঃ এটা অনেকটা মাটিতে ডিগবাজি খাওয়ার মতো, যেখানে শুন্যেই ঘুরতে হতো। এটা করতে গিয়ে অনেক সময়ই পানিতে বুক বা পিঠ সমান্তরালে পরতো, এত বেশি এরিয়ার পানির সারফেস টেনশন ভাঙতে গিয়ে প্রচন্ড ব্যথা পাওয়ার ঘটনা ঘটতো, পেট/বুক/পিঠ কখনো কখনো লাল হয়ে যেত। কখনো কখনো দম আটকে যেত।
(যারা লাফাতে চান তাদের জন্য টিপসঃ নিরাপদ লাফের জন্য এমনভাবে লাফ দিন, যেন পানির সংস্পর্শে যাওয়ার মুহুর্তে আপনার শরীরের সবচাইতে কম অংশ সংযুক্ত হয় এবং পর্যায়কৃমে বৃদ্ধি পায়। হঠাৎ করে বেশি পরিমান পানির সারফেস টেনশন ভাঙার জন্য বেশি বাধার সম্মুখিন হবেন, এতে প্রচন্ড ব্যথা লাগতে পারে, যেমন রক্ত জমাট বাঁধা, এমনকি কখনো কখনো স্কিন ফেটেও যেতে পারে)

৩. শাফাল (Shovel যা মাটি খুরতে ব্যাবহার হয়)-ঃ এতে দৌড়ে গিয়ে একদম সটান হয়ে পানিতে পরতে হয়। এ ধরনের লাফে মাধ্যমে পানির বেশ গভিরে পৌছে যেতাম। কখনো কখনো উপরে উঠতে কষ্ট হয়ে যেতো নিশ্বাস শেষ হয়ে আসার কারনে।

৪. সুইঃ সুইমিং পুলে সাতারুরা হাত দুটো সামনে রেখে যেভাবে সুচালো ভঙ্গিতে পানিতে পরে। মাঝে মাঝে হাত ছড়িয়ে কিংবা শরীরের সাথে সমানভাবে মিলিয়ে রেখেও লাফ দেয়া হত। তবে সাতারুদের চেয়ে আমাদের গতিটা আরও বেশি থাকতো কারন আমরা সব লাফই দূর থেকে দৌড়ে এসে দিতাম। আপাত দৃষ্টিতে এই লাফে ভয়ের তেমন কিছু নেই, তবে বিপত্তিটা তখন বাধতো যদি পানির গভীরতা থাকতো কম। জীবনে অন্তত ২বার এমন বিপত্তিতে পরেছিলাম।

এই ৪নং এর লাফই দুইবার আমার মরন লাফ হয়ে উঠছিল!
দুবারই ছিল বর্ষা। বড় খাল যেখানে নদীতে মিশেছে, লাফালাফি সেখানেই চলত। আমরা খেলতাম নদীর পাশেই থাকা একটা উচু খোলা জমিতে। খেলার ফাঁকে ফাঁকেই গিয়ে লাফিয়ে পরতাম খালের মুখ নদীতে। যখন জোয়াড় থাকতো, খালের মুখে অনেক অনেক পানি থাকতো, তাই সমস্যা হত না। তবে ঐ ২বারই চলছিল ভাটা। আর তাতে পানি ছিল কম। আর যেহেতু আমাদেরও বয়স কম ছিল, কোন কাজই যুক্তি দিয়ে ভেবে করা হতো না।
চলছিল ভাটা, কে রাখতো তার খবর! খেলার মধ্য থেকেই কজন দৌড়ে গিয়ে লাফিয়ে পরলো, আমিও দৌড়ে গিয়ে দিলাম 'সুই লাফ'! ওভাবে লাফিয়ে পরে মাথা সরাসরি মাটিতে আঘাত হানে। মাথার আঘাত শেষে কপাল-নাক হয়ে দাঁতেরও ঘর্ষণ হয় পানির নিচের বালির তলায়, এতে দাঁত মুখ ভরে গিয়েছিল বালিতে। তার উপর মাথায় ওভাবে আঘাতের ফলে দম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সোজা হয়ে দাড়িয়ে প্রায় ৬-৭সেকেন্ড শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ ছিল।
(একবার একজন বুঝতে পেরে পিঠে ঘসছিল। অন্যবার কেউ বুঝতে পারেনি, নিজে নিজেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল।)
২য় বার ঘটার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, পানির গভীরতা পরিমাপ না করে এই লাফ আর দিবো না।

নেড়া বেলতলায় একবারই যায়, তবে আমি দুইবার গিয়েছিলাম!
:-P

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

সালাহ উদ্দিন শুভ বলেছেন: হাহাহহা, আমি বেলতলায় ২বার নয় ততোধিকবার গিয়েছিলুম :P

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:১৬

একে৪৭ বলেছেন: আতবারে আপনার মাথা বেলের চেয়েও শক্ত হয়েছে, আপনি চাইলে এখন বেলতলায় ঘুমাতেও পারেন।
:-P

২| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০

গোলাম রাব্বি রকি বলেছেন: আমিও নিজেও ভাই অনেক লাফ দিয়েছি ! আপনার ৪ নং লাফটা দিয়ে তো একজনের মাথাও ফেটে গিয়েছিল ! গা্ঙ্গের পাড় রক্ষার জন্য যে ব্লকগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল সেই ব্লকের সাথে মাথা লেগে ছেলেটার মাথা ফেটে গিয়েছিল ..

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:২০

একে৪৭ বলেছেন: আমরাতো কেবল জোয়ার ভাটার খবর রাখতাম না, ওই বেটা ব্লকের খবর রাখবে না!
ওদের মাথা না ফাটলেও ফাটিয়ে দেয় উচিৎ।
:-P

৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:০০

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: লেখার সাথে কয়েকটা ছবি দিলে ফাটাফাটি হত।
সতর্কতা: লুঙ্গি পরে লাফ দেবার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।(নেড়া):P

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:২২

একে৪৭ বলেছেন: কি যে বলেন!
কতবার গোসল করতাম, প‌্যান্ট/লুঙ্গি ভেজানো যেত নাকি!
বাকিটা বুঝে নেন।
:-P :-P :-P :-P :-P

৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:২৫

আখেনাটেন বলেছেন: হা হা হা। আমার নিজেরও ছোটখাট মরণ লাফ দেওয়ার অভিজ্ঞতা ঝুলিতে আছে। :P

চমৎকার লেখা লিখে পিচ্চিকালের সেই স্মৃতিগুলোকে চাগিয়ে তুললেন।

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৩

একে৪৭ বলেছেন: এখনও আমরা মরন লাফ লাফাই, তবে নদীতে না, বাসে উঠতে/নামতে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

মুফীদ হাসান বলেছেন: আমার লাফ এর নাম ছিলো উল্টা পল্টি :-D ধন্যবাদ! পুরোনো দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

একে৪৭ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। :-)

৬| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু সময়ের জন্য ছোটবেলায় ফিরে গেলাম।

১২ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০

একে৪৭ বলেছেন: কল্পনায় ফেরা ছাড়া আর উপায় কি!
সেই দিনগুলি আর কখনোই পাবেন না।
-মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯

রুদ্র নাহিদ বলেছেন: সাঁতার পারতাম না। গ্রামে গেলে দেখতাম গ্রামের লেদাবাচ্চও কি সুন্দর সাঁতার কাটছে। আমি অবশ্য ঘাটলার সিঁড়িতে কোন রকমে নেমে গোসল করতাম। এটাই আমার জন্য বিগ এচিভমেন্ট ছিল। B-)

১২ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

একে৪৭ বলেছেন: আমার ছোটবোন সাঁতার পারতো না, এমনকি ডুবও দিতে পারতো না!
হাঁটু পানিতে বসে বাটি দিয়ে মাথায় পানি ঢালতো।
আপনার অবস্থাটা কল্পনা করতে পারছি।
:-P

৮| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:৩২

এস এম ইসমাঈল বলেছেন: ও মোর দাদা! মুই কিন্তুক পানিত নাইমতে ডরাই। মোরে আর বেশি ডর লাগাই্য়েন না। কাইন্দা দিলে খবর আছে।
একে দাদা অনেক ধন্যবাদ। এতো মজার একটা পোষ্ট দেয়ার জন্য।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪১

একে৪৭ বলেছেন: ডাঙ্গার মানুষ পানিকে ডরাইলে সমুদ্র পাড়ি দিত কি করে?
পরে হাড় ভাঙ্গবে এই ডরে উপরে না উঠলে উড়ার সপ্ন দেখতো কি করে?
এত বেশি ডরাইলে হবে কি করে?

এত ডারাইয়েন না।
পানিকে ভয় পান, তাইলে মনে হয় সাঁতার জানেন না। অতি প্রয়োজনীয় ও মজার জিনিস, উৎকৃষ্ট মানের ব্যায়াম, না জেনে থাকলে শিখে নিন।

আপনাকেও ধন্যবাদ।
:)

৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:০৯

এস এম ইসমাঈল বলেছেন: একে দাদা, সাঁতার নিয়ে আমার কিছু গল্প আছে। আমি বড় হয়েছি শহুরে পরিবেশে। তাই সাঁতার আর কাদামাটিকে আমার যতো ভয়। মুক্তি যুদ্ধের সময়ে প্রায় বছর খানেক গ্রামে ছিলাম।বয়স তখন ১৮।সম বয়সী আর পিচ্চি দুরন্ত গ্রাম্য ছেলেদের ঠাট্টা মস্করায় একরকম বিরক্ত হয়েই শিখে ফেল্লুম সাঁতার। ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে কে কতটা পানির গভীরে ডুব দিতে পারে, আমরা দুই ভাইয়ে মিলে সেটার প্রতিযোগিতা করতাম।
আর একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়, শিক্ষা সফরে গিয়েছিলাম কক্সবাজারে। ওখানে সপ্তাহ খানেক ছিলাম আমরা ২২জন ছাত্র ছাত্রী আর দুইজন শিক্ষক। সেখান থেকে একদিন সবাই মিলে নৌপথে মহেশখালী যাচ্ছিলাম। হটাৎ দেখা দিল আকাশ জুড়ে প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। ঝড় ঝাপটা থেকে বাঁচতে মাঝি দিল নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করে।এতে নৌকা ডুবির ভয়ে ছেলে-মেয়েরা মিলে জুড়ে দিল কান্না। আমি বরাবরের শান্ত ও চুপচাপ। দেখতে একটু রোগা পটকা হলেও আমার সাহসের লেবেলটা ছিল অতিমাত্রায় হাই। প্রায় পনের বিশ মিনিট পর শান্ত হয়ে গেল ঝড়-ঝাপটা। নিরাপদে পৌঁছে গেলাম মহেশখালী দ্বীপে।
আর একবার আমার শ্বশুর বাড়ীর পারিবারিক প্রোগ্রামে সবাই মিলে যাচ্ছিলাম কর্ণফুলী নদী পার হয়ে ডাঙ্গার চরে। সেখানে রয়েছে উনাদের একটা বিশাল খামার বাড়ী।কর্ণফুলী নদীতে তখন হটাৎ করে শুরু হল বেশ জোরে জোরে ঢেউ।ঢেউয়ের ঠেলায় বারবার দুলে উঠছিল আমাদের মহাজনী নৌকা। এতে ভয় পেয়ে ওপারে যাবার আগেই ক্ষান্ত দিলেন আমার ছোট ভায়েরা। আর মায়ের ধমক খেয়ে প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা, আমার সবেধন নীলমনি বউটার। কারন তিনি ও সাঁতার জানতেন না। হা হা হা।
কক্সবাজার- কনকর্ডের ওয়াটার কিংডমে বা বিদেশে গেলেই আমার দুই নাতি সুইমিং পুলে নেমে পড়তো, টিউব হাতে। ওরা এখন বেশ ভালো সাঁতার শিখেছে। আমি, আমার নীলমনি আর বউমা উপরে বসে বসে দেখতাম, আর হাসতাম তাদের কান্ড দেখে। হাহা হাআহ।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:১৯

একে৪৭ বলেছেন: (দু:খিত, সামু'র নটিফিকেশন খুব একটা ইফেক্টিভ না, তাই আপনার এই মন্তব্য এতদিন আমার চোখে পরেনি)।

অনেক মজার।

আপনারতো দেখি পানি নিয়ে অনেক গল্প আছে!
সময় করে একদিন লিখে ফেলেন, পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.