![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনে প্রাণে মানি আমাদের পরিবর্তন দরকার। জানি এমনটা আরও লক্ষ কোটি মানুষ ভাবেন। আর সবাই ভাবেন বলেই আমরা বড্ড বিক্ষিপ্ত। তাই বিশ্বাস করি একজনই পারেন আমাদের পথ দেখাতে, বিক্ষিপ্ত আমাদের একত্রিত করতে। সেই একজন হতে না পারলেও তাকে অন্তত দেখে যেতে চাই।
অবশেষে করোনা ছুঁয়েই দিলো।
সম্ভবত ধিরে ধিরে সবাইকেই ছুঁয়েছে কিংবা ছুঁবে।
কেউ বুঝেছে, কেউবা বুঝেনি।
কেউ মরেছে, কেউ ধুকেছে, কেউ কেউ বুঝতেও পারছে না!
এক এক জনের এক এক রকম।
একই ঘরে আমরা দুজনও ছিলাম দুরকম।
বউয়ের পেশাগত (ডাক্তারি) দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জ্বর বা হাঁচি কাশি এলেই সন্দেহ বাড়তো।
১৫ই সেপ্টেম্বর বউয়ের হালকা জ্বর দেখা দেয়।
ডাক্তার হলেও তিনি যথেষ্ট ভীতু।
যদিও এটাকে উনি ভীতি মানেন না, তিনি বলেন সতর্কতা।
তবে পঁচানোর সুযোগ আমি হাতছাড়া করি না, আমি ওনাকে ভীতুর ডিমই বলি।
তিনি যথারীতি পরীক্ষা করাতে চাইলেন।
পরীক্ষা না করিয়ে তিনি ডিউটিতে জয়েন করবেন না।
আমিও ভাবলাম কথা যথেষ্ট যৌক্তিক, পরীক্ষা করা উচিৎ।
১৮ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে মিটফোর্ডে পরীক্ষা করানোর সিন্ধান্ত নেই।
মনে ভয় ছিলো কত লম্বা লাইন যেন হয়!
পিজিতে স্যাম্পল দিতে ৪ঘন্টা লেগেছিলো, এখানেতো তার চেয়ে কম লাগার কারন নাই!
সাধরানত সকালে নাস্তা বাদ দিয়ে ঘুমানোকেই বেশি প্রিফার করা বদ অভ্যাসে বউয়ের ঝাড়ি খাওয়া আমি নাস্তা আছে কি না জানতে চাইলাম।
বউ যথেষ্টই অবাক! আমি নাস্তা চাইছি?!: সূর্য আজ কোনদিকে উঠলোগো!???
-না মানে, কয় ঘন্টা দাড়িয়ে থাকা লাগে! শরীরে একটু শক্তি করে নিতাম আর কি!
১০টার দিকে মিটফোর্ড হাজির হই।
১০টাকার টিকিট কাটি কোন ভীড় ছাড়াই।
কাউন্টারের বাইরে কেবল আমি আর আমার বউই ছিলাম।
অবাক হলাম এতো সহজে টিকিট পেয়ে যাওয়ায়!
তবে সূর্য দেখে খুব বেশি খুশি হলাম না, আড়ালে হয়তো আধার হাঁসছে!
লাইন হয়তো পরের কাউন্টারে আছে!
কিন্তু সেখানেও আশানুরুপ লাইন হলোনা।
২ খানা ফর্ম নিয়ে একটু দূরে খালি টেবিলে বসে বউ ফর্ম পূরণ করতে বসলো।
দুইটা ফর্মই বউ পূরন করলো।
প্রাথমিকের পর জীবনে প্রথমবার কেউ আমার ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছে দেখে আবেগে চোখ ভিজে আসছিলো!
বিয়ে করার কিছু উপকারিতার মধ্যে অন্যতম একটা উপকার প্রত্যক্ষ্য করছিলাম।
একইভাবে পরের কাউনন্টারে দু-তিন জনের ভিড় ঠেলে দুজনের ২০০ টাকা জমা দিলাম।
তারপর পরের কাউন্টারে স্যাম্পল দিতে গেলাম যেখানে আগে থেকে ১০-১৫ জন স্যাম্পল দিতে অপেক্ষমান ছিলো।
স্যাম্পল কালেক্টরের মুখে নিজের নামখানি শুনতে পেয়ে চেয়ারে গিয়ে বসলাম।
আগের স্যাম্পলগুলি নিতে উনি কি রকম পজিশন আশা করেন তা পর্যবেক্ষন করে চেয়ারে গিয়ে ঠিক ওভাবেই বসে পরলাম।
উনি এলেন, এবং বিনা বাক্যে আমার স্যাম্পল নিলেন।
আমি ভাললাম-উনি হয়তো ভাবছেন: এমনই যদি সবাই হতো!
নিজেকে নিয়ে মনে মনে গর্ব করতে করতে বাসায় চলে এলাম।
পরদিন সকালে ম্যাসেজ এলো- আমি ন্যাগেটিভ, কিন্তু আমার বউ পজেটিভ।
মনের ভেতরে পাশে থাকা বউকে দেকে টম এন্ড জ্যারি’র মতো আতকে উঠলেও আমি তার হাত ধরলাম।
ওনার চোখ ছলছল করছে।
আমি কাছে টানতেই বললেন: দূরে সরো।
আমি আরও কাছে টেনে বললাম: পজেটিভতো তুমি এখনই হওনি, আমার কিছু হবার হলে গত কয়েকদিনে হয়ে গেছে, সুতরাং এমনটা করার দরকার নাই।
বউ বললেন: অবশ্যই আছে, ভলিউম এক থাকে না, দূরেই থাকো।
আমি জানি দুজন পজেটিভ হলেও দূরে থাকা উচিৎ, আমার পজেটিভ এবং বউয়ের নেগেটিভ হলে আমি অবশ্যই যে কোন মূল্যে তাকে দূরে সরিয়ে দিতাম।
কিন্তু এই অবস্থায় আমি তার কাছ থেকে দূরে সরতে পারছি না।
নিজের পুরুষালি বৈশিষ্টের পরিপন্থি মনে হচ্ছিলো, মনে হালকা ভয় থাকলেও আমি তাকে পাত্তা দিচ্ছিলাম না।
২দিন পর অর্থাৎ সোমবার সকাল থেকে হলকা জ্বর অনুভব করলাম।
শুনেছিলাম সাধারনত মাসল এব জয়েন্ট পেইন হয়, কিন্তু আমার করছিলো চামড়ার উপরিভাগে ব্যাথা।
অনেকটা জ্বর জ্বর ভাব হলে যা হয়।
পরের শুক্রবার আবার স্যাম্পল দিয়ে এসে দুপুরে খেতে বসলাম।
বউ মাছ রান্না করেছে (বুয়াকে বউয়ের জ্বর অনুভুত হওয়া থেকেই ছুটি দেয়া হয়েছিলো)।
শশুরবাড়ি থেকে পাঠানো মাছ।
দেশী মাছ হিসেবে যতটা স্বাধ গন্ধ আশা করেছিলাম, তার কিছুই নেই।
কিন্তু এ কথাতো বলা যায়না!
একেতো বউয়ের রান্না, তার উপর শশুরবাড়ি থেকে পাঠানো মাছ!
মিথ্যা প্রশংসা করতে না পারা আমি চুপচাপই সবটা খেয়ে নিলাম।
রাতে আবারও খেতে বসে সেই মাছ!
বউয়ের কাছে বায়না ধরলাম: ডিম ভাজা খেতে ইচ্ছে করছে!
বউ থাকার আরেকটা উপকার হিসেবে চুলোর কাছে না গিয়েও ডিম ভাজা টেবিলে পেলাম।
যাই হোক, ডিম ভাজাটাও মজা হয়নি।
জ্বরে বুঝি বউটা রান্না ভুলে গেছে।
চুপচাপ খেয়ে চলেছি।
বাজারে ভেজাল নিয়ে গল্প করতে করতে একটা চান্স চলে এলো।
বললাম: এই যে দেখো মাছ, কদিন আগেও শুনেইছি মানুষ দেশী মাছ, দেশী মুরগী এসবের কথা বলতো। কি দিনকাল এলো এখন দেশী মাছেও আগের মতো গন্ধ নাই।
নিজের মুখে গন্ধ নাই কথাটা বের হতেই মনে অন্য কিছু এলো!
পাশে থাকা টোস্ট বিস্কুটের জার খুলে নাক পুরোটা ঢুকিয়ে দিলাম!
একি! কোন গন্ধই নাই!
পাশে আচাড়ের জার, তাতেও নাই!
সামনে থাকাল লেবুটাতেও নাই! কচলায়ে দিলাম তাও কিচ্ছু না!
নাক আমর পুরো পরিষ্কার, কিন্তু প্রতিদিন কাপড়ে স্প্রে করা পারফিউমটাও একদমই গন্ধবিহীন!!!
আর বুঝতে বাকি রইলোনা সমস্যাটা দেশী মাছা বা বউয়ের রান্নায় ছিলোনা, ছিলো আমার ভেতরে।
বিকেলে বউ বললো: কতদিন ময়লা ওয়ালাকে ময়লা দেয়া হয়না, ময়লার পাত্রটাতে পোকা হয়ে গেছে, রান্নাঘরে গন্ধে ঢোকা যায়না।
আমি গিয়ে ময়লার ঢাকনা খুললাম, কাছে বসে পোকা পর্যবেক্ষন করলাম, কিন্তু কোন গন্ধ নাই।
ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিলাম এই আশায় যাতে অন্তত পোকাগুলো বাইরে না চলে আসে।
এমনকি টয়লেটে গিয়ে মাঝে মাঝে গন্ধে অজ্ঞান হবার যোগার হলেও এখন আর সেরকম কোন বালাই নাই!
দুনিয়াটা বড়ই ফ্রেশ মনে হচ্ছিলো। চরমতম দুর্গন্ধময় যায়গাতেও বুক ভরে নি:শ্বাস নিতে পারছিলাম।
পরদিন ম্যাসেজ এলো: দুজনই পজেটিভ।
[সবাই সতর্ক ও নিরাপদ দূরত্ব নিয়ে থাকবেন। অন্যের কিছু হয়নি বলে আমারও হবে না, এমনটা ভাবার কারন নাই। তাছাড়া গতকাল হয়নি তাই আগমীকালও হবে না, এমনটাও ভাবতে যাবেন না।]
----------------------
সন্মানিত পাঠকের কিছু প্রশ্ন জাগতে পারে মনে, তার আগাম কিছু উত্তর দিয়ে দিচ্ছি।
এখন ঠিক আছেনতো?
: জ্বি, আমি পুরোপুরি ঠিক আছি। মোট ৫বার টেস্ট করিয়েছিলাম, কেবলমাত্র ২য় টেস্ট ছাড়া বাকি সবগুলি নেগেটিভ এসেছে। আর আমার ওয়াফের মোট ৪বার পজেটিভ এসেছিলেন, তবে ওনার প্রথম কয়েকদিন হালকা জ্বর এর পর আর কোন উপসর্গ ছিলো না।
কোন সমস্যা হয়েছিলো?
: না, হালকা জ্বর আর হালকা স্কিন ব্যাথা ছাড়া আর কোন সমস্যা ফিল করিনি। আর জ্বর ছিলো ৪-৫দিন, স্কিন ব্যাথা ছিলো ৪-৫দিন।
গন্ধ পাচ্ছিলেন না, নাক বন্ধ ছিলো?
না, একদমই না। নাক পুরোপুরি পরিষ্কার ছিলো। এর আগেও ঠান্ডা হলে নাক বন্ধ থাকলে গন্ধ না পাবার ঘটনা ঘটেছিলো, তবে এটা একদমই ভিন্ন অনুভুতি।
কোন ঔষধ খেয়েছিলেন?
: যখন জ্বর ছিলো, তখন মোট ৪টা প্যারাসিটামল খেয়েছিলাম। আর বউয়ের পরামর্শে Zimax এর ৩টা (মিনিমাম কোর্স) খেয়েছিলাম, আর Rivarox ১০/১৫টা।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪০
একে৪৭ বলেছেন: লিখায় অভিজ্ঞতা কম।
সামু'ই প্রথম এবং একমাত্র ব্লগ যেখানে কিছু লিখি এবং পড়ি।
ভালো করার চেষ্টা করছি।
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭
সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: সাবধান থাকার চেষ্টা করি, মাক্স পরি, কিছুক্ষন পরপর স্যানিটাইজার/ সাবান দিয়ে হাত ধুই, বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে গোসল করি, পরিধেয় কাপড় ধুয়ে ফেলি। বাকিটা উপর ওয়ালার হাতে।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৪
একে৪৭ বলেছেন: আপনার এবং সকলের এই চেষ্টা সফল থাকুক, সবাই নিরাপদ থাকুক।
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া সাহস পেলাম। করোনাকে নো ভয়.....
২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৬
একে৪৭ বলেছেন: না, একটু ভয় করুন।
সবার সমস্যা/লস একই রকমের হয়না।
কে জানে কে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে!
তবে আক্রান্ত হয়ে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে স্বাভাবিক থাকাই মঙ্গল।
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০১
রাজীব নুর বলেছেন: করোনা কে হাতের কাছে পেলে ঝাড়ু দিয়ে মারতাম।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৮
একে৪৭ বলেছেন: সেই আশা করাও পাপ!
হাতের কাছে তার উপস্থিতি ভালো হবে বলে মনে হয়না।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্লগারের করোনা, তাই চিন্তিত হয়ে পড়েছি; আপনারা ভালো হয়েছেন জেনে খুশী হলাম। লেখা অকারণে লম্বা করেছেন, লেখার ষ্টাইলও ভালো নয়।