নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

A J Khan Bablu

বাস্তবের সাথে ভার্চুয়াল আমি অনেক ক্ষেত্রেই অমিল। তাই কখনো ভুলেও ভার্চুয়াল জগতের এই আমাকে বাস্তবের সাথে মিলাতে বা তুলনা করতে যাবেন না। ধন্যবাদ।

A J Khan Bablu › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাফি ও নাফিজা

১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯

পর্বঃ ০১

ছেলেটা স্কুলজীবন শেষ করে সবে মাত্র কলেজে ভর্তি হল। কলেজের প্রথম দিন আজ। ক্লাসে সবার পরিচয় জানতে জানতে স্যার একটা একটা করে সবাইকে প্রশ্নও করে যাচ্ছে। একদিকে সবার সাথে সবাই পরিচিত হয়ে যাচ্ছে আবার স্যারও জ্বালাই করে নিচ্ছে কে কেমন মানের স্টুডেন্ট। তো স্যার যখন নাফিজা নামের মেয়েটাকে যে প্রশ্ন করলো, নাফিজা তার উত্তর দিতে পারছিলনা। আর ঠিক তখনি পাশের ব্যাঞ্চে বসা রাফি বলে বসলো, এটার আর কি এমন প্রশ্ন তবুও পারছেনা। ও বুঝছি, সুন্দরি তো সাজগোছ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ কথা শুনার পর পুরো ক্লাস হি হি করে হেসে উঠলো। সেদিন নাফিজা অনেক লজ্জা পেয়েছিল। আর মনেমনে রাফিকে ইচ্ছেমত গালি দিতে গিয়েও গালি দিলনা। ভাবল, গালি দিলে তার প্রতিশোধের আগ্রহ কমে যাবে। তাই ভাবতে লাগলো কিভাবে রাফিকেও সবার সামনে হাসির পাত্র বানানো যায়। এইতো গেল নাফিজা ও রাফিদের কলেজ লাইফের প্রথম দিন। তবে আর যাইহোক প্রথম দিনের তারা দুজন ক্লাসে ভালই পরিচিত হয়ে গেল।

পাঠক বুঝতেই পারছেন, আমি আজ কাদের নিয়ে গল্প লিখতে যাচ্ছি। যেহেতু ক্লাসে এতো এতো ছাত্রছাত্রী থাকতে এই দুইটা নাম উঠে আসলো, সো তাদের নিয়েই সামনে এগিয়ে যাওয়া যাক।

তারপর থেকে নাফিজা যখনি রাফির সামনে পড়ে যায়, মুখ কালো করে পাস কাটিয়ে চলে যায়। যদিও রাফি কয়েকবার ক্ষমা চাওয়ার চান্স খুঁজেছে, কিন্তু নাফিজা কিছুতেই তাকে পাত্তা দিচ্ছিল না। আর দিবেই বা কেন! নাফিজার ক্ষোভ তো এখনো শেষ হয়ে যায়নি। যেহেতু তারা ব্যবসায় শিক্ষার স্টুডেন্টস ছিল, আর রাফি স্কুলে ছিল বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট না করার কারনে তাকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হতে হয়েছে। তাই এটাই ছিল রাফির সবচেয়ে দুর্বল পয়েন্ট। নাফিজা প্রথম দিন সবার কাছে লজ্জিত হবার পর স্যার কাকে কি জিজ্ঞেস করেছিল সেদিকে আর খেয়াল করেনি। এখন নাফিজার কিছু ভাল বান্ধবী জুটেছে। আজ নাফিজা তার এক বান্ধবীর কাছে রাফির প্রতি ক্ষোভ মিটাবে এই বিষয়টা শেয়ার করতেই, তার বান্ধবী রাফির দুর্বল পয়েন্ট বলে দিল। আর নাফিজা তো ইয়া খুশি।

হিসাববিজ্ঞান ক্লাসে স্যার বোর্ডে একটা খতিয়ান করলেন। তো ক্লাসে কে কেমন বুঝেছে স্যার তা পরীক্ষা করার জন্য কয়েকজনকে প্রশ্ন করতেছিলেন। স্যার জানতেন রাফি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিল। তাই রাফিকেও প্রশ্ন করা থেকে রেহাই দেননি। রাফিকে তিনি সবচেয়ে সহজ প্রশ্নটাই করেছেন। তাহলো, বোর্ডের খতিয়ানটা কোন পদ্ধতিতে করা হয়েছে। যদিও খুব সহজ প্রশ্ন ছিল। যেহেতু রাফি এসব কিছুই বুঝেনা তাই হা করেই দাঁড়িয়ে আছে। যদিও স্যার আগের দিন বলেছিল, আজ খতিয়ান করাবে।

নাফিজা ভাবছে, এইতো আমার সুযোগ। তাই রাফির দিকে তাকিয়ে নাফিজা এখনি মুখ ভেঙ্গিয়ে কিছু বলতে যাবে। কিন্তু সে তা না করে রাফিকে চোখে ইশারা করছে নিচে দেখার জন্য। আর রাফির সামনে হিসাববিজ্ঞান বই খোলা ছিল। রাফি ভাবলো নাফিজা তাকে বই দেখতে বলছে। যেহেতু নাফিজা এতো দিন তাকে পাত্তা দিত না। তাই রাফি ভাব ধরে মাথা নেড়ে বুঝাচ্ছে সে বই দেখে উত্তর বলবেনা। যদিও রাফি কয়েকবার বই দেখেও বুঝতে পারেনি স্যার আসলে তার কাছে কি জানতে চাচ্ছে। রাফি উত্তর দিতে পারছিলনা, তাই স্যার তাকে দাঁড় করিয়ে অন্য আরেকজনকে অন্য প্রশ্ন করে যাচ্ছেন। কিন্তু নাফিজা নাছোড়বান্দার মতন ইশারা করেই যাচ্ছে নিচে তাকানোর জন্য। এক পর্যায়ে রাফি বিরক্ত হয়ে উচ্চস্বরে বলেই বসলো, না! আমি বই দেখে চোরের মতন উত্তর দিতে পারবোনা। এই কথা শুনা মাত্রই পুরো ক্লাস থ খেয়ে গেল এবং নাফিজাতো আরো বেশি। স্যার কাছে গিয়ে রাফিকে যখনি জিজ্ঞেস করতে যাবে, যে কি হয়েছে? তখনি স্যার মুচকি হেসে উঠলেন। আর স্যার মুচকি হাসি দেখে রাফি এবার নিচে তাকিয়ে দেখে তার প্যান্টের চেইন খোলা। আর তা দেখা মাত্রই পুরো ক্লাস হি হি হে হে করে হেসে উঠল। আর ততক্ষণে রাফি লজ্জায় মাথা মাটিতে লুকিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে, যদিও তা চাইলেও সম্ভব না।

এর পরের দুদিন রাফি আর কলেজেই আসেনি। আর রাফি দুদিন কলেজে না আসায় নাফিজারও খারাপ লাগতে শুরু করলো। নিজেকে অপরাধী অপরাধী মনে হতে লাগল। নাফিজা এটাও ভাবছে, আমিতো তাকে লজ্জায় পেলতে চাইনি। লজ্জা থেকে বাঁচানোর জন্যই তো। ইস! কি একটা বিশ্রী ঘটনাই না ঘটে গেল। নাফিজার একবার মনেহয় তারই দোষ আবার মনেহয় না রাফি নিজেই নিজেকে অপমানিত করেছে। আমার কথামত আগে তাকালে তো আর এমনটা হতো না। আবার এটাও ভাবছে, রাফি আমার কথায় তাকাবেই বা কেন। সেতো ভেবেছিল আমি তাকে সবার কাছে লজ্জা দেয়ার সুযোগ খুজতেছিলাম।

তারপর এক সপ্তাহ চলে গেল রাফি আর কলেজেই আসেনি। এক সপ্তাহ চলে গেলও রাফির আর খবর নেই। ওদিক দিয়ে রাফি ইচ্ছে করেই এতোদিন কলেজে আসেনি। পরে কলেজের হিসাববিজ্ঞান স্যার ও তার বন্ধুরা মিলে রাফির বাসায় যায়। এবং পরদিন থেকে রাফি আবার কলেজে আসা শুরু করে। কিন্তু যখনি নাফিজার সামনে পরে তখনি তার সেই ঘটনা মনে পড়ে যায়। এবং নিজেকে খুব ছোট মনে করে এই ভেবে যে, নাফিজা তো আমার উপকারই করতে চেয়েছিল। আর আমি কিনা। ইস! আর পারেনা, রাফি একদম মাথা মাটিতে পুতে ফেলতে ইচ্ছে করে। কয়েকদিন গেলে রাফির কাছে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। আর ঐদিকে রাফির প্রতি নাফিজার আবেগ বাড়তেই থাকে।

অতঃপর রাফি নাফিজা একদিন মুখোমুখি হয়ে যায়। রাফিই আগে ডাক দেয়। নাফিজাও তার ডাকে সাড়া দিয়ে কাছে যায়। কিন্তু দুজনই দুজনকে লজ্জা পাচ্ছে। রাফি লজ্জা পাচ্ছে তার অতীত ভেবে অন্যদিকে নাফিজা লজ্জা পাচ্ছে তার আবেগ থেকে। রাফি নাফিজাকে সরি বলে, সাথেসাথে আবার ধন্যবাদও বলে। নাফিজাও বলে, আসলে সবকিছু মিলিয়ে আমিও দুঃখিত।

এভাবেই তাদের কথা শুরু...দেখিনা শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
(চলবে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯

আজিজার বলেছেন: দেখিনা শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:২৯

A J Khan Bablu বলেছেন: গল্পটা কিন্তু ঠিকি শেষ করেছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত এখানে শেয়ার করা হয়নি।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫০

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:




আপনার আরও পড়া উচিত

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫২

A J Khan Bablu বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। কিন্তু এই গল্পটা তো আমি ২০১৫ সালে লিখেছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.