নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আজবছেলে

আমি সত্যিই আজব ছেলে

আজবছেলে › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কলেজ জীবন যেরকম আশা করেছিলাম, সেটা ঠিক সে রকম হল না ! [ব্যাকবেঞ্চার vs ফ্রন্টবেঞ্চার: অধ্যায়-৩]

১৮ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:০৩





আগের পর্ব



আপি টেবিলের সামনে এসে মুখ বেকিয়ে , “আজকেও সবজি!”



“কেন, কোন সমস্যা নাকি ?” জিজ্ঞেশ করলাম।



“ভাল লাগে না খেতে।”



এই বলে বসে পড়ল। অল্প কয়েকটা ভাত আর এক টেবিল চামচ সবজি প্লেটে নিয়ে নিল।



আমি ভ্রু কুচকে সেদিকে তাকালাম। আমার এই বোন সবজি জিনিশটা পছন্দ করে না। তার জন্য দরকার মাংস। তাও আবার মুরগী। আমিতো প্রতিদিন আর মাংস রান্না করতে পারি না। আর সবজি আমার খুবই পছন্দ। সবজিকে ভালভাবে রান্না করতে পারলে এটা যে কোন রান্নার পদকে শুয়ে দিতে পারে। তবে আমি জীবনে খুব কম লোককেই মানে মহিলাকেই দেখছি সবজি তরকারি ভালভাবে রান্না করতে পারে।



খুলনায়, আমাদের পাশের বাসার মহিলার কথা ধরা যাক, সেই মহিলাকে আমি দেখতেই পারিনা কিন্তু তার সবজি একবার যে খাবে তার কাছে রান্না করা বিরিয়ানী এত ভাল লাগবে না।



“ডাল নিবি না ?”



“না নিব না ।” এই বলে অল্প একটু সবজি নিয়ে এক লোকমা ভাত নিজের মুখে তুলে নিল।



ডাল আমার ফেভারিট, এটা ছাড়া আমার ভাতই হজম হয় না, আর আপি এটাকে ছোট করে দেখে । আসলেই সে মাংসখোড়। কিছু বললাম না, নিজের মত করে খেতে শুরু করলাম।



আপি আমাকে বলে উঠল, “কিরে এমন ঝিম মেরে গেছিস কেন ?”



“কই ঝিম মেরে আছি ।”



“হুম, তুই ঝিম মেরে আছিস, এবং সেটা কয়েকদিন ধরেই। কিছু হয়েছে নাকি? নাকি কেউ পেদিয়েছে ।”



“আরে না।”



“তাহলে।”



ধ্যাত, খাওয়ার সময় এত কথা কিসের ? এটা বলতে চাইলেও আমি বললাম না। এক লোকমা ভাত মুখ তুলে নিলাম। তারপর ডালে বাটিটা নিয়ে সেখান থেকে কিছু পরিমান ডাল প্লেটে নিলাম। আজকে রাতে বেশি কিছু রান্না করি নাই। সবজি আর ডাল।



“লায়লা বলল তুই নাকি কলেজে কোন এক মেয়ের সাথে সাথে ঝগড়া করেছিস।”



আচ্ছা! আপি তাহলে লায়লা আপুর মাধ্যমে সব জেনে গেছে। আসলেই এই দুই জুটি খুবই বিপদজনক। এই দুই জুটি স্কুল কলেজ ভার্সিটি সব জায়গায় দাওইয়ে বেড়িয়েছে । আপি চাকরি করার কারনে কিছুটা নেতিয়ে গেছে কিন্তু লায়লা আপু এখনো দমে নাই। তবে মনে হয় খবর পেতে আপির একটু দেরি হয়েছে। কারন তিনদিনের মত হয়ে গেছে সুমনার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। আর লায়লা আপুও এক চীজ তার কেন বলার দরকার ছিল যে আমি একটা মেয়ের সাথে কথা কাটাকাটি করেছি।



হ্যা কথা কাটাকাটি, অন্য সবাই ঝগড়া বললেও আমি ওটাকে কথা কাটাকাটি বলেই ধরে নিব। কিন্তু এত কিছু ব্যাখ্যা করার মত ইচ্ছা বা ধৈর্য কোনোটাই ছিল না। তাই জবাব দিলাম, “হুম।”



“কি কারনে ?”



“মেয়েটা ক্লাস ক্যাপ্টেন, তাই নিজের যা ইচ্ছে তাই করতে চায় ক্লাসে।”



“মানে?”



“মানে আরকি, সে চায় সবাই যেন তার কথামত চলে।”



“সবার বেলা, নাকি খালি তোর বেলাই ?”



অদ্ভুত প্রশ্ন!



“হ্যা।” একটু থেমে, “সবার বেলাই এই রকম করে মেয়েটা।”



আপি আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।



আজিব ব্যাপার আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? ভাত খাচ্ছিস ভাত খা। এত কথার কি দরকার। আমি তাড়াতাড়ি করে আমার খাবার শেষ করলাম। আপি তখনও আমার দিকে তাকিয়ে আছে, অবশ্য সে ভাতও খাচ্ছে।



আমি টেবিল থেকে উঠে গেলাম, “খাওয়া শেষ করে প্লেট রান্না ঘরে নিয়ে আসিস।”



আপি আমার দিকে তাকিয়ে, “হুম।”



আরে মা! বন্ধ কর এভাবে তাকিয়ে থাকা।



আমি রান্নাঘরের বেসিনে প্লেট আর এটো বাটিগুলি রাখলাম। আচ্ছা মেয়েটা কি আমার পিছনেই লেগেছে নাকি সে সবার বেলাই সমান। আর সে কি বোঝাতে চেয়েছে শেষের কথায়। এই তিনদিন সুমনা আমাকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলছে। এতে আমার খুশিই হবার কথা, কিন্তু কেন যেন সেই খুশিভাবটা রাখতে পারলাম না।



ক্লাসরুমে এড়িয়ে যাওয়া মানা যায়, কিন্তু ল্যাব ক্লাসে? সেখানে সে এমনভাবে থাকে যেন আমি সেখানে নাই। আজিব ব্যাপার ! আমি তাকে কি এমন কথা বললাম যে আমাকে এড়িয়ে যেতে হবে, এছাড়া এই মেয়েটিই বা কে যে আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথার কারন হয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়ে আমার এতই চিন্তা বা কেন হচ্ছে।



এর আগেতো কতই মেয়ে আমাকে এড়িয়ে গিয়েছে কই তখনতো আমার এইরকম হয় নি!



বড় করে একটা শ্বাস নিলাম, মাথা থেকে এইসব চিন্তা দূর করতে হবে।



যে প্ল্যান করে রেখেছি আমি কলেজ জীবনের জন্য সেটা আমাকে বাস্তবায়িত করতে হবে, একটা মেয়ের জন্যতো সেটা পন্ড হতে পারেনা।



“কিরে আর কতক্ষন বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবি।” আপি কথা শুনে আমার চমক ভাঙল।



“যদি ভাল না লাগে তাহলে দে আমি বাসনকোসন ধুয়ে দেই।”, এই বলে আপি আমার পাশে আসল।



আজকে এত আদর কিসের জন্য। আগে তো যদি শুনট কোন মেয়ের সাথে বেয়াদবি করেছি তখন তো আমার পিঠের ছাল রাখতে না, আজকে এত ভাল ব্যাবহার কিসের।



“না থাক আমি ধুয়ে দিচ্ছি।” এই বলে আমি প্লেট ধোয়া শুরু করলাম।



“আচ্ছা তোর কি এখানে থাকতে কষ্ট হচ্ছে?” আপি জিজ্ঞেশ করল।



অদ্ভুত প্রশ্ন! আজকে আপির হল কি?



“কেন কি হয়েছে?” আমি পালটা জিজ্ঞেশ করলাম।



“না আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তুই ঢাকায় আসায় খুশী না।”



“আরে মাত্রতো একমাস হল, ঢাকায় আসলাম। এত তাড়াতাড়ি কি সব কিছু হয়ে যাবে নাকি, আর মাত্র কলেজে ক্লাস শুরু করলাম।”



“হুম, আচ্ছা আব্বা কি বলেছে ?” আপি আবার জিজ্ঞেশ করল।



আমি জানি আপি কি বিষয়ে জিজ্ঞেশ করতে চাইছে, হেসে বললাম, “ না আব্বা সাপোর্ট দিয়েছে তোকে, অবশ্য গোপনে আমাকে বলেছে। আম্মা আর অই দুইজনের জন্য এত সাহস পায়নি।”



“আসলে আমি…”



আপির কথা শেষ হতে দিলাম না, “তুই তোর আগের ফরম্যাটে চলে যা, এত ভদ্র তোকে মানায় না। ‘রাফ এন্ড টাফ বিউট’ এইটাই তোকে মানায়।”



আপি চুপ করে রইল।



“এত চিন্তা করিস না, আমি তোর সাপোর্টে থাকব।” এই বলে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম।



এই মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়ার পর নিজেকে অনেক বড় বড় লাগছিল।



“আচ্ছা, ঐ মেয়েটা দেখতে কেমন?” হঠাৎ করাই জিজ্ঞেশ করল।



এভাবে প্রসংগ পরিবর্তন হয়ে যাওয়াতে আমি অবাক হলাম।



“কোন মেয়ে?”



“আরে যার সাথে ঝগড়া করেছিস।”



“কথা কাটা-কাটি।”



“একই কথা, তা বল, নাইলে ঘুষি- থাপ্পড় দুটোই খাবি।” হাত মুঠো করে বলল।



“সত্তর আশি দশকের নানীদের মত।”



আপি আমার কথা শুনে প্রথমে নির্বাক হয়ে গেল তারপর খিল খিল শব্দে হেসে উঠল। অনেকটা বাচ্চা মেয়েদের মত হাসি।



আমিও মুচকি হাসি দিয়ে প্লেট ধোয়া শুরু করলাম।







বেঞ্চের দিকে হেলান দিয়ে বসে বড় করে হাই তুলললাম। এই নিয়ে কয়েকবার হাই তুললাম। গতরাতে ঘুম হয়নি এটা যদি বলা হয় তাহলে সেটা হবে ভুল কথা। গতকাল রাতে ভালই ঘুম হয়েছে, কিন্তু কলেজে আসার পর আলসেমি লাগছে অনেক। পরপর তিনটে পিরিয়ড ক্লাস হয়ে গেল। এই তিনটা ক্লাসের দুটোতেই আমি ঝিমানো ছাড়া আমার আর কোন কাজ ছিল না। একটা ক্লাসে সটান সজাগ থাকতে হয়েছে, সেটা হচ্ছে আক্কাস স্যারের ক্লাস।



এই স্যারের ক্লাসে ঝিমালে আর কথা বলা লাগত না। পিটিয়ে ঘুমানোর ভুত ছাড়াতো। আমি যদিও স্যারের হাতে বেত দেখি নাই। তবে অনেকেই বলে স্যারের হাতে বেত থাকা মানে অশুভ লক্ষন! যাকে সামনে পাবে তাকে গরুর মত পেটাবে। তাহলে কিভাবে আমি এই স্যারের ক্লাসে ঝিমাই ?



পিঠের মধ্যে একটা চাপড় পরল, এর সাথে সাথে সারা পিঠে একটা জ্বলাময়ী অনুভতি। পিছনে তাকাতেই দেখলাম সজল হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে।



“কিরে মুখটা প্যাচার মত করে আছিস কেন।”



প্যাচার মত করে থাকব না যে জোরে পিঠের মধ্যে একটা চাপর পড়ল তাতে বুঝি আমাকে দাত কেলিয়ে হাসতে হবে?



“কিরে চুপ করে রইলি কেন ?”



সজলের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল না। বেঞ্চ থেকে উঠে ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে গেলাম। সজল আমার পিছু পিছু আসতে বলল, “কিরে ভাই রাগ করেছিস নাকি?”



“না, লাইব্রেরীতে যাচ্ছি।”



“ক্লাস মিস দিয়ে ?”



“হুম।”



এই বলে আমি আমার হাটার গতি বাড়িয়ে দিলাম। সজল সেখানে দাঁড়িয়ে রইল।



লাইব্রেরীতে বরাবরই মত অল্প কয়েকজন আছে। সুবিধামত একটা জায়গা দেখে বসে পড়লাম আমি। লাইবেরীর চারিদিকে তাকালাম। বিশাল না বলা গেলেও এই লাইব্রেরীর বইয়ের সংগ্রহ খারাপ না। অধিকাংশই পুরোনো বই। নতুন বইয়ের চেয়ে পুরোনো বইকে আমি এগিয়ে রাখব। কারন কি এটা মি বলতে পারব না তবে পুরোনো বই আমার কাছে ফেভারিট।



লাইব্রেরীর সব বই কাচের আলমারিতে রাখা। লাইব্রেরী ম্যাডামের কাছে গিয়ে বলতে হয় কোন বই নিব, তারপর উনি সেই বইটা আলমারি থেকে বের করে দেন।



লেভ তলস্তয়ের ‘ওয়ার এন্ড পিস’ বইটা নিয়ে পড়া শুরু করলাম। বেশীদুর মনে হয় যেতে পারি নাই। পিঠের মধ্যে একটা টোকা পড়ল।



আজিব ব্যাপার! আমার পিঠ কি কোনোরুমের দরজা নাকি ! যখন খুশি তখন টোকা মারতে হবে, কিল মারতে হবে।



পিছনে ঘুরে তাকাতেই দেখলাম রুপা দাঁড়িয়ে আছে।



“কি ব্যাপার প্যাচার মত মুখ করে আছ কেন ?”



কিছু বললাম না। আবার বইয়ের দিকে নজর দিলাম।



রুপাও ঝপ করে আমার পাশে বসে পড়ল।



আরে আজিব ব্যাপার তো ! সমস্যা কি ওর। তবে অর সাথে কথা বলার চেয়ে এড়িয়ে যাওয়াটা আমি ভাল মনে করলাম। কিন্তু মেয়ে মেয়ে ঘাঘু পাবলিক, সে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। ব্যাপারটা অস্বস্তিকর। কেউ আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে সেটা আমার সহ্য হয় না।



আমি আর এড়িয়ে যেতা পারলাম না মেয়েটাকে বললাম, “কি ব্যাপার আমার পিছু লেগেছ কেন ?”



“জরুরী কথা ছিল।”



“আমাকে ভালাবাসার অফার দিবে। ” সরাসরি বলে দিলাম।



রুপার চেহারা দেখে মনে হল তার মুখের উপর হাতুড়ির বাড়ি পড়েছে। কিন্তু সেই ভাব বেশীক্ষন রাখল না।



মুচকি হাসি দিয়ে বলল, “তোমার মত প্যাচার সাথে প্রেম করতে যায় কোন পাগলে।”



পাল্টা জবাব। বলতে গেলে রিটার্ন অব দা হাতুড়ির বাড়ি।



“যে কথায় আসছিলাম, ব্যাপার হচ্ছে সুমনাকে নিয়ে।” রুপার তার কথা চালিয়ে যেতে লাগল।



আমি ভ্রু কুচকালাম। বলতে কি চায় সে ?



“আমি চাই সুমনাকে ক্লাস ক্যাপ্টেন থেকে সরে দাড়াক।”



“তাই নাকি, কেন?”



“সে নিজের ইচ্ছামত কাজ করা শুরু করে দিয়েছে।”



আমি চুপ করে রইলাম। বইয়ের দিকে নজর।



রুপা আমার দিকে তাকিয়ে সে বলল, “তোমার কি মত ?”



“আমি মনে করি তার ক্লাস ক্যাপ্টেন থাকা উচিত। যদিও সে সব কিছু নিজের মত করে করতে চাইছে।”



আমার কথাটা মনে হয় তার কাছে ভাল লাগল না।



“তুমি কি বলতে চাও? যে মেয়ে তোমাকে এত পেইন দিচ্ছে তুমি তার সাপোর্ট দিচ্ছ।”



“যার বিয়া তার কোনো খবর নাই আর পাড়া পড়শির ঘুম নাই।” আমি বললাম



“আমার মনে এটা হবে,মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশী।”



আরে মেয়েটা দেখছি অনেক ফাস্ট। এর সাথে বুঝে শুনে কথা বলতে হবে।



“সরি, আমার কথাটাই ঠিক, এখানে আমাকে কেউ কেয়ার করছে না, তাই তোমার প্রবাদের চেয়ে আমারটা যুক্তিসঙ্গত। ”



“আচ্ছা আচ্ছা মেনে নিলাম, তবে যে কথায় ছিলাম। সুমনার ব্যাপারে কি করবে ?”



“এখানে আমার কি করার আছে?”



“আমার ধারনা তুমিই কিছু একটা বের করতে পারবে, তোমার চেহারা হাব-গোবা টাইপের হলেও, চোখটা অনেক শার্প।”



“তুমি কিভাবে বুঝলে?” আমি মুচকি হেসে জিজ্ঞেশ করলাম।



আমার মুখে হাসি দেখে সেও একটা হাসি দিল, “আমি বুঝতে পারি।”



“কচু পারো তুমি, আমি লেন্স ইউজ করি।”



আমার এই কথা শোনার পর তার চেহারা হল দেখার মত, মনে হল কেউ তার উপর অ্যাটোম বোমা মেরেছে।



“খুলে দেখাব আমি।” তার এই চেহারা দেখে আমি মজা পাচ্ছিলাম।



কিন্তু রুপাকে দেখে মনে হচ্ছে সে আমার কথা বিশ্বাস করেনি।



“আচ্ছা আমি খুলে দেখাচ্ছি।” এই বলে আমি আমার বাম চোখ থেকে লেন্স খুলে বের করলাম।



রুপার মুখ থেকে আর কোনো কথা বের হল না।



আমি মুচকি হাসি দিয়ে লেন্সটা আবার পড়ে নিলাম। তারপর বইয়ের দিকে মনোযোগ দিলাম। অন্তত আধা ঘন্টা সে আমাকে ডিস্টার্ব করবে না। এবার আমি খুশি মনে বইয়ের দিকে মনোযোগ দিতে পারলাম।



রুপা মন হয় কিছু বলার জন্য উশখুশ করছে। আমি তার দিকে পাত্তা না দেয়াই ভাল মনে করলাম। একবার লাই দিলে মাথায় উঠবে এবং পরে বাদর নাচ নাচাবে।



“তুমি কি আমাকে সাহায্য করবে কি করবে বা বল।” রুপার গলায় অধৈর্যভাব।



“…”



“একটা উত্তর দাও।”



“…”



“চুপ করে থাকলে মনে করব তুমি আমাদের দলে। ”



আমাদের দলে ! আরো ছাত্র-ছাত্রী আছে নাকি?



মেয়েটাকে যতটা চালু মনে করেছিলাম সে মনে হয় ততটা চালু নও।



“তিন পর্যন্ত গুনব।” তারপর একটু থেমে, “এক… দুই…”



“রাজী তবে আমার কথা মত চলতে হবে।”



“মানে লীডার হতে চাইছ?” আস্তে কিন্তু তীক্ষ্ণ গলায় জিজ্ঞেশ করল রুপা।



“না লীডার হবার যোগ্যতা আমার নাই, তবে আমি যেভাবে বলব ঠিক সেভাবে করতে হবে।”



রুপা চুপ করে রইল, চিন্তা করছে সব কিছু। আসলেই মেয়েটা ঘাঘু টাইপ। লাভ-লোকসান সবকিছু হিসাব করেই মাঠে নামবে সে। তবে আমার ধারনা সে সহজে রাজী হবে না আমার প্রস্তাবে। তাই আরকেটা বোম ফাটাবার চেষ্টা করলাম।



তোমার দরকার পুরো ক্লাসে সমর্থন, তিন চারজনের না।



সে আবারো হচকচিয়ে গেলা। আমার সাথে অল্প কিছুক্ষন আমার সাথে সে কথা বলছে তার মধ্য মনে হয় দুই-তিনবার থতমত খেয়ে গেছে। অন্যকোন মেয়ে হলে কবেই উঠে যেত কিন্তু রুপা যাচ্ছে না। আচ্ছা সুমনা তার কি এমন ক্ষতি করেছে যে রুপা তার পিছনে এমন ডেসপারেট হয়ে লেগেছে।



অন্যকোন মেয়ে হলে প্রশ্ন করে বসত কিন্তু সে করল না। আর আর ধাক্কাও সে হজম করে ফেলল। তার চেহারার মধ্যে দোটানা ভাব আমি লক্ষ্য করলাম।



“আমি কিছুই চাই না, আমাকে শুধু সহকারী ক্যাপ্টেন হতে দাও।”



আমার এই কথা শুনে রুপা ভ্রু কুচকাল, “সহকারী ক্যাপ্টেন ? এই পদ আছে নাকি কলেজে।”



“নাই, তবে বানাতে দোষ কোথায়।”



“সরাসরি ক্যাপ্টেন না কেন?” রুপা আবার জিজ্ঞেশ করল।



আরো প্রশ্ন কর, এটাইতো আমি চাই।



আমি হেসে ফেললাম, “কখনই করতে পারবে না, কারন ওর ভাই নির্জন আর নুশরাত ওর পিছনে আছে।”



“মাত্র দুইজন।” রুপা তাচ্ছিল্যের সাথে বলল।



“ডোন্ট আন্ডার এস্টিমেটেড দেম।” আমি বললাম, “ক্লাসে অনেক মেয়ে নির্জনের প্রতি দুর্বল, আর সে কথা নুশরাতের বেলায় আংশিক কাজ করবে, কিন্তু তর্কে ওদের সাথে পারবে না তুমি।”



রুপার চেহারার মধ্যে এক ধরনের চিন্তার ছায়া খেলে গেল। আমার কথাগুলো সে চিন্তা করছে। আমার মনে হয় সে ওদের দুজনের কথা মাথায় আনেনি। আর এটাও তার মাথায় এসেছে ক্লাসে সবাই সুমনার উপর খেপা নয়।



“তাহলে আমার কি করা উচিত ? ” রুপা আমকে জিজ্ঞেশ করল।



“এটাই, যে ক্লাসে একজন সহকারী ক্যাপ্টেন দরকার, প্রথমে নুশরাত, তারপর সুমনাকে বোঝাতে হবে।”



“জানিয়ে কি লাভ?” আবার ভ্রু কুচকে উঠল তার। আসলেই সে একটা ঘাঘু মেয়ে, “আর নুশরাতকেই বা কেন?”



“আগেই বলেছি নুশরাত অনেক সাবধানী মেয়ে, অনেক আগে কনভিন্স করতে পারলে হবে।”



“আর সুমনা কি বোকা নাকি?” বাকা স্বরে জিজ্ঞেশ করল সে।



“না, সে অনেক বুদ্ধিমতী, তবে তার ব্রেইন অনেক পরে কাজ করে।”



রুপা চুপ করে রইল, বুঝতে পারলাম তাকে আরো কনভিন্স করতে হবে।



“তোমাদের কারো ক্ষতি করব না আমি, কথা দিচ্ছি।” হালকা একটা মুচকি হাসি দিলাম।



“তারা কি আমার কথা মানবে ?” প্রসঙ্গ পরিবর্তন করল সে।



“সুমনাকে এটাই শুধু বলবে, আমাকে সিধে করার পথ, আর আমাকে চোখে চোখে রাখার উপায়।”



“কাজ হবে?”



“অবশ্যই হবে।”



রুপা এবার উঠে দাড়াল, “সত্যি কথা তোমাকে দেখে মনে হয় না তোমার মাথায় এত পরিমানে ঘিলু আছে।”



আমি কিছু বললাম না বইয়ের দিকে নজর দিলাম ।



সে যখন হাটা শুরু করল, তখন বলে উঠলাম, “সুমনাকে বল, আগে সবার সাথে কথা বলে তারপর সহকারী ক্যাপ্টেন বানাতে নাহলে আম ছালা দুটোই যাবে।”



“এটাতে তো আমাদের লাভই…”



“না, অনেকেই রুখে দাঁড়াবে, দেখা যাবে এটা ভোটাভুটি পর্যায়ে যাবে, এবং আমার সহকারী ক্যাপ্টেন হবার সম্ভাবনাও কমে যাবে।”



“কিভাবে?”



“সবাই মনে করবে সুমনা আমাকে বেশী ফেভার করছে, তারমানে আমিও তার দলে।” এই বলে রুপার দিকে তাকালাম। জানি সে কি বলতে চায়, তাই সে কথা বলার আগে আমিই বলে উঠলাম, “তুমিই যদি শুরু কর তাহলে সেই একই কথা উঠবে, তুমি সুমনার হয়ে কাজ করছ। লাভ হবে না।”



এবার সে ঠোট কামড়ে ধরল, পুরো ব্যাপারটা মাথায় খেলিয়ে নিল। তারপর সে মাথা ঝাকিয়ে বলল, “ঠিকই বলেছ।”



“আর হ্যা তোমার দলের কোন ছেলে আছে?”



“হ্যা, আছে। কিন্তু কেন?”



“তাকেও বল, সে আমার বিপক্ষে দাঁড়ায়।”



রুপার চেহারায় এবার বোকা বোকা ভাব এসে গেল।



নাহ, একে পুরো প্ল্যান বলতে হয়। রুপাকে যতটা শার্প মনে করেছিলাম আসলে সে সেরকম শার্প নয়।



“আচ্ছা আমি পুরো প্ল্যানটা বলছি।” আমি নিরুপায় হয়ে বলে উঠলাম।



আমার পুরো প্ল্যান শোনার পর রুপা চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকাল, “রানা, তুমি দেখছি খুবই ডেঞ্জারাস এক ছেলে। এমন বুদ্ধি তোমার মাথায় কেমনে আসল। আমিও তো এত সুন্দরভাবে সব কিছু সাজাতে গোছাতে পারতাম না।”



পারতে যদি ইচ্ছে করতে, এটা খুবই সহজ প্ল্যান, আমি মনে মনে বললাম।



হঠাৎ করেই লাইব্রেরী ম্যাডাম মোটা গলায় বলে উঠল, “ওই বাম সাইডের দুইজন, কখন থেকে গুজুর-ফুসুর করছে। লাইব্রেরী কি গল্প করার জায়গা নাকি ? ”



ম্যাডাম নির্ঘাত আমাদের দিকে লক্ষ্য করে বলছে। আমরা দুজন চুপ করে গেলাম। আমি বইয়ের দিকে নজর দিলাম আর রুপা কিছুক্ষন বসে থেকে উঠে চলে গেল।



*



সুমনা হা হয়ে পুরো ক্লাসরুমের দিকে চেয়ে থাকল। ভুল বলা হয়ে হয়েছে, হা নয় হতভম্ভ হয়ে তাকিয়ে আছে। এখন তার মাথায় সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেল। তার মুখটা তেতো তেতো লাগছে। নিজেকে বোকা ভাবতে সে একদমই পছন্দ করে না এবং কেউ তাকে বোকা বানাচ্ছে সেটাতো তার দু চোখের বিষ।



সে রুপার দিকে তাকাল, রুপার তার দিকে তাকিয়ে হাসি দিল। রুপার হাসি যেন তার দেহে পিনের মত বিধতে লাগল। সব কিছুর হোতা রানার দিকে তাকাল সে তার মুখে হাসি নেই তবে হাজার ওয়াটের লাইটের মত করে চেহারাটা জ্বলজ্বল করছে। মনে হচ্ছে সে চেহারার মধ্যে আলকাতরা ঢেলে দেয়।



কিন্তু কিছুই করার নাই তার, কারন রুপা আর রানা দুজনই তাকে ভালোভাবেই নাচিয়েছে।



নাচিয়েছে!



এটা ভাবতেই তার মাথা আবার গরম হয়ে গেল, তার ইচ্ছে করছে রুপার চুল ধরে কিছুক্ষন টানাটানি করুক আর রানার মুখে কয়েকটা আচড় মেরে দিতে।



তার পাশে বসে আছে নুশরাত, সে কিন্তু ভালই মজা পাচ্ছে। যাক এবার তারা মুখোমুখি হবে, প্রায় এক সপ্তাহ যাবত ওই দুইজন কাউ কারোর মুখের দিকে ঠিকমত তাকায়নি।



নুশরাত ভালভাবে সুমনার দিকে তাকাল, মেয়েটা পুরো রেগে আছে। বিড়ালে মত ফোস ফোস করছে। আপাতত তেমন কেউ লক্ষ্য করেছে না।



পুরো একটা জংলী বিড়াল! মনে মনে বলল নুশরাত।



রানার দিকে তাকাল সে ছেলেটা যে এত স্মার্ট সে আগে ভাবেনি। এত সুন্দরভাবে সবকিছু সাজাল, কিন্তু কাউকেই বুঝতে দিলনা যে সে এইসবের পিছনে আছে।



গুড প্ল্যান! মনে মনে বলল নুশরাত।



সত্যি কথা সে যদি বিবাহিত না হত তাহলে সে এই রানার প্রেমে পড়ে যেত!



সে সব কিছু আবার চিন্তা করে দেখল না সত্যি নিখুত আইডিয়া বের করেছে সে।







সব কিছুর শুরু তিনদিন আগে।



রুপা ক্লাসরুমে ঢুকতেই সুমনা তাকে চেপে ধরল, “ক্লাস মিস দিয়ে কোথায় গিয়েছিলে ? ”



“লাইব্রেরীতে গিয়েছিলাম, একটা বই আনতে। রানার সাথে দেখা, তার সাথে কথা বলতেই তো আমার সময় নষ্ট হল। ” গলার মধ্যে একধরনের ঝাঝ নিয়ে সে বলল।



রুপা মনে মনে নিজেকে বাহ বাহ দিতে লাগল। আসলেই সে অভিনয়ে অনেক পাকা!



“হুম,” এই বলে সুমনা চলে যেতে লাগল।



আরে আরে! চলে যাচ্ছে যে।



রুপা এবার বলে উঠল, “রানাকে শায়েস্তা করা দরকার, ছেলেটার ওভারকনফিডেন্স দেখে গা জ্বলে।”



সুমনা ওর দিকে আবার ঘুরে তাকাল, “কেন তোমার কিছু করেছে নাকি?”



“না তেমন কিছু করেনি তবে তার নাক উচু করে হাটা আমার পছন্দ না, কাউকেই কেয়ার করেনা সে। আর ওইদিন তোমার সাথে কি খাপার ব্যাবহার নাই করল সে?”



সুমনা রুপার দিকে চেয়ে থাকল।



“আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করল তাতে তোমার কি?” সুমন জিজ্ঞেশ করল, “ আর যতটুকু জানি তুমি আমাকেও দেখতে পার না।”



“হ্যা পারি না তোমাকে দেখতে, তবে একটা ছেলে একটা মেয়েকে ক্লাসের সবার সামনে খারাপ ব্যবহার করবে সেটাও আমি দেখতে পারি না।” একটু জোর দিয়ে বলল।



এটা বলার পর রুপার মনে হলে সে যদি নিজের পিঠে সাবাস সাবাস বলে কয়েকটা চাপড় মারতে পারত।



সুমনা কিছুক্ষন চুপ করে থাকল। সে ক্লাস্রুমের পিছনের দিকে তাকাল, দেখল রানা ক্লাসে ঢুকছে। কারো দিকে না তাকিয়ে সে বসে পড়ল।



এটা ঠিক সে নিজেও রানার ড্যাম কেয়ার ভাব পছন্দ করে না। কলেজ শুরু হওয়ার পর এই পর্যন্ত সে দেখল যে রানা কারো সাথে ঠিকমত কথা বলছে। একমাত্র সজল বাদে।



সজলকে সে একটা চীনে জোক ছাড়া আর কিছু মনে করে না। গায়ে পড়ে কথা বলতে আসে আর এমনভাবে আসে যেন তারা কতকালের পরিচিত। না এই ছেলের একটা ব্যাবস্থা করতে হয়। তবে সে সরাসরি সেটা রুপার কাছে বলল না। এই মেয়েটাও সুবিধার না!



আগে নুশরাতের সাথে আলোচনা করে নিক তাপর দেখা যাক কি করা করা যায়। রুপাকে কিছুক্ষন ঝুলিয়ে রাখা যাক। যেই ভাবা সেই কাজ, সে রুপাকে বলল, “আচ্ছা টিফিন পিরিয়ডে কথা হবে ।”



রুপা মনে মনে খুব খুশি হল, যদিও সেটা সে তার চেহরায় ফুটে উঠতে দিল না। সে মনে মনে বলল, যাক তাহলে মাছ টোপ গিলেছে।



টিফিন পিরিয়ডে, সুমন রুপার সামনে আসল সাথে নুশরাত। মনে মনে একটু ঘাবড়ে গেল সে। নুশরাত মেয়েটা ডেঞ্জারাস, এটা রানা আগেই তাকে বলে দিয়েছিল।



“তা তোমার প্ল্যান কি?” নুশরাত সরাসরি জিজ্ঞেশ করল।



“মানে, কিসের প্ল্যান ?” উল্টো প্রশ্ন করল রুপা।



“আরে আজিব ব্যাপার, তুমি না বললে, তুমি রানাকে শায়েস্তা করবে।”



“ওকে শায়েস্তা করব ঠিক আছে তবে এখনো কোন প্ল্যান করি নাই আমি।”



“কিন্তু সুমনা যে বলল, তোমার কাছে শায়েস্তা করার প্ল্যান আছে।” নুশরাত বলল অবাক হয়ে।



“আরে আমিতো বলছি শায়েস্তা করা দরকার, শায়েস্তা করার জন্য প্ল্যান করে আছি এটাতো বলি নাই। করলে কি বসে থাকতাম নাকি!”



“তাহলে বলছ নাই।” নুশরাত বলল।



“না নাই, আসলে তোমার হেল্প দরকার ছিল নুশরাত। আমার মনে হয় এর আগেও তুমি রানাকে শায়েস্তা করেছ।”



নুশরাত গোলগোল চোখ করে বলল, “তুমি জনালে কি করে।”



“সজল বলেছে।”



“হুম ওর জন্যও তাহলে দাওয়াই রাখতে হয়।”



এবার সুমনা মাঝখন দিয়ে বলে উঠল, “কি নুশরাত, তুই কবে রানাকে শায়েস্তা করলি?”



“এইতো বেশীদিন আগে না, প্যাঙ্গামো শুরু করেছিল, তাই কলার ঝাকিয়ে ঠিক করেছি!”



প্যাঙ্গামো মানে কি সেটা জিজ্ঞেশ করতে চাইছিল রুপা, কিন্তু করল না।



“আমি ভেবে রেখেছি ওকে নাক দড়ি দিয়ে ঘোরনো যায় নাকি?” রুপা বলে উঠল।



“না!”, নুশরাত আর সুমনা বলে উঠল।



রুপা হচকচিয়ে গেল, “কেন?”



“সে এক ডেঞ্জারাস চিজ তাকে অন্যভাবে কাবু করতে হবে,” নুশরাত বলে উঠল, “এমন ভাবে শায়েস্তা করতে হবে যাতে তার উচু নাক নিচু হয়ে থাকে।”



“আমিও তাই মনে করি।” সুমনা বলল



“আমিও,” রুপা বলল।



“তাহলে কিভাবে ওকে শায়েস্তা করব ?” সুমন বলল।



তার এই প্রশ্নের উত্তর কারো কাছ থেকে আসল না। সুমনাও নিজেও অনেক কিছু মাথায় আসল। কিন্তু সবগুলি সে নিজেই বাদ দিল। অতি কাল্পনিক হয়ে যায়। আর তার আইডিয়া গুলো অনেকটা হিন্দি সিনেমার মত হয়ে যায়।



মেয়ে তিনজন পুরো টিফিন পিরিয়ড চিন্তা করে কাটালো কিভাবে রানাকে শায়েস্তা করা যায়। দুঃখিত দুইজন, রুপাতো কিছুই করছে না। সে বসে আছে, আর চিন্তার ভাব করছে।



“আচ্ছা তাকে অ্যাসিটেন্ট ক্যাপ্টেন দিলে কেমন হয়।” রুপা বলে উঠল, সে আর ধৈর্য রাখতে পারল না।



“মাথা খারাপ! তার মত বাদর কে কখনই না!” সুমনা সাথে সাথে বলে উঠল।



“দ্যা আইডিয়া!” নুশরাত বলে উঠল।



“কিসের আইডিয়া ?” সুমন আর রুপা দুজনই জিজ্ঞেশ করে উঠল।



“আরে ওকে অ্যাসিটেন্ট ক্যাপ্টেন হিসেবে নির্বাচনে দাড়াতে দাও, তারপর আমরা এমন ব্যাবস্থা করব যাতে সে জিরো ভোট পায়। সেতো আমাদের গ্রুপেই আছে পরে তাকে পচানো যাবে এই ব্যাপার নিয়ে ”, নুশরাত এক নিশ্বাসে কথা গুলি বলল।



সুমনাও একটু চিন্তা করে বলল, “হুম আইডিয়াতা খারাপ না। করা যায়। কিন্তু আরো কয়েকজনকে তো লাগবে।”



“আমি একজনকে ম্যানেজ করতে পারব, আরেকজন লাগবে।” রুপা বলে উঠল। মাছ ভালভাবেই টোপ গিলেছে!



যেইভাবা সেই কাজ। তিনজনে মাঠে নেমে গেল।



-সুমনা ধরল রানাকে।



-রুপা তার ফ্রেন্ডকে সবকিছু বলল, রুপা এই ছেলেকে বিশ্বাস করে।



- নুশরাত প্রথমে সজলকে ভালভাবে বোঝাল, সজল রাজী হল না। তারপর, রানাকে যেভাবে ট্রিটমেন্ট দিয়েছিল ঠিক তাকেও সেই ট্রিটমেন্ট দেয়া হল এবার সে ভাল ছেলের মত রাজী হল।



সুমনা প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইছিল না , ফলাফল দেখে।



রানা- ২৫ টা ভোট



জাভেদ(রুপার ফেন্ড)- ১১ টা ভোট।



মনিরা- ৯ তা ভোট



সামির- ৫ টা ভোট



সজল- ০ টা ভোট।



সহজ কথা ক্লাসের অর্ধেক ভোট রানা পেয়েছে।



ফলাফল রানা এখন সহকারী ক্যাপ্টেন !

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:২০

তানজিব বলেছেন: আপনার লেখার স্টাইলটা খুব ভাল লাগল। চলায় যান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.