নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
ফ্রাঞ্জ কাফকার, "মহাবিশ্বে অসীম আশা আছে, কিন্তু আমাদের জন্য নয়," জীবনের প্রতি তার অন্ধকার দৃষ্টিভঙ্গির একটি জটিল অভিব্যক্তি। যদিও তিনি মহাবিশ্বে আশার অস্তিত্ব স্বীকার করেন তবে তিনি মনে করেন যে মানুষ তার নিজস্ব সংগ্রাম এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে আটকে পরার কারণে আশার জগতে প্রবেশ করতে অক্ষম। এই প্যারাডক্সিক্যাল বিবৃতিটি কাফকার মূল চিন্তা চেতনাকে প্রতিফলিত করে, যেমন বিচ্ছিন্নতা, অযৌক্তিকতা এবং অপ্রতিরোধ্য শক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির সংগ্রাম ইত্যাদি।
বাক্যটির প্রথম অংশ, "এই মহাবিশ্বে অসীম পরিমাণে আশা রয়েছে," বোঝায় যে আশা একটি বিভ্রম নয় বরং অস্তিত্বের একটি মৌলিক দিক। এই আশা মহাবিশ্বকে পূর্ণতা দান, বৃদ্ধি, উন্নতি এবং অতিক্রম করার সুযোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু বাক্যের পরের অংশেই কাফকা কঠোর ঘোষণার মাধ্যমে এই ধারণাটিকে নস্যাৎ করে দেন এই বলে যে, "কিন্তু আমাদের জন্য নয়।"
কাফকা বিশ্বাস করেন যে মহাবিশ্ব অসীম আশায় পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মানুষ কোনো না কোনোভাবে এর থেকে বাদ পড়েছে। তিনি মনে করেন যে মানুষ বিচ্ছিন্নতা এবং হতাশার মধ্যে আটকা পড়েছে। মানুষ তার হাতের নাগালের বাইরে থাকা আশা বুঝতে বা অনুভব করতে অক্ষম।
আশাবাদী হওয়ার জন্য মানুষের ক্ষমতা সম্পর্কে কাফকার হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বেশ কিছু বাস্তব কারণ ছিল। তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, উদ্বেগ, নিরাপত্তাহীনতা এবং সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি তাকে হতাশাবাদী করে তুলেছিল। এই কারণগুলি মানুষের সম্ভাবনা সম্পর্কে তার সংশয়কে উস্কে দিয়েছিল। উপরন্তু তার সময়ে ইউরোপে একনায়কতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র এবং সর্বগ্রাসীবাদের (totalitarianism) উত্থান এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা সহ তার জীবনের অশান্ত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সম্ভবত মানব অস্তিত্বের ভঙ্গুরতা এবং দুর্বলতার প্রতি তার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করেছিল।
কাফকার এই কথাটি কেবল মানুষের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে নেতিবাচক দিক প্রকাশ করে না, বরং আশা এবং হতাশার মধ্যে জটিল সংযোগের গভীর দিকগুলি খুঁজে দেখতে উৎসাহিত করে। কথাটির আরো একটি অর্থ হতে পারে যে আশা, মহাবিশ্বের একটি অন্তর্নিহিত উপাদান। কিন্তু এটা সবার জন্য সহজে অর্জন যোগ্য নাও হতে পারে। না হওয়ার পিছনে সামাজিক কাঠামো, ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ বা অস্তিত্বের নানা উপাদান লুকিয়ে থাকতে পারে।
কাফকার বক্তব্যে একটি হতাশাবাদী সুর থাকা সত্ত্বেও এটি আশার আলোর অস্তিত্বকেও বোঝায়। এমনকি যদি আশাকে দূরবর্তী বা পৌঁছানো কঠিন বলে মনে হয়, তারপরেও এটার অস্তিত্ব স্বীকার করা ইঙ্গিত দেয় যে বাধাগুলি অতিক্রমের সম্ভাবনা অপ্রতিরোধ্য প্রতিকূলতার মধ্যেও উন্মুক্ত থাকে। এটি মানুষকে তাদের সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে এবং আরও আশাবাদী অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম করতে উদ্বুদ্ধ করে। এমনকি এই সংগ্রাম যদি মানুষের জীবনের গভীর চ্যালেঞ্জ এবং অনিশ্চয়তার সাথে লড়াই করা হয়, তাহলেও এই সংগ্রাম করে যেতে হবে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:
এই কথা ঠিক যে লেখার সাথে ছবি থাকলে পাঠকের চোখে এবং মনে একটু বাড়তি আরাম হয়।
তাই সব পোস্টেই কিছু না কিছু ছবি দেয়ার ইচ্ছা থাকে।
কিন্তু এখানে ছবি সংযোজন করা ঝামেলা পূর্ণ এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
তাই হাতে বেশি সময় না থাকলে ছবি সংযোজন করা হয় না।
ফ্রানৎস কাফকা বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী লেখক হিসাবে বিবেচিত। তার লেখার বিষয়বস্তু এবং আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি আধুনিক মূলত বিচ্ছিন্নতাবোধ, মানুষের ওপর ক্ষমতাধর মানুষের শারীরিক এবং মানসিক নিষ্ঠুরতা, অভিভাবক-সন্তান সম্পর্কে সংঘর্ষ, আতঙ্কজনক উদ্দেশ্য চরিতার্থে ব্যস্ত এমন চরিত্র, মানবজীবনে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ এবং রহস্যময় রূপান্তর - এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
এই সব চিন্তাশীল লেখকের লেখা না পড়লে চিন্তাশীল মানুষ সৃষ্টি হবে না।
তার সাহিত্যে তার জীবন প্রতিফলিত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবন খুব সংক্ষিপ্ত। কাফকা ১৯২৪ সালের ৩রা জুন মাত্র ৪০ বছর বয়সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
কাফকা ১৮৮৩ সালের ৩রা জুলাই প্রাগে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী এবং মা ছিলেন একজন গৃহিনী। কাফকা প্রাগেই বেড়ে ওঠেন এবং প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অধ্যয়ন করেন। তবে, আইনে তার খুব আগ্রহ ছিল না এবং তিনি সাহিত্য চর্চায় বেশি মনোযোগ দিতেন।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০২
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: অতিরিক্ত আশা করা আসলে ঠিকও না। আশা ভঙ্গ হলে হাতাশায় ভুগতে হয়।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:০০
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:
আশা মানুষের অস্তিত্বের একটি মৌলিক দিক। শুধু আশা কেন, "অতিরিক্ত" সব কিছুই খারাপ।
যেকোনো কিছুরই একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং সেই সীমাবদ্ধতার বাইরে গেলে তা ক্ষতিকর হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, খাদ্যের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত খাওয়ায় ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অপরদিকে, খাদ্যের অভাবও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খাদ্যের অভাবে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়, যার ফলে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে, অর্থের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত অর্থের মালিকানাও ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত অর্থের মালিকানায় বিলাসিতা, অলসতা, আত্মকেন্দ্রিকতা ইত্যাদি গুণাবলী প্রকাশ পেতে পারে।
অপরদিকে, অর্থের অভাবও ক্ষতিকর। অর্থের অভাবে জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এছাড়াও, শিক্ষা, কাজ, সম্পর্ক, বিনোদন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও অতিরিক্ততা ক্ষতিকর হতে পারে।
সুতরাং, যেকোনো কিছুরই একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং সেই সীমাবদ্ধতার বাইরে গেলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, সবকিছুই সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করা উচিত।
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: কাফকা মানুষকে হতাশাগ্রস্ত করতে চায়।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:০৭
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:
কাফকার বক্তব্যে একটি হতাশাবাদী সুর থাকলেও আসলে এটি আশার আলোর অস্তিত্বকেও বোঝায়। এমনকি যদি আশাকে অনেক দূরের কোন বিষয় বা আশার কাছে পৌঁছানো যাবেন বলে মনে হয়, তারপরেও এটার অস্তিত্ব স্বীকার করার মাধ্যমে কাফকা ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে বাধাগুলি অতিক্রম করতে পারলে অপ্রতিরোধ্য প্রতিকূলতার মধ্যেও আশার লক্ষ্য পৌঁছানো সম্ভব।
বরং তিনি মানুষকে তার সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে এবং আরও আশাবাদী অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এমনকি এই সংগ্রাম যদি মানুষের জীবনের গভীর চ্যালেঞ্জ এবং অনিশ্চয়তার সাথে লড়াই করা হয়, তাহলেও এই সংগ্রাম করে যেতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২০
বিজন রয় বলেছেন: আগের পোস্টের মতো একটি ছবি দিলে ভালো হতো।
কাফকাকে নিয়ে আামর খবি বেশি পড়া হয়নি।
তার সাহিত্যের পাশাপাশি তার জীবন থেকে কিছু লিখুন।