নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবাস্তব এবং কৌশলগত ভুল পররাষ্ট্র নীতি:

০৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:০৯

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। বিশ্বের কোন দেশ এই ধরণের আত্মঘাতী, অবাস্তব এবং কৌশলগত ভুল নীতি অনুসরণ করে না। কারণ রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আর ব্যক্তিগত সম্পর্ক এক নয়। রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক বাস্তব স্বার্থ দ্বারা নির্ধারিত হয় কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ক আবেগ নির্ভর হতে পারে। তাই এক দেশের সাথে অন্য দেশের কোন স্থায়ী বন্ধুত্ব বা শত্রুতার সম্পর্ক থাকে না। এক দেশের সাথে আরেক দেশের সম্পর্ক স্থাপিত হয় স্বার্থের মাধ্যমে। প্রতিটা দেশের কাছে নিজ দেশের স্বার্থই বড়। প্রতিটা দেশ নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য অপর দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে।

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয় এই নীতি অনুসরণ করলে একটি দেশ নিম্নলিখিত ক্ষতি এবং অসুবিধার সম্মুখীন হয়:

১. বাস্তববাদী কূটনীতির অভাব
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তবতা হলো, সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা সবসময় সম্ভব নয়। একটি দেশ আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক স্বার্থের কারণে অপর দেশের সাথে বিরোধপূর্ণ অবস্থানে থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের সঙ্গে নদীর পানি বণ্টন বা সীমান্ত বিরোধ নিয়ে চলমান সমস্যাগুলি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ বা বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী।

২. কৌশলগত অংশীদারিত্বের অভাব
বিশ্ব রাজনীতিতে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। আবার চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কোন দেশ যদি অন্য সব দেশের সঙ্গে সমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং সামরিক সহায়তার সুযোগ কমে যায়।

৩. নিরাপত্তা ঝুঁকি
যখন কোনো দেশ নির্দিষ্ট কোনো মিত্র বা কৌশলগত অংশীদার ছাড়া সবার সঙ্গে সমান সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে, তখন তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ সংকটে পড়েছে। যদি বাংলাদেশর শক্তিশালী আন্তর্জাতিক মিত্র থাকত, তাহলে এই সমস্যা মোকাবিলা সহজ হতে পারত।

৪. অর্থনৈতিক বিকাশের সীমাবদ্ধতা
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর সহ ইন্দো-চীন এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের অধিকাংশ দেশ আমেরিকা এবং ইউরোপের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছে। কোন দেশ যদি নির্দিষ্ট দেশের সঙ্গে কৌশলগত অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে তার অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হতে পারে।

৫. আঞ্চলিক নেতৃত্বের অভাব
কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কৌশলগত পদক্ষেপ না নিলে আঞ্চলিক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় না। কোন দেশ যদি শুধুমাত্র নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করে, তাহলে আঞ্চলিক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করা সেই দেশটির জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।

সারসংক্ষেপ:
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয় - এই পররাষ্ট্র নীতি শুনতে ভাল শুনালেও বাস্তব পরিস্থিতিতে কার্যকর নয়। বাস্তববাদী ও কৌশলগত পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে একটি দেশ তার উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে একটি কার্যকর পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারবে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৫৬

কামাল১৮ বলেছেন: কারো সাথেই বন্ধু নয় সবার সাথে শত্রুতা হলো সঠিক পররাষ্ট্রনীতি।

০৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:১৯

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


একটি ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ব্যক্তি বা দলের স্বার্থের উর্ধে রাষ্ট্রের স্বার্থ প্রাধান্য পাবে। শুধু শত্রুতা বা স্বার্থ হীন বন্ধুত্ব রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়।

১. কূটনৈতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা:
বন্ধু বা মিত্র দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক রাখা একটি দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা না থাকলে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উন্নতি সম্ভব হয় না।

মিত্র দেশগুলোর সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষা, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে লাভবান হওয়া যায়।

২. আন্তর্জাতিক সংগঠন ও সংস্থা:
একটি দেশের বন্ধু বা মিত্র না থাকলে সেই দেশ আন্তর্জাতিক সংগঠন বা সংস্থাগুলোর সাহায্য বা সমর্থন পেতে সমস্যায় পড়বে। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সুসম্পর্ক রাখা জরুরি।

আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে কেবলমাত্র বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা দেশগুলোই সহযোগিতা করতে পারে।

৩. আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা:
প্রতিটি দেশেরই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। সবার সাথে শত্রুতা থাকলে সেই দেশ আঞ্চলিক সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।

আঞ্চলিক সমস্যার সমাধানে বন্ধু দেশগুলো একসাথে কাজ করে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে।

৪. সংঘাত ও যুদ্ধের সম্ভাবনা:
যদি একটি দেশ সবার সাথে শত্রুতা পোষণ করে, তবে সেই দেশে সংঘাত ও যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যুদ্ধের ফলে মানুষের জীবনহানি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, এবং অবকাঠামোগত ধ্বংস হতে পারে।

শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি।

৫. মানবিক সহায়তা:
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে এক দেশ অন্য দেশের মানবিক সহায়তা পেতে পারে, যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্বাস্থ্য সংকট ইত্যাদিতে।

বিপরীতে, সবার সাথে শত্রুতা থাকলে মানবিক সহায়তা পেতে সমস্যা হতে পারে।

বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সহযোগিতামূলক পররাষ্ট্রনীতি একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:৩৫

কামাল১৮ বলেছেন: সেটা সুধু আপনি করতে পারবেন।অন্য কারো পক্ষে সম্ভব না।
৩,এই জন্য আমেরিকা আছে।সে রক্ষা করবে বিশ্বের স্থিতিশীলতা।যেটা আপনি আগের লেখায় বলেছেন।নাকি মত পাল্টেছেন।পৃথিবীর সব দেশে আমেরিকার ঘাঁটি থাকবে তবেই স্থিতিশীলতা রক্ষা হবে।আমরা তাইরে নাইরে করবো আর আমেরিকার গুনগান করতে থাকবো।

০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:১২

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


পৃথিবীর সব দেশে আমেরিকার ঘাঁটি থাকলেই স্থিতিশীলতা রক্ষা হবে এমন ধারণা ঠিক নয়।
বরং কূটনৈতিক সমাধান, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, এবং সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য বেশি কার্যকর।

শুধুমাত্র আমেরিকার গুণগান করাটা সঠিক নয়।
গঠনমূলক সমালোচনা, নিজ দেশের প্রতি সম্মান, বৈচিত্র্যময় মতামত, বাস্তবতা উপলব্ধি, সঠিক মূল্যায়ন, এবং নিজের দেশের উন্নয়নে মনোযোগ দেয়া জরুরি।
শুধুমাত্র এক দেশের প্রশংসা করার বদলে সঠিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:০৬

নূর আলম হিরণ বলেছেন: আপনি কি চ্যাট জিপিটি দিয়ে পোষ্টটি ও মন্তব্য গুলো লিখেছেন? সেটা হলে উল্লেখ করা উচিত।

০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৩৬

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


আমি পোষ্ট এবং মন্তব্যের বিষয়ে গবেষণার জন্য চ্যাট জিপিটি ছাড়াও আরো তিন চারটা এআই টুলের সাহায্য নেই। তাছাড়া আগের পুরাতন গুগলেরও সাহায্য নেই। গুগলও এখন এআই নিয়ন্ত্রিত।

চ্যাট জিপিটি সহ অন্যান্য এআই টুলেও অনেক সময় ভুল তথ্য থাকে, তাই সেটা যাচাই করার জন্য মূল সূত্র পরীক্ষা করে দেখতে হয়। চ্যাট জিপিটির সতর্ক বার্তায় বলাই আছে যে তাদের তথ্যে ভুল থাকতে পারে।

এই সব সূত্র একত্র করে নিজের মত লিখতে হয়। সরাসরি এ আই টুল ব্যবহার করলে ভাষাগত এবং তথ্যগত ভুল থাকতে পারে। একটু পরিশ্রম করতে হবে।

যেহেতু আমার এই লেখা ব্লগ-পোস্ট অর্থাৎ কোন গবেষণা পত্র নয় এবং কোন জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে না তাই লেখার নিচে তথ্য সূত্র উল্লেখ্য করার প্রয়োজন হয় না। তবে কোন পাঠক কোন তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করলে বা সূত্র জানতে চাইলে তাকে সূত্রে সন্ধান দেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.