বাবা তোমাকে হাজার সালাম...........

১৮ ই জুন, ২০১০ সকাল ১০:৪৫

পথ চলতে চলতে ভীষন রোদে ক্লান্ত পথিক যেমন চায় একটা বট গাছের ছায়া,অথবা ঝড়-বৃষ্টিতে নিশ্চিন্তে নির্ভর করার মত মাথার উপর

এক টুকরো ছাদ,বাবা তেমনই আমার মাথার উপর একটা প্রকান্ড বট গাছ অথবা ঐ রকম একটা নির্ভর যোগ্য ছাদ।জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নিশ্চিন্ত নর্ভরতায় আমি আশ্রয় পেয়ে যাই বাবার কাছে ,পাই দিক নির্দেশনা।সেই ছোট্টটি থেকে এখন অব্ধি লতালো গাছের মত আমি আকড়ে ধরে আছি তার বুক।শীতের সকালে গরম কাপড় পড়ে কুয়াশার চাদর মাড়িয়ে বাবার হাতটি ধরে সেই প্রথম স্কুলে যাওয়া থেকে যে ছায়াটি আমার উপর ছিল আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডিতে এসে সেই ছায়াটিই যেন আছে।নিজের দিক নির্দেশনায় এক আদর্শ মানুষ গড়ে তুলার যেন প্রানান্তকর চেষ্টা ।সেই কৈশরে দুষ্ট আর ডানপিটে আমার কিছু বন্ধু জুটে ছিল।চরম উশৃঙ্খলতায় ওরা পাড়ায় কত কী করে বেড়াত।তুমি যখন বুঝতে পারলে আমিও সেই দলেরই একজন,তখন তুমি পরম বন্ধু হয়ে আমার কাছে আসলে। তোমার বন্ধুত্বের ছোয়ায় সেই উশৃঙ্খল বলয় থেকে আমি বেরিয়ে আসলাম। আজ ওরা কেউ মুদি দোকনী ,কেউ পুলিশের খাতায় ফেররী।আমারও পরিণতি হয়তো তাই হতে পারত।তোমার কারিগরী দক্ষতায়,শিল্পীত ছোয়ায় আজ আমি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি।বাবা তুমি শঙ্কিত ছিলে তোমার কাছ থেকে দূরে পড়তে এসে আমি নষ্ট সময় আর নষ্ট সঙ্গ দোষে মিলিয়ে যাই কীনা!আজও যাই নি বাবা।তোমার মত আদর্শ বাবা যার দিক নির্দেশক সে কী পারে নষ্ট সময় আর নষ্ট পথে গা ভাষাতে।বাবা আমি দেখেছি এই শহরে কত রাস্তার বালকরা প্রভূহীণ কুকুরের মত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।সস্তা নেশার অক্টোপাস থাবায় আস্তা কুড়ে চলে যাচ্ছে।রাস্তায় কোন কোন দিন জ্যামে বসে গাড়ীর জানালায় চোখ রেখে দেখি পায়ে হাটার পথে অথবা সড়ক দ্বীপে রাস্তার বালকরা নেশায় বুধ হয়ে পড়ে আছে ।তখন ভাবি তোমার মত বাবা পেলে ওদের হয়তো এমন পরিণতি

হত না।আমার এখানে অনেক বন্ধু আছে যাদের বাবা মাসে মাসে কাড়ি কাড়ি টাকা পাঠায় হয়তো বটে,কিন্ত জীবনের ব্যাস্ততায় ছেলের কোন খোজই নিতে পারেন না।

আর সেখানে তুমি নিয়মিত সময় করে আমার খোজ নাও।তুমি সত্যি একজন আদর্শ বাবা।

তোমার প্রতি রইল হাজার সালাম.....।

২৮ টি +৯/-০