![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জনশ্রুতি আছে, জামায়াতের পরামর্শেই ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ তারিখের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। তাই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু জামায়াত এতে আপত্তি না জানালেও বিএনপির পিঠে সওয়ার হয়ে জামায়াতও এবার উপজেলা নির্বাচনের ট্রেনে যাত্রী হয়েছে। শুধু যাত্রী হয়েও জামায়াত থেমে থাকেনি বরং নির্বাচনে আসন ভাগ-বাটোয়ারায় জামায়াত বিএনপিকে নানামুখী শর্ত জুড়ে দিয়েছে। এমনকি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়ায়ও প্রার্থিতা চেয়েছে জামায়াত। এছাড়া দেশের বিভিন্ন উপজেলায় জামায়াত কৌশলে একাধিক প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বিএনপির অবস্থান যে জামায়াত নির্ভর তা জনগণকে বুঝাতে চাচ্ছে জামায়াত। এমনকি জামায়াত অনেক ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে বিরোধী গ্রুপ/স্বতন্ত্র প্রার্থী সৃষ্টিতে উসকানি দিয়ে বিএনপির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপির মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে বিএনপির নীরব ভূমিকার ফলেও জামায়াত বিএনপির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। আর এসব প্রকাশ পাচ্ছে, বিএনপির নামে সম্প্রতি জামায়াতের পরিচালিত সহিংসতার মধ্য দিয়ে। এতদিন বিএনপির ইন্ধনে জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছিল। বাসে পেট্টোল বোমা নিক্ষেপ ও চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে চালিয়েছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। কিন্তু এবার যেন ঘরের শত্রু বিভীষণ। এবার বিএনপির বিরুদ্ধেই যেন জামায়াতের যুদ্ধ। তারা উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির কাছে চাহিদামত আসন না পেয়ে শুরু করে দিয়েছে নারকীয়তা। দেশব্যাপী হত্যা, খুন ও গুম করে এবং সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ও বাড়ীতে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে তা আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর চাপিয়ে দিচ্ছে, ক্ষেত্র বিশেষে বিএনপির উপরেও। অথচ জনগণের তা বুঝতে বাকী নেই যে, জামায়াত-বিএনপির দ্বন্দ্বের কারণেই জামায়াত এরূপ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলা নির্বাচনের মতো একটি স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণেই জামায়াত-বিএনপির মধ্যকার দ্বন্দ্ব যদি এতটা প্রকট হয় তাহলে গত ০৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তো জনগণ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে যেত। তাইতো সাধারণ জনগণকে বলতে শোনা যাচ্ছে, নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করাতে দেশের জন্য মঙ্গল হয়েছে। অন্ততঃ জামায়াতের চোরাগুপ্তা প্রাণনাশী হামলা থেকে মানুষ রেহাই পেয়েছে। নইলে জামায়াত নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য জনগণকে হয়তো পাখির মত গুলি করে মারত। দেশে হয়তো গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যেত। তাই জামায়াত-বিএনপির তান্ডবে অতিষ্ঠ জনগণ ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের পর যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। জামায়াতকে নিষিদ্ধকরণ এখন গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জনবিমুখী স্বার্থান্বেষী জামায়াত-শিবির তাদের ঘনিষ্ট মিত্র বিএনপির বিরুদ্ধে আবার উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু করে দিয়েছে লড়াই যার বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর জামায়াতের এরূপ কর্মকান্ডে বিএনপি এখন অজনপ্রিয় একটি দলে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিএনপি এখন একূল-উকূল উভয়কূল যেন হারাতে বসেছে। তাই বিএনপি, জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করার বারংবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কিন্তু জামায়াত ছাড়ার সিদ্ধান্তে বিএনপি পড়েছে উভয়সংকটে। এতে তেলে ঘি ঢেলেছে জামায়াত প্রশ্নে খালেদা জিয়া আর তারেক জিয়া দ্বন্দ্ব। যেখানে খালেদা জিয়া বলছেন, ‘‘সরকারের সাথে সমঝোতার জন্য প্রস্তুত’’ সেখানে লাদেনীয় কাযদায় ভিডিও বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে জামায়াতের স্বঘোষিত আমীর তারেক জিয়া বলছেন, ‘‘এই সরকারের সাথে কোন আলোচনা নয়, আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটাতে হবে’’। একদিকে রয়েছে জামায়াতকে ছাড়ার জন্য বিএনপির উপর সরকার ও আন্তজার্তিক মহলের প্রচন্ড চাপ অন্যদিকে রয়েছে সঙ্গ ত্যাগ না করার জন্য জামায়াত কর্তৃক বিএনপিকে হুমকি প্রদান। তাই ‘সাম রাখি না কূল রাখি’-বিএনপির হয়েছে এবার সে দশা। আর এতে জায়ামাতের সাথে বিএনপির দূরত্ব বেড়েই চলছে।
©somewhere in net ltd.