নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নির্ভীক৭১

নির্ভীক৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালেদা বিহীন বিএনপির তিস্তা অভিমুখী লংমার্চ-নানা মুনির নানা প্রশ্ন

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮

রাজনীতিতে, বিশেষতঃ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ এতদঅঞ্চলের কিছু কিছু দেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে কতিপয় হাতিয়ার পর্যায়ক্রমিকভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন, প্রাথমিক পর্যায়ে বিরোধীদল কর্তৃক সরকার/সরকারীদলের প্রতিবাদী বক্তব্য, প্রেস ব্রিফিং, সংবাদ সম্মেলন, নেতৃবৃন্দের বিবৃতি ইত্যাদি দেওয়া। দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকে গণসংযোগ, ঘরোয়া আলোচনা সভা, মানববন্ধন, স্বল্পকালীন হরতাল, কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি-দামকী ইত্যাদি। চূড়ান্ত এবং শেষ পর্যায়ে থাকে লংমার্চ, রোর্ডমার্চ, মহাসমাবেশ, লাগাতার হরতাল, লাগাতার অবরোধ/অবস্থান, অসহযোগ আন্দোলন ইত্যাদি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবীতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেও বর্তমানে সরকার গঠিত হওয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোন সাধারণ কর্মসুচী না দিয়ে হঠাৎ করেই সরাসরি লংমার্চের মতো কর্মসূচী ঘোষণা করেছে এবং গতকাল (২২ এপ্রিল ২০১৪) সকাল আটটায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে তা আজ নীলফামারী জেলার ডালিয়া পয়েন্টে শেষ হচ্ছে।



আমি জনৈক রাজনৈতিক বোদ্ধা/বুদ্ধিজীবীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলাম হঠাৎ বিএনপি এরূপ শেষ ধাপের কর্মসূচী দিল কেন? তিনি বললেন, ভাই গত এশিয়া কাপ বা টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের ক্রিকেট খেলা দেখননি? আমি বললাম, রুজী-রোজগার সংগ্রহের কাজেই সময় চলে যায়, খেলা দেখব কি করে? তিনি বললেন, ক্রিকেট খেলায় সাধারণত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য প্রথমে ফাস্ট বোলারদের ব্যবহার করা হয় এবং এতে ব্যর্থ হলে স্পিন বোলারদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গত টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে অনেক দেশ প্রথমেই ফাস্ট বোলারদের পরিবর্তে স্পিনারদের ব্যবহার করে বাজিমাত করেছেন। এক্ষেত্রে বিএনপিও এরূপ একটি আশা নিয়েই হয়তো লং মার্চের মতো কর্মসূচী প্রথমেই গ্রহণ করেছে। মহাজোট সরকারের আগের পিরিয়ডের শেষের দিকে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটকে একধাপে ১৮ দলীয়, পরবর্তীতে ১৯ দলীয় জোটে পরিণত করে দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ দিয়েও সরকার পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে লোভনীয় বিরোধীদলীয় তকমা এবং এ বিষয়ে সকল সুযোগ-সুবিধা হারিয়ে দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীগণের আস্থা হারিয়েছেন। রাজনীতিতে লংমার্চ বলেন আর রোর্ডমার্চ বলেন, এসকল হলো রাজনীতিকদের এক প্রকার পিকনিক মার্চ। হয়তঃ এরূপ পিকনিক মার্চের মাধ্যমে হতাশাগ্রস্ত নেতাদের কিছুটা চাঙ্গা করার কৌশল হিসেবেই বিএনপি প্রথমেই লংমার্চের মতো কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। তদুপরি এরূপ পিকনিক মার্চে কনট্রিবিউশন, চাঁদাবাজি, থাকা-খাওয়া ইত্যাদির সুযোগ সুবিধা নিয়ে নিজের মধ্যে সৃষ্ট অঘটন সরকারের উপর চাপানোতে সফল হলে আন্দোলনের বাড়তি ইস্যু তৈরী ও এর দায়ভার সরকারের উপর চাপানোর সুযোগ থাকে। আমি বললাম, ভাই আপনার কথায় একশতভাগ একমত না হলেও মেনে নেয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু অতীতে বাংলাদেশে অনেক লংমার্চ হয়েছে। যেমন, ফারাক্কা অভিমুখে মাওলানা ভাসানীর লংমার্চ এবং বিগত সময়কালে টিপাইমুখ বাঁধমুখী বামদলগুলোর লংমার্চসমূহে মাওলানা ভাসানীসহ দলীয়/জোটের প্রধানরা অবশ্যই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু বিএনপির তিস্তা অভিমুখী লংমার্চে খালেদা জিয়া অনুপস্থিত থাকবেন কেন? রাজনৈতিক বোদ্ধা তথা বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিটি আমার প্রতি চোখ বড় বড় করে ধমকের সুরে বললেন, আপনার মতো অজ্ঞ লোকের সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করার ইচ্ছা আমার নেই। চা খাওয়া শেষ হয়ে থাকলে আপনি যেতে পারেন। এ বলেই তিনি বিড় বিড় করছিলেন। আমিও কতক্ষণ নিশ্চুপ বসে রইলাম।



যাক, আমার সৌভাগ্য। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার মুখ খুললেন। বললেন, ভাই আপনি কি পত্র-পত্রিকা পড়েন, টিভির সংবাদ, টকশো শুনেন? আমি কিছুটা ভয়েই বললাম, হ্যাঁ স্যার, মাঝে মাঝে শুনি ও দেখি। তিনি বললেন, বলেন তো বিএনপির লংমার্চ কোথা থেকে কয়টায় শুরু হবে? আমি বললাম, নয়াপল্টন দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সকাল আটটা-নয়টায় মধ্যে শুরু হওয়ার কথা। তিনি বললেন, হ্যাঁ কিছুটা ঠিক আছে। তবে, নয়াপল্টন নয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্মুখের গোল চত্বর থেকে সকাল আটটায় শুরু হবে। আমি বললাম, ঠিক আছে স্যার। কিন্তু কথা হলো, এতে ম্যাডাম খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকবেন না কেন? তিনি বললেন, আপনি মসাই আসলেই দুনিয়ার কোন খবর রাখেন না। আপনি কি জানেন, ম্যাডাম সাধারণত কয়টায় ঘুম থেকে উঠেন? জানেন না তাইতো। লংমার্চে অংশগ্রহণ করতে হলে ম্যাডামকে ন্যূনতম সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠে সকাল আটটায় লংমার্চে অংশগ্রহণ করতে হবে, যা কোনভাবেই তার পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবীতে ঐ লংমার্চে অংশগ্রহণ করে ম্যাডাম হয়ত দাদাদের বিরাগভাজন হতে চাচ্ছেন না কারণ একবার বড়দার সাথে দেখা না করে ফেঁসে গেছেন তাই আবার নতুন করে বিরাগভাজনের সুযোগ তিনি কেন দেবেন। আরে ভাই, তিস্তার পানি বলেন, আর ভারত বিরোধীতা বলেন, আর যাই বলেন না কেন, তলে তলে সবাই ভারতকে তুষ্ট করার তোষামোদিতে ব্যস্ত রয়েছে। লংমার্চ বলেন, আর যাই বলেন এসবই হচ্ছে লোক দেখানো, সস্তায় পাবলিক সেন্টিমেন্ট লাভের রাজনৈতিক কৌশল। তার জন্য আসল মূলাটা হলো নতুন করে প্রধানমন্ত্রীত্বের আস্বাদন পাওয়ার রাজনীতি-সেটা যে ভাবেই হোক না কেন ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.