নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গোটা পৃথিবীটা আমার স্বদেশ

ভালবাসি পৃথিবীটাকে, ভালবাসি পৃথিবীর সব কিছুকে

ব্যর্থ মানুষ

নির্দিষ্ট কোন মতবাদে বিশ্বাসী নই, না বাম না ডান।

ব্যর্থ মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিয়ে কিছু মিথ ও বাস্তবতা

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

দেশের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক ধরণের মিথই কাজ করে। কিন্তু বাস্তবতা আসলে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে বিষয়েই ঢাবিতে চার বছর কাটানোর অভিজ্ঞতার আলোকে একটা ছোট্ট লেখা তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে।





২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পদার্পণ। ভর্তি পরীক্ষা দেবার জন্য। ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। পরীক্ষায় সফল হবার বিষয়ে খুব বেশি আশা করতে পারিনি। তার ওপর মাদ্রাসার ছাত্রদের মামলা খেয়ে পরীক্ষার ফলাফল দুই মাস পিছিয়ে পড়ে। এতে আরো আশাটা ধোয়াশা হয়ে দাড়িয়েছিল।সে কারণে ঢাবির আশা ছেড়ে দিয়ে রাজশাহী নাকি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায়। এমন সময়ে হঠাৎ করেই রেজাল্ট হয়ে গেল। আমি ঢাবিতে চান্স পেয়ে গেলাম। তারপর ভর্তির পর্ব সেরে স্বপ্ন দেখা শুরু হল। অবস্থা এমন দাড়ালো যে, কী হবো, কী হতে পারলে জীবনটাকে স্বার্থক করে তোলা যাবে ইত্যাদি চিন্তা সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খায়।





অপরাজেয় বাংলা দিয়ে শুরু, তারপর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনা আর ভাষ্কর্যের সাথে পরিচিত হওয়া হল প্রথম কাজ।ক্লাশ শুরু হল। তারপর বন্ধুদের সাথে পরিচিত হয়ে উঠা, ক্লাশ শেষে একসাথে বসে আড্ডা দেয়া।স্বভাবতই এসব আড্ডার বিষয়বস্তু ছিল মূলত নিজ বিভাগ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণকীর্তন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম দিকে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এক ধরণের পাগলামী কাজ করে। ভাবখানা অনেকটা এমন হয়ে দাড়ায় তাদের মনে হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব কিছু। যাই হোক আস্তে আস্তে অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে দাড়ায়। সময় গড়ালে ছাত্র-ছাত্রীরা বাস্তবতা উপলব্ধি করা শুরু করে। ছোট্টবেলা থেকে শুনে আসা নানা গল্প যে আসলে গাল-গল্প তা ধীরে ধীরে উপলব্ধির মধ্যে চলে আসতে শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোন পড়ালেখা নেই, নিয়মিত ক্লাস আর অল্প অল্প পড়লেই ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া যায়। আর ফেল, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার ফেল আছে নাকি!!( প্রথমদিকে অনেকের ধারণাই এ রকম থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগবঞ্চিত বড়ভাইয়ারাই মূলত এসব তথ্যের উৎস)



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করলেই চাকরি হাতের মোওয়া হয়ে যাবে। আর পাস করে বেরোনোর পূর্বেও আয়ের কোন সমস্যা নেই। সহজলভ্য টিউশনির সাথে মোটা অঙ্কের বেতন ছাড়াও থাকে জামাই আদর। এ সম্পর্কে দিনাজপুরে থাকাকালীন সময়ে আমার রুমমেটের কথা মনে পড়ছে। ভদ্রলোক আমাকে টিউশনি সম্পর্কে জ্ঞান দিতে গিয়ে বললেন, ভাতিজা আমরা টিউশনি করে পাই ১০০০ টাকা। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ে এর পায় ৫০০০-১০০০ টাকা, এদের গাড়িতে করে নিয়ে যায় আবার রেখে যায়।শুনে তো মস্তিষ্ক জোরে চলা শুরু করেছিলো, যদি চান্সটা পাই।



অনেকেই আশায় বুক বাধিয়া থাকেন যে ক্যাম্পাসে প্রবেশপূর্বক (ছেলেদের ক্ষেত্রে এটা বেশি ঘটে) প্রিয় মুখখানা খুজিয়া লইবেন। তারপর ক্যাম্পাসকে অনেকটা নিকুঞ্জবন মনে করিয়া হারাইয়া যাওয়ার চেষ্টা করিবেন। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই “কপাল আমার মন্দ” তত্ত্বটা ফলিয়া যায়। দেখা যায় ক্যাম্পাসে আসা অধিকাংশ তরুণীর মন পাসওয়ার্ড দ্বারা লকড হইয়া গেছে। কেহো কেহো এক্ষেত্রে চেষ্টা করেন, পাসওয়ার্ড ভাঙ্গার। কিন্তু অধিকাংশরাই যেটা করেন। সেটা হলম পরের বছর ছোট (!!)বোনদের আশার অপেক্ষা। যাহারা পরের বছরও ব্যর্থ হন তারা প্রেমের বিরুদ্ধে তাত্ত্বিক অবস্থান গ্রহণপূর্বক প্রেমনামক সম্পর্কটির ব্যবচ্ছেদ করা শুরু করেন।



অতপর হলঃ

ইদানিং পত্রিকার কল্যাণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর করুণ অবস্থার কথা মোটামুটি সবার জনা। তবে সে সময় এতটা হলের বেহাল দশা এতটা প্রচারিত হয় নাই, যে কারণে নবাগত ছাত্রদের ধারণা ছিল হলে হয়তো তাদের জন্য একখানা ছোট আকৃতির শোয়ার খাট আর জানালার পাশে টেবিল চেয়ার টেবিল অপেক্ষা করছে। সেই টেবিলে বসে শান্ত ছেলের মত পড়াশোনা করবে, মাঝরাতে রুপালি চান্দের বদনের সাথে ক্লাসের চাঁদনির মুখের মিল খুজে পেয়ে কাব্য চর্চা করবে। কিন্তু ভূল ভাঙতে দেরী হয় না। হলে উঠতে গিয়ে প্রথম দিনের হেস্ট রুমের সম্ভাষণেই বুঝে যায় “ডাল ম্যায় কুছ কালা হ্যায়”। গণরুমে শোয়ার জায়গা আর কাপড় রাখার জায়গা পেতেই হিমমিম খেতে হয়।



কিছু পোলাপান একটু অস্থিরমতি হয়। এদের মধ্যে যে কোন কাজ করার ক্ষেত্রে প্রচণ্ড রকম অস্থিরতা কাজ করে। বলাবাহুল্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দেয়ার পরই এরা সব জয় করার মিশনে নেমে পড়ে, ভাবখানা এমন ঢাবির সুবিশাল লাইব্রেরীর সব বই সে চোখ দিয়ে ভষ্মকরণপূর্বক এক্কেবারে অধ্যাপক হইয়া যাবে। এদের অস্থিরতা অল্পদিন পরই থামিয়া যায়।



ক্লাসের মধ্যে পূনরায় ভর্তি হওয়া কিছু ছাত্র থাকে। এনারা আগের বছর কোন কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে না পারার কারণে পরের ব্যাচের সাথে পড়াশোনা চালিযে যাবার ব্রত গ্রহণ করে থাকেন। নবাগতরা এই ভদ্রলোকদের দেখে কিঞ্চিত ভয়, কারণ আর কিছুই নয় ওই ভদ্রলোকরা বিভাগের বারান্দায় এক বছর আগে পা দিয়েছেন। এই ভয় অবশ্য বেশি দিন কাজ করে না। এক সেমিষ্টার গেলেই এই ভাইরা আস্তে আস্তে আর দশজনের মত হয়ে যান।



দিন কয়েক ক্লাস করার পরই দেখা যায় আলাদা আলাদা গ্রুপ গড়ে উঠতে শুরু করে। সম মনমানসিকতার বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে এসব গ্রুপ তৈরি করে থাকে। একই লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের গ্রুপের সংখ্যা খুব কম দেখা যায়। সাধারণত এসব গ্রুপের মধ্যে অল্প বিস্তর মতবিরোধ দেখা যায়, তবে অনেক সময় তা চরম আকা ধারণ করতে পারে।



অল্প কিছু দিন ক্লাস করার পর শিক্ষার্থীদের মাথায় আসে পরীক্ষার চিন্তা। পরীক্ষার শাহী-সালসা নোট যোগাড় করার কাজে নেমে পড়ে সবাই। এক্ষেত্রে ছেলে শিক্ষার্থীরা একটু কষ্টকর অভিজ্ঞতা লাভ করে। নতুন হওয়ায় বড় ভাইদের সাথে তেমন পরিচয় নেই। দুয়েকজন বড়ভাইদের পেছনে ঘুরেও লাভ হচ্ছে না। তাদের কাছে নোট নাই, থাকলেও অন্য কেউ নিয়ে গেছে এ ধরণের উত্তর আসে। এদিকে বান্ধবীরা নোট চাইতেই না চাইতেই পেয়ে যাচ্ছে। যেহেতু প্রথম বর্ষ, মন তখনো কলেজ স্কুলের গণ্ডিতে আবদ্ধ। তাই নোটওয়ালা বন্ধু-বান্ধবীরা সহজে নোট দিতে চাই না। যদি আবার ও আমার থেকে বেশি নম্বর পেয়ে যায়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৮

মাক্স বলেছেন: লেখাটার কি পর্ব হবে??

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৭

ব্যর্থ মানুষ বলেছেন: কষ্ট করে পড়া এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও দুয়েকটা ব্লগ লেখার ইচ্ছা আছে।

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৮

অণুজীব বলেছেন: ভালো বলেছেন। :)

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৬

ব্যর্থ মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ। :) :)

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১২

আহ্‌সান হাবীব বলেছেন: এক্কেরে হাঁচা কথা!!!!!!!!!!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৮

ব্যর্থ মানুষ বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৬

তৌফিক আনজাম বলেছেন: আমি ফার্স্ট ইয়ারে ,,ঘটনা সত্য

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:২৫

ব্যর্থ মানুষ বলেছেন: শুভ কামনরা রইল আপনার জন্য। দেখেশুনে চলাফেরার চেষ্টা করবেন। যা করার ভেবেচিন্তে করবেন। :) :)

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০০

ফকির সাইঁ বলেছেন: সায়েনস ফেকালটির ওবসথা কিছুটা ভিনন, ইউ ন ?বাট লেখাপড়ার চাপটা ওনেক বেশি, সীট সহজেই পাওয়া যায়, টিউশনির ওবসথা কিনটু ভালো, আমার/আমাদের ওবসথা আপনার বড় ভাই এর কথা সাথে মিল আছে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:১৯

ব্যর্থ মানুষ বলেছেন: টিউশনিসজ কয়েকটা বিষয়ে কয়েকটা বিষয়ে বিজ্ঞানের ছাত্ররা সুবিধা পেয়ে থাকে। তবে আবাসানের মত বেসিক বিষয়গুলোতে সবারাই একই অবস্থা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.