![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিচের লিঙ্কের পোস্টখানা পড়লে এই কাহিনীখানা বোঝা সহজ হবে।
মনের প্রেম বনে গেল ;-)
নাজিয়া কাহিনী সমাপ্ত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই।
কপাল গুণে সে বছর ২০০৮-০৯ সেশনে মাদ্রাসা ছাত্রদের জটিলতার কারণে খ এবং ঘ ইউনিটের রেজাল্ট বের হয়েছিল পরীক্ষা দেয়ার দুই মাস পরে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব এমন আশা ছেড়ে দিয়ে তখন রাজশাহী অথবা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি। সে সময় কোচিংয়ের এক সহপাঠিনী সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হত।
কোচিং চলাকালীন সময়ে নাজিয়ার কারণে অন্য মেয়েদের সঙ্গে কথা খুব একটা হত না। এর সঙ্গে কথা হয়েছিল মাত্র একদিন। তার একটা কারণও ছিল কারো মুখে শুনেছিলাম এ মেয়েটি নাকি অনেক বড় লোক আর প্রভাবশালী কোন এক বাপের মেয়ে। তাই মোটামুটি এড়িয়ে চলতাম।
যাই হোক নাজিয়ার শুণ্যতার কারণে আস্তে আস্তে এর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়তে থাকে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে নাজিয়ার মিস কলের বদলে ধনী এ ললনা আমাকে প্রচুর কল করত। ফলে ইনকামিং আর আউট গোয়িংয়ের অনুপাত দাঁড়ালো ৩:১।
যাই হোকে এভাবে তার সঙ্গে আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব বাড়তে থাকলো।
শুরুতে শেয়ারিং তারপর কেয়ারিং আরম্ভ হল। নিজেদের বিভিন্ন বিষয়গুলো শেয়ার হত।
আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব হল আমার পক্ষ থেকে। কিন্তু তার পক্ষ থেকে একটু বেশি কিছু ( তখন বুঝতে পারি নাই, পরে বুঝি)
আমি তখনো গ্রামীণ বেকুব ছিলাম এখনো আছি। সে আমায় এক দিন বলল, তুমি আমার বয় ফ্রেন্ড। আমি ভাবলাম বয় ফ্রেন্ড মানে তো ছেলে বন্ধু ... এর মানে যে অন্য কিছু সেটা তখনো টের পায়নি। বহুত পরে পেয়েছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিল। আমি চান্স পেলুম, কিন্তু তার আর চান্স হল না।
রাতে ফোন দিল চান্স না পাওয়ার হতাশার কারণে সে আত্মহত্যা করবে এমন সিদ্ধান্তের কথা বলল। রাত ১২টা থেকে ফজর হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে কাউন্সেলিং করে ঠাণ্ডা করলাম।
সকাল বেলা তার একটা এসএমএস আসল, যার শেষটুকু ছিল এ রকম, আমি তোমার যোগ্য নই...
বিকেলে ফোন দিয়ে তার পরিবারে তাকে কিভাবে তার ব্যর্থতার জন্য মানসিক পীড়া দেয়া হচ্ছে তা জানাল। তারপর বলল, তার কোন এক কাজিনকে সে বলেছে, আমি চান্স না পেলে কি হবে। আমার বয় ফ্রেন্ড চান্স পেয়েছে।
তখনো খুব বেশি কিছু বুঝি নাই
এরপর কথার পরিমাণ দিন দিন বাড়তেই থাকলো। তাদের বাড়িতে যাওয়া হল, বাবা মায়ের সঙ্গে পরিচয় হল।
ঢাকায় আসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। সেও ঢাকায় খালার বাসায় বেড়াতে আসল। এক সঙ্গে বইমেলায় গেলাম। বেশ কয়েকটা বইও সে আমাকে উপহার দিল। আমিও দিয়েছিলাম দুয়েকটা।
এপ্রিলে ক্লাস শুরু হল। পূর্ব-রাজাবাজারে মেসে উঠলাম। কাকতালীয় ভাবে সে আমার পাশেই এক হোস্টেলে উঠেছিল, আমার কয়েক দিন আগে।
ফলে যোগাযোগটা আরও বেশি নিয়মিত হওয়া শুরু হল।
বিকের বেলা নাস্তা করা, ধানমণ্ডি লেকের পাড়েও কয়েক দিন হাত ধরে ঘোরা হল কয়েক দিন। সত্য কথা বলতে তখনো কিছু বুঝি নাই।
তারপর এক দিন, কাকতালীয় ভাবে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে কথা উঠল। দুজনেই স্বীকার করলাম, আমাদের সম্পর্কটা আর আগের জায়গায় থেমে নেই। আমাদের মধ্যে প্রেম হয়ে গেছে
মাস খানেক খুব ভাল কাটল। তবে আমার তরফ থেকে কথা-বার্তা কার্যক্রম ছিল, সেই আগের বন্ধুত্বসুলভ। মানে প্রচলিত প্রেমিক-প্রেমিকা সুলভ আচরণ তখনো শুরু হয় নাই।
এরপর একটা অ্যালার্মিং ঘটনা ঘটল। সে তখন তার খালার বাড়ি পাহারা দিচ্ছে ( খাল-খালু বাইরে বেড়াতে গেছে) বাসায় এক মাত্র স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন কাজের ছেলেটি ছাড়া আর কেউ নেই।
আমি খুব সুন্দর করে বললাম, সাবধানে থাকবা। সমস্যা হলে আমায় জানাবা (এর ভেতরে যে একটা ইঙ্গিত ছিল, তা তখনো বুঝি নাই)
এর কয়েক দিন পর, গ্রীষ্মের ছুটি আসলো। আমি বাড়িতে গেলাম। প্রথম কয়েক দিন সব ঠিকঠাক ছিল, তারপর হটাৎ করে ঘটনা পাল্টাতে শুরু করল। সে আমাকে জানাল, আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক রাখা সম্ভব না।
এক কথায় তার কাজ শেষ।
এর পর অনেক কান্নাকাটি করলাম, অনেক বিনিদ্র রজনী কাটালাম... কোন লাভ হয় নাই।
সম্পর্ক আবার আগের জায়গায় নিয়ে যাবে এই আশ্বাসে প্রেম বিশেষজ্ঞ এক বন্ধু আমার হয়ে ওকালতি করল।
তারপর বন্ধু আমাকে বলেছিল.. . মিঞা মেয়ে তোমাকে ইশারা-ইঙ্গিতে কত কিছু বোঝাতে চেয়েছে। তুমি কিছুই বোঝ নাই।
©somewhere in net ltd.