নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলম 1

সাধারন ব্লগার

আলম 1 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহের সমাধি

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৬


বাহাদুর শাহ জাফরের একটি বিখ্যাত কবিতার পঙ্ক্তি: কী দুর্ভাগ্য জাফরের, যে জমিন সে ভালোবাসত/ সেই জমিনে তাঁর সমাধির জন্য দুই গজ জায়গা হলো না।সত্যি, ভারতের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহের ঠাঁই হয়নি ভারতের মাটিতে। তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুনে। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে ব্রিটিশ শাসকেরা তাঁকে মিয়ানমারে নির্বাসনে পাঠান। ১৮৬২ সালের ৭ নভেম্বর সেখানেই তিনি মারা যান।

প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিমপন তাঁর লাস্ট মোগল (২০০৬) বইয়ে লিখেছেন, ‘সিপাহি বিদ্রোহ যখন শুরু হয় তখন বাহাদুর শাহ দিল্লির একটি বাড়িতে ছিলেন। মিরাট থেকে ৩০০ জনের একটি বিদ্রোহী দল এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করে, যার মধ্যে সিপাহি ও অন্যান্য পেশার মানুষ ছিলেন। তাঁরা বাহাদুর শাহ জাফরকে এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে বললে তিনি রাজি হন। এরপর বাহাদুর শাহ হয়ে ওঠেন ভারতের কোটি কোটি মানুষের বিদ্রোহ ও ঐক্যের প্রতীক। ১৮৫৭ সালের জানুয়ারিতে মিরাট ও ব্যারাকপুরে শুরু হওয়া বিদ্রোহ সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।

কিন্তু চার মাসের মাথায় ব্রিটিশরা বিদ্রোহ দমন করে এবং তারা কবি ও যুবরাজ মোল্লা ও কামাক্ষা, সুফি ও পণ্ডিত—সবাইকে পাকড়াও করে ফাঁসি দেয়, ধ্বংস করে প্রাসাদ, মসজিদ, ঈদগাহ, বাগান ও ঘরবাড়ি। ২১ সেপ্টেম্বর বাহাদুর শাহ আত্মসমর্পণের পরদিন মেজর উইলিয়াম হাডসন তাঁর দুই পুত্র মির্জা মোগল ও মির্জা খিলজি সুলতানকে গুলি করে হত্যা করেন। ১৮৫৮ সালের ২৭ জানুয়ারি দিল্লিতে বাহাদুর শাহের বিচার শুরু হয় এবং শেষ হয় ৯ মার্চ। আদালত তাঁকে মিয়ানমারে নির্বাসনে পাঠানোর সুপারিশ করেন। প্রথমে দিল্লি থেকে কলকাতায় এবং কলকাতা থেকে জাহাজে করে তাঁকে ইয়াঙ্গুনে পাঠানো হয়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জিনাত মহল, দুই পুত্র জওয়ান বখত ও আব্বাস বখত, পুত্রবধূ রওনক জাহান ও এক নাতনি।
ইয়াঙ্গুনের বিখ্যাত শোয়ে ডন প্যাগোডার পূর্ব পাশে ৬ জিওয়াকা সড়কের একটি বাড়িতে বাহাদুর শাহ ও তাঁর স্বজনদের রাখা হয়। তখন এটি ছিল সেনাছাউনি। তাঁদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র চারটি কক্ষ। সেখানে বাহাদুর শাহকে লেখার কলম ও কাগজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

ভারতীয়রা দীর্ঘদিন বাহাদুর শাহের সমাধি সম্পর্কে কিছু জানতেন না। ১৯০৩ সালে ভারতের একটি প্রতিনিধিদল প্রথম বাহাদুর শাহর সমাধি পরিদর্শন করেন। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অযত্নের কারণে সেই সমাধিটি তখন আর চেনা যাচ্ছিল না। ১৯০৫ সালে ইয়াঙ্গুনের মুসলমানরা বাহাদুর শাহের সমাধি চিহ্নিত করার দাবি জানান; ১৯০৭ সালে ব্রিটিশ সরকার সমাধির ওপর পাথরখচিত ফলক বসায়, যাতে লেখা ছিল: বাহাদুর শাহ, দিল্লির সাবেক রাজা ১৮৬২ সালের ৭ নভেম্বর এর কাছেই মারা গেছেন। মিয়ানমারের মুসলমানরা তাঁকে শুধু শেষ মোগল সম্রাট হিসেবে দেখে না; দেখেন একজন সুফি ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে। অনেকে দরগাহে মানতও করেন। সামনের খোলা চত্বরের দেয়ালে ভারত ও পাকিস্তানের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের কয়েকটি আলোকচিত্র।
বর্তমান সমাধি ভবনটি নির্মাণ করা হয় ১৯৯১ সালে, ভারত সরকারের সহায়তায়। এর দেয়ালে লেখা আছে ‘এই হলটি সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গিত’।
অবিভক্ত ভারতের মানুষের কাছে বাহাদুর শাহের সমাধি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯৪১ সালে বাহাদুর শাহের সমাধিতে ফুল দিয়েই ‘দিল্লি চলো’ প্রচারণা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ মিয়ানমার পার হয়ে পূর্ব ভারতের ইম্ফল পর্যন্ত দখল করে নিয়েছিল। ১৯৮৭ সালে রাজীব গান্ধী সমাধি পরিদর্শনকালে লিখেছিলেন, যদিও আপনি (বাহাদুর শাহ) ভারতের জমিন পাননি, তবে এখানে পেয়েছেন, আপনার নাম এখনো জীবন্ত। আমি ভারতের প্রথম স্বাধীনতাযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’

সূত্র : ইন্টারনেট।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৫৯

পুরান লোক নতুন ভাবে বলেছেন: ভাই একটা ভুল তথ্য চোখে পড়লো!! মায়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুন না!! একটু গুগল করে দেখুন!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.