নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মানুষের জন্য , জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারেনা...ও বন্ধু...
এখন সময় রাত সাড়ে তিনটা। মাঘ মাসের প্রচন্ড শীতের রাত। গ্রামের ঠিক মাঝখান দিয়ে সিএন্ডবি’র বড় রাস্তাটা ঐ গ্রাম থেকে এসে এই গ্রামকে দুই ভাগে ভাগ করে দিয়ে সোজা গঞ্জে গিয়ে থেমেছে। শীতের এই গহীন রাতে হর্ন বাজিয়ে মাঝে মাঝে দ্ইু একটা দুর পাল্লার বাস গঞ্জের দিকে ছুটে যায়। সেই হর্নের আওয়াজ গাঁয়ের অনেক দুর পর্যন্ত শোনা যায়।
এই মাত্র তেতুল তলার হাটে এসে একটা বাস থামলো। বাস থেকে নামলো বখতিয়ার। কিছুক্ষন এদিক ওদিক তাকিয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কিছু একটা ভাবছে। এখান থেকেও প্রায় মাইল দেড়েক পর বখতিয়ারের বাড়ি। হেটে হেটেই যেতে হবে। দিনের বেলা হলে হয়তো টমটম বা ইজিবাইক পাওয়া যেতো। কিন্তু কৃষ্ণ পক্ষের এই ঘুটঘুটে অন্ধকার রাতে জন-মানবহীন এবং নির্জন রাস্তা পেরিয়ে বাড়ি পৌছাতে হবে। এ কথা ভেবে মনে একটু ভয় ভয়ও লাগছে। সাথে শুধু মাত্র মোবাইলের টর্চ লাইট ভরসা। সেই টর্চ দিয়ে বড় জোর সামনের হাত দুয়েক পথ ভালো করে দেখা যাবে। তার মধ্যে আজকে এতোই ঘন কুয়াশা পড়েছে তাতে তিন চার হাত দুরের কিছুও ঠাওর করা যায় না।
বখতিয়ার মনে মনে একবার ময়েজ আলীর কথা ভেবেছে। ময়েজ আলী এ গ্রামের চৌকিদার। তার আবার মোবাইলও নাই। থাকলে একটা কল করে তাকে ডাকা যেতো। ময়েজ আলী সারারাত ফুরুউউউত করে হঠাৎ হঠাৎ বাঁশি বাজাতো আর ও--ও----ই-----ই বলে মুখ দিয়ে আওয়াজ করতো। আজকে বাঁশির শব্দ বা গলার আওয়াজ কোনটাই শোনা যাচ্ছে না।
প্রায় মিনিট দশেক হাটখোলায় দাড়িয়ে থেকে পূব দিকে যে ইটের রাস্তাটা মালো পাড়ার দিকে নেমে গেছে সেই পথে পা-বাড়ালো বখতিয়ার। কাঁধে সাইড ব্যাগ ঝোলানো আর এক হাতে একটা বাজারের ব্যাগ। সে ব্যাগের ভিতর ঢাকা থেকে কেনা কিছু কাপড় আর ফেরীঘাট থেকে এক ডজন কমলা কিনেছিলো তাই। অন্য হাতে মোবাইলের টর্চ লাইট।
প্রায় দশ মিনিট হাটার পর শংকর বাবুর বাড়ির সামনের বড় পুকুরটা চোখে পড়তেই গা ছমছম করে উঠলো। পুকুরের দক্ষিন পাশেই এ গ্রামের চিতাখোলা। এই চিতায় গ্রামের অনেক হিন্দুদের পোড়াতে দেখেছে সে। এইতো গতবারও হরিচরণ বাবু মরার পর এই চিতায় তাকে পোড়ানো হয়েছিলো। পুকুরের ওপাড়ে দাড়িয়ে সে দেখেছে সেই দাহ করার দৃশ্য।
বেঁচে থাকতে বখতিয়ারের বাবা বলতো এই চিতা খোলার সামনে দিয়ে আমাবস্যার রাতে কেউ হেটে যেতে পারতো না। অপঘাতে যারা মারা যেতো তাদের পোড়ালেও তাদের আত্নারা রাতের বেলায় চিতাখোলায় চলে আসে। সামনে যাকে পায় তাকে ভয় দেখায়। একদিন তার বাবাও দেখেছিলো একটা ধুতি পরা কঙ্কাল হাত ইশারা করে ডাকছে। এসব মনে করে ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। দিনেমানে এ পথ দিয়ে কতশত বার বখতিয়ার হেটেছে অথচ কোন দিন তার এমন মনে হয়নি। আজ এই গভীর রজনীতে এখানে এসে চমকে উঠার পর এসব মনে করে তার পা আর চলছে না ।
তার পরও মনে সাহস নিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালো। বিড়বিড় করে একটা গান গাইতে চেষ্টা করছে বখতিয়ার। কিন্তু আশ্চর্য, কোন গান গলা দিয়ে বের হচ্ছে না। বখতিয়ার এরকম একটু আধটু ভয় লাগা পথ আগে দুই এক লাইন গান ধরে হাটা দিলেই সেই পথে তার আর ভয় লাগতো না। সেই টেকনিকটাও আজ কাজ করছে না।
হঠাৎ মনে হলো কেউ একজন তার পিছনে পিছনে হাটছে। দুই একবার পেছন ফিরে তাকিয়েছে অথচ কেউ নাই। এতো শীতেও তার শরীরে ঘাম দেয়া শুরু করেছে। গলার মাফলার আর কানটুপি খুলে ব্যাগে রেখে দিয়েছে। বুকটাও ভিষন ধুক ধুক করছে। গাছের পাতা থেকে শিশির ঝড়ে তলার শুকনো পাতার উপর টপাস টপাস করে পড়ছে তাতেও মাঝে মধ্যেই চমকে উঠতে হচ্ছে। পথ মনে হয় আজ আর শেষ হচ্ছে না। মনে মনে ময়েজ আলীকেও গালি দিচ্ছে। -শালার ব্যাটা তুইও কি আজ মরে গেলি?
চিতাখোলা পার হয়ে মেম্বারের বাড়ির পর জেলে পাড়া। তারপর জেলে পাড়া থেকে পশ্চিম দিকে আর একটু এগিয়ে গিয়ে ছোট একটা খেঁয়া ঘাট পার হলেই তার বাড়ি। বখতিয়ার এই মাত্র জেলে পাড়ায় এসে পৌছেছে। জেলে পাড়া থেকে খেঁয়া ঘাট পর্যন্ত পথটুকু মারাত্নক বিদঘুটে। এই পথে দু’টো কবরস্থান আর একটা বড়সড় বাঁশ বাগান আছে।
আজ সকালেই মা মোবাইলে কল করেছিলো বখতিয়ারকে। হালিমাকে কাল হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। হালিমা বখতিয়ারের বৌ। প্রথমবার বাচ্চা হবে। বাড়িতে এক মা আর বৌ ছাড়া কেউ নেই। ফ্যাক্টরি থেকে তিন দিনের ছুটি নিয়ে আজকের কাজ শেষ করেই বাসে উঠেছিলো। পথের সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে হয়তো রাত আটটা সাড়ে আটটার মধ্যেই তেতুলতলার হাটে নামতে পারতো। কিন্তু ফেরী ঘাটে চার পাঁচ ঘন্টার জ্যামে বসে থাকতে হয়েছে। তাই আজকের এই শীতের রাতে শীত যতটা না কাবু করতে পারছে তার চাইতে অজানা ভয়ে শরীরটা একদম চলছে না। বখতিয়ার তার ঘনিষ্ট বন্ধু হাশিমকে একবার মোবাইলে কল দিতে চেয়েছিলো কিন্তু নিশ্চই এতো রাতে হাশিম বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।
জেলে পাড়া পার হয়ে খালেক বড় মিয়ার বাড়ি। বাড়ির উঠানে একটা বাঁশের মাথায় লাইট জ্বালানো দেখা যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারনে লাইটের আলো আবছা আবছা আর টিমটিমে দেখাচ্ছে। তারপরও চারি ধারটা আলোকিত হয়ে আছে। খালেক মিয়ার উঠান ভরা ধানের পালা। শত শত মন ধান ফি বছর খালেক মিয়া জমি বর্গা দিয়েই পায়।
খালেক বড় মিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে জোর গতিতে সামনের দিকে হাটা শুরু করলো বখতিয়ার । অল্প সময়েই খালেকের বাড়ির লাইটের আলো চোখের আড়াল হয়ে আবারো কুয়াশায় ঢাকা আধার রাতের পথ সামনে ঠেলে উঠলো।
হাটতে হাটতে কখন সেই বড় কবরস্থানের মাঝ দিয়ে হাটছে টেরই পেলোনা বখতিয়ার । হঠাৎ করে বড় সাইজের একটা শেয়াল দৌড় দিয়ে রাস্তার এপার থেকে ওপাওে চলে গেলো। আবারো চমকে উঠতে হলো। এখন বুজতে পারলো সে কবরস্থানের পথে এসে পড়েছে। শেয়ালের খুব উৎপাত এই কবরস্থানে বহু বছর ধরে। দিনের বেলা মরা মানুষ কবর দিয়ে চলে গেলে রাতে শেয়ালের দল কবর খুড়ে লাশ খেয়ে ফেলে। ধনী লোকেরা লোহার নেট দিয়ে কবর পুরনো হওয়া পর্যন্ত ঢেকে রাখলেও গরীব লোকেরা বাঁশের বেড়া দিয়ে রাখে। তাতে খুব একটা লাভ হয় না। কবরের এক পাশ দিয়ে সুড়ঙ্গ করে শেয়াল ডুকে যায়।
একটু সামনে এগিয়ে আসার পর চোখে পড়লো এক খন্ড সাধা কাফনের কাপড় । নিশ্চিত এটা কোন কবর থেকে শেয়ালেরা বের করে ফেলেছে। বুকটা দড়ফর করছে, মাথাটাও শুণ্য শুণ্য লাগছে। ভয়ে চোখেও ঝাপসা ঝাপসা লাগছে। কিন্তু যাই হোক না কেন সাহস হারালে চলবে না। হাটার গাতি বাড়িয়ে দিলো বখতিয়ার । হঠাৎ পায়ে তলায় কিছু একটা ধাক্কার মতো লাগলো। কি এটা? ওমা এটা তো একটা মানুষের হাত। নিশ্চয়ই কোন শিয়াল কবর থেকে লাশের হাত ছিন্ন করে টেনে নিয়ে এসেছে।
এবার ডানে বায়ে কোন দিক না তাকিয়ে এক দৌড় । প্রায় চার পাচ মিনিট দৌড়ে এসে সেই ভয়ানক বাঁশ বাগানটার ধারটায় এসে হাপিয়ে হাপিয়ে হাটছে। বাঁশ বাগানের এই পথটুকু দিনের বেলায়ও ভিষন অন্ধকার হয়ে থাকে আর এমন কুয়াশার রাতে সেটা কতোটা ভৌতিক রুপ ধারন করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হে মাবুদ কোন কুক্ষনে রওনা হয়েছিলাম আজ, মনে মনে ভাবছে বখতিয়ার ।
বাঁশ বাগানের ঠিক শেষ প্রান্তে প্রকান্ড এক গাব গাছ আছে। প্রায় পাঁচ বছর আগে এই গাব গাছে মালো পাড়ার ‘নিতাই’ গলায় দড়ি দিয়েছিলো। তারপর থেকে গ্রামের দুই একজন লোক মাঝে মাঝে নিতাই’কে গাছে বসে থাকতে দেখেছে। মনে মনে বখতিয়ার ভাবছে -শালার ময়েজ আলী কিভাবে এই গ্রামে রাত জেগে চৌকি দেয়। ব্যাটার নিশ্চয়ই কোন ভয় ডর নাই।
সামনের এই পথ টুকু কোন মতে পার হলেই খেঁয়াঘাট । আর খেঁয়া পার হলেই বাড়ি। হে আল্লাহ এই পথটুক নির্বিঘ্নে যেতে পারলেই হয়। ডানে বায়ে কোন দিকে তাকাবে না। আবার হাটা শুরু করলো। কিন্তু গাব গাছটার কাছে আসতেই ফড়ফড় মড়মড় করে উঠলো। আসলে দু’টো বাদুর গাব গাছে বসে ছিলো। মানুষের আওয়াজ পেয়েই উড়ে গেল। অথচ এবার ভয় পেয়ে বখতিয়ার আবারো দৌড়াতে শুরু করলো।
এক দৌড়ে খেঁয়া ঘাট। ঘাটের কাছে আসতেই দুরের মসজিদ থেকে আজানের শব্দ ভেসে আসছে শুনতে পেলো বখতিয়ার। মনে হয় কোন এক জমের পুরী পাড়ি দিয়ে এই মাত্র লোকালয়ের দেখা পেয়েছে। খেঁয়া ঘাটে এসে দেখে নৌকার পাটাতনে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে ময়েজ আলী চৌকিদার।
-ময়েজ মামু,তুমি ঘুমাইতাছো? শালার পুত আমি আইজকাই মেম্বাররে জানামু। তুমি কিসের চৌকিদার? আগে আমারে পার করো।
ময়েজ আলীর বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ আওয়াজে বখতিয়ারের দুঃস্বপ্নের মতো ফেলে আসা দেড় মাইল পথ আড়াল হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
ঢাকা, ০৫ পৌষ ১৪৩০।
ছবিঃ অন্তরার্জাল
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৫
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ধন্যবাদ।
২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৭
করুণাধারা বলেছেন: বখতিয়ারের এক রাত! বর্ণনা চমৎকার হয়েছে। ভাগ্যিস শেষ পর্যন্ত ময়েজ আলীকে পাওয়া গেল!
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৪
মোগল সম্রাট বলেছেন:
অনেক অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্য পেয়ে অনুপ্রাণীত হলাম।
শুভকামনা জানবেন।
৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২১
শেরজা তপন বলেছেন: ভয়ঙ্কর অবস্থা!
সব দৃশ্য যেন আমার চোখের সামনে ভাসছিল।
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৩
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ধন্যবাদ তপন ভাই।
চলেন এরকম একটা এক্সপেরিমেন্ট করে আসি ঘুটঘুটে অন্ধকারের রাতে কোন এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে। সারারাত এরকম অৎকে ওঠা চমকে ওঠা সব মুহূর্তের মুখোমুখি হই।
শুভকামনা নিরন্তর।
৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: আমার এমন কম-বেশী অভিজ্ঞতা আছে। শেয়ালের এমন লাশ টানাটানি আমি ছোটবেলায় বাড়ির কাছের কবস্থানে দেখেছি।
বাঁশঝাড় আর চিতার অভিজ্ঞতাও আছে ! জীবনে কত রকমের ভয় পেয়েছি।
আপনার এমন অভিজ্ঞতা থাকার কথা- না হলে এমন নিখুঁত কল্পনা করা সম্ভব নয়।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৫
মোগল সম্রাট বলেছেন:
আমি জানি আপনার এসব অভিজ্ঞতা অবশ্যই আছে।
তারপরও মনে হয় ওগুলো আর একবার রিনিউ করি
৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫৪
জনারণ্যে একজন বলেছেন: এত সুন্দর করে বর্ণনা করলেন, মনে হলো নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখছেন। ছোট ছোট প্রতিটা ঘটনাই ভিজুয়ালাইজ করার মতো। ভালো লেগেছে পড়তে।
আমি যেখানে থাকি, পর্বতবেষ্টিত (পাহাড় নয়) ছোট্ট একটা শহর এটা। এলিভেশন ভালোই, আট হাজার ফিটের মতন। দিনের বেলায় মাঝে মাঝে মেঘ নেমে আসে। চারদিক অন্ধকার করে রাখে। জানালা দিয়ে পর্বতচূড়া দেখা যায়, মেঘ জমে থাকে ওখানে। মনে হয় কুয়াশাছন্ন, কিন্তু তা নয়।
আপনার গল্প ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিলো। ধন্যবাদ সুখপাঠ্য এক লেখা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫২
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। মন্তব্যে অনুপ্রানীত হলাম।
আপনার বর্তমান থাকার যায়গার যে বর্ননা লিখলেন তাতে কল্পনা করতে পারছি অনেক সুন্দর প্রকৃতিক পরিবেশ আপনার চারপাশে রয়েছে। পর্বতচুড়ায় মেঘের মিতালী, উপত্যকার মত এক জনপদের জীবন যাপন নিয়ে লিখে ফেলুন দুই কলম। অপেক্ষায় থাকলাম।
৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৫১
তাহেরা সেহেলী বলেছেন: আমাদের সকল অঞ্চলেই এরকম ভূতুড়ে স্থান এর গল্প আছে। কিন্তু আসলেই গল্প, সত্য না।
সুন্দর গুছানো লেখা, পড়ে আরাম।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:০২
মোগল সম্রাট বলেছেন:
গ্রামে-গঞ্জে এরকম হাজারো ভৌতিক গল্প আছে যা ছোট বড় সবার মনে ভয় ধরানোর মতো। একটা ঘটনা বলি-
আমাদের গ্রামের উত্তর দিকে এক লোকের বাগানে তিন মাথা ওয়ালা একটা নারকেল গাছ ছিলো। তিনটা মাথায়ই নারকেল ধরতো। আামরা ছোট বেলায়ই দেখতাম নারকেল গাছটার বয়স অন্তত ত্রিশ চল্লিশ বছর হবে। সন্ধ্যর পর ঐ নারকেল গাছের তলা দিয়ে বা সামনে দিয়ে কেউ এক একা যেতে সাহস পেতো না। কারন অনেকে নাকি দেখেছে রতের বেলায সাধা দবদবে শাড়ি পরে তিনটা পরী তিন মাথায় বসে আছে এবং ঐ বাড়ির এক মহিলা পাগল হয়ে যাবার পর এই ভয়টা আরো বেশি করে গ্রামের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিলো। অথচ আমি শহর থেকে নাইট শো সিনেমা দেখে রাত বারোটার সময়ও অনেকদিন হেটে বাড়ি গেছি । কোন দিন কিছু দেখলাম না।
যাই হোক আমার লেখা পড়ে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ।
শুভকামনা অবিরাম।
৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লেখা।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২২
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ধন্যবাদ রা-নু ভাই
৮| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২৭
মিরোরডডল বলেছেন:
শিরোনাম ভালো হয়েছে।
শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনা!
বখতিয়ারের চিতাখোলার পাশ থেকে আর কবরস্থানের মধ্যে দিয়ে যাবার সময় আমারই একটু একটু গা ছমছম করছিলো
কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে ময়েজ আলী চৌকিদার।
এখানেও একটা টুইস্ট হতে পারতো।
ময়েজ আলী ভেবে চাদর সরাতেই দেখা গেলো, এ আর কেউ নয়, নিতাই
দারুণ লেখা সম্রাট!!!!!!!
থ্যাংক ইউ।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৫
মোগল সম্রাট বলেছেন:
হা হা হা
আসলেই তো! নৌকায় কম্বলের নিচে যদি নিতাই’কে দেখতে পেতো বখতিয়ার তাহলে বখতিয়ারের অবস্থা বর্ননা কেমনে করতাম ভাবতেছি। হয়ত তাকে অজ্ঞান করে নৌকায় ফেলতে হতো অথবা নদীতে। আর যদি নদীতে পড়তো তাহলে তাকে কে তুলতো । পুরো পথে এতোবার ভয় পাওয়ার পর সে কিভাবে এইটা নিতো।
থ্যাংক ইউ । লেখা আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমি আনন্দিত ।
শুভকামনা।
৯| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
ভুতের গল্প পড়তে ভালো লাগে। আমার নিজের অনেক ভুতের গল্প আছে হয়তো কোনোদিন লিখবো। আপনার হাতের লেখা ভালো। +++
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৭
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ঠাকুর ভাই আপনে আমারে ভালোপান তাই আমার গার্বেজেও পিলাস দেন। তয় আপ্নের মতো পপুলার ব্লগার আমার পোষ্ট পড়ে তাতে কমেন্ট করেন সেটাই বিরাট ভালোলাগা আমার জন্য।
ভালো থাকবেন সবসময়।
১০| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভয়ংকর অবস্থা। এমন রাতে আমি জীবনেও কোথাও যেতে পারবো না
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১৬
মোগল সম্রাট বলেছেন:
আসলে গ্রামে এমন রাতে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কেউ ঘরের বাইরে আসেও না। বখতিয়ারের না বের হয়ে উপায় ছিলোনা। সকালে তার পোয়াতী বউ নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে। আর প্রয়োজন কোন ভয় ভীতি মানে না। এটা হয়তো নিছকই একটা গল্প কিন্তু বাস্তবে গ্রামের লোকেরা এভাবেই টিকে থাকে ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে আমার এই লেখাটা পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য ।
শুভকামনা সব সময়।
১১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:২৩
আঁধারের যুবরাজ বলেছেন: গল্পটি চাইলেই সত্যি আরো ভৌতিক হতে পারতো। অনেক আগে গ্রামের কোনো এক অপরূপা তরুণী হারিয়ে গিয়েছিলো ( যে সব কারণে হয় আরকি ),আজও পূর্ণিমার রাতে বাঁশ বাগানে নুপুরের ধ্বনি শোনা যায় কখনো কখনো। কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রত্যুষে গ্রামের মানুষ দেখতে পায় বখতিয়ার খেয়া ঘটে পরে রয়েছে। মুখে তার স্মিত হাসি ,হাতে ধরা পুরোনো একখানা নূপুর।
গল্প ভালো হয়েছে।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৯
মোগল সম্রাট বলেছেন:
গ্রামের গল্পগুলোতে ইচ্ছে করলে অনেক টুইস্ট করে অনেক লম্বা করে লেখা যায়। কিন্তু অনুরাগী পাঠকের ধৈর্যের বিষয়টিও লেখকের মাথার রাখা লাগে এটাই সমস্যা। লেখায় তখন ফরমায়েশি ভাব চলে আসে। যেমনটা আমার ক্ষেত্রে হয়েছে।
তবে আপনার মন্তব্যের কাব্যিক অংশটা এই গল্পে জুড়ে দিতে পারলে গল্পটা আরো একটু মাত্রা পেতো সত্যিই।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য। শুভকামনা নিরন্তর।
১২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:১০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আপনার ১৩ বছর পূর্তিতে অভিনন্দন। নাহ, আপনার লেখা ফ্লপ হবে না। আপনার লেখার হাত ভালো, লেখালেখি করতে পারা অনেক ভালো একটি বিষয় আর তা অবশ্যই হতে হবে মনের আনন্দে। আপনার আনন্দের সাথে আমিও আছি। লেখালেখিতে চলতে থাকবে দিনের পর দিন।
১৩ বছর পূর্তিতে আপনাকে আবারও অভিনন্দন।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪০
মোগল সম্রাট বলেছেন:
আপ্লুত হলাম প্রিয় ঠাকুর ভাই।
১৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:২০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মোগল সম্রাট আপনা ১৩ বছর পূর্তিতে অনেক অনেক শুভকামনা। এমন আরও অনেক তেরো যোগ হয় যেন ব্লগ জীবনে আপনার। ভাল থাকুন আনন্দে থাকুন জীবনানন্দ হয়ে । অভিনন্দন।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩০
মোগল সম্রাট বলেছেন:
অনেক আনেক ধন্যবাদ।
১৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৪
বিজন রয় বলেছেন: গল্পটি গতানুগতিক ও পুরানো ধাঁচের হয়েছে। বিশেষ করে শুরুতে।
অন্যরকম গল্প চাই। অন্য টেস্ট।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২৯
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ধন্যবাদ গল্প পড়ার জন্য।
আপনি ঠিক ধরেছেন একটু গতানুগতিক ধারার হয়েছে।
শুভকামনা।
১৫| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৫
জনারণ্যে একজন বলেছেন: @ মোগল সম্রাট, প্রতিউত্তরের জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ, আমার আশেপাশে বেশ কয়েকটা ভ্যালি আছে। এখন যদিও তুষারাবৃত। দুঃখিত, পোস্ট দেয়ার জন্য কিছু লিখতে হলে যে মেধা দরকার, তা আমার নেই। আর এই জনপদের জীবন-যাপন দিয়ে একদমই লেখা যাবে না। সীমাবদ্ধতা অনেক।
তবে মুভি দেখার অভ্যাস থাকলে অবশ্যই এই ছোট্ট শহরকে দেখেছেন।
এতটুকুই।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮
মোগল সম্রাট বলেছেন:
পুনঃ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
লেখার মতো মেধা অবশ্যই আপনার আছে। শুরু করুন।
শুভকামনা জানবেন।
১৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৯
শার্দূল ২২ বলেছেন: চমৎকার, শব্দ দিয়ে ভিডিও ধারণ। পুরো রাস্তার প্রতিটা বালুকণা উঠে এসেছে বর্ণনায়। দৃশ্যগুলো অক্ষর ডিজিটে জোড়া লাগিয়ে জীবন্ত করে তোলার অসাধারণ ক্ষমতা সম্রাটের আছে।
শুভ কামনা
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৫৪
মোগল সম্রাট বলেছেন:
অনুপ্রাণিত হলাম প্রিয় শার্দূল।
শুভকামনা নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩
নাহল তরকারি বলেছেন: সুন্দর।