নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।

মোগল সম্রাট

মানুষ মানুষের জন্য , জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারেনা...ও বন্ধু...

মোগল সম্রাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

সান্ত্রী জীবনের অন্তরালে

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০২




সাহেপ্রতাপ মোড়ের একটা রেষ্টুরেন্টে প্রতিদিন রাত দশটার পর রমিজ রাতের খাবার খেতে আসে। বাজারের শেষ মাথায় রমিজের অফিস। সেই অফিসের কম্পাউন্ডেই রমিজ থাকে। সাহেপ্রতাপ মোড়টা খুবই ব্যস্ততম একটা মোড়। মোড় থেকে পূব দিকে নরসিংদী শহরের দিকে একটা মহাসড়ক চলে গেছ এবং একটা উত্তর দিকে সিলেট অভিমুখে। ঢাকায় আসা যাওয়ার জন্য কিশোরগঞ্জ,সিলেট,বি-বাড়িয়া সহ অনেকগুলো জেলার গাড়ী এই পথ ব্যবহার করে। লোকাল রুটের অনেক যাত্রিবাহী বাস এখানে এসে থামে। তবে দুরপাল্লার বাস খুব প্রয়োজন না হলে এখানে থামে না। দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা এই মোড়টায় পুলিশের ডিউটি থাকে।

এই রেষ্টুরেন্টের কারনেই হায়দার আলীর সাথে রমিজের পরিচয় বন্ধুত্ব সবকিছু। হায়দার আলী পুলিশের কনষ্টেবল। ভেলানগরে বাসা ভাড়া করে হায়দার আলী দুই ছেলে আর স্ত্রী নিয়ে থাকে। কনষ্টেবল হলেও এ যাবৎ বদলী হওয়া সব কর্মস্থলেই পরিবার নিয়ে থেকেছে। সেসব ফেলে আসা কর্মস্থলে তার অনেক কড়া-মিঠা স্মৃতি রমিজের সাথে দেখা হলে শেয়ার করে হায়দার আলী। হায়দারের গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমোহনে। সেই ২০০৪ সাল থেকে রমিজের সাথে তার বন্ধুত্বের পথচলা।

রমিজ ২০০৬ সালে নতুন কোম্পানীর চাকরী নিয়ে ঢাকায় চলে আসার কয়েক মাস পর হায়দার আলীও বদলী হয়ে যায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায়। তবুও যোগাযোগ আর সম্পর্ক আরো গভীর হয়ে এখনো টিকে আছে।

সেই উনিশ বছর বয়সে পুলিশের কনষ্টেবলের চাকরীতে যোগ দিয়েছিলো হায়দার আলী। ভালো মন্দ বহু মানুষের সংশ্রব পেয়েছে কিন্তু কোন দিন ঘুষ খায়নি বা কোন কোন দুর্নীতিতেও জড়িয়েও পড়েনি অথচ রাস্তাঘাটে, চায়ের দোকানে, বাসে-ট্রেনে চলাচলের সময় পুলিশের প্রতি সাধারন মানুষের কি পরিমান নেতিবাচক ধারনা আর গালাগাল আছে তা নির্মম ভাবে সহ্য করেছে।

বাইশ বছর বয়সে রাহেলা’কে বিয়ে করেছিলো। বিয়ের দুই বছরের মাথায় প্রথম সন্তান হয়েছিলো তার দুই বছর পর আরেকটা। মাঝে মাঝে হায়দার আলী ভাবে সময় কতো দ্রুত চলে যায়। বড় ছেলেটাও এসএসসি পাশ করে এখন কলেজে পড়ে। আর ছোটটা এবার ক্লাস নাইনে। এখন তার পোষ্টিং সৈয়দপুরে।

গত কয়েক দিন ধরে কোন কিছুই ভালো মতো খেতে পারছেনা হায়দার। কারন সৈয়দপুরের খরখড়িয়া নদীর পাড় থেকে একটা গলিত লাশ উদ্ধারের পর থেকে যা কিছু খেতে যাচ্ছে তখন সেই গলিত লাশের বিভৎস ছবি আর সেই দুর্গন্ধ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এ রকম সমস্যা আগেও অনেকবার হয়েছে। মরা পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত লাশ, এ্যাকসিডেন্টে একপাশ থেতলে যাওয়া লাশ নিজের হাতে ধরে তুলতে হতো এবং তা কাটিয়ে উঠতে অনেক দিন লেগে যেতো।

হায়দারের বড় ছেলেটা নিয়ে তার খুব দুশ্চিন্তা হয়। ছেলেটা কেমন মনমরা দিয়ে থাকে সারাক্ষন। ওর তেমন বন্ধুবান্ধবও নেই। ক্লাস ওয়ান থেকে এসএসসি পর্যন্ত পাঁচটা স্কুলে তাকে পড়তে হয়েছে। প্রথম যখন হাই স্কুলে ওঠে তখন হায়দার আলীর বরিশালে পোষ্টিং ছিলো। বরিশাল জিলা স্কুলে পড়তো ছেলেটা। স্কুলের সহপাঠিরা তাকে ‘ঠোলা’র পোলা’ বলে ক্ষ্যাপাতো। এটা নিয়ে অনেক দিন হাতাহাতিও হয়েছে। ক্লাশ এইটে ওঠার পর বদলী হয়ে খুলনায় এসে নিউজ প্রিন্ট মিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলো। সেখানেও একই দৃশ্য। সহপাঠিদের টিটকারি একসময় গা-সওয়া হয়ে গিয়েছিলো। হায়দার আলী ভাবে হয়তো ওসব কারনে ছেলেটার আজ মনের এই অবস্থা।

রাহেলা বেগম গরীব ঘরের মেয়ে। চাকচিক্যহীন সাদা সিধা জীবনেই সে অভ্যস্থ এবং স্বাচ্ছন্দ। স্বামীর কাছে তার বিশেষ কোন চাহিদা নাই, কোন অনুযোগ কোন অভিযোগও সে কোনদিন করেনি। হায়দার আলী ভাবে রাহেলার এই মিতব্যায়ী জীবন যাপনের জন্যই সংসারে শত টানাটানির মধ্যেও সে সৎ থাকতে পেরেছে। পুলিশের বৌ হিসাবে পাড়াপড়শীর কতো বাঁকা কথাও কতো সময় শুনতে হয়েছে। অনেক ওসি দারোগা সাহেবদের বৌদের গা ভর্তি গহনা দেখেও কোনদিন লোভ হয়নি রাহেলার। বরং কোন কোন অনুষ্ঠানে গিয়ে শুনতে হয়েছে ভাবী আপনার গলা, হাত খালি কেন? ‘নাহ! আমার গহনা পরতে ভালো লাগেনা’ এমন উত্তর দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেছে। তবে রাহেলা বেগমের একটাই আক্ষেপ তার স্বামীকে দিয়ে প্রায় সব ওসি দারোগারাই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজ করিয়ে নিয়েছে বা এখনো করায়। সাপ্তাহিক কোন ছুটির দিনেও তার স্বামীকে সেই উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ফরমায়েশ খাটতে হয়।

সৈয়দপুর আসার আগে হায়দার আলী ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগে ছিলো তিন বছর। প্রচন্ড রোদ, প্রবল বৃষ্টি আর তীব্র শৈত্য প্রবাহেও ট্রাফিকের দ্বায়ীত্ব পালন করতে হতো। শীত কালে ঢাকার রাস্তার প্রচন্ড ধুলোবালি আর কালো ধোঁয়ায় এ্যাজমার সমস্যা বেড়ে যেতো। পকেটে সবসময় ইনহেলার রাখতে হতো। আর দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কোমড় আর মেরুদন্ডে ব্যাথা হয়ে যাবার কথা জানাতো রাহেলাকে। বলতো একটু গরম পানির ছ্যাঁকা দিতে পারলে তার আরাম লাগতো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক আর মানব সৃষ্ট দুর্যোগই হোক ডিউটি থেকে কোন রেহাই মিলতো না। একবার ফার্মগেটের ট্রাফিকে উল্টোপথে আসা গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ার পর তার চাকরি নিয়েই টান পড়ে যায় যায় অবস্থা হয়েছিলো। প্রভাবশালীদের গাড়ি বলে কথা। সেদিন হায়দার আলী বুঝেছিলো প্রভাবশালী থেকে সাধারন মানুষ সবাই এ দেশে আইন না মানা গর্বের বিষয় বলে মনে করে। সে সময় রাহেলা বেগমের খুব টেনশন হতো স্বামীকে নিয়ে।

এ্যজমা বেড়ে একবার এতো খারাপ অবস্থা হলো যে কাঁশির সাথে রক্ত চলে আসতো। যক্ষা সন্দেহ করে ডাক্তার যক্ষার টেষ্ট করিয়েছিলো কিন্তু যক্ষা ধরা পড়েনি। তখন ডাক্তার বলেছিলো ফুসফুসে ইনফেকশন হয়েছে। দির্ঘদিন ঔষধ খেতে হবে। দুই মাস সে ঔষধ খাবার পরও কোন উন্নতি না হওয়ায় ভারতে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে হয়েছিলো। ভারতের ডাক্তার ক্যান্সার সন্দেহ করে অনেক পরিক্ষা নিরীক্ষা করে দেখলো না ক্যানসারের পর্যায়ে যায়নি তবে আরএকটু দেরি করলে হয়তো সে পর্যায়ে চলে যেতো। অবশেষে মাদ্রাজে থেকে দুই মাস নিয়মিত ডাক্তারের ফলোআপ আর ঔষধে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছে। এই জন্য বহু টাকা খরচ করতে হয়েছে। আর সেই টাকা যোগাড় করতে হায়দার আলীর বাবার এক বিঘা ধানের জমি বিক্রি করতে হয়েছে। সেই অসুখ থেকে সেরে ওঠার পর হায়দার আলী সৈয়দপুরে বদলী হয়েছিলো।

অক্টোবর মাসে শুক্রবারের ছুটি সাথে দুইদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে রমিজ পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় কাঞ্চনজংগা দেখতে গিয়েছে একটা ট্যুর গুরুপের সাথে। ওখান থেকে সৈয়দপুরে গিয়ে হায়দার আলীকে একটা সারপ্রাইজ দিলো রমিজ। রমিজকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে হায়দার আলী। অনেক কথা জমানো আছে। সেই কবে নরসিংদী থাকতে একবার এক বিকেলে সোনা মুখির ট্যাকে বেড়াতে গিয়েছিলো তার পর আর কোথাও একসাথে বেড়ানো হয়নি। সেদিন যেতে যেতে রমিজ বলেছিলো;
- জানেন হায়দার ভাই, পুলিশ আর কয়ড়া টাকা ঘুষ খায়। সিটি কর্পোরেশন, রেল, গনপূর্ত, শিক্ষা,স্বাস্থ্য, কাস্টম অফিস, ইনকাম ট্যাক্সের অফিস, ভূমি অফিস, আর সাব রেজিস্টার অফিসে যে ঘুষের লেনদেন হয় তার কাছে তো পুলিশের ঘুষ নস্যি। অথচ পাবলিক শুধু পুলিশের ঘুষ নিয়া ফাল পাড়ে।
সেদিন সেই কথা এখনো তার কানে বাজে। দুই একটা আড্ডায়ও রমিজের এই কথা সে কোট করেছে।
একদিন পর সৈয়দপুরে থেকে রমিজ আবার ঢাকায় ফিরে চলে এসেছে।

রমিজ চলে যাবার দুই দিন পরের ঘটনা। ঐ দিন বিকেলের পালায় হায়দারের টহল ডিউটি ছিলো। বিকেল তিনটার পর থেকে তার ডিউটি শুরু রাত পর্যন্ত। বিকেল পাচটার দিকে শহরের মুন্সিপাড়ার মোড়ে টহল ভ্যান এসে দাড়িয়েছে। এমন সময় হঠাৎ ভোলা থেকে হায়দারের বড় বোনের মোবাইল কল। রিসিভ করতেই ও প্রান্ত থেকে কান্নার আওয়াজ।
- ও ভাইরে! বাবা নাই। বাবা নাই। একটু আগে বাবায় আমাগো এতিম কইরা চইলা গেছের ভাই । তুই এখনি রওনা দে।
ওসি সাহেবের কাছ থেকে ছুঁটি নিয়ে সন্ধ্যার পর বড় ছেলেটাকে সাথে করে সৈয়দপুর থেকে রওনা হয়েছে। ঢাকার উদ্দেশ্যে। তারপর ঢাকা থেকে ভোলা যেতে হবে। বিরাট দীর্ঘ পথ। দেশের একপ্রান্ত থেকে অরেক প্রান্ত। শুধু একটাই কথা বলেছে তার বোনকে; বাবাকে আমি শেষ দেখা যেন দেখতে পাই। আমি না আসা পর্যন্ত বাবাকে দাফন করবা না।

সৈয়দপুর থেকে আসার সময় পথে পথে কতোবার চোখ ভিজে গেছে বাবার কথা মনে করতে করতে। ছেলেটা পথে পথে কতো সান্তনা দিয়েছে। তাতে কি আর মন মানে। বাবা সবসময় বলতো হায়দার কোন দিন ঘুষ খাইবা না, অসৎ ইনকাম আমারে খাওয়াইবা না। আমার আর কোন কিছু তোমার কাছে চাওয়ার নাই। আর আমার কথা চিন্তা করবানা। অথচ চাকরীর জন্য বাবার মৃত্যুর সময়ও কাছে থাকতে পারলাম না। এখন প্রতিদিন ফজরের সময় কে কল করে বলবে -হায়দার তুই নামাজ পড়ছোস? ডিউটি কোন সময়, বাড়ি আসবি কবে। এসব মনে পড়ে বারবার বুক ফেটে কান্না আসছে।

পরের দিন লালমোহন গিয়ে বাড়ি পৌছাতে বেলা চারটা বাজে। মান্নান মৌলভী হায়দারকে দেখেই বলে উঠলো;
-বাবা অনেক সময় হইয়া গেছে। তোমার জন্যই কুলে রাখছি। যাও ওযু করে আসো দিন থাকতে থাকতে দাফন করি। মুর্দাকে বেশিক্ষন উপরে রাখলে তার রুহের কষ্ট হয়।

বাবার মৃত্যুও পর হায়দার আলী এখন প্রচন্ড অবসাদে ভোগে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন, ভিইপি, গুরুত্বপূর্ন যায়গা,তল্লাশি চৌকিতে পাহারা ,নিয়মিত টহল, সিনিয়র অফিসারদের সাথে থাকা, অভিযানে যাওয়া, অপরাধীদের সাথে গুলি বিনিময় সহ কতো রক্তাক্ত ও বিভীষিকাময় অপরাধের ঘটনার সাথে মিশে আছে হায়দার আলীর কর্ম জীবন।
এই চাকরী জীবনে কতো প্রিয় মুখের শেষ দেখা তার কঁপালে জোটেনি। কতো ঘনিষ্ট স্বজনদের আনন্দ অনুষ্ঠানে সে উপস্থিত হতে পারেনি। সেই বেদনা কেউ বুজবে না। সেই খবর কেউ খুজবে না।

ঢাকা,
১০ পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল,(দৈনিক যুগান্তর-২০২৩)


(পোষ্টের সকল চরিত্র স্থান কাল পাত্র সম্পুর্ন কাল্পনিক। কারো সাথে হুবহু বা আংশিক মিলে গেলে তা অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র)


মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০৮

বিজন রয় বলেছেন: সাহেরপ্রতাপ নরসিংদী যেতে পড়ে না?

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:১১

মোগল সম্রাট বলেছেন:




জি বিজন দা, আপনি ঠিকই ধরেছেন। বাবুরহাটের পর পাঁচদোনা, তারপর সাহেপ্রতাপ।

২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৪

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম, হয়তো কারও সত্য কাহিনী নিয়ে এই লেখাটি লিখেছেন...
চমৎকার লিখেছেন দাদা...

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:০৫

মোগল সম্রাট বলেছেন:



সমাজের মানুষের জীবন থেকেই গল্প নাটক সিনেমা।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

শুভকামনা।

৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৬

প্রামানিক বলেছেন: পড়তে সত্য কাহিনীর মতই লাগল।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:০৬

মোগল সম্রাট বলেছেন:




আনন্দিত হলাম প্রামাণিক ভাই।

শুভকামনা জানবেন।

৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৫

বিজন রয় বলেছেন: কয়েক বছর আগে আমি প্রায়ই সাহেপ্রতাপ যেতাম।

আপনি কি ওই দিককার?

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:০৮

মোগল সম্রাট বলেছেন:




এক সময় নরসিংদী চাকরি করতাম। সেই সুবাদে ঐ দিকের অনেক যায়গা চিনি।

৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:২১

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: হয়ত কারও জীবন থেকে অনুপ্রাণিত কিংবা না, তবু পড়লে বাস্তব মনে হয়।
গোছালো লেখা।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:০৯

মোগল সম্রাট বলেছেন:




ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

শুভকামনা নিরন্তর।


৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩১

শার্দূল ২২ বলেছেন: সম্রাট ভাই শুরুতেই কৃতজ্ঞতা জানাই ঐ পোষ্টে পুলিশ নিয়ে আমার মন্তব্যের আবেগের জবাবে আপনার দ্রুত এই পোষ্ট দেয়ার জন্য।

আমি জানি আপনি আমার মন্তব্যের জবাব হুট করে এক কথায় দিতে চাননা। তাই সময় নেন। এটা আমার সৌভাগ্য, মোটেও দুঃখিত হবার কিছু নেই।

আমি জন্মেছি ঢাকায় থানা কোয়াটারে। বড় হয়েছি থানা পুলিশ ঘিরে। তবুও আপনার মত করে কোন পুলিশকে এতটা ভাবতে পারিনি যতটা আপনার নজর গিয়ে পড়েছে।

আমি আবার আসতেছি মন্তব্য করতে, মনে হয় এবারের মন্তব্য অনক বড় হয়ে যাবে।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

মোগল সম্রাট বলেছেন:





প্রিয় শার্দূল ভালোলাগা জানবেন।

লেখাটা আপনাকেই উৎসর্গ করা ঠিকই ধরেছেন। ইচ্ছে করেই পোস্টে উৎসর্গ লিখিনি। আমি জানতাম আপনি বিচক্ষণ মানুষ ঠিকই ধরে ফেলবেন। মুগ্ধ হলাম।

আপনার মন্তব্যের উত্তর একটু দেরি করে দিই এটা ঠিক। আসলে আমার কিছু সমস্যাও আছে যেগুলো সামল দিয়ে নিরিবিলিতে মন দিয়ে কিছু বলতে সময় লেগে যায়।

আমার লেখাগুলোতে যে সব চরিত্র গুলো দেখেন প্রায় সবাই আমার কমবেশি পরিচিত। এদের সাথে যতটুকুর মিশেছি খুব কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ট করেছি। তাই হয়তো লেখাগুলোতে তাদের জীবনের একটা সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরতে চেষ্টা করি।

তবে শার্দূল আমার কিন্তু মনে হয়না আপনি আমার চাইতে কম গভির ভাবে সবকিছু দেখেন। আপনিও খুব কাছ থেকে অনেক জীবন ছবি দেখেছেন, ভেবেছেন বলে আমি মনে করি।

৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: রমিজ চরিত্রটা আসলে আমি।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মোগল সম্রাট বলেছেন:




থ্যাকয়ু রমিজ ভাই :)

৮| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:৫১

শার্দূল ২২ বলেছেন: গত কয়দিন ধরে আমার খুব ব্যস্ততা যাচ্ছে। বছর শেষ। কাজ বেশি জমে গেছে। এখানে অনেক কিছু বলার ছিলো । সময় এবং সাহস হারিয়ে ফেলতেছি দিন দিন এখানে মন খুলে কিছু বলার। তাই এসেই চুপ করে আবার চলে যাই। আজকে যাকে ভালো মনে হয় কালকে দেখি তার অন্যরুপ। এক কথায় কাউকে ভালো যেমন বলা যায়না তেমনি খারাপও বলা যায়না। হতে পারে আপনার মতের সাথে আমার মত মিলবেনা, আপনি এক দল করবেন আমি আরেক দল কে সাপোর্ট করবো, আমরা তো আর নেতাদের পিছে হেটে পেট চালাইনা, আমাদের সাপোর্ট মানে হাতে কফি আড্ডা, যতক্ষণ কফি হাতে ততক্ষণ মুখে রাজনীতি।এইতো, এই জন্য কাউকে ছোট করা বা অপমান করা বা তার ব্যক্তিগত বিষয় টেনে আনা কোন সভ্যতা হতে পারেনা।

আমাদের এখানে মানে আমেরিকাতে মানুষ চিনতে খুব বেশি সময় লাগেনা, ধরেন আপনি কাউকে যদি প্রশ্ন করেন - ভাই আপনি কেমন আপনার সম্পর্কে বলেন, সে যা তাই বলে দিবে। বলবে আমি জানিনা আমি কেমন, তবে আমি জীবনকে অন্যরকম ভাবে উপভোগ করি, শনিবার রাতে বান্ধবি নিয়ে ঘুরি। ড্রিন্কস করি, ক্যসিনো যাই, আমার যা সাপ্তাহিক আয় তা আমি একরাতে নারী মদ জুয়া এসবের পিছনে খরচ করে ফেলি। সোজাসুজি স্বীকারোক্তি। কোন ড্রামা নেই। আর যে এসব করেনা সেও বলবে আসলে আমি এসব নিতে পারিনা ,আমাকে দিয়ে কেন জানি এসব হয়না। এখানে কাউকে চিনতে গিয়ে আপনার সময় নষ্ট হবেনা, আর এত সময় কারো থাকেনা। এখানের মেয়ে গুলো সোজাসাফ্টা কথা। তোমার সাথে আমার হবেনা, গুড বাই। কোন মেয়ে একসাথে দুইজন কে মাথায় রাখবেনা, যাকে নিয়ে আছে তার অধ্যায় একদম ক্লোজ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কারো কল তো দুর টেক্সটেরও রিপ্লাই দিবেনা, হাতের আঙ্গুলে এক জীবন ৫০ টা এ্যঙ্গেজমেনট রিং পড়বে কিন্তু লুকিয়ে কিছু করবেনা। আমাদের দেশের চিত্র একদম উলটো। সত্য তো বলবেইনা বরং যত পারে চেহারার উপর চেহারা লাগাবে, যেন কেউ চেষ্টা করেও আসল জায়গায় পৌছতে না পারে। পুরুষ মানুষ পড়বে টুপি পাঞ্জাবী মুখে দাড়ি। মেয়েরা লাগাবে হিজাব আর বোরকা নিজেদেরকে ঢাকতে বা আড়াল করতে। যারা একান্তই ধর্মীয় অনুভুতি থেকে করে তাদের কথা আলাদা। ওরা আমার সমালোচনায় আসবেনা।

আমাদের দেশে মেয়েদের সমস্যা একটু বেশি। এরা সব সময় বেটার কিছু খুঁজে, আত্মবিশ্বাসের অভাবে এদের অন্যের উপর নির্ভরতার কারণে সব সময় বেটার খুজতে গিয়ে বর্তমানকে হারিয়ে ফেলে। আর একটা মেয়ে কোনভাবেই তার পিছে এক পুরুষ হাটায় সন্তুষ্ট নয়। ওরা চায় সকল পুরুষের দৃষ্টি মনে না হলেও চলবে তার শরীরের গিয়ে পড়ুক, প্রতিটা পুরুষ মনের মনিকৌঠায় তাদের দেখতে চায়, ধরুন কোন ছেলে যদি বলে আপনাকে আমি ভালোবাসি আপনি কি আমাকে পছন্দ করেন, এই কথার জবাব মেয়েটা সরাসরি কিছু বলবেনা , সে একটা গান প্লে করবে অথবা গেয়ে শোনাবে - আমারও পরানে যাহা চায় তুমি তাই ,তুমি তাইগো। ছেলেটা যদি মদন হয় সে তো খুশিতে ষোলখানা হয়ে যাবে। এরপর মেয়েটির পিছনে নিজের জীবন যৌবণ অর্পণ করে যখন খুব বেশি অধিকার খাটাতে যাবে তখন মেয়ে স্বরণ করিয়ে দিবে- আরে ঐটা তো শুধু একটা গান ছিলো। তুমি কি বুঝচ্ছো ওসব আমার মনের কথা ছিলো? একদম না, যাও আমাকে ঝালাতন করোনা।

সম্রাট ভাই ভাবছেন আমি কিসের মধ্যে কি বলছি। আসলে আমি বোঝাতে চেয়েছি যে, আমাদের দুনিয়াতে মানুষের যত গুলো চরিত্র আছে সব চেয়ে নিঃষ্পাপ নিঃস্বার্থে চরিত্র হলো প্রেমিক প্রেমিকা। এটা ছাড়া আর বাকি চরিত্র গুলো সার্ভাইবাল চরিত্র। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অন্যসব চরিত্র গুলো কম বেশি অসৎ হয়ে যায় কিংবা অসৎ হতে হয়। কিন্তু প্রেমিক প্রেমিকা চরিত্রটা সম্পুর্ন সৎ সুন্দর হবার কথা জাগতিক কোন অসুন্দর এখানে আসবেনা, এখানে সম্পর্ক থাকবে শুধু মনের আর সুন্দরের। সেই চরিত্রটাই যখন সৎ নয় সেখানে পুলিশ একটা চরিত্র যাকে কিনা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটতে হয় পাপি তাপিদের নিয়ে। তার উপর নিজের জীবন সংসার সীমাব্ধতা তো আছেই।

সমাজের আরেকটা চরিত্র হলো ডাক্তার। আমিতো ভেবে পাইনা ডাক্তাররা কি তাদের পেশার সঠিক মানে জানে কিনা। ডাক্তার কেমন হবার কথা জানেন? নুরানী মাদ্রাসার হুজুরদের মত, জীবনের কিছু চাইনা, নিজেকে মিলাদ মাহফিলে আযান নামাজ কামাজ এসবের মধ্যে দিয়ে পার করতে নিজের জীবনকে এক রকম উৎসর্গ করে দেয়ার মত মানুষ গুলৈ ডাক্তার পেশার আসার কথা। যেমন অসৎ উপায় সারা জীবন টাকা আয় করে আল্লাহকে বোকা বানাতে ৫ সন্তানের একজন কে হাফেজ বানায় ঠিক তেমন যে মনে করবে জীবনে অনেক পাপ করেছি এই পাপ মুছন করতে একটা সন্তানকে ডাক্তার বানাবো। সে মানুষের সেবা করে করে আমাকে বেহেশ্তে নিয়ে যাবে। অথচ আমাদের দেশের ডাক্তারদের পাপতাপ জাহান্নামের আগুনকে ম্লান করে দিবে। আমেরিকাতে একজন ডাক্তারের ঘন্টা প্রতি আয়ের চেয়ে একজন ক্লিনারের ঘন্টা আয় বেশি। শ্রেনী বিন্যাশে একজন ক্লিনারের ঘন্টা ১২৫ ডলারও হয়ে থাকে।

এভাবে যত গুলো চরিত্র মানুষ আছে বাংলাদেশে সবাই সবার জায়গা থেকে ১০০ ভাগ সৎ নন। কিন্তু বিধিবাম বিধাতার বিশেষ দান সমাজের আর চরিত্র গুলোকে সবাই বাহবা দেয় কিন্তু একটা পুলিশের চরিত্রকে সমাজে মাথা তুলে দাড়াতে দেয়না কেউ। একটা পুলিশ কতটুকু খারাপ হতে পারে। আপনি কাগজ পত্র সব ঠিক করে গাড়ি চালাচ্ছেন তবুও ১০০ টাকা নিয়ে নিলো নানা অজুহাতে। অথবা অন্য কেউ মামলা করেছে আপনার নামে পুলিশ সব জেনেও আপনাকে হয়রানি করে হাজার টাকা নিয়ে নিলো। কিন্তু এটাকি ভেবে দেখেছেন আপনি যখন মরতে বসেছেন হাসপাতালে কিন্তু ডাক্তার আপনাকে দিয়ে আরো টাকা আয় করতে আইসিইউতে ঢুকিয়ে দিলো দিনে ১ লক্ষ করে টাকা বের করতে? অথবা ফুডপয়োজনের ব্যথায় আসছেন ডাক্তারের কাছে সে গলব্লেডরে পাথর বলে আপনার পেটে কেটে তচনচ করে দিলো। সমাজে এমন ডাক্তারও আছে।

রাজ্জাক আন্কেল কন্সটবল,নরসিংদি পলাশ থানা ,তার ছেলের অপারেশন , টাকা নেই , সব বড় অফিসারের কাছে হাত পেতে ৫ লাখ টাকা যোগাড় করতে পারেনি, অথচ থানার এসপি ওসির এক রাতে আয় হয় ৫ লাখের চেয়েও বেশি, সারাদিন ডিউটি করে রাতে না ঘুমিয়ে অন্য শহরে গিয়ে সিনএনজি চালায় রাতের বেলায় একরকম নাক মুখ ঢেকে।

তৌহিদ আণ্কেল পুলিশ, বউএর জন্য কিডনি যোগাড় করেছে কিন্তু অপারেশন করবে ইন্ডিয়ে নিয়ে, টাকা নাই। বাসায় ৪ বছরের একটা মেয়ে ৬ বছরের একটা ছেলে। ডিউটি করে বাসায় গিয়ে আবার সংসার রান্না।বউএর সেবা। মাঝ রাতে রাস্তার কাজ করে গোপনে।

এমন শতশত কাহিনী আছে আমার কাছে, কারণ এরা সবাই আব্বুর চোখে পড়তো বা আব্বু সেসব থানায় গেলে সবার সব খবর রাখেন এবং নানা মানুষ থেকে ওদের জন্য অনুদান আদায় করে দিতেন।

এমন সব সীমাব্ধতায় মানুষ গুলো এক সময় অমানুষ হয়ে যায় তখন আমরা তাদের দেখে সমালোচনা করি। বাংলা সিনেমায় রুবেলে জসিম মান্না সাকিব এরা মানুষকে কত ছবিতে চিৎকার করে বলেছে যে- আজকে আমাকে নিয়ে সবাই সমালোচনা করে, কেউ তো দেখেনা আমি মাফিয়াতে আসছি কোন দুঃখে। ভিলেন ডিপজল আমার সৎ সরল বাবাকে মেরে ফেলেছে, ভিলেন আহমেদ শরীফ আমার প্রেমিকাকে রেপ করেছে কিংবা আমার মা ডলি জহুর চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে এই জন্যইতো আমি আজকে ডন হয়েছি। তবুও মানুষ শিখেনি। এসব ছবি বানিয়ে কি লাভ হলো আমরা যদি কিছুই না শিখলাম।

ঘুরে ফিরে আসি প্রেমিক প্রেমিকায়, যেখানে কোন লাভ নেই, যেই সম্পর্কের কোন ফিউচার নেই, যেই ভালোবাসা বা ভালোবাসার ইন্ধনে কোন সফলতা নেই তবুও এই চরিত্র গুলো যেখন অযথাই অসৎ সেখানে একটা পুলিশের চরিত্র নিয়ে আমাদের কেন এত ক্ষোভ? কেন সরকার তাদের জীবনকে অর্থবহ করেনা, যারা দেশের মেরুদন্ড হয়ে জীবনের মরুভমিতে পিপাষায় কাতর।

আরেকটা টপিক আনবো আপনার পোষ্টে। খুব বেশি স্পর্শকাতর বিষয়টা। আপনার অনুমতি পেলে । অথবা আপনি যদি সেই টপিকে একটা পোষ্ট দিতেন তাহলে আমার কথা বলতে সুবিধা হতো।

ভালো থাকবেন

শুভ কামনা




০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭

মোগল সম্রাট বলেছেন:








প্রিয় শার্দুল, ওয়ান মোর হ্যাটস অফ ম্যান,

চরিত্রের সততা নিয়ে যে বিশ্লেষন আপনি করেছেন তা ‍সত্যিই অনবদ্য । আসলেই তো, দুনিয়ার সব রিলেশনেই ট্রানজেকশনাল। কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও যদি উচ্চমাত্রায় লেনাদেনার হয়ে যায় তাহলে তার ইম্প্যাক্ট অবশ্যই কর্মজীবনের পড়বে। অন্তত আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষ যাদের আয়ের সাথে জীবনযাত্রার ব্যয় ভারসম্যহীন।

দ্বিতীয়ত ডাক্তারের যে এক্সাম্পল দিলেন সেই বিষয়ে আমার অনেক নিষ্ঠূর অভিজ্ঞতা আছে। কারন আামর তিনটা বাচ্চা নিয়ে আমি বহুবার ডাক্তারের মুখোমুখি হয়েছি। অনেকবারই হয়রানির শিকার হয়েছি কিংবা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি।

এ প্রসঙ্গে একটা ঘটনা উল্ল্যেখ করি- আামার বড় ছেলেটার বয়স যখন দেড় বছর তখন একবার ছেলেকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার কোন রকম পরীক্ষা বা টেষ্ট না করিয়েই বললেন তোমার বাচ্চার হাইড্রোসিল আছে সার্জারী করাতে হবে। আমি ও আমার স্ত্রী বিরাট টেনশণে পড়ে গেলাম। এইটুকু বয়সে বাচ্চার এ ধরনের সার্জরী। আমার স্ত্রীর চাপাচাপিতে আমি ঐ হাসপাতালে সার্জারির জন্য ভর্তিও হলাম। বাচ্চার তখন ঠান্ডার সমস্যা থাকায় সার্জারি ২ দিন পরে হবে। বাট ভর্তি হয়ে তাদের অবজারবশনে থাকতে হবে। কিন্তু আমার মনটা খচ খচ করতে ছিলো। শত হলেও বাংলাদেশের ডাক্তার। আমি ঐ ভর্তি অবস্থায়ই নার্সকে ম্যানেজ করে কয়েক ঘন্টার জন্য ছুটি নিয়ে অন্য একজন পেডিয়াট্রিক সার্জন দেখালাম। তিনি কিছু টেষ্ট করালেন এবং বললেন সার্জারির দরকার নাই । মাত্র একটা ভিটামিন বি কম্প্লেক্স সিরাপ লিখে দিলেন। বিশ্বাস করেন তার পর ঠিকই এক মাসের মধ্যে সেই সমস্যা শেষ।

এই গল্পটায় এই জন্যই রমিজের কথাটা ইনক্লুড করেছিঃ - জানেন হায়দার ভাই, পুলিশ আর কয়ড়া টাকা ঘুষ খায়। সিটি কর্পোরেশন, রেল, গনপূর্ত, শিক্ষা,স্বাস্থ্য, কাস্টম অফিস, ইনকাম ট্যাক্সের অফিস, ভূমি অফিস, আর সাব রেজিস্টার অফিসে যে ঘুষের লেনদেন হয় তার কাছে তো পুলিশের ঘুষ নস্যি। অথচ পাবলিক শুধু পুলিশের ঘুষ নিয়া ফাল পাড়ে। মানে দিন শেষে যত দোষ ব্যাটা্ নন্দঘোষের এটাই পাবলিকের মাইন্ড সেটাপ হয়ে আছে।

এরকম বহুবার বহু যাগায় আমি হয়রানি আর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি। এইতো রিসেন্ট আমি আমার একটা জমির খাজনা দিতে গিয়ে ভুমি অফিসের লোক দ্বারা যে পরিমান আক্রান্ত হয়েছি তাতে পয়সা দিয়েও সেই কাজ কবে উদ্ধার হবে খোদায় মালুম।

আর পুলিশের চরিত্র নিয়ে দেশের জনমনে ক্ষোভ বহু যুগের। পুলিশকে আইনত মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করার অধিকার দেয়া আছে ন্যায়সঙ্গত উপায়ে। কিন্তু সবসময় ন্যায়সঙ্গত উপায়ে সেটা হয়না , এটা একটা অন্যতম কারন হতে পারে।

আর সিনেমা নাটক থেকে শেখার বিষয়ে যে উদাহরন দিলেন তা পড়ে একটা জোকস মনে পড়লো। আপনিও জোকসটা আগে শুনেছেন তারপরও প্রসঙ্গ এলো বলে উল্ল্যেখ করছি- ক্লাশে মিথ্যেবাদি রাখালের গল্প পড়িয়ে শিক্ষর ছাত্রদের ঐ গল্পের মোরাল সম্পর্কে জিগ্যেস করছে; তো এক ছাত্র জবাব দিলো- স্যার যতদিন আমরা মিথ্যা কথা বলবো ততদিন লোক আমাদের সাথে আছে যেদিন থেকে সত্য কথা বলবো সেদিন থেকে কেউ আামদের সাথে থাকবেনা । কোন কিছু থেকে আমাদের ম্যাসেজ রিসিভ করা যে কতোটা নেগেটিভ ওয়েতে আমরা করি সেটা এই জোকসটার মতোই ততোটা।


এনিওয়ে, শার্দুল ভাই, আপনি কোন টপিকের উপর লেখা চান বলতে পারেন। আমি সে বিষয়ে জ্ঞাত থাকলে দুই কলম লেখার চেষ্টা করতে পারি। তাছাড়া আপনি যে কোন বিষয় আমার পোষ্টে নিঃসঙ্কচে আলোচনা করতে পারেন। এটা আমার জন্য আনন্দের।

অনেক ভালো থাকবেন। আপনার মন্তব্যের লাইন বাই লাইন কোন উত্তর দেয়া আমার জন্য কঠিন। কারন আপনার প্রায় সর ইন্সট্যান্সই যতার্থ বলে মনে হয়। বহু বিষয়ে একমত আমি।

৯| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫৪

শার্দূল ২২ বলেছেন: আমি কৃতজ্ঞ আপনার প্রতি । আমাকে নিয়ে আপনার দৃষ্টি ভঙ্গি ভালো বলে আমার কথা গুলো আপনার কাছে ভালো লাগে, আসল কথা হলো মন সুন্দর হলে সব কিছুতেই সুন্দর দেখার প্রবণতা থাকে। তেমনি একটা কিছু ভেবে নিচ্ছি। বিশেষ বলে রাখি আমি বানান নিয়ে একটু ঝামেলায় থাকি, কোন বানান নিয়ে খুব বেশি ভাবতে ইচ্ছে করেনা, সময়ের অভাবে। আমার বানান নিয়ে আমাকে ক্ষমা করবেন।

পরের বিষয়টা আসলে যৌনতা নিয়ে, বুঝতে হবে যৌনতা কাকে বলে। এর আগে বলি নেশা কাকে বলে , সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু মাদক দ্রব্য আছে যেগুলো দিয়ে মানুষ নেশা করে। এখন আর সেটা নেই। এখন মাদক সেবিদের নেশা হলো তার মনে, তার যদি মনে হয় ভাত খেলে নেশা হবে তাহলে সে ভাত দিয়েও নেশা করতে পারে। যেমন সাইকেল ম্যাকানিকের দোকানে টিউবের ফুটো সারাতে যেই আঠা থাকে সেটা খেয়েও নেশা হয়। ভারতে বিখ্যাত ঔষুধ কোম্পানি নিকোলাস ,তাদের একটা কাশের সিরাপ ফেনসিডিল সেটা আমাদের দেশে নেশার উপাদান। এভাবে মাদক সেবিরা নানা জিনিশকে মাদক হিসেবে মগজে ঠাঁই দিচ্ছে।
সেক্স বা যৌনতা অনেকটা সেই রকম। কে কিসে ক্রেজি হয় তা ব্যক্তির উপর নির্ভর করে । যেমন ধরুন যদি মেয়েরা জন্ম থেকে তার হাতের একটা আঙ্গুল ঢেকে রাখতো তাহলে আমরা পুরুষরা সেই আঙ্গুল অনাবৃত করেই সেক্স ফিল করতাম। যৌন সুখ একেক মানুষের একেক রকম, একটা কাজ বা চর্চা একজনের কাছে স্বাভাবিক হলেও অন্য জনের কাছে কমপ্লিট সেটিসফেকশান হয়ে যেতে পারে। তাই সেক্স বা যৌনতা নির্দিষ্ট কোন উপকরণ নেই।
একসময় যখন মোবাইল ছিলোনা, ইন্টারনেট ছিলোনা তখন ছিলো চটি বই সেটা এক ক্লাস নিচু শ্রেনীর জন্য, এরপর একটু শিক্ষিত মানুষের জন্য চটি রুপ বদল করে এসেছে উপন্যাশে, যেমন আবু বক্কর সিদ্দিক নামে একজন ধর্মীয় লেখক ছিলেন , তিনি তার বইতে কথায় কথায় নামাজ আদায় বিষয়টা বলতেন, তার বর্নণা এমনও ছিলো এখন তারা বাসর ঘরে, বাসর শুরু করার আগে তারা দুই রাকাত নামাজ আদায় করে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে গালে মুখে চুমু খেলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এতেই নাকি সেই সময়ের আমাদের বড় ভাইরা উত্তেজনায় তাল গাছে উঠে যেতেন। সিনেমায় বাতাসে সাবানা ম্যডামের আচল নিচে পড়ে গেলে হলের মধ্যে নাকি হৈ হৈ একটা শব্দ উঠে যেত। সাবানা ম্যডামকে তো সবাই জানে উনার আচল পড়লে আর কতটুকুই বা দেখা যেত তাতেই সেই সময়ের যুবকের রাতের ঘুম হারাম।
মুল কথা আমি বলতে চাই যৌনতা কি এবং কোথায় কার সাথে কিভাবে কখন চর্চা হতে পারে। একটা সম্পর্কের কতটা পথ পার হলে যৌনতায় যেতে পারে। আর এই শরীর সুখ অনুভুতি এসবে যাবার আগে মানুষটার মন মগজ রুচি সহ প্রতিটা ধাপ পার হবার পর হতে পারে। এই শরীর চর্চা কি আদৌ কোন গল্প কবিতা সাহিত্য উপস্থিত করা কিংবা সার্বজনিন করে দেয়া কি যৌণতা নষ্ট করেনা? একটা মানুষ যদি নিজের মানুষের বাইরে শব্দে বাক্যে কার্যকলাপে যৌন চর্চা করে তাকে কি আমরা সঠিক মানুষ হিসেবে ভাবতে পারি ? আমার মতে দুনিয়াতে একটা মাত্র বিষয় আছে যা তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতিতে হলে সেটা হবে বিকৃত। পুরুষ অথবা নারীর শরীর বা অনুভুতি নিয়ে আমার যত ভাবনা আমি ছাড়া আর যাকে নিয়ে করছি এই দুইজনের বাইরে আর কোন অজুহাতে কোথাও যেতে পারবেনা। যদি যায় সেটাই হলো নষ্টামি। যৌনতা নিজস্ব একটা জগত আছে, একটা সন্মান আছে জীবনের মতই মুল্যবান।আপনি যতই সুন্দর ভাবে এটাকে তৃতীয় ব্যক্তির সামনে উপস্থাপণ করেননা কেন সেটাকে অপমান করা হবে, কারণ শরীর সৌন্দর্য সুখ অনুভুতি এসব দুজনের বাইরে তিন জন নিয়ে নয়। সুতরাং কোন শরীরের কোন অংশটা আমাকে পাগল করেছে কিংবা কোন ভাবনাটা আমাকে আন্দোলিত করে সেটা আমি জানবো অথবা আমার মনোনিত মানুষ জানবে এর বাইরে একটা প্রানীও না।

এসব নিয়ে আমি একটা পোষ্ট দেবো ভেবেছিলাম কিন্তু পোষ্ট দিলে আমাকে কমেন্ট এর জবাব দিতে হবে , আর সেই সময় টুকু আমার হাতে থাকেনা বলে আমি পোষ্ট এ যাইনা, যদিও আমার একেকটা মন্তব্য পোষ্টের পর্যায়ে যায়। আমি জানিনা আপনি এমন বিষয়ে কোন লেখা বা মন্তব্য করতে চাইবেন কিনা। যদি না চান তাতেও কোন আপত্তি নেই,। কিন্তু আমার মনে হলো এই টপিকে আমার অনেক কথা বলার আছে।

আবারও কৃতজ্ঞতা।

শুভ কামনা

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:১১

মোগল সম্রাট বলেছেন:



বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সুযোগ আছে। এ বিষয়ে আপনি চাইলে সময় নিয়ে লিখতে পারেন। দুই রকমের হতে পারে সে লেখা। অনেক গবেষণা মুলক এবং ছোট গল্প আকারে সে জন্য অবশ্য অনেক সময়ের দরকার। বিষয়টি নিয়ে আমি কখনো কিছু লিখিনি। তবে আপনি যখন এ বিষয়টি সামনে আনলেন তখন সময় করে আরো ভেবে চিন্তে কোন একসময় লিখবো। কিন্তু আপনার প্রতিটা মন্তব্য সম্পর্কে আমি আগেও বলেছি অবশ্যই মন্তব্যগুলো মান সম্মত এবং সেগুলো পোষ্ট হিসাবে দিতে পারেন। পোষ্টের মন্তব্য আপনি সময় করে ধীরে সুস্থে অবসর সময়ে দিবেন তাতে তো কোন সমস্যা নেই।

কে কোন মুল্যবোধ নিয়ে আছে তার উপর অনেকটাই যৌনতার বিষয়গুলো নির্ভর করে। দেখুন সাহিত্যে যৌনতাকে সুখানুতির কোন বিষয় হিসাবে উপস্থাপন করা আর যৌনতার বিষয়ের অজ্ঞতা গুলো সাহিত্যে উপস্থাপনের মাধ্যমে একটা পরিস্কার ধারনা দেয়া বা সমাজ চিত্র গুলো তুলে ধরার মধ্যে অনেক তফাৎ আছে।

যাই হোক, এখানে পড়ে আবার মন্তব্য করবো । কাজের ফাকে ফাকে মন দিয়ে আসলে মন্তব্য করা কঠিন। কনসেন্ট্রশন নষ্ট হয়ে যায়।

পরে আবার এসে মন্তব্য লিখবো ।

শুভকামনা ।



১০| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪০

শার্দূল ২২ বলেছেন: আপনাকে দেখছিনা কয়দিন ধরে, আপনি ঠিক আছেন তো? সময় পেলে এখানে পদচিহ্ন রেখে যাবেন যেন বুঝতে পারি আপনি ভালো আছেন ।

শুভ কামনা

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৫৫

মোগল সম্রাট বলেছেন:



প্রিয় শার্দুল, আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

আসলে বিরাট একটা ব্যাস্ত সময় কিছু ছোটখাটো ঝামেলার মধ্যে গত প্রায় পনেরো দিন ধরে আছি। ব্লগে আসতে পারছিনা। অন্য সবকিছু ভালো আছে। আলহামদুল্লিল্লাহ।

অফিস পলিটিক্স কি জিনিস সেই নোংরা বিষয়গুলো ফেইস করতে হচ্ছে। হাই লিভিং কস্ট দিয়ে সংসার নিয়ে ঢাকার শহরে সার্ভাইব করার ইদানিং চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্চে। তার উপর যদি অফিসের টেনশন সারাক্ষন তাড়া করে তখন কেমন লাগে বলেন। সব মিলিয়ে মাথা ঠান্ডা করে ব্লগে আপনাদের সাথে দুইএকটা কথা বলারও সময় পাচ্ছিনা। তবে ঝামেলা গতকাল মিটিয়ে ফেলেছি অনেকটা । আশাকরি নিয়মিত হবো আবার ।

আপনার জন্য শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.