নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সূর্য থেকে অসম্ভব শক্তিশালী আলোকরশ্মি চাঁদের উপর পড়ে। সে চাঁদ কিছুদিন জোছনা বিলায় আমাদের মাঝে।অমাবস্যায় কেউ চাঁদকে ভুলে যায় না।অপেক্ষা করে জোছনা ফিরে আসার ।সূর্য না হই ,মাঝে মধ্যে জোছনা হতে চাই।অমাবস্যায় হাহাকার হতে চাই মানব মনে।

আলমগীর জনি

গল্প বলি

আলমগীর জনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ উড়ে যায় পাখি

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩১



মৃণাক্ষী হাঁটছে। অদ্ভুদ ভাবে হাঁটছে ।তার এই হাঁটার পিছনে বিশেষ কোন উদ্দেশ্য নাই। সে একটা বিশেষ কথা মেনে চলে ।সব কিছুর পিছনে উদ্দেশ্য থাকতে হয় না। উদ্দেশ্য জানা থাকলে এক ঘেয়েমি লাগতে পারে।রুটিন মাফিক কাজ।আমরা সবাই জীবনের রুটিন জানি।সহজ রুটিন "জন্ম-বেঁচে থাকা-মৃত্যু"। সব কিছুর শেষে মানুষের মৃত্যু। মানুষ এটা জানে ।আর জানে বলেই মানুষ অনেক কিছু চায় ।এসব না পেলে হতাশ হয়ে পড়ে। নাহ,এটা মৃণাক্ষীর পছন্দ না। অন্য কারো পছন্দ কিনা মৃণাক্ষী জানে না । তার কোন লক্ষ্য থাকবে না । সে হাঁটতে থাকবে অনন্ত কালের দিকে।

হাঁটতে হাঁটতে মৃণাক্ষী কারো সাথে কথা বলছে।মানুষ একা থাকতে পারে না। মানুষ যখন একা থাকে তখনও তার সাথে কেউ একজন থাকে।মুনকার নাকির ফেরেশতার বাহিরেও একজন পাশে থাকে।পাশে না থাকলেও মাথার মধ্যে ঘুরঘুর করে ।সে একজন সবসময় জানা কেউ হতে হবে এমন কোন কথা নাই।জানা মানুষদের সাথে কথা বলা বিরক্তিকর।এরা সবকিছুই জানে।এদের যখন আপনি একটা জানা গল্প দ্বিতীয়বার বলবেন তারা হো হো করে হেসে বলবে এক গল্প কয়বার?

মৃণাক্ষী এখন যার সাথে কথা বলছে তার কোন নাম নাই।ধরা যাক তার নাম "ক" ।পাটীগণিতের জটিল হিসাবের মত ধরে নেয়া যাবে এমন।এত কোন বাধা থাকার কথা না। যাই হোক তার লিঙ্গ কি? সে পুরুষ না মহিলা? আশে পাশে থাকলে দেখে বুঝা যেত কিন্তু এই মানুষটা তো মস্তিষ্কের ভেতর থেকে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে।
মানুষ সবসময়ই পাশে কাউকে চায়।সে একজনটা পুরুষের জন্য নারী হলে ,নারীর জন্য সেটা পুরুষ। মানুষের মন এই সময় চরম জেন্ডার ডেসক্রিমিনেশন করে। কেন করে সেটা মানুষ হয়তো জানে না ।

মৃণাক্ষীও "ক" কে একজন পুরুষ ধরে নিলো।মৃণাক্ষী "মিস্টার ক" এর সাথে কথা বলছে।

-আমার সাথে হাঁটবে?
-কেন হাঁটব ?
-আমার খুব একা লাগছে জানো?
-হ্যা জানি।
-তাও হাঁটবে না?
-নাহ হাঁটবো না।
-না হাঁটলে এখানে ঘুরঘুর করছো কেন?
-আমি ঘুরঘুর করছি না।তুমি আমাকে ডেকে এনেছো।
-আমি ডাকি নি।
-ডেকেছো।তুমি যে "মিস্টার ক" এর সাথে কথা বলছো সে আসলে আমিই।তুমি মনে মনে আমাকেই চাইছো।
-তন্ময়, তুমি এখান থেকে যাবে?
-যাচ্ছি।

তন্ময়ের সাথে মৃণাক্ষীর ব্রেকাপ হয়েছে মাস দুয়েক আগে।মৃণাক্ষীর কোন দোষ ছিল না।বেশ কিছুদিন ধরেই তন্ময় তাকে উপেক্ষা করছিল।মৃণাক্ষী বুঝতে পেরেছিল সব।কিন্তু কিছু বলে নি।সে চাইছিল তন্ময় নিজে থেকে শুধরে যাবে।তন্ময় যার সাথে ঘোরা শুরু করেছিল সে মৃণাক্ষীর পরিচিত।সেদিন সে দেখলো মেয়েটা তন্ময়ের সাথে ছবি তার ফেসবুকে দিয়েছে।মেয়েটির নাম নীলিমা। মৃণাক্ষী নীলিমাকে জিজ্ঞেস করলো কে রে ছেলেটা? নিলীমা উত্তর দিলো, "আপু, পরে বলব একদিন। এখন লজ্জা করছে।" সে মৃণাক্ষীর ছোট বোনের বান্ধবী। তন্ময় হয়তো জানে না। জানলেও কিছু যায় আসে না তার। মৃণাক্ষীর বুঝতে বাকি রইল না। মেয়েরা খুব দ্রুতই হৃদয় ঘটিত ব্যাপার স্যাপার বুঝে ফেলতে পারে।

মৃণাক্ষী তারপরও চাইছিল সব কিছু ঠিক হয়ে যাক।কিন্তু কিছু ঠিক হবে না সম্ভবত ।তার এখন একা একাই হাঁটতে মন চাইছে।কিন্তু মানুষ চাইলেও একা থাকতে পারে না । হারিয়ে ফেলা মানুষটার স্মৃতি বারবার ঘুরে ফিরে আসে। মৃণাক্ষী রাস্তার পাশে বসে পড়ল এবার।আবার মি. ক এর আগমণ।মৃণাক্ষী চাইছিল না আবার সে আসুক ।তবু সে আসলো। মৃণাক্ষী "মিস্টার ক" এর সাথে কথা বলা শুরু করল আবার।

-"মিস্টার ক"আমার খুব একা লাগছে।
-আমি কি করব?
-তুমি কি করবে মানে? আমার হাতটা চেপে ধরো।
-আমি তোমার হাত ছেড়ে দিয়েছি।
-তন্ময়, তুমি কখনোই আমাকে বুঝলে না।
-এত বুঝতে হবে না ।

মৃণাক্ষী আবার একা হয়ে গেলো।এভাবে সে বারবার একা হয়ে যায়।তার মাথায় হুট করে করে "মিস্টার ক" আসে। সে "মিস্টার ক" কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার তন্ময় হয়ে যায়। কিন্তু সে তন্ময়কে কিছুতেই "মিস্টার ক" বানাতে পারছে না।মৃণাক্ষী দেখলো কাকের একটা পলক পড়ে আছে রাস্তায়।পড়ে থাকুক। সব পাখির পলক নিয়ে মানুষের আগ্রহ দেখানো ঠিক নয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর গল্প।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫

আলমগীর জনি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.