নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন নিয়ে, মনের কথা

ব্যাক্তিগত জীবনে আমি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সাইকোথেরাপিস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যাবিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। চেম্বার করি পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে সন্ধ্যা ও রাতে।লেখালেখি আমার কাজ নয়। পারিও না। চেম্বারে রোগী দেখতে গিয়ে নানা অভিজ

ডা. সুলতানা আলগিন

ব্যাক্তিগত জীবনে আমি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সাইকোথেরাপিস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যাবিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। চেম্বার করি পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে সন্ধ্যা ও রাতে।লেখালেখি আমার কাজ নয়। পারিও না। চেম্বারে রোগী দেখতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতা হয়। ভাবলাম সেসব এই ব্লগে শেয়ার করবো। যাতে অন্যরা উপকৃত হন। আর হ্যা, চেম্বার ঠিকানা দিলাম; সেটা একরকম বিজ্ঞাপণ বটে। তবে ভুক্তভোগীরা বিএসএম এমইউ'র আউটডোর, এবং বিকালের বিশেষ চেম্বার-সেবার জন্য আসতে পারেন। ব্যাক্তিগত চেম্বারের চাইতেও আকর্ষনীয় আয়োজন। প্রতিটি রোগী দেখা হয়--একাধিক চিকিৎসক মিলে;মেডিকেল অফিসার ও অধ্যাপক সমন্বয়ে। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন আছে বিশেষায়িত চেম্বার। আসুন, মুগ্ধ হবেন অবশ্যই।

ডা. সুলতানা আলগিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি ডাক্তার বলছি

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৩৮



হ্যা, আমি একজন ডাক্তার বলছি। সম্প্রতি বারডেমে চিকিৎসক নির্যাতনের পর ধর্মঘট করেন ডাক্তাররা। তারপর থেকে ফেসবুকে, ইনটারনেটে ব্লগে এই পেশার লোকজনদের নিয়ে কতরকম মন্তব্য করে চলেছেন সাংবাদিক-ব্লগারসহ অনেকে।

এটা অবশ্যই মানছি যে--চিকিৎসক ধর্মঘট কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। ডাক্তারি হল জরুরি সেবা খাত। এখানে ধর্মঘট করে হাজারো মানুষের সমস্যা সৃষ্টি না করাই কাম্য। একজন বেশ রঙ্গ করে বলেছেন-- ডাক্তারের হাতে রোগী মরলেও নাকি শুকর আলহামদলিল্লাহ বলতে হবে। কেননা, তার দাবি--কোথায় কোন ডাক্তার নাকি দাবি করেছেন_রোগী বাচলে কেউ বলে না ডাক্তার বাচিয়েছে--বলে, আল্লাহ বাচিয়েছেন। আর রোগী মরলেই নাকি বলা হয় ডাক্তার মেরেছে।

এভাবে তিলকে তাল করে নানা গল্প গুজব ছড়িয়ে তর্কবিতর্কের কোন মানে নেই। যুক্তর নিরিখেই সব কিছু দেখা দরকার।

ডাক্তারি একটা বিজ্ঞান। আধুনিকতম বিজ্ঞান। এরপাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা আবিস্কার। সহসাই বিশ্ব চিকিৎসা বিজ্ঞান নতুন অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাবে। কৃত্রিম রক্ত আবিস্কারের দ্বারপ্রান্তে চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা। রক্তরোগীদের শরীরে এই কৃত্রিম রক্ত ব্যাবহার করে পরীক্ষা নীরিক্ষার উদ্যোগ চলছে। একথা একারনেই বলা যে-- বিজ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসেবে দেখাই ভাল। এরমধ্যে আধ্যাত্মিকতা না আনাই ভাল। রোগী ভাল হলে অবশ্যই আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু ডাক্তারদের অক্লান্ত চেষ্টাকেও মূল্যায়ন করতে হবে। তেমনি রোগী সুচিকিৎসা না পেলে ডাক্তারকেও জবাবদিহি করা দরকার। সেটা করলে চিকিৎসা আরও উন্নত হবে। মান বাড়বে। সাধারণ মানুষের মাঝে পেশা আরও সম্মানিত হবে।

কিন্তু সমস্যা হয় অন্য জায়গায়--সেটা হল রোগীদের নানারকম ক্ষমতা প্রয়োগ। তারা বল থাকলে বল দেখায়। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কারও কারও ক্ষমতা থাকলে তারা ক্রিটিক্যাল রোগীকেও মুহুর্তের মধ্যে সুস্থ দেখতে চান। তাদেরকে রোগীর কন্ডিশন বুঝানো হয়। তারা বুঝতে চান না। বরং অতি বিকৃত ভঙ্গিতে জানতে চান_ তাইলে কিসের ডাক্তারি শিখছেন। শক্তি দিয়ে তারা মরনাপন্ন রোগীর সুস্থতা নিশ্চিত করতে চান। সেটা তো সম্ভব নয়। ডাক্তাররা যাদুকর নন। ইশ্বরও নন। তারা তাদের জ্ঞানমত চিকিৎসা করেন।

এটা কেউ অস্বীকার করেন না দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে এখনও সেরা ছাত্ররা পড়েন। সেখানে ভালই শিক্ষা দেয়া হয়। মাঝে মধ্যে বৃটেন ইউরোপ থেকে পর্যবেক্ষন করে দেখা হয়-- ডিএমসি, সিএমসি, সলিমুল্লাহ মেডিকেলে মান কেমন। সে অনুযায়ী সনদও দেয়া হয়। সুতরাং দেশের চিকিৎসা শাস্ত্র এশিয়ার অন্য কোন দেশের চেয়ে পিছিয়ে নেই। সমস্যা চিকিৎসা সেবা ব্যাবস্থা। ডাক্তারদের দোষ আছে অবশ্যই। রোগীদের সময় দেয়া হয় না। চেম্বারে কেউ কেউ ৫/৭ মিনিট সময় দেন। কিন্তু একজন রোগী দেখতে কত সময় দরকার সেটা বোঝেন ডাক্তারই। রোগী আত্মীয় স্বজন সেটা বুঝতে গিয়ে বলপ্রয়োগ করেন, তাকি কখনও ভাল ফল বয়ে আনবে!

আজকের প্রসঙ্গ আর বাড়াবো না। ডাক্তারদের ধর্মঘট আর হবে না যদি কতিপয় রোগীর আত্মীয় স্বজন পেশী শক্তি না দেখান। তারা যদি নানাভাবে তাদের অশুভ ক্ষমতার দাপট দেখান, ডাক্তারদের বাধ্য হয়ে ধর্মঘট জাতীয় অনাকাঙ্খিত কর্মসূচি পালন করতে হয়। দেশের ও সাধারণ মানুষের ভাল ও কল্যানের জন্য সবাইকে নিজ নিজ সীমা বুঝতে হবে। নইলে তা সকলের জন্যই অকল্যান বয়ে আনবে।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৫১

ধুমধাম বলেছেন: আমি মনে করি "ধর্মঘট জাতীয় অনাকাঙ্খিত কর্মসূচি পালন করতে হওয়া"দের পিটাইয়া আইসিইউতে পাঠিয়ে দেয়া দরকার, তাহলে তারা বুঝবে কত ধানে কত চাল

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১১

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: প্রিয় ধুমধাম....না ভাই , কেবল আমি ব্যাতিক্রম হলে চলবে না। সব ডাক্তারদের ব্যাতিক্রম হতে হবে। আমি তো নগন্য চিকিৎসক মাত্র। তারপরও বলি সারা জাতির প্রত্যাশা_ ডাক্তাররা যেন ধর্মঘট না করেন। সে ব্যাপারে বিধিবিধান। আপনি অবশ্য একরকম বিধান দিয়েছেন--আপনার ভাষায়--"""আমি মনে করি "ধর্মঘট জাতীয় অনাকাঙ্খিত কর্মসূচি পালন করতে হওয়া"দের পিটাইয়া আইসিইউতে পাঠিয়ে দেয়া দরকার, তাহলে তারা বুঝবে কত ধানে কত চাল""" । বলাই বাহুল্য আপনি ক্ষোভের বশে কথাগুলো বলেছেন। ঠিক আছে। এখানে লিখে বলছেন। আপনি বা এরকম অনেকে দেখা যায় হাসপাতালে বসেও ঠিক এইরকম ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ডাক্তারদের পিটাইয়া আাইসিইউতে পাঠাইতে চান। কেউ পিটাইয়া ভাংচুর চঅলাইয়া সেই উদ্যোগ নেন। ভাইরে ডাক্তাররাও মানুষ। সেবার শপথ নেয়া মানুষ। কিন্তু আপনারা যদি এই ভাষা প্রয়োগ করেন---এই বেচারারা যাবে কোথায়!
সমস্যা হয়-- যখন আমি অঅপনি এই জাতীয় অনাকাঙ্খিত আচরণ করি--খেয়ালই করি না কি করেছি কি বলেছি! শুধু অন্যপক্ষকে পিটাইয়া আইসিইউতে পাঠাইতে চাই। তাহলে সমস্যার সমাধান কেমন করে হবে ভাই। আপনারাই ভাবুন।

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

ধুমধাম বলেছেন: হয়তো, আপনি ব্যতিক্রম! কিন্ত 'ধর্মঘট জাতীয় অনাকাঙ্খিত কর্মসূচি'র ঠেলায় যে পড়েছে সে কখনো আপনাদের নিয়ে ভালো কিছু বলবে না!

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০০

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আসলে ডা: দের সাথে খারাপ আচন যেমন কাম্য নয়, তেমন রোগিরা যেন ভাল সাপোর্ট পায় তাই সবার কাম্য। দু একটা ঘটনাই প্রেক্ষাপট নয়। এগুলো একসিডেন্ট বটে। আশা করি সবাই সবার প্রতি সহানবুতি হবে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১২

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: সুজন আপনার সঙ্গে একমত।

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০৯

মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেছেন: এখন পর্যন্ত কয়জন ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিল হইছে? ৪২ বছরে ২/১ টা কিনা সন্দেহ। ঘুষখোর আমলার বিচার নাই,ডাক্তারেরও বিচার নাই। বাহ, কি মজা !!! আমাদের আর কে পায় !!! আমরা না সবাই রাজা !!!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: ভুল চিকিৎসায় লাইসেন্স বাতিলের আমরাও পক্ষে। চিকিৎসায় জবাবদিহি থাকবে। কিন্তু জবাবদিহি মানে কি পেশী শক্তি। সেটাও কি কাম্য! বলেন ভাই--রোগী পক্ষ যদি ডাক্তারদের পিটাইয়া আইসিইউতে নিতে চায়__ডাক্তার আত্মরক্ষার জন্য শান্তিপূর্ন কর্মসূচি করবে তাই না। ভুল চিকিৎসার জন্য অবশ্যই কড়া জবাবদিহি দরকার। ভুয়া চিকিৎসার জন্য কঠোর ব্যাবস্থা দরকার। আপনার মত প্রশাসনের কাছে এ দাবি আমাদেরও। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজান। ভুল ও ভুয়া চিকিৎসা-- ভুইফোড় মেডিকেল শিক্ষা র ব্যাপারে আসুন সবাই সোচ্চার হই।

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০৯

আলী খান বলেছেন: আপনার কথাই মেনে নিলাম চিকিৎসা একটি বিজ্ঞান....আপনারা সেই বিজ্ঞানের কতটুকু যথাযত ব্যবহার করছেন....আপনারা হয়ে গেছেন টাকার কুমির...আমি অসুস্থ হওয়ার আগে মনে করতাম পুলিশ সবচেয়ে খারাপ...কিন্তু সেই ধারনাটুকু এখন বদলে গেছে....পুলিশ নিরিহ মানুষের আর্থিক ক্ষতি করে আর ডাক্তার মানুষের আর্থিক ও জীবনের ক্ষতি করে..........

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২৬

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: ভাই আলী খান সাহেব--আপনার আবেগ অনুভূতির প্রতি আমি সহমত। কিন্তু ডাক্তাররা হয়ে গেছেন টাকার কুমীর! কথাটা কি আসলে ঠিক। আপনি হয় তো ঢাকা সহ বড় শহরের কয়েক হাজার প্রফেসর সহযোগী প্রফেসর লেভেলের ডাক্তার প্রসঙ্গে কথাটা বলেছেন।তারা চেম্বার ডাক্তার। কিন্তু ফিল্ড হাসপাতালে যে ডাক্তাররা ডিউটি করেন--তারা কি টাকার কুমীর। মূলত তারাই দেশের স্বাস্থ্য সেবার প্রান বাচিয়ে রাখেন। তারা তো অন্য দশটা সরকারি পেশার মত বেতন পান-- কোন ঘুষ টুষও নেই। হয়তো জিপি করেন। তাতে কি টাকার কুমীর হওয়া যায়।
আরেকটা কথা। টাকার কুমীরের দায় সবাইকে নিতে হবে। আমাদের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ভার্সিটিতে বিকেল চেম্বার আছে। ২০০ টাকায় প্রফেসর সহ যোগী প্রফেসর লেভেলের চিকিৎসা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ডাক্তার সামান্য পান। তারপরও ব্যাপক সাড়াকই। প্রান গোপাল স্যারের এতবড় উদ্যোগ---রোগীরা কম পয়সায় সেবা নেন না কেন! আমি সহ আমার ডিপার্টমেন্টের সব বিশেষজ্ঞডাক্তার পর্যাপ্ত সময় নিয়ে রোগী দেখি। একজন মেডিকেল অফিসারও থাকেন সঙ্গে। তারপরও রোগীরা প্রায় তিনচারগুন বেশী টাকা দিয়ে চেম্বারে যান কেন! মোটেই আমরা কেউ রোগী ভাগিয়ে নেই না। পরীক্ষা প্রার্থনীয়। একদিন রোগী নিয়ে বিকেল চেম্বার বিএসএম এমইউতে আসেন। দেখেন কোন সিনিয়র ডাক্তার রোগীকে চেম্বারে যেতে বলেন কিনা! যদি বলেন, পত্রিকায় রিপোর্ট করেন। লাইসেন্স বাতিল করতে বলেন। কেবল একতরফা বললে সমস্যার সমাধান হবে না।

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২১

হামিদ আহসান বলেছেন: অসস্থতার সময় যে মানুষটা পাশে থাকে তিনি হলেন চিকিৎসক । তার সাথেই যদি আমার এমন আচরণ করি! মনে রাখতে হবে রোগির শরীর যদি চিকিৎসায় সাড়া না দেয় তবে ডাক্তারের কিছুই করার নেই। সবই স্রষ্টার ইচ্ছায় হয়।

সকলের সুমতি হোক সকল বন্যতার অবসান হোক । ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য...................

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: আপনার সঙ্গে একমত।

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৮

ধুমধাম বলেছেন: আমার পরিবারেও ডাক্তার আছে, কিন্ত তাদের অনুপস্তিতিতে আমার একটি সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা আমাকে আপনাদের উপর ক্রুদ্ধ করে তুলেছে!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: ভাই ধুমধাম, আপনার মানসিক কষ্টের প্রতি আমি খুবই সমবেদনা জানাই। যদি কোন ডাক্তারের কাছে বেদনা পেয়ে থাকেন--সে আত্মীয় বা অনাত্মীয় ডাক্তার হোক-- খুবই দু:খিত। তারপরও রাগ পরিত্যাজ্য। রাগ একটি ব্যাধি। অতিরাগ আরোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য সাধারন ব্যাধি। এটা কল্যান বয়ে আনে না। একজন রাগলে অন্যপক্ষও রাগে। আরেকটি কথা ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে... আত্মীয় চিকিৎসকরা সব সময় ভাল কাজে আসে না। ডাক্তারি একটি টেকনিক্যাল পেশা। আত্মীয় স্বজন সব সময় তা বুঝতে চায় না। এমনও তো ঘটে--আত্মীয় ডাক্তারকে একবার দেখিয়ে তারপর তার পরামর্শ ছাড়া অনেকে হিল্লিদিল্লি করে বেড়ান!!!

৮| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫

মরদেহ বলেছেন: আপনি বলেছেন, "এটা অবশ্যই মানছি যে--চিকিৎসক ধর্মঘট কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। ডাক্তারি হল জরুরি সেবা খাত। এখানে ধর্মঘট করে হাজারো মানুষের সমস্যা সৃষ্টি না করাই কাম্য।"
--এবং তারপরে অনেক কিছুই বলেছেন। মুলতঃ চিকিৎসাস্বাস্ত্রের গুনগান আর বাকি সবই রোগীদের আচরনগত সমস্যার কথা।

শুরুতেই মুল সমস্যায় নিজের দোষের কথা একদিকে সরিয়ে রেখে কথা বললে এটাকে সমালোচনা বলে না, অর্থহীন দোষারোপ বলে। এর আর কোন অর্থ থাকে না।
বাংলাদেশের অধিকাংশ ডাক্তারদের দুর্ব্যবহারের কথা সর্বজনবিদিত। সকলেই একরকম নয়, আপনার মতো ভালোমানুষও আছেন। তারপরেও গুটিকয়েকের জন্য বাকি সবারই একই দুর্নাম। কিন্তু এরকম ইস্যুতে রুগীদের জীবন জিম্মি করে সকলে মিলে হরতাল ডাকা এটা কোন ধরনের মানবিকতা আর বিবেকের পরিচয়! আর ভালো মানুষ হয়ে আপনার মতো "ভালো মানুষ ডাক্তারেরা" যখন এরকম অন্যায়ের পক্ষে সাফাই গান, তখন আপনাদের কোন সংজ্ঞায় ভালো মানুষ বলা যায়? আপনারা তো হোটেল ব্যবসায়ী বা মুরগী ব্যবসায়ী না -যে ইচ্ছে হলো ধর্মঘট ডাক দিলাম। আপনাদের পেশার সাথে মানুষের জীবন-মরন জড়িত। চিকিৎসা করে আপনারা কারো উপরে দয়া করেন না। চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার অর্থ ব্যায় করে আপনাদের তৈরী করেছেন। এবং পয়সা দিয়েই রোগীরা আপনাদের সেবা কিনেন, যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পয়সা দিয়ে ভুল চিকিৎসাই কিনেন। আপনাদের আচরনের কারনেই রোগীর আত্নীয় (সবাই নয়) পেশীশক্তি দেখাতে বাধ্য হয়, তাও যাদের সামর্থ্য আছে। আর সামর্থ্য না থাকলে আপনাদের অদৃশ্য পেশীর শক্তি মুখবুজে সহ্য করেন। এখন ধর্মঘট ডেকে যা করছেন এটা কি আপনাদের পেশীশক্তি প্রদর্শন নয়?
রোগীর আত্নীয় পেশীশক্তি দেখান কারন অবশ্যই আপনারা তাদের যথাযথভাবে বুঝাতে ব্যর্থ হন, অথবা এর যথার্থ অন্য কারন রয়েছে। কতোটুকু বাধ্য হলে একজন মানুষ এরকম আচরন করে যখন তার একজন নিকট-আত্নীয় মৃত্যুশয্যায়? সেসময় তাদের মানসিক অবস্থাও বিবেচনা করতে হবে। আপনাদের ভুল চিকিৎসার কারনেই কি অনেক দম্পতির দীর্ঘদিনের স্বপ্নের সন্তান পৃথিবীতে আসার আগেই মৃত্যুবরন করে নাই? অথবা অনেকের আত্নীয়ের অঙ্গহানী থেকে শুরু করে জীবনহানী ঘটে নাই? কতজন ডাক্তারের এইরকম ভুল চিকিৎসা দেয়ার কারনে শাস্তি হয়েছে এদেশে? নাকি এরকম করেই যাবেন, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করতে পারবে না? কারন ডাক্তাররা দেবতুল্য এবং সকল জবাবদিহীতার উর্ধ্বে! আপনাদের মানসিকতা কিরকম সেটা আপনার শেষ প্যারাটিতেই প্রকাশ করেছেন।

আপনার মত করেই তো এভাবেও বলা যায় যে, "এটা অবশ্যই মানছি যে--রোগীর আত্মীয় স্বজনের পেশী শক্তি দেখানো কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। এখন আসেন বাকি আলোচনা করি।" -এটা আপনারা ডাক্তাররাও মেনে নিন, দেখবেন তাহলে আর কোন বিতর্ক থাকবে না।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: সংঘাত ও হিংসায় সমাধান নেই ভাই। তা গোপন পেশী শক্তি হোক; বা প্রকাশ্য পেশী-দানবতা হোক;;ডাক্তাররা এই সমাজেরই। বাইরের কেউ নয় তাই না। পেশী শক্তির বাড়াবাড়ি সেটা যে তরফের হোক বন্ধ করতে হবে। আসুন অঅমরা সবাই মিলে জবাবদিহির জন্য ,সে কাজে নীতিমালার জন্য সোচ্চার হই। আর হ্যা, পেশী শক্তি দেখিয়ে আবেগ প্রকাশ করা যায়--সমস্যার সুরাহা হয় না। সমস্যার সুরাহা সুচিন্তায়--রক্তরক্তিতে নয় ।

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:১২

আলী খান বলেছেন: আরে ভাই অধিকাংশ ডাক্তারদের আচরণে মনে হয় এদেরকে সাংবিধানিক দায় মুক্তি দেয়া হয়েছে.....সবচেয়ে বড় কথা এই দেশে জন্ম নেয়াটা সবচেয়ে বড় ভুল আর সেই ভুলের সবচেয়ে বড় শাস্তি হল অসুস্থ হওয়া........

দোয়া করবেন আর একটু সুস্থ হয়ে নেই, আপনার সাথে একদিন দেখা করব..ইনশা-আল্লাহ.....

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২১

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: আপনার আরোগ্য কামনা করি। যেখানেই থাকুন নিশ্চয়ই ডাক্তাররা আপনার সুস্থতা নিশ্চিত করতে কার্পন্য করবেন না।

১০| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩

আলী খান বলেছেন: আপনি ডা: হারুন সাহেবের হাসপাতালে চেম্বার করেন.....যদি দেখা হয় সেই হাসপাতালের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করব......

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৩

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতা আপনি লিখে জানাতে পারেন।

১১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:১৫

সুজাহায়দার বলেছেন: আমাদের সমস্যা টা আসলে আমরাই, আমাদের কারো অসুখ হলে সব আত্নীয় স্বজন নানা উপদেশ দেয়, বুঝে না বুঝেই। এটা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকর।

আমার নিজের অভিজ্ঞতা যদি বলি

এক বার আমার Wife এর Ovarian hyperstimulation syndrome (OHSS) হল, পেট ফুলে করুন অবস্থা, হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল, সব আত্নীয় স্বজন নানা পরামর্শ, অমুক মেডিসিন ডাক্তার দেখাও, অমুক জায়গায় নিয়ে যাও ইত্যাদি,
যহেতু আমার ডাক্তার আমাকে রোগটি নিয়ে বুঝিয়েছিলেন, আমিও ইন্টারনেট ঘেটে রোগটি সম্পর্কে জেনেছিলাম, সে যাত্রায় বিভ্রন্ত হয়নি,

ডাক্তার আমাকে এও বলেছিলেন সবার কথা তুমি শুধু শুনবে, কোন কিছু বলার দরকার নেই,

আল্লাহর অশেষ রহমত ও ডাক্তারের সহায়তায় ২ দিন পর বাড়ী ফিরে গিয়েছিলাম।

আমি যদি ডাক্তারের কথামত চিকিৎসা না করে আত্নীয় স্বজনদের কথামত দৌড়াদোরি করতাম, তাহলে হয়ত খুব খারাপ হত,

আমি এখানে বুঝাতে চাচ্ছি যে ডাক্তারেরা রোগীদের রোগ নিয়ে এবং চিকিৎসা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবেন যেটি আমার ডাক্তার করেছিলেন, আর রোগীর বা রোগীর গার্ডয়ানের উচিত এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নেয়া।

শুধু শুধু না বুঝে দৌড়ালে ক্ষতি ছাড়া লাভ হবেনা।

১২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৯

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: আপনার সঙ্গে একমত।

১৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৪১

কাজী মাসুক বলেছেন: ভারতীয় বাংলা মুভি-অলিখ সুখটা দেখবেন নচীকেতার “ডাক্তার ”গানটি শুনেছেন।এ কথা কী অস্বীকার করবেন ডাক্তাররা টাকার প্রতি অতি মাএায় ঝুকে গিয়েছে,২ ,৪, মিনিটে কি বুঝা য়ায়,
আমার অভিজ্ঞতা ডাক্তার প্রেসার মাপছেন আর বলছেন বালির ট্রাক আসছে কি না
বাংলাদেশে ২ টি শ্রেনীর উপর মোটামুটি সবাই বিরক্ত ১,পুলিশ ২,ডাক্তার
প্রেকটিকেলী য়াচায় করে দেখবেন

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৫

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: নচিকেতার গানটিআমিও শুনেছি। অতি চমৎকার। ডাক্তারি-পুলিশ-রাজনীতিবিদ- হল অতি জরুরি জনপ্রিয় পেশা। খাদ্যের দোকানদারও তেমন। তাদের নিয়ে নানা সমালোচনা থাকবেই। থাকা উচিত। তাদের যেসব মন্দ, খারাপ দিক--রেসগুলো নানাভাবে মিডিয়ায় আসা উচিত। তাদের ডাক্তাররা তাদের ভুল বুঝে নিজেদের আরো গ্রহনযোগ্য করতে পারেবেন জনমানুষের কাছে। কেননা, ডাক্তারি দরকারি পেশা। ডাক্তার ছাড়া সভ্যতা চলবে না। আপনারা অবশ্যই আপনাদের খারাপ লাগা অনুভূতিগুলো প্রকাশ করুন। তাতে পেশাজীিবিদের বিবেক জাগবে। পাশাপাশি ভাল লাগাগুলোও বলুন। তাতে পেশাজীবিরা উৎসাহিত হবেন আরও ভাল কাজ করতে।

১৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:০৬

সীমানা ছাড়িয়ে বলেছেন: আপনার বিনয়ী দৃষ্টিভঙ্গি ভাল লাগল। আমিও আপনার মত বিশ্বাস করি যে অধিকাংশ ডাক্তারই আসলে কসাই না। সমস্যা হল ডাক্তাররা নাম করে ফেললেই ওনাদের ভাবভঙ্গি বদলে যায়। তখন টাকা উপার্জনই মূখ্য হয়ে উঠে। রোগীর রোগের বিবরনও ঠিকমত শুনতে চান না। অন্যান্য দেশে কিন্তু চিকিৎসার মান ভাল-মন্দ যাই হোক না কেন, রোগীর কথা ডাক্তারকে শুনতেই হবে। আমাদের অনেক সিনিয়র ডাক্তাররা এখনও সেই মানসিকতা তৈরি করতে পারেন নি। তারপরেও বলব যে, অনেক ভাল ডাক্তার আছেন, অনেক ভাল মানসিকতার ডাক্তার আছেন। সেজন্য আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা অন্য অনেক সেক্টরের মত কলাপস করেনি।

১৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৯

ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: সীমানাকে অনেক ধন্যবাদ। আসলে রোগী ম্যানেজমেন্ট , ব্যাবহারবিধি আমাদের শিক্ষারও অংশ। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ--এটা আমরা ভুলে যাচ্ছি। তাদের হয়ে অবশ্যই দু:খ প্রকাশ করছি। তবে জেনারেল হাসপাতোলে রোগী ম্যানেজমেন্ট কি কঠিন কাজ, তা ভুক্তভোগী ডাক্তার জানেন। সেটাও একবারে অবহেলা করলে ডাক্তার সমাজের প্রতি অবহেলা করা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.