![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্যাক্তিগত জীবনে আমি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সাইকোথেরাপিস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যাবিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। চেম্বার করি পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে সন্ধ্যা ও রাতে।লেখালেখি আমার কাজ নয়। পারিও না। চেম্বারে রোগী দেখতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতা হয়। ভাবলাম সেসব এই ব্লগে শেয়ার করবো। যাতে অন্যরা উপকৃত হন। আর হ্যা, চেম্বার ঠিকানা দিলাম; সেটা একরকম বিজ্ঞাপণ বটে। তবে ভুক্তভোগীরা বিএসএম এমইউ'র আউটডোর, এবং বিকালের বিশেষ চেম্বার-সেবার জন্য আসতে পারেন। ব্যাক্তিগত চেম্বারের চাইতেও আকর্ষনীয় আয়োজন। প্রতিটি রোগী দেখা হয়--একাধিক চিকিৎসক মিলে;মেডিকেল অফিসার ও অধ্যাপক সমন্বয়ে। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন আছে বিশেষায়িত চেম্বার। আসুন, মুগ্ধ হবেন অবশ্যই।
একজন পেশাদার ডাক্তার এবং ব্লগে টুকটাক লিখি বলে এক বোন আমার কাছে জানতে চেয়েছেন--দেশে কোথায় ভাল হার্ট রোগের চিকিৎসা হয়। জবাবে আমি বলেছি--দেশে সত্যিকার অর্থে একাধিক প্রতিষ্ঠানে ভাল হার্ট ডিজিজ চিকিৎসা হয়। ন্যাশনাল হার্ট ডিজিজেস ইনস্টিটিউট--যার পোষাকি নাম--ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিও ভাসকুলার ডিজিজেস--এনআইসি ভিডি--আমরা সহজে বলি হার্ট ইনস্টিটিউট-- সেখানে খুবই ভাল চিকিৎসা হয়। গেলে হয়তো দীর্ঘ সিরিয়ালের বিড়ম্বনা আছে। সেটা রাষ্ট্রনৈতিক সমস্যা। বেসরকারি ভাবে ইউনাইটেড, এ্যাপলো, ল্যাবএইড আছে। নানা অভিযোগ আছে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তারপরও সেসবের পেছনে নানা কারণও আছে। বিএসএমএমইউ-তে যেতে পারেন। সেখানে মূল্যবান পরামর্শ পাবেন। সবজায়গাতেই দেশ সেরা তথা বিশ্বমানের ভাল চিকিৎসক আছেন। দরকারি যন্ত্রপাতি আছে। হয়তো সর্বাধুনিক নেই। তারপরও আশা করি, সাধ্য মত সবাই ভাল সেবা দেবেন।
প্রশ্ন হল--আমি কি সন্তুষ্ট করতে পেরেছি ওই ভুক্তভোগীকে। মনে হয় না। দেশীয় চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের এত ক্ষোভ! পত্রিকায় এত ভুল চিকিৎসা, অবহেলার রিপোর্ট!!মনে হয়না তিনি আমার কথায় আশ্বস্ত হবেন। আমাকে তিনি বিশ্বাস করবেন!!!
সুচিকিৎসার জন্য ভাল মানের সেবা ও ডাক্তারদের ভাল ব্যবহার অবশ্যই প্রথম শর্ত। আন-কন্ডিশনাল কন্ডিশন।ভাল ব্যবহার ডাক্তারির অংশ। আবশ্যিক অংশ। সেটা স্বীকার করে অপর পিঠের কিছু সমস্যাও বলতে হচ্ছে। না বললে এই সমস্যার সমাধান হবে না। প্রশ্ন হল--
দেশীয় চিকিৎসকদের প্রতি এত ক্ষোভ কেন! কারন--ডাক্তার রোগী অনাস্থা। আগে থেকেই অবিশ্বাস তৈরী করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া। আবার অনেক চিকিৎসক অঅমরা আছি--রোগীকে ঘরের লোক ভেবে ঝগড়ায় লেগে যাই। বিদেশী রোগী ২/১ জন কালে ভদ্রে আসে। তাদেরও সহনশীলতা বেশী। আমরাও বেশী যত্ন নেই কেবল বিদেশী বলে নয়--তাদের ভদ্রতা ও সহনশীলতার চমৎকার নিদর্শন দেখে। সেকারনে ভাল চিকিৎসা পেতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে। বিশ্বাস করতে হবে। আস্থা রাখুন আপনার চিকিৎসকের প্রতি ঠকবেন না।
এ কটা ব্যাপার নিশ্চয়ই খেয়াল করে দেখবেন, যাদের অঢেল পয়সা আছে--তারা দেশীয় চিকিৎসার ওপর পুরো আস্থা হারিয়ে মহাবিরক্ত চিত্তে ব্যাংকক বামরুনগ্রাড/ সিংগাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ/অস্ট্রেলিয়া/ আমেরিকা চলে যান। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি--সেসব হাসপাতালে বাংলাদেশী রোগীর মৃত্যুর হার কম নয়। ব্যাংককে বামরুন গ্রাডে , সিংগাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথে অনেক রোগী মারা যায়। অনেকে চিকিৎসা নিতে রীতিমত আত্মীয় স্বজনের লটবহর নিয়ে চলে যান। একারনে এখন মেডিকেল ট্যুরিজম কথাটা চালু। কিন্তু সেখানে কিন্তু কোন রোগী মারা গেলে যতই তারা সপরিবারে যান না কেন--কোন ভাংচুর করতে পারেন না। চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ এনে মিডিয়া কভারেজ পান না।
চিকিৎসা অবহেলা আমার যে করি না , তা কিন্তু নয়। অবশ্যই করি। কিন্তু বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ আসে, রোগী যখন মারা যায়। তখন দেশীয় হাসাপাতাল , দেশীয় পেশী শক্তি , দেশীয় মিডিয়ার সুবিধা ব্যাবহার করে আমরা তান্ডব চালাই। পুলিশের মাঝারি কর্মকর্তা হলেও ডাক্তার পেটাই। আবার ডাক্তাররাও দেশীয় সন্তান। তারা বাইরে থেকে এদেশে আসেন নি। এদেশের আলোহাওয়া , রাগ-বিরাগ-উত্তেজনা-মাস্তানি-প্রিয়তা তাদের মধ্যেও থাকবে। তারা তো দেশটাকে সৌদী আরব, ইরান বা আমেরিকা ভেবে নিজেদের প্রবাসী ভেবে চিকিৎসা করেন না। তারাও তাদের রাজনৈতিক সাংগঠনিক শক্তিমত্তা দেখান। যে কারনে দুহাতে তালি বেজে যায়। সংঘাত মারপিট লেগে যায়।
ব্যাংককের বামরুনগ্রাদের অভিজ্ঞতা....
গেল বছরই অঅমি যখন ব্যাংককে একটা চিকিৎসা সম্মেলনে ছিলাম; তখন একজন শীর্ষ ব্যাংকিং পেশাজীবী সেখানে বামরুনগ্রাদে হার্ট রোগে মারা যান। অনেকদিন ধরে বিপুল টাকা পয়সা খরচ করে তার চিকিৎসা হয়েছে। তিনি ডাক্তার সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তিনি নিয়ে যান নি--তবুও বামরুনগ্রাদের কাছাকাছি এলাকায় তার পরিচিত অন্তত একশত বাংলাদেশী ছিল। তিনি মারা গেলে দেশের রোগীদের স্বজনদের মত আমাদের নানা অবহেলা-সমস্যার কথা মনে হয়েছে। শোকের পাশাপাশি ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। কই আমরা তো সেখানে বামরুনগ্রাড হাসপাতাল ভাংচুর করে ক্ষোভ মেটাতে পারি নি। বরং বিশাল অঙ্কের বিল --যা বাংলাদেশের তুলনায় ৪/৫ গুন বেশী--তা মিটিয়ে লাশ নিয়ে দেশে এসেছি।
আমাদের মধ্যে অনেক রাগ হয়েছিল। যেহেতু অনেক চিকিৎসক নানাভাবে সেখানে ছিলাম, দেশের একজন বিশিষ্ট হার্ট সার্জনও তখন সপরিবারে সেখানে ছিলেন--তারও পর্যালোচনা ছিল--রোগীকে বামরুনগ্রাদ প্রাথমিক প্রাথমিকভাবে সঠিক পর্যবেক্ষন দিতে ব্যার্থ ছিল। এ ক্ষেত্রে দেশের চিকিৎসকদের মত ঠিক ছিল। সেই অনুযায়ী দেশের বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট দিলে তার আরও দীর্ঘ আয়ু অবশ্যই আশা ছিল। ভাবুন , বামরুনগ্রাদে তথা ব্যাংককে বসে তখন রোগীর আত্মীয় স্বজনদের মনের কি অবস্থা। শুধু তাদের কেন, শুভানুধ্যায়ীদের সকলের মনে হয়েছে--বামরুনগ্রাদ ধুলায় মিশিয়ে দেই। একটা অভ্যুথ্থান ঘটিয়ে ফেলি। কিন্তু মনের রাগ মনেই রাখতে হয়েছে। মুখে রা টি করতে পারি নাই। অথচ ভাবুন, এটা বাংলাদেশে হার্ট ইনস্টিটিউটে কি হত!! ডাক্তারদের ওপর হামলা করতাম। ভাংচুর করতাম। রোগী মারা গেল কেন, পরদিন সব কাগজে--সেই রাতে সব টিভিতে গরম খবর হত।
আমরা ভুলে যেতে পারি না--ডাক্তাররা মানুষ। দেবতা নয়। দেশের ডাক্তারদের যেমন ভুল হয়। বিদেশেও তাই হয়।
অপারেশনের ক্ষেত্রে থাই ল্যান্ডের বা ভারতের হাসপাতাল গুলোর ডেথ রেটের চেয়ে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটের ডেথরেট কম। মানে রোগী বাচে বেশী। তারপরও ভাংচুর কম হয় না। এর কারন কোনভাবেই আমরা মৃত্যুকে মেনে নিতে পারি না। ক্ষুব্ধ হই। প্রতিক্রিয়া করি সহিংস। দেশের বাইরে ও রাগ হয়। সেখানেও পুলিশ-অঅর্মি-রাজীতিবিদদের আত্মীয়রাও মারা যায়। কিন্তু রাগ দেখাতে পারে না। পেশী শক্তি দেখাতে পারে না। ভুল যে ডাক্তারদের হয় না। অবশ্যই হয়। সেজন্য আমরা ব্যাথিত হই। অপারগতায় দিনের পর দিন অনেক সার্জন অনুশোচনা করেন। সেটা কেউ দেখে না। আরেকটা ব্যাপার ভাংচুর যখন হয়-- শক্তি প্রদর্শন, মিডিয়ার শক্তি প্রদর্শন যখন ঘটে, তখন তরুন ডাক্তাররাও পাল্টা উত্তেজনা দেখান। বাইরে রোগীরাও শান্তি থাকেন; তা দেশে যতবড় শক্মিান হন না কেন; ডাক্তাররাও অঅপন মনে কাজ করেন। কিছুদিন আগে বিএনপির এক বড় নেতার লাশও তো বিদেশ থেকে এল। তার পুত্ররাও তো অনেক ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনেছিল সিংগাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথের বিরুদ্ধে। কই আর কি কিছু পেরেছেন!! দেশে হলে হাসপাতাল তো রনক্ষেত্রে পরিনত হত। বিষয়টা দুপক্ষ কেই বুঝতে হবে। অধৈর্য হলে চলবে না। আস্থা রাখতে হবে। সফলতাকে যেমন সহজভাবে নেন; ব্যার্থতার শোক সেভাবে নেয়া হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু সেই শোকের রুপ সহিংস, ধংসাত্মক হওয়া কাম্য নয়।
আরেকটি ব্যাপার বলতেই হয়--বামরুনগ্রাদে যে লাশ গ্রহনের ঘটনাটি ঘটল--সেখানে সেই সময় দেশের একজন সিনিয়র সাংবাদিকও আমাদের সফর সঙ্গী ছিলেন। তাকেও হাসপাতালের বাইরে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে। এত বড় সাংবাদিক--কোন পরিচয় কাজে লাগে নাই। তিনি নির্ধারিত এলাকার এক ইঞ্চি ভেতরেও যেতে পারেন নাই। দর্শার্থী লবিতে অসহায় বসে থাকতে হয়েছে। আমরা ডাক্তার হয়েও ভেতরে যেতে পারি নাই। সবদেশেই এমন ভয়ংকর কড়াকড়ি। আর দেশে তো অপারেশন থিয়েটার পর্যন্ত টিভি ক্যামেরা পৌছে যায়। এপোলো, ইউনাইটেড কোথাও বাধা মানেন না। বিএসএমএমইউ; ঢাকা মেডিকেল তো ডালভাত। ভাইরে, ডাক্তারদের কাজ ডাক্তারদের করতে দিতে হবে। ডাক্তারদের ভুল নিয়ে অবশ্যই রিপোর্ট করবেন। একশ বার করবেন। কিন্তু সবাই পারস্পরিক শ্রদ্ধা সহনশীলতা দেখান। রোগীও দেখান। তরুন ডাক্তারদের কেউ দায়িত্ব দেয় নি হাসপাতালের রক্ষী হওয়ার। তাদের সেটা মনে রাখতে হবে। তবে তারাও অপরপক্ষের বাড়াবাড়ির প্রতিক্রিয়া দেখালে ঠেকান মুশকিল সিনিয়রদের পক্ষে। উত্তেজনা এমনই জিনিস, বাদানুবাদে বাড়েই । কমে না।
৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩২
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: অনেক ধণ্যবাদ।
২| ৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭
দীপ্তপন বলেছেন: ভাল লাগল।
৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: অনেক ধণ্যবাদ।
৩| ৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪
আন্ধার রাত বলেছেন:
রক্তরোগ থাকায় পিজিতে গিয়ে সীট না পেয়ে ১ বছরের বাচ্চাসহ ৪ ঘন্টা এম্বুলেন্সে জীবনযাপন করে পিজিরই ১ জন ডাক্তারের উত্তরার প্রাইভেট ক্লিনিকে
দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়েছি। ডাক্তার সাহেব খুবই ভাল। প্রায় রাতেই উনার সাথে আমার ছোট আকারে আড্ডা হতো। গরীব রোগীদের জন্য উনার অনেক কিছু করার স্বপ্ন আছে সেটা কথার প্রতি লাইনেই উল্লেখ করতেন আবার ক্ষোভ প্রকাশ করতেন সরকার ফান্ড দেয়না, কলিগ ডাক্তাররাও ভাল কাজকে টেনে সরিয়ে দিতে চায়, কাজ না করে নাম কামাতে চায় ইত্যাদি ইত্যাদি।
তো ভাল ডাক্তার আছেন কিন্তু খুবই কম। অধিকাংশই লাইনচ্যূত। তারা দরজা দিয়ে রোগী ঢুকতে দেখেনা, দেখে বড় মোরগ ঢুকতেছে!
৩১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: এক্ষেত্রে যেটা করনীয় বলে আমার কাছে মনে হয়--সেটা হল এই ধরণের দশহাতি ডাক্তারদের এড়িয়ে যাওয়া। ডাক্তারি কোন ঐশ্বরিক পেশা নয়। তাদের ওপর দে;বতা ভর করেছে তাও নয। একটা সময় ছিল--ভারতে গেলেই দেবী শেঠীকৈ দেখাতেই হবে। লম্বা সিরিয়াল। কেন দেবীশেঠী! ভারতে ওই মানের ডাক্তার তখন কম ছিল না। এখন তো আরও বেশী। ভাবখানা যেন দেবীশেঠী একটু দেখলেই রোগী সুস্থ। আসলে তা নয়। ডাক্তারি হল টেকনিক্যাল সাবজেক্ট। সুশিক্ষিত ডাক্তারকে দেখালেই আপনি ভাল সেবা পাওয়ার কথা। এখনও অনেকে জানতে চায়--হার্টে দেশের একনম্বর ডাকাতার কে! কেন! তার সিরিয়াল কেমনে পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবতা হল--ডাক্তারিতে একনম্বর দুই নম্বর বলে কিছু নেই। হার্টে ঢাকায় ভাল ডাক্তারের অভাব নেই। কিন্তু রোগী ভাল ডাক্তার খোজে না। খোজে একনম্বর ডাক্তার। তাতে লাইন...বিশাল হয়ে যায়। কারও দিনে সিরিয়াল ১০০/১২০ও আছে। কারন তিনি প্রচার পেয়েছেন একনম্বর বলে। তাকে দেখাতেই হবে। দরকার হলে তার ড্রাইভারকে পটিয়ে সিরিয়াল নিতে হবে। এই ধারনা ও উত্তেজনা দয়া করে ছাড়তে হবে। কার ১২০ রোগী/ কার সিরিয়াল ৩০ দিন পর পাওয়া যায--তাকে না খুজে একজন ভাল ডাক্তার দেখান। তাতে ভাল চিকিৎসা পাবেন। বললেন--১২০ রোগী পেলে দেখেন কেন! আরে ভাই আমি তো আপনারই ভাই বা বোন! আপনি কি করতেন! আমরা বেশীর ভাগ এসেছি মধ্যবিত্ত নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। বাবা মা ছেলে মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চান অনেক টাকা কামাই করবে বলে। উচ্চবিত্ত হলে বাবা মা ভাবে--সন্তান ডাক্তার হলে ক্লিনিক বা হাসপাতাল করে দেবেন। কোটি কোটি টাকাও কামাবেন। নামও হবে। আগে আসুন সেইরকম বাবামা হই--সন্তানকে যখন ডাক্তার বাননোর স্বপ্ন দেখব--তখন ধনী ডাক্তার নয়--যেন মানুষ ডাক্তারের স্বপ্ন দেখব। যখন সব বাবামা যখন এই প্রতিজ্ঞা করতে পারব , তখন এই সমাজ থেকেই মানবসেবী ডাক্তার বেরুবে। তবে পৃথিবীর কোন সমাজই আমাদের মত আত্মপ্রতারনায় ভোগে না। তারা পয়সা দিতে চায়। বিনিময়ে ভাল সেবা চায়। তারা পয়সা অঅয় করতে চায় ভাল সেবা দিয়ে। আমরা সেই চেতনায় পিছিয়ে আছি।
৪| ৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪
স্বপ্ন কাঠি বলেছেন: হুম বুজলাম
৩১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪
এন ইউ এমিল বলেছেন: ডাক্তার যখন ৫০/৬০ জন রুগীর মাঝ খান দিয়ে তার চেম্বারে ঢুকেন তখন তার মাথায় একটা বিষয় ঘুরপাক খায়,
"প্রত্যেকের সাথে মিট করতে হবে এবং একটা ৫০০/- টাকার নোটও হাত ছাড়া করা যাবেনা সেজন্য পয়োজনে দেড় মিটিনের বেশি সময় রুগীকে নাদিলেও চলবে"
এমন ডাক্তারদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
৩১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: এক্ষেত্রে যেটা করনীয় বলে আমার কাছে মনে হয়--সেটা হল এই ধরণের দশহাতি ডাক্তারদের এড়িয়ে যাওয়া। ডাক্তারি কোন ঐশ্বরিক পেশা নয়। তাদের ওপর দে;বতা ভর করেছে তাও নয। একটা সময় ছিল--ভারতে গেলেই দেবী শেঠীকৈ দেখাতেই হবে। লম্বা সিরিয়াল। কেন দেবীশেঠী! ভারতে ওই মানের ডাক্তার তখন কম ছিল না। এখন তো আরও বেশী। ভাবখানা যেন দেবীশেঠী একটু দেখলেই রোগী সুস্থ। আসলে তা নয়। ডাক্তারি হল টেকনিক্যাল সাবজেক্ট। সুশিক্ষিত ডাক্তারকে দেখালেই আপনি ভাল সেবা পাওয়ার কথা। এখনও অনেকে জানতে চায়--হার্টে দেশের একনম্বর ডাকাতার কে! কেন! তার সিরিয়াল কেমনে পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবতা হল--ডাক্তারিতে একনম্বর দুই নম্বর বলে কিছু নেই। হার্টে ঢাকায় ভাল ডাক্তারের অভাব নেই। কিন্তু রোগী ভাল ডাক্তার খোজে না। খোজে একনম্বর ডাক্তার। তাতে লাইন...বিশাল হয়ে যায়। কারও দিনে সিরিয়াল ১০০/১২০ও আছে। কারন তিনি প্রচার পেয়েছেন একনম্বর বলে। তাকে দেখাতেই হবে। দরকার হলে তার ড্রাইভারকে পটিয়ে সিরিয়াল নিতে হবে। এই ধারনা ও উত্তেজনা দয়া করে ছাড়তে হবে। কার ১২০ রোগী/ কার সিরিয়াল ৩০ দিন পর পাওয়া যায--তাকে না খুজে একজন ভাল ডাক্তার দেখান। তাতে ভাল চিকিৎসা পাবেন। বললেন--১২০ রোগী পেলে দেখেন কেন! আরে ভাই আমি তো আপনারই ভাই বা বোন! আপনি কি করতেন! আমরা বেশীর ভাগ এসেছি মধ্যবিত্ত নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। বাবা মা ছেলে মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চান অনেক টাকা কামাই করবে বলে। উচ্চবিত্ত হলে বাবা মা ভাবে--সন্তান ডাক্তার হলে ক্লিনিক বা হাসপাতাল করে দেবেন। কোটি কোটি টাকাও কামাবেন। নামও হবে। আগে আসুন সেইরকম বাবামা হই--সন্তানকে যখন ডাক্তার বাননোর স্বপ্ন দেখব--তখন ধনী ডাক্তার নয়--যেন মানুষ ডাক্তারের স্বপ্ন দেখব। যখন সব বাবামা যখন এই প্রতিজ্ঞা করতে পারব , তখন এই সমাজ থেকেই মানবসেবী ডাক্তার বেরুবে। তবে পৃথিবীর কোন সমাজই আমাদের মত আত্মপ্রতারনায় ভোগে না। তারা পয়সা দিতে চায়। বিনিময়ে ভাল সেবা চায়। তারা পয়সা অঅয় করতে চায় ভাল সেবা দিয়ে। আমরা সেই চেতনায় পিছিয়ে আছি।
৬| ৩১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২০
পল্লীবালক বলেছেন: আপনার কথার সাথে একমত। আমি আমার নিজের কিছু সমস্যার জন্য অনেক ডাক্তারের সাথে কথা বলেছি,তাদের পরামর্শের জন্য গিয়েছি। কাউকে কাউকে মনে হয়েছে তিনি রোবট। রাত একটা দুইটা পর্যন্ত রোগি দেখেন এবং মাঝে মাঝে অস্থির হয়ে যান। কেউ ডাক্তারের অবস্থা দেখলে নিজেই দমবন্ধ অনুভব করবে। আমি নিজে দেখেছি আমার প্রেসক্রিপশন লেখছেন এক ডাক্তার ফোনে কথা বলতে বলতে। স্বাভাবিকভাবেই ঐ চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা ঔষধ খাওয়ার ইচ্ছা হবেনা। আবার আমি আপনার কাছেও গিয়েছি। আপনার সাথে আমার যোগাযোগ করা দরকার। কিন্তু পিজিতে গিয়ে দেখা করার সুযোগ কম। [email protected] আমার মেইল আইডি। যদি সুযোগ হয় আমাকে একটু সাহায্য করবেন।
০১ লা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:১৬
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: আপনি পিজি মানে বিএসএমএমইউতে গিয়ে যদি অসুবিধা বোধ করেন--মনে হচ্ছে--আউটডোর সেবার কথা বলে থাকতে পারেন। সেখানে ভিড় বেশী। সেখানে সমস্যা বোধ করলে আপনি বিএসএমএমইউর বৈকালিক চেম্বারে আসতে পারেন। সেখানে প্রতিদিন অধ্যাপক পর্যায়ের ডাক্তাররা রোগী দেখেন। সাথে একজন মেডিকেল অফিসারও থাকেন। ফিস নেয়া হয় ২০০ টাকা।অথচ প্রাইভেট চেম্বারে নেয়া হয় ৭০০-১২০০ টাকা। এটা অধ্যাপক প্রানগোপাল দত্ত স্যারের আন্তরিক ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভাল সেবা পাবেন। প্রাইভেট চেম্বারের চেয়েও ভাল। আমরা সবাই সময় নিয়ে রোগী দেখি। পরীক্ষা প্রার্থনীয়। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই বিশেষ বৈকালিক চেম্বার বসে। যে ডাক্তার দেখাতে চান--মাসিক শিডিউল দেখে তার খোজ পাবেন। নিশ্চিত থাকুন, আমরা সবাই এখানে ভাল বিশেষায়িত সেবা দেই।
আরেকটা কথা ভাই সবিনয়ে বলি--এই ব্লগে আমার পরিচয় সবিস্তারে দিলেও এখানকার সব লেখা জনসচেতনতার লক্ষ্যে। সরকারি ও সাধারণ সেবা ভিত্তিক যে রোগী সেবা সুলভ--সেসব ভিত্তিক। এখানে ব্যাক্তিগত চেম্বার বা প্রাকটিস কোন অবস্থাতেই আনতে চাই না। তবে কেন ছদ্মনাম নিলাম না--আমার ক্ষুদ্রক্তি হল--জনসচেতনতায় ভার্চুয়াল জগতেও ইমেজ একটা ব্যাপার। অঅমি কোন বিষয়ই নই। কিন্তু অঅমার প্রতিষ্ঠানগত পরিচয়গুলো পাঠকের মধ্যে একধরনের অঅস্থা তৈরী করতে পারে। সেকারনে প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় ব্যাবহার করলাম।
৭| ৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪৫
আমি নী বলেছেন: অসম্ভব গোছানো এবং সুন্দর একটি লেখা লিখেছেন- মূল ব্যাপারটাতেই আলোকপাত হয়েছে। আশা করি, এমন লেখা চলতেই থাকবে...
০১ লা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:১৬
ডা. সুলতানা আলগিন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:০৯
নহে মিথ্যা বলেছেন: সহমত...