নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্য, সংস্কৃতি, কবিতা এবং সমসাময়িক সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে গঠনমুলক লেখা লেখি ও মুক্ত আলোচনা

ডঃ এম এ আলী

সাধারণ পাঠক ও লেখক

ডঃ এম এ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি ও বন্ধু কাজল ভমরা- জানেন কি এটা আমাদের কেমন বন্ধু ?

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১৬


বাংলার ভাওয়াইয়া গানের ভুবনে বিখ্যাত একটি গান -
কিও বন্ধু কাজল ভ্রমরা
কোন দিন আসিবে বন্ধু কইয়া যাও কইয়া যাও..
যদি বন্ধু যাইবার চাও ঘারের ঘামছা থুইয়া যাও, থুইয়া যাওরে ।
গানের এই কথা কয়টি দিয়ে একজন বিরহী প্রেমিকের বিরহগাথা কিভাবে প্রকাশ পায় তা গানটি একবার শুনেলই বুঝা যায় ।
মনে পড়ে যায় । একবার কমন ওয়েল্থ স্কলার হিসাবে এক বিদেশী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করতে হয়েছিল । প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশকারীদের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রত্যেক অংশগ্রহন কারীকে ( যে যেমনই পারে তেমনভাবেই নীজ নীজ ভাষায় একটি গান ( প্রারম্ভে গানটির একটি পটভুমি ও সংক্ষিপ্ত ইংরেজী অনুবাদ দেয়ার আবশ্যকীয়তা ছিল ) গাওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল । অনুষ্ঠানে ২৭ টি বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারী ছিল, সকলেই যে যার মত গান গাইল । আমার পালা যখন এলো, তখন মনে হলো বাংলার একটি অতি জনপ্রিয় লোক সংগীত ভাওয়াইয়া গাইলে কেমন হয় । কি গাওয়া যায় ঠিক করতে বেশী বেগ পেতে হলোনা । পরিবার থেকে দুরে ছিলাম বলে বেশ কিছুদিনের বিরহ ব্যথা বুকে থাকায় মনে হল ‘কিও বন্ধু কাজল ভ্রমরা’ গানটি গাইলে বেশ হয় । মঞ্চে দাড়িয়ে গানটির পটভুমি ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে মনের সম্পুর্ণ আবেগ মিশিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজকদের অনুরোধের ঢেকী গিললাম । গান শেষে শ্রোতাদের করতালী অবশ্যই মিলল । কিন্তু মনটা খারাপ হলো ডিনার পার্টিতে । খেতে বসে পাশের একজন সহপাঠি যখন ভ্রমর সম্পর্কে তার কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য দিলেন । তার বিবরণ ও সুত্র অনুসন্ধানে প্রাপ্ত কিছু তথ্য আমাদের প্রিয় সামহয়ারইন ব্লগের ভাই বোনদের উদ্দেশ্য নিবেদন করা হলো । উদ্দেশ্য এই মনোমুগ্ধকর সুদৃশ্য পতংগটি সম্পর্কে একটি সঠিক ধারনা বিনিময় করা এবং এই ক্ষতিকারক পতংগটিকে কিভাবে নিয়ন্ত্রন করা যায় সে বিষয়ে এটি সচেতনতা গড়ে তোলা । তবে পতংগটির বিষয়ে লম্বা একটি ভুমিকা দিয়ে পাঠকের ধৈর্যহানীর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । নিচের বিবরণ ও ইমেজ দেখে একে চিনুন, দেখুন , দমন করুন যদি প্রয়োজন মনে করেন । লোকপ্রিয় ভাওয়াইয়ার টানে কিংবা প্রিয় জনের জন্য বিরহ প্রকাশ করার প্রয়োজনে একে বিলুপ্তির হাত হতে টিকিয়েও রাখতে পারা যায় । কতভাবেই তো জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে আবার রক্ষাও পাচ্ছে প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে ।

কাজল ভ্রমর ( কারুকার্যময় কাজল ভ্রমর Emerald Ash Borer )

বৈজ্ঞানিক নাম : Agrilus planipennis
কারুকার্যময় এই ভ্রমরটিকে বাংলাদেশে প্রায়শই দেশী কড়ই গাছের কচি পাতা অংশে পাতা ভক্ষনরত অবস্থায়, কিংবা বনের বা গৃহস্থালীর যে কোন গাছেই বিচরণ করতে দেখা যায় । গ্রামীন বন্ধুরা সকলেই এই পতংগটি দেখে থাকলেও আমাদের শহুড়ে বন্ধুদের অনেকেরই হয়ত এই সৃদৃশ্য পতংগটি প্রতক্ষভাবে দেখার সৌভাগ্য হয়নি । এর ইমেজ দেখে হয়ত এটাকে চিনতে পারবেন ।

জীবন চক্র : এই পতংগটি প্রায় ৮ মিমি লম্বা ও ০.৬০মিমি প্রসস্ত । এটি সাধারনত: এক থেকে দুই বছর বাচে । তবে মেয়ে ভ্রমরের আয়ু অনেক কম । সাধারণত মেয়ে ভ্রমর গড়ে বছরে ৬০-৭০টি ডিম দেয় । গাছের পাতা ও নরম অংশ খেয়ে জীবন ধারন করে ।



বিধ্বংসী ক্ষমতা : এই পতংগটি গাছের ডালের অগ্রভাগের কোমল পাতা ও নরম অংশ ভক্ষন করে গাছের বৃদ্ধি রোধের মাধ্যমে প্রভুত ক্ষতি সাধন করে । চিত্রে এর বিধ্বংসী ক্ষমতার একটি নমুনা দেখুন :


গভীর পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে এর গতিবিধি মনিটর করে একে দমন করা যায় । ছবি দেখুন :

বিষাক্ত কিট নাশক প্রয়োগেও একে দমন করা যায় তবে বিষাক্ত কিট নাশকের প্রয়োগ জীব বৈচিত্রে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে । তাই জৈবিক নিযন্ত্রন ( biological contol) পদ্ধতিকে অধিক শ্রেয় বলে বিজ্ঞানিরা মনে করেন । পরিবেশ সহায়ক অন্য কয়েকটি কিটের পতংগের সংক্রমনে ( যথা Spacious agrill, Oobious agrill , Spathious galinace যেগুলি ভ্রমর জাতীয় কিট পতংগ ছাড়া অন্য় কোন কিট পতংগকে আক্রমন করেনা ) এই ভ্রমরজাতীয় ক্ষতিকর পতংগের বিনাশ সম্ভব বলে পরিক্ষিত হয়েছে । এই দমন প্রক্রয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে চীন, যুক্তরাষ্ট ও কানাডায় ব্যপকহারে প্রয়োগ করা হচ্ছে । আমাদের দেশের বিজ্ঞানিরাও পদ্বতিটি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন ।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:১০

চন্দ্ররথা রাজশ্রী বলেছেন: ভেবেছিলাম গানটিতে কালো রঙের যে ভোমড়া বা ভিমরুল আছে, তার কথা বলা হয়েছে।
ভুল ধারনা সংশোধন করিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন সবসময়।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ, অনেকের মত আমার নিজেরো ভুল ধারনা ছিল । আপনার দোয়া আমার চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে ।

২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ ভোর ৫:২৩

কালনী নদী বলেছেন: কিও বন্ধু কাজল ভ্রমরা
কোন দিন আসিবে বন্ধু কইয়া যাও কইয়া যাও..
যদি বন্ধু যাইবার চাও ঘারের ঘামছা থুইয়া যাও, থুইয়া যাওরে ।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: গানটি সকল বিরহী মনে সাড়া দিবে বলেই ভাবছিলাম, জানিনা আপনার কোন বিরহ আছে কিনা । না থাকলে ক্ষমার চোখে দেখবেন ।

৩| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:২৪

বিজন রয় বলেছেন: কীটপতঙ্গের এত রূপ!!
++++

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: হ্যা, আশ্চর্য তো হতেই হয় !!

৪| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ওকি ও বন্ধু কাজল ভ্রমরা রে
কোন দিন আসিবেন বন্ধু কইয়া যাও কইয়া যাওরে..
যদি বন্ধু যাইবার চাও ঘারের ঘামছা থুইয়া যাও, থুইয়া যাওরে ।


কাজল ভোমরা মানে কালো ভ্রমর।
কাজল অর্থ কারুকার্যময় এটা আপনি কোথায় পেলেন? আমার কাছে এই মুহুর্তে অভিধান নেই। তাই নিশ্চিত নই আপনি ভুল কি শুদ্ধ।

আমার মনেহয় আপনি যেই পতঙ্গটির ছবি দিয়েছেন এটা কাজল ভোমরা নয়। এটাকে আমরা ছোটবেলায় সোনাপোকা বলতাম (এটার অন্য নামও থাকতে পারে)। দেখতে সুন্দর বলে ধরে পোষার চেষ্টাও করতাম।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ অলোয়েজ ড্রিম । হয়ত আপনার মন্তব্য সঠিক । আমার হয়তবা কোন ভুল হয়ে থাকতে পারে । তবে আমার আরো কিছু কথা যুক্ত করতে চাই । পোকাটিকে ইংরেজিতে Emerald Ash Borer নামে অভিহিত করা হয় । আভিধানিক অর্থে Ash কে ছাই এবং Emerald কে পান্না হিসাবে বলাই সংগত হত । তবে Ash কে কাল বললে কি সংগত হত । আর Emerald তো কোন ভাবেই কাল এর সমার্থক নয় । Emerald কে আভিধানিক অর্থে পান্না বলা হয় । কিন্তু ভমরার সাথে পান্না শব্দের ব্যবহার ব্যমানান মনে হয়েছে । তবে Ash কে ছাই বললে হয়ত সঠিক হত তবে যেহেতু ভ্রমরা নামটির সাথে কাজল শব্দটির একটি সাধরণ প্রয়োগ আছে, তাই এর সাথে ছাই রংএর এর কাছাকাছি কাজল শব্দটি প্রয়োগ করা হয়েছে । কাজলকে বা Emerald কে ইচ্ছা হলে আপনি কাল বলে ভাবতে পারেন তবে আভিধানিক অর্থে তা কতটুকু গ্রহন যোগ্যতা পাবে তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বোধগম্য নয় । অন্য দিকে Emerald Ash Borer সঠিক অর্থে সোনা পোকা নয় নয় । সোনা পোকা একটা acorn weevil জাতীয় পোকা। নীচের ছবিতে দেখুন ।

কাজল ভ্রমর কিংবা ভমরা যে নামেই ডাকা হোকনা কেন , যেহেতু এটা সাবলিলভাবে উড়তে পারে সেহেতু এটিকে একান্তভাবে পোকা না বলে পতংগ গোত্রিয় বলাই যুক্তিসংগত মনে হয়েছে ।

৫| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এই পোকাটা দেখছি। বিরক্তিকর একটা পোকা!

৬| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য । ভাই, ভ্রমরটি মানুষের কাছে তেমন বিরক্তিকর নয় । এ পতংগটি মানুষকে বিরক্ত করেনা । কালে ভ্রদ্রেও এটা মানুষের কাছে আসেনা । একে ধরতে হলে অনেক চেষ্টা চরিত্র করতে হয় । ছোট বেলার কথা মনে পরে । খেলা করার জন্য একটি ভমরা ধরার লক্ষে ঘন্টার পর ঘন্টা দল বেধে ছুটতে হত গাছ থেকে গাছে । তবে ক্ষেত্র বিশেষে কারো কাছে বিরক্তিকর হতেই পারে । অবপনি তো অারণ্যক, এটি আপনার কাছে বিরক্তিকর হতেই পারে কেননা এটি তো অরণ্যেই থাকে এবং ক্ষতি করে চলে অরণ্যের গাছ গাছালিকে । তাই এই বিরক্তিকর পতংগটিকে দমন করার জন্য বিশ্বজুরে চলছে আদিঅন্ত প্রয়াস ।

৭| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:২৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আমার মনেহয় Emerald Ash Borer কাজল ভোমরাও নয়। আমি মনেকরি ছোটবেলা থেকে আমরা যে পতঙ্গটিকে ভ্রমর হিসাবে জেনে এসেছি সেটা ফুলে-ফুলে মধু পান করে। গুঞ্জন তুলে ঘুরঘুর করে। আরেক ধরণের ভ্রমর দেখতাম, সেটি দেখতে মূলত কালো মাথার দিকে কিছুটা হলুদ। এটিও ফুলে-ফুলে মধু পান করে।


কিন্তু কড়াই গাছের কচি পাতা খায় যে পতঙ্গটি সেটিকে আমরা কোনোদিনই ভ্রমর বলতাম না। অনিন্দ সুন্দর সেই পতঙ্গটিকে আমরা সোনাপোকই বলতাম। আমাদের নামকরণ ভুল হতে পারে কিন্তু গানের কাজল ভোমরা কিছুতেই সেই Emerald Ash Borer নয়।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:২৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ । হতে পারে । তবে একেক এলাকায় একেক নাম থাকতে পারে । যেমন জামাল পুরের মানুষজন মুরগীকে বলে চরই । তবে বাংলায় যে নামে ডাকা হোক না কেন আমি Emerald Ash Borer নিয়ে আলোচনা করেছি । অতএব নিম্মের বিবরণ অনুয়ায়ী এর গুনাগুন বিবেচনা করলে মনে হয় কোন বিভ্রান্তি থাকবেনা । তবে অনেক ধন্যবাদ আলোচনায় থাকার জন্য ।
Agrilus planipennis, commonly known as the emerald ash borer, is a green jewel beetle native to eastern Asia that feeds on ash species. In its native range, it is typically found at low densities and is not considered a significant pest.
Scientific name: Agrilus planipennis
Higher classification: Agrilus
Rank: Species

৯| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: অলওয়েজ ড্রিম ৭ নং মন্তব্যে যে কালো পোকার ছবিটি দিয়েছেন, ওটাকেই আমিও এতদিন কাজল ভোমরা বলে জেনে এসেছি। কাজল কালো রঙ বলেই হয়তো এ নাম।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:১০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ , শ্রদ্ধেয় গুনীজনদের মুল্যায়নে পোকাটির জন্য অবশেষে একটি সঠিক নামকরনে উপনীত হওয়ার জন্য ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.