নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্য, সংস্কৃতি, কবিতা এবং সমসাময়িক সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে গঠনমুলক লেখা লেখি ও মুক্ত আলোচনা

ডঃ এম এ আলী

সাধারণ পাঠক ও লেখক

ডঃ এম এ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয় হোক সত্যের : বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দন্ধ - হোক চিরতরে বন্ধ -১

২১ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২


سْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
সুচনা
মহান সৃস্টি কর্তা আল্লাহ তায়ালা মানব সৃষ্টির পর তার ভিতরে রুহ বা আত্মা সংস্থাপন করেছেন । পবিত্র কোরান এর আয়াত থেকে জানা যায় মানব সৃস্টি করে আল্লাহ তার মধ্যে আত্মা সংস্থাপন করেছেন । আত্মা সৃষ্টি এবং এর গঠন সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাই রাখেন যেমনটি বলা হয়েছে :

তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিনঃ রূহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে। (আল ইজরা ১৭:৮৫)

এই আয়াত থেকে পরিস্কার বুঝা যায় যে রুহ সম্পর্কিয় জ্ঞান আবশ্যকের অন্তর্ভুক্ত নহে এবং তা মানবের বোধগম্য হবেনা । তবে এটা বুঝা যায় সৃস্টির শুরুতে বিশুদ্ধ এক অদৃশ্য আত্মা নিয়ে মনুষ্য জীবনের পথ চলা শুরু । কোরান কারিমা থেকেই জানা যায় যে, এই অদৃশ্য আত্মা আল্লাহ তায়ালার আদেশ বা কমান্ড । তবে মানুষের আত্মা তথা রুহ বা soul কে আল্লা বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন করে ( rational) সৃস্টি করেছেন । এজন্যই মানুষকে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণী (rational human being ) আসরাফুল মাখলুকাত তথা সৃস্টির সেরাজীব বলা হয়ে থাকে । ভাল মন্দ বিবেচনাবোধ সম্পন্ন ( free will) করে সৃষ্ট আদি পুরুষ হযরত আদম (আ:) ও আদি মাতা বিবি হাওয়াকে সৃস্টিলগ্ন থেকেই বেহেস্তে বসবাস করতে দেয়া হয়েছিল। তবে আল্লা তাঁদেরকে বেহেস্তের সকল বৃক্ষের ফল খাওয়ার অনুমতি দিলেও গন্দম বৃক্ষের ধারে কাছে না যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন । কিন্তু শয়তানের প্ররোচনায় তাঁরা নিষেধ আমান্য করে অবাধ্য এবং অবিশ্বাসী হিসাবে পরিণত হন । অনুতপ্ত আদম ও হাওয়ার আকুল আকুতির ফলে আল্লাহ তায়ালা তাঁদেরকে এই পৃথিবীতে প্রেরণ করেন । পৃথিবীতে প্রেরণের পর তাঁদেরকে ভাল মন্দ ,সৎ অসৎ, জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ , সেগুলির প্রাপ্তি তথা আবাদ পদ্বতি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কেও জ্ঞান দান করেন । পৃথিবীর ক্ষনস্থায়ী জীবন শেষে তাঁদের তথা প্রতিটি মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে আল্লার কাছে আবার প্রত্যাবর্তন করতে হবে বলেও অবহিত করেন । আল্লার সমীপে প্রত্যাবর্তনের পর পৃথিবীতে বসবাসকালীন সময়ে মানুষের কৃত কর্মের তথা ভাল ও মন্দ কর্মের ভিত্তিতে পুরস্কার কিংবা শাস্তির বিধান দেয়া হবে বলেও জানান । পুরস্কার প্রাপ্তদের বসবাসের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রকমের আরামদায়ক ও সুখদায়ক ব্যবস্থা সস্বলিত বেহেস্ত আর পাপীদের জন্য নির্ধারিত স্থান হলো জাহান্নাম বা দোজখ যেখানে রয়েছে ভয়াবহতম শাস্তির আয়োজন ।

যারা আল্লাহ, রাসুল, আখিরাত ও তাঁর বিধি বিধান সমুহে বিশ্বাস করবে, পবিত্র কোরানে তাদেরকে বিশ্বাসী হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে আর এর অন্যথা কারীদেরকে অবিশ্বাসি হিসাবে অভিহিত করা হবে বলেও পরিস্কার উল্লেখ রয়েছে। প্রসংগক্রমে বলে নেয়া যায় যে দেশে দেশে আস্তিক ও নাস্তিক সংক্রান্ত আলোচনা ক্রমশই বিস্তৃত হচ্ছে । আল্লাহ, , রাসুল ও আখিরাতে বিশ্বাসী দেরকে আস্তিক এবং এর বিপরিতদেরকে নাস্তিক বা অবিশ্বাসী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে । অপরদিকে কোরানের যে সমস্ত আয়াতে অবিশ্বাসীদের সম্পর্কে কিছু বলা হয়েছে সেগুলিকে বিধর্মীগন মনে করে তা শুধু খৃষ্টান ও ইহুদিদেরকে বুঝাতেই ব্যবহৃত হয়েছে । পুর্বেই বলা হয়েছে আল্লাতায়ালা মানুষকে সৃস্টি করেছেন বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণী হিসাবে । তারপর বয়:বৃদ্ধির সাথে কতক হয়েছে অদৃশ্যে ( সৃস্টিকর্তা আল্লা ও পরকাল সম্পর্কে) বিশ্বাসী আর কতক হয়েছে অবিশ্বাসি । বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীদের মধ্যেও রয়েছে বিভিন্নমাত্রা, বিশ্বাসের গভিরতা , যথা পুর্ণ বিশ্বাসী ও বিভিন্ন মাত্রার বিশ্বাসী আবার কতক চরম অবিশ্বাসী বা বিভিন্ন মাত্রার অবিশ্বাসী । এদের একটি শ্রণী বিন্যাস নিম্মের ডায়াগ্রামে দেখানো হল । কে কোন পর্যায়ে পরে তা নিশ্চিতরূপে একমাত্র অন্তরযামী আল্লাই জানেন ।

ইসলামে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী নিয়ে আলোচনা কালে কতিপয় ইসলামী আরবী পরিভাষা বা শব্দাবলী ব্যবহৃত হবে যা বাংলায় বলা হলে এদের ভাব গাম্ভির্য সঠিকভাবে হয়তবা বিবৃত হবেনা । শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে ঐসমস্ত শব্দাবলী ইসলাম বিষয়ক আলোচনায় বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিধায় সে শব্দাবলীকে সেভাবেই ব্যবহার করা হয়েছে । ইসলামে মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস আলোচনায় ঈমান ও ইহসান সংক্রান্ত বিষয়াদিই মুখ্য বিধায আমাদের মূল আলোচনায় যাওয়ার পুর্বে প্রাসংগীক হবে বিবেচনায় ইসলাম , ঈমান ও ইহসান সম্পর্কে একটি অতি সংক্ষিপ্ত বিবরণ অধ্যায় -১ এ উপস্থাপন করা হলো ।

অধ্যায় -১ : আল ইসলাম, ঈমান ও ইহসান
আল ইসলাম:
আল্লার একত্বে এবং হযরত মোহাম্মদ ( সা:) কে আল্লার সর্বশেষ প্রেরিত রাসুল হিসাবে বিশ্বাসী এবং কোরানে উল্লেখিত বিধানের প্রতি নিষ্ঠাবান মানব সম্প্রদায় আল ইসলামের অন্তর্ভুক্ত । যে সমস্ত মানুষ কিংবা জাতি ইসলামকে অনুসরণ করে তাদের কে ধর্মীয় জগতে মুসলিম হিসাবে অভিহিত করা হয়ে ।
আল ইসলাম এর আলোকেই আল ঈমান মানা হৃদয়ে শক্তিশালী ও আল ইহসান উকর্ষমন্ডিত হয় তাই এই তিনটি পরস্পর গভীর সম্পর্কযুক্ত।


আল ঈমান
ঈমান : ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ঈমান হল ইসলামের একট অধ্যাত্মিক দিক যা একজন মুমিনের বিশ্বাসের গভীরতার প্রতি ইংগিত করে । ঈমান সাধারণ বিশ্বাস থেকে একটু ভিন্ন, এই অর্থে যে এটা শুধুই অন্ধ বিশ্বাস বা কারণের অনুষঙ্গী নয় । ঈমানের সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা আরকান আল ঈমান নামে পরিচিত ইসলামের বিশ্বাস সম্বন্ধিয় ছয়টি নিবন্ধ বা প্রতিপাদ্য বিষয়ের মধ্যেই নীহিত । হাদিসেও পাওয়া যায় নবি করিম(সা:) বলেন একজন ব্যক্তির অন্তরের বিশ্বাস বা ঈমান তার মুখের কথায় ও বাহ্যিক কর্মে প্রকাশ পায় । ঈমান সংক্রান্ত আলোচনায় দেখা যায় যে ঈমানকে ব্যক্তি পর্যায় ও দলগত পর্যায়ে ব্যবহার করা হয় । তাই ঈমানের ব্যক্তিগত পর্য়ায়ভুক্ত ও দলভুক্তদের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নীচে দেয়া হলো:

ব্যাক্তি পর্যায়
মমিন : বিশ্বাসী সকল মানুষের জন্যই এই বিশেষণ ব্যবহার করা হয় , ।এটি তার জন্যই প্রযুয্য যে ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছার কাছে সম্পূর্ণ সমর্পিত এবং যার হৃদয়ে বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, অর্থাৎ সে একজন বিশ্বস্ত মুসলিম ।

মুসলিম : একজন মুসলিম, তিনিই যিনি ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করেন । যিনি আল্লার একত্ব, রাসুল ও কোরআনের উপর বিশ্বাস রাখেন ।

ফাসিক : ফাসিক একটি আরবি শব্দ। যদি কেউ ইসলামী আইন লঙ্ঘন করে তবে সে অনির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য হয় এবং তার সাক্ষ্য ইসলামী আদালতে গৃহীত হয় না । ( দেখুন Majid Khadduri(28 November 2001), The Islami Coception of Justice ,JHU Press pp149) এদেরকে "অধার্মিক", "মার্জনীয় পাপী", হিসাবে গন্য করা হয় ( দেখুন Amin Ahsan Islahi(2007), Tafsir of Surah al-Fatihan and Sura al Baqara , The Other Press pp 149)।

ফাজির : একটি আরবী শব্দ । ইসলামী পরিভাষায় একে একটি "দুষ্ট কুকর্মী" অর্থাৎ "কর্ম দ্বারা পাপী" অর্থাৎ "আল্লাহর কুফরী দ্বারা পাপী" এবং কাফিরের সাথে তুলনা করতে ব্যবহৃত হয় ( দেখুন : আবদুল রউফ হুসাইন প্রনীত , Schools of Qur'anic exegesis : genesis and development, New York, Routledge 2010)

কাফির : এই আরবী শব্দটির বুৎপত্তি মুল كافر শব্দ থেকে, যার অর্থ ঢেকে ( কভার করা) দেয়াকে বুঝাত । এটি একটি প্রাক ইসলামী শব্দ । এটা দ্বারা বুঝাত কৃষকেরা মাটিতে বীজ বপন করে গাছ গজানোর লক্ষ্যে সেগুলিকে মাটি দিয়ে আচ্ছাদন করে দিত । সে রকম একটি অর্থে কাফির সেই ব্যক্তি যে সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে দেয় । অমুসলিম অনেক স্কলার ও এখন মেনে নিয়েছেন যে কোন ব্যক্তিকে সম্পুর্ণ অবিশ্বাসী,বুঝানোর জন্য কাফির পদবাচ্যটিই অধিক মাত্রায় প্রযুয্য ( দেখুন Gillis Kepel (2003), Jihad: The trial of Political Islam, Harvard University Press, p.31) । ইসলামেও বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য বুঝানোর জন্য কাফির শব্দটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রই ব্যাহার করা হয়েছে । পবিত্র কোরানে কাফিরের বহুবচন হিসাবে কাফিরুন শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়েছে ১৩৪ বার , সর্বনাম ‘কুফর’ শব্দটিকে ৩৭ বার এবং কাফির শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়েছে ২৫০ বার (দেখুন Encyclopedia of Islam, Infobase Publishing, pp 420-422)।

মোনাফেক : এই আরবী শব্দ মোনাফেক ( বহুবচন মোনাফিকুন) দ্বারা ইসলামে কোন ব্যাক্তি বা দলকে বুঝায় যারা বাহ্যিকভাবে মুসলমান কিন্তু প্রকৃত অর্থে মুসলমান দরদি নয় এবং গোপনে মুসলমানদের ক্ষতিই চায় । এধরণের ভন্ডামীকেই মুলত মোনাফেক বলা হয় ।কোরানে শত শত আয়াতে ( যথা সুরা আল মোনাফেকুন আয়াত ১৪, ৬১, ১৪০ , সুরা তাওবা আয়াত ৬৭, সুরা আনফাল আয়াত ৪৯) মোনাফেকদের কথা বলা হয়েছে এবং তাদেরকে ইসলামের প্রকাশ্য শত্রুর চেয়ে ও ভয়ংকর হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে ।
ঈমানের দলগত প্রয়োগ

আহ লে কিতাব : প্রাক ইসলামী যুগে ইব্রাহিমী ধর্মে অনুগতদের কে আহ লে কিতাবী হিসাবে অভিহিত করা হয় । ইসলামে কোরানকে সর্বশেষ নাযিলকৃত আসমানী কিতাব বলা হয় । ইহাকে পুর্বে নাযিলকৃত সকল আশমানী কিতাবের একটি সুসমন্বিত শ্বাশত চূড়ান্ত কিতাব হিসাবে গন্য করা হয় ।

আহ লে ফাতরাহ : একটি আরবী শব্দ أهل الفترة‎ । এর দ্বারা সে সমস্ত লোকদেরকেই বুঝানো হয় যাদের কাছে ইসলামের কোন সঠিক দাওয়াত পৌঁছে নাই, যারা ইসলামী শিক্ষার বিষয়ে অজ্ঞতার মধ্যে আছে । সেটা ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা বা মোহাম্মদ(সা:) এর আভির্বাব এর পুর্ব কালের ও হতে পারে । এসমস্ত লোকদের বিষয়ে মুসলিম স্কলারদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। আহলে ফাতরা বিষয়ে ইসলামী দার্শনিকগন মতপোষণ করেন যে দুইজন পয়গম্বরের আগমনের মধ্যখানে ( interval ) বিরাজমান লোকজনদেরকে আহ লে ফাতরাহ হিসাবে অভিহিত করা যায় এবং তাদেরকে নিম্মোক্ত তিনটি ক্যাটাগরীকে ফেলা যায় :
১) যারা আল্লার একত্বে বিশ্বাসী এবং সৎকর্মপরায়ন ছিল ।
২) যাদের কাছে সত্য়ধর্মবাণীর সুসংবাদ ছিল কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সেগুলি রদবদল করে আল্লার একত্বকে অস্বিকার করে মুর্তিপুজায় রত ছিল ।
৩) যারা অবিশ্বাসী ও পুর্তিপুজক ছিলনা এবং সত্য ধর্ম বিষয়ে এবং আল্লার এককত্ব সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ ছিল ।

কোরান কারিমার স্বব্যখাত আয়াত থেকে কিছুটা ধারণা করা যায়, এ তিন ধরনের লোকদের বিষয়ে মহা ন্যয় বিচারক আল্লাহ কি ধরনের ফয়সালা করবেন । সুরা হা মিম এর ১৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে:
''যখন তাদের কাছে রসূলগণ এসেছিলেন সম্মুখ দিক থেকে এবং পিছন দিক থেকে এ কথা বলতে যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও পূজা করো না। তারা বলেছিল, আমাদের পালনকর্তা ইচ্ছা করলে অবশ্যই ফেরেশতা প্রেরণ করতেন, অতএব, আমরা তোমাদের আনীত বিষয় অমান্য করলাম।''( সুরা হা মিম আয়াত ১৪ ( ৪১:১৪)
অন্য এক জায়গায় সুরা ইসরা এর ১৫ নং আয়াতে আল্লা বলেন :
যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।( সুরা ইসরা আয়াত ১৫ ( ১৭:১৫)।

ইহসান
ইহসান : ইহসান একটি আরবী শব্দ যার অর্থ হলো পরিপুর্ণতা বা উৎকর্ষতা ।এটা মানুষের অন্তরস্থ ধর্ম বিশ্বাসকে ভাল কাজ ও সামাজিক দায়বদ্দতার দিকে পরিচালিত করে । ইসলামে প্রতিটি মুসলিমের দায়ীত্ব হলো আল্লার উপাসনার মাধ্যমে নিজের পরিপুর্ণতা ও উৎকর্ষতা অর্জন করা । তাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে যে আল্লা অদৃশ্যভাবে তাদের সকল কর্মই দেখছেন । বিশ্বাস করতে হবে যে অল্লাকে সে না দেখলেও আল্লাহ তাকে দেখছেন ।
বিশ্বাস সম্পর্কিত ইসলামের ৬ টি মূল প্রতিপাদ্য বিয়য় (Articles of Faith)

বিশ্বাস সম্পর্কিত ইসলামের মূল ৬ টি প্রতিপাদ্য বিয়য় এর মধ্যে প্রথম ৫টি কোরান ও হাদিস দ্বারা স্বিকৃত। সুরা বাকারার ২৮৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে :
রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে ( সুরা বাকারা আয়াত ২৮৫( ২:২৮৫) ।

আল্লা নির্ধারিত ভাল ও মন্দ ভাগ্যে (predestined fate ) বিশ্বাস সংক্রান্ত বিষয়টি, উপরে প্রদর্শিত ছয়টি প্রতিপাদ্য বিষয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত ( Articles of faith ) হওয়া সম্পর্কিত হাদিসটি নিম্মরূপ :
আমি " যে ইমান রাখে আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি , তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং তাঁর রসূলের এবং আখেরাত এবং ভাল ও মন্দ ভাগ্য [ ঈশ্বর কর্তৃক নির্ধারিত] বিশ্বাস করে." (মুসলিম আল জামি আল সহি ২২ ( নং ৯৩)।

অধ্যায় -২
কোরানের প্রায় প্রতিটি সুরাতেই বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের বিষয়ে কিছু না কিছু বলা হয়েছে । তবে বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীদের প্রকৃতি, তাদের পরিনতি এবং অবিশ্বাসীরা কিভাবে সংশোধিত হয়ে আল্লার সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভ করতে পারে সে সব বিষয়ে পরিস্কার বিবরণ ও নির্দেশনা সম্বলিত পবিত্র কোরানে ৫২৭ টির মত আয়াত রয়েছে ।

এটা অনস্বিকার্য যে, ধর্ম বিশ্বাস প্রথমে জম্ম নেয় অন্তরে , এর বিকাশও হয় অন্তরে , বাহ্যিক প্রকাশ হয় কর্মে ও ধর্মীয় বিধান প্রতিপালনের মাধ্যমে । বাহ্যিক ধর্মীয় বিধি বিধান পালন দেখে কারো ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে ধারনা পাওয়া গেলেও তার অন্তরের বিশ্বাস পরিমাপ করার সাধ্য কোন মানবের নেই । এটা শুধু জানেন এক অন্তরযামী সৃস্টি কর্তা আল্লাহ । এর বাইরে কাওকে অবিশ্বাসী কিংবা নাস্তিক হিসাবে অভিহিত করার প্রচেষ্টা হবে খুবই জটিল এবং প্রশ্নবাণসিদ্ধ ব্যাপার। তবে কোন বিশেষ লক্ষ্যে কাওকে অবিশ্বাসী সাব্যস্থ করা যদি একান্তভাবে কারো জন্য প্রয়োজন হয়েই পরে তবে বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীদের বিষয়ে আল্লাহ পবিত্র কোরানে কি বলেন সে দিকে মনোনিবেশ করাই সঙ্গত হবে।
কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ ও আশংকা জনক বিষয় হলো এই যে, বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী বিষয়াবলী সম্পর্কিত আয়াত থেকে কিছু খন্ডিত অংশ বিভিন্ন ধরণের উদ্দেশ্যমূলক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োগ করার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে । আবার অন্যদিকে বিধর্মীরাও কোরানে কারিমার একই আয়াতের খন্ডিত কিছু অংশকে বিভিন্ন প্রচার ও প্রকাশ মাধ্যমে এমনভাবে উপস্থাপিত করছে যাতে করে বিধর্মীদের কাছে আল্লাহ ও তাঁর বিধানাবলী সম্পর্কে বিরুপ ধারণার সৃষ্টি হয় । এখানে প্রসংগ ক্রমে উল্লেখ্য যে, আমাদের তরুন প্রজম্মের ছেলেমেয়েরা যারা দেশে বিদেশে লেখাপড়া করছে বিশেষ করে বিভিন্ন পাশ্চাত্ত দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্য়ালয়ে পড়াশুনা করছে তারা comparative religious study বিষয়ক তথ্যের জন্য ইন্টার নেট ঘাটাঘাটির সময় বিষ্ময়কর অনেক মুসলিম বিদ্বেসী ব্লগের সন্ধান পাচ্ছে যেগুলিতে কোরানের কতিপয় আয়াত এবং সহি বোখারী, মুসলিম, তিরমিজি প্রভৃতি প্রখ্যাত হাদিস গ্রন্থ থেকে এমন সব জাল হাদিসের( tempered and fabricated) উদ্ধৃতি দেখতে পাচ্ছে যা আপাত দৃষ্টিতে সঠিকবলেই প্রতিভুত হয় । তাদের সহপাঠী বিধর্মী বন্ধু বান্ধবগনও যখন তাদেরকে এগুলি নিয়ে প্রশ্নবানে জর্জড়িত করে তখন বিভ্রান্তিকর অবস্থার মুখামুখি হতে হয় ।

এছাড়াও ইসলামীতত্ব বিষয়ক পান্ডিত্বের অধিকারী খ্যাতিমান বিধর্মী পন্ডিত বাহিনীতো আছেনই । তারা ওরিয়েনটাল ও মিডল ইষ্টার্ণ স্টাডি বিশেযজ্ঞ হিসাবে পাশ্চাত্তের একাডেমিক পরিমন্ডলে এতই প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবান্বিত যে comparative religious study বিষয়ে তাদের বিশ্লষনাত্বক আরগুমেন্ট সমুহ সাধারণ ভাবে খন্ডন করা বেশ কষ্টকর বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । সহজ রাস্তা হলো সেগুলি চোখ বন্ধ করে অবিশ্বাস করা । কিন্তু আমারা চোখ বন্ধ করে রাখলেই তো আর প্রলয় বন্ধ হবেনা । ইসলাম ও কমপারেটিভ রিলিজিয়াস স্টাডি বিষয়ক তাদের রচিত পুথি পুস্তকের সীমা পরিসীমা নেই বরং সেটা অবিশ্বাস্য দুর্বার গতিতে বেড়েই চলছে । কমনওয়েল্থ সহ পাশ্চাত্ত দেশীয় আন্যান্য স্কলারশীপ বা অর্থায়নে অধ্যয়ন বা গবেষণারত আমাদের অনেক ইসলামী স্কলারও ঐ সমস্ত ওরিয়েন্টালিষ্ট তথাকথীত ইসলাম বিষয়ক বিধর্মী স্কলারদের পুথি পুস্তককে, নিরপেক্ষ তথ্য ভান্ডার হিসাবে যথেস্ট গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন নিছক comparative religious study এর উপর প্রাসংগিক literature review করার বাধ্যবাধকতার প্রয়োজনে । আমাদের পবিত্র কোরআন এর রেকর্ডিং এন্ড কমপাইলেশন সংক্রান্ত ঐতিহাসিক বিষয়াদি নিয়ে About Debated Issues on Recording and Compilation of the Quran বিষয়ক একটি গবেষণামূলক কাজের সময় এতদসংক্রান্ত বিষয়ের ভয়াবহতা ও ব্যপকতা সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত হই । ইসলাম বিষয়ক বিধর্মী চিন্তাবিদ, খ্রিশ্চিয়ান ব্যকড বিভিন্ন ব্লগের প্রপাগান্ডা, সেই সাথে আমাদের মধ্যকার কিছু জিহাদী প্ররোচনামূলক আয়াত গুলিকে একত্রে সন্নিবেশ পুর্বক সে গুলিকে কোরানে বর্ণীত আয়াত দিয়েই তাদের প্রকৃত অবস্থা তোলে ধরার জন্য মনের মধ্যে একটি তাগাদা অনুভব করি । মুলত: সে দৃষ্টিকোন থেকেই এ লিখা ।

ইসলামী গবেষণাধর্মী সাহিত্য সম্ভারের উপর প্রকাশিত পুথিপুস্তক সেই সাথে ইন্টারনেটে অনলাইনে প্রাপ্য প্রাসংগীক রচনাসম্ভার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় যে, বিভ্রান্তি কিংবা জিহাদী চেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোরানের সংস্লিষ্ট আয়াতের শুধুমাত্র কিছু সিলেকটিভ অংশ উদ্ধৃত করা হয় উদ্দেশ্যমুলকভাবে। উদ্ধৃত খন্ডিত অংশ গুলির পাশে সম্পুর্ণ আয়াত সন্নিবেশ করে অবলোকন করা হলে বিধর্মী কতৃক বিভ্রান্তি সৃস্টি লক্ষ্যে কিংবা ইসলামী জিহাদী চেতনা সৃষ্টির লক্ষে যে আয়াতটি ব্যাবহৃত হচ্ছে তা প্রকৃত পক্ষে কি অর্থে ব্যাহৃত হয়েছে বা উক্ত আয়াতটি কি জন্য নাযিল হযেছে এবং সেটা কাদের জন‌য প্রযুজ্য তা সহজেই বুঝা যাবে। বিষয়টিকে আরো পরিস্কার করতে হলে উদ্ধৃত আয়াতের অব্যাবহিত পুর্বের ও পরের দুই /একটি আয়াত সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ভাবে অবহিত হতে হবে , না হলে উদ্ধৃত আয়াতের প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং আয়াতটির মর্মার্থ কি , সেটি কার জন্য ও কোন অবস্থায় প্রযুজ্য তা সঠিকভাবে অনুধাবন করা যায়না । এখানে উল্লেখ্য় যে, আল্লাহ কোরানকে অতি সহজ ও সকলের জন্য বোধগম্য ভাবে নাযিল করেছেন। তিনি যা বলতে ও বুঝাতে চেয়েছেন তা খুবই স্পষ্ট এবং তাতে কারো বিভ্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী সম্পর্কিত কোরানের আয়াতের খন্ডিত অংশ ব্যবহার করে জিহাদী চেতনাধারীদের উদ্ধৃতাংশ, একই সাথে বিধর্মীগন উক্ত আয়াতগুলিকেই নিজেদের মনের মাধুরী মিশিয়ে অতি চাতুরতার সহিত কিরকম ভাবে উদ্ধৃত করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে সে ধরণের কিছু আয়াতকে বাছাই করে বর্তমান আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । তৎপর সে সমস্ত আয়াতের অব্যবহিত পুর্বের এবং পরের দুই/একটি প্রাসংগীক সম্পুর্ণ আয়াত উপস্থাপন পুর্বক সঠিক অবস্থা তুলে ধরার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। এর ফলে আশা করা যায় যে, বিভিন্ন মহল কতৃক উদ্দেশ্য প্রনোদিতভঅবে উদধৃত আয়াতসমুহের সঠিক অর্থ ও তার যতার্থ প্রয়োগ ক্ষেত্রসমুহ, কোরানের স্বব্যখাত আয়াতের মধ্যেই সন্নিবেসিত রয়েছে বলে দেখতে পাওয়া যাবে এবং সঠিকভাবে ইসলামকে জানতে ও বুঝতে পারা যাবে, নিরসম হবে বিভ্রান্তির, প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও বিশ্ব মানবতার । বর্তমান আলোচনায় ব্যবহৃত কোরানের আয়াতগুলির নির্ভুলতার বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান ও যেকোন বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য বাংলা অনুবাদ এর প্রারম্ভে আয়াতগুলির মুল আরবী আয়াতও উপস্থাপন করা হয়েছে । আয়াতগুলির যে খন্ডিতাংশ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে/পুস্তকে বা ব্লগে সচরাচর দেখা যায় সেগুলিকে বাংলায় ও ইংরেজীতে (ব্রেকেট বন্ধী আকারে) দেয়া হয়েছে ।

বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী সম্পর্কিত বহুল ব্যবহৃত কোরানের খন্ডিত আয়াত গুলিকে এ প্রবন্ধে তিনটি ক্যাটাগরীতে ভাগ করে আলোচনা করা হয়েছে । ক্যাটাগরী তিনটি হলো (ক)মুসলমান ও অন্যান্যরা সংক্রান্ত (About Muslims and others ) (খ)অবিশ্বাসীদের প্রতি ইসলামের বিধিবিধান (Rules of Islam around disbelievers) এবং (গ) আল্লাহ এবং অবিশ্বাসীগন প্রসংগ (About Allah and disbelievers) ।

অধ্যায়-৩
মুসলমান ও অন্যরা সংক্রান্ত আয়াত সমুহ(About Muslims and others)

(১) সূরা আল ইমরান এর ১১০ নং আয়াতটির অংশবিশেষ ব্যবহার করে বলা হচ্ছে :
মুসলিমরাই সর্বোত্তম (Muslims are the best people) [আল ইমরান আয়াত ১১০(৩:১১০)]
কিন্তু কোন অবস্থায় মুসলমানগন সর্বোত্তম তা বুজতে হলে সম্পুর্ণ আয়াত টিকেই বুঝতে হবে ,তাই বিষয়টি যতার্থভাবে অনুধাবনের জন্য সম্পুর্ণ আয়াতটির মূল আরবী এবং বঙ্গানুবাদ নিম্মে তোলে ধরা হল :

'তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য কতই না মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী'' [ আল ইমরান আয়াত ১১০(৩:১১০)]
আয়াতটি স্বব্যাখাত। অতি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে মানবজাতির কল্যানের জন্য কি করতে হবে। আয়াতটির শেষ অংশে বলা হয়েছে আহলে কিতাবিদের [কোরান অবতীর্ণ হওয়ার পুর্বকার কিতাব অনুসারীদিগকে আহলে কিতাবী বা People of the Book বলা হয় । The term ‘People of the Book’ in the Quran refers to followers of monotheistic Abrahamic religions that are older than Islam. This includes all Christians, all children of Israel (including Jews, karaites and Smaritans and Sabians] মধ্য়ে কিছু রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই পাপাচারী। অর্থাৎ তাদেরকে ঢালাওভাবে অবিশ্বাসী বলা হয়নি । এটাও বলা হয়েছে যে অবিশ্বাসীরা যদি ঈমান আনত তবে কতই না ভাল হত । তার মানে আল্লা মানব জাতির প্রত্যেককে ভালাবেসে কতই না মহব্বতের সুরে মঙ্গলের প্রতি ধাবিত হ ওয়ার জন্য আহবান করছেন ।

(২) ‘সুরা মায়িদা’ র ৪৫ নং আয়াতটির নিম্মোক্ত অংশবিশেষ ব্যবহার করে বলা হয় :
‘অমুসলিমরা মন্দ কর্ম পরায়ন’ (Non-muslims are wrong doers) [ সুরা মায়িদা ৫:৪৫] ।
অথচ সুরা মায়ীদার পরিপুর্ণ আয়াতটি হলো নিম্মরূপ :

''আমি এ গ্রন্থে তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং যখম সমূহের বিনিময়ে সমান যখম। অতঃপর যে ক্ষমা করে, সে গোনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম” [( সুরা মায়ীদা , আয়াত ৪৫( ৫:৪৫)]

আয়াতটিতে পরিস্কার করে বলা হয়েছে কোন মন্দকাজের প্রতিকারার্থে কতটুকু ও কি পরিমানে করতে হবে, অত:পর অন্যায়কারীকে ক্ষমা করে দিলে অন্যায়কারী গোনাহ থেকে পাক হয়ে যাবে । কিন্তু আয়াতটি পুর্বাপর সকল বিষয় আমলে না নিয়ে ঢালাওভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে ‘অমুসলিমরা মন্দ কর্ম পরায়ন’ । অথচ সুস্পষ্ট বিবরণ দানের পর আয়াতটির শেষ অংশে বলা হয়েছে আল্লাহ কতৃক অবতীর্ণ কিতাব অনুযায়ী যারা ফয়সালা করেনা তারাই জালেম কোথাও বলা হয়নি যে অমুসলিমরা মন্দ কর্ম পরায়ন।

(৩) ‘সুরা নিসা’ এর ১০১ নং আয়াতটির নিম্মোক্ত অংশবিশেষ ব্যবহার করে বলা হয়েছে:
অবিশ্বাসীরা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু (The disbelievers are an open enemy to you. 4:101)
অথচ সুরা ‘নিসা’ র ১০১ নং আয়াতটির পরিপুর্ণ বক্তব্য় নিম্মরূপ:

''যখন তোমরা কোন দেশ সফর কর, তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য় শত্রু'' [সুরা নিসা , আয়াত ১০১( ৪:১০১)]

এখানে কোন অবস্থায় কোন কাফেরগণ মুসলমানের প্রকাশ্য শত্রু তা পরিস্কার করে বলে দেয়া হয়েছে । এখানে হিজরতকারী মুসলমানদেরকে কাফেরদের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। কারণ এর পুর্ববর্তী আয়াতে হিজরত করার জন্য তাদেরকে অনুপ্রানিত করা হয়েছে । নীচে পুর্ববর্তী ১০০ নং আয়াতটি প্রনিধান যোগ্য :

''যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করে, সে এর বিনিময়ে অনেক স্থান ও সচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। যে কেউ নিজ গৃহ থেকে বের হয় আল্লাহ ও রসূলের প্রতি হিজরত করার উদ্দেশে, অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তবে তার সওয়াব আল্লাহর কাছে অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়'' [(নিসা ,আয়াত ১০০ ( ৪:১০০]

যে সময় আয়াতটি নাযিল হয় তখন মুসলমানের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা মুষ্টিমেয় কয়েক জন । তাদেরকে হত্যা করার জন্য কাফেরগন নাংগা তলোয়ার হাতে তালাস করে ফিরত অবিরত । সে সময় নিরাপদ স্থানে তাদেরকে হিজরত করতে অনুপ্রানিত করার জন্য এ সুরা নাযীল হয় । সে সময়তো কাফেরগন মোসলমানের প্রকাশ্য শত্রুই ছিল । পরববর্তীতে কাফেরগন যখন সন্ধীতে উপনিত হয়েছে তখন শান্তিপুর্ণ সহবস্থানের কথাও বলা হয়েছে । অতএব এই আয়াতটির খন্ডিতাংশের প্রয়োগ দ্বারা মুসলমান ও বিধর্মীর মধ্যে অশান্তির অনুপ্রেরনা জাগানো কতটুকু যুক্তিসম্মত তা বিবেকবুদ্ধি সম্পন্ন রা ভেবে দেখতে পারেন ।

৪) ‘সুরা আল আ’রাফ এর ৬৬ নং আয়াতটির অংশবিশেষ ব্যবহার করে বলা হয়েছে:
‘অবিশ্বাসীরা মিথ্যুক’ (Disbelievers are liars 7:66)
অথচ সুরা আল আ’রাফ এর পরিপুর্ণ ৬৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে :

''তার সস্প্রদায়ের সর্দররা বললঃ আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদী মনে করি।'' [ (আল আ’রাফ, আয়াত ৬৬ ( ৭:৬৬]

এ আয়াতে প্রকৃত পক্ষে বলা হয়েছে যে আদ সম্প্রদায়ের লোকদেরকে হিদায়েত করার জন্য পয়গম্বর লুদ( আ:) কে প্রেরণের পর সেখানকার সম্প্রদায়ের সর্দারগন তাকে নির্বোধ ও মিথ্যাবাদী বলেছিল। প্রতুত্তরে লুদ( আ:) বলেছিলেন তিনি নির্বোধ নন বরং তিনি আল্লাহ প্রেনিত পয়গম্বর । এটা বুঝতে হলে উদ্ধৃত সুরাটির অব্যবহিত পুর্বের ৬৫ নং এবং পরের ৬৭ নং আয়াতের বিষয় সম্পর্কে অবহিত থাকা প্রয়োজন । উদ্ধৃত আয়াতের কোথাও বলা নেই যে, অবিশ্বাসী লোকজন মিথ্যুক ।

কোরানের আয়াতের খন্ডিতাংশের ভুল উদ্দৃতি দিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দ্ন্ধ সৃস্টির প্রয়াস বন্ধ হোক এটা সকল ঈমানদার মানুষেরই কাম্য । নীচে দেখা যাক এর পুর্বকার ৬৫ নং আয়াতে কি বলা হয়েছে:

''আদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদের ভাই হুদকে। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতিত তোমাদের কোন উপাস্য নেই'' [(আল আ’রাফ ’আয়াত ৬৫( ৭:৬৫)]

এখন দেখা যাক পরের ৬৭ নং আয়াতে কি বলা হয়েছে :

''সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, আমি মোটেই নির্বোধ নই, বরং আমি বিশ্ব প্রতিপালকের প্রেরিত পয়গম্বর [(আল আ’রাফ আয়াত ৬৭( ৭:৬৭ ]

উপরুক্ত আয়াত সমুহ হতে দেখা যায় যে, কিভাবে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে কোরানের আয়াতকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করার প্রয়াস নেয়া হচ্ছে । এজন্যই প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের উচিত হবে নিয়মিতভাবে অর্থ সহ কোরান শরীফ অধ্যয়ন করা যাতে করে কোন মহলই কোন রকম ভাবে বিভ্রান্তি সৃস্টি না করতে পারে ।

৫) সুরা বাকারার ৯৯ নং আয়াতটির খন্ডিতাংশ ব্যবহার করে বলা হচ্ছে :
শুধুমাত্র মন্দ লোকেরাই অবিশ্বাসী এবং মুসলমানের শত্রু (Only evil people are disbelievers and enemy of Muslims 2:99)
কোন প্রসংগে এ সংক্রান্ত আয়াতটি নাযীল হয়েছে এবং পুর্ণাংগ আয়াতটিতে কি বলা হয়েছে তা এখন দেখা যাক । উদ্ধৃত সুরা বাকারার ৯৯ নং আয়াত টিতে বলা হয়ছে :

‘আমি আপনার প্রতি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ অবতীর্ণ করেছি। অবাধ্যরা ব্যতীত কেউ এগুলো অস্বীকার করে না’ [(সুরা বাকারা আয়াত ৯৯( ২:৯৯]

এ আয়াতে প্রকৃত পক্ষে বলা হয়েছে অবাধ্যরা ব্যতীত কেউ এগুলো অস্বীকার করে না কিন্তু চমতকারভাবে বাক্যাংশটিকে সামান্য ঘুরিয়ে দিয়ে অমুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ইসলাম সম্পর্ক বিদ্বেষপুর্ণ প্রপাগান্ডা চালানোর প্রয়াস লক্ষনীয় । কিন্তু এ ধরণের অশুভ প্রয়াস তো সফল হওয়ার নয় কেননা আল্লাহ তার দ্বীনকে মজবুত ও হেফাজত করার জন্য তার কালাম ভান্ডারেই যুক্তি সমাহিত করে রেখেছেন। বিষয়টি বুঝা যাবে এর পুর্বাপর দুটি আয়াত হতে । যেখানে পুর্বের আয়াত ৯৮ এ বলা হয়েছে :

যে ব্যক্তি আল্লাহ তাঁর ফেরেশতা ও রসূলগণ এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের শত্রু হয়, নিশ্চিতই আল্লাহ সেসব কাফেরের শত্র [(সুরা বাকারা আয়াত ৯৮( ২:৯৮]
উপরুক্ত আয়াতে বরং বলা হয়েছে আল্লাহ নীজেই রাসুল ও ফেরেসতাদের প্রতি যারা শত্রুতা করে তাদের শত্রু, আল্লাহ তার সৃষ্ট বান্দাদেরকে শত্রু না বলে তিনি নীজেকেই এ সমস্ত লোকের শত্র বলেছেন। কিন্ত তিনি কেন এরকম বলেছেন তা পরের আয়াত থেকেই সুস্পষ্ট। কিভাবে তা সুরা বাকারার নিম্মোলিখিত ১০০ নং আয়াত হতে দেখা যাক :

'কি আশ্চর্য, যখন তারা কোন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, তখন তাদের একদল তা ছুঁড়ে ফেলে, বরং অধিকাংশই বিশ্বাস করে না [(সুরা বাকারা আয়াত' ( ২:১০০]

এখানে দেখা যায় সে সমস্ত লোকদের বিপক্ষে তিনি নীজকে শত্রু হিসাবে উল্লেখ করেছেন তারা হল যারা কোন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, এবং পরে তা ছুঁড়ে ফেলে দেয় । এমতাআস্থায়, এ আয়াতটি দিয়ে মুসলিম ও অমুসলিম সম্প্রদায়ের পরস্পর সম্প্রিতি নষ্টের কাজে প্রয়োগের হাতিয়ারটিকে সর্বদ্রষ্টা আল্লাহ কেমন ভাবে পুর্ব থেকেই ভোতা করে রেখেছেন তা সহজেই লক্ষনীয় ।

৬) সুরা মা্য়ীদার ৫৩ নং আয়াত এর খন্ডিতাংশ ব্যবহার করে বলা হচ্ছে:
ইহুদি এবং খ্রিষ্টানরাই ক্ষতিগ্রস্ত (Jews and Christians are losers. 5:53)
অথছ সুরা মা্য়ীদার ৫৩ নং আয়াতটি নিম্মরূপ:

''মুসলমানরা বলবেঃ এরাই কি সেসব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করত যে, আমরা তোমাদের সাথে আছি? তাদের কৃতকর্মসমূহ বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে''। [( মায়ীদা আয়াত ৫৩) ৫:৫৩]

এ আয়াতের শেষাংষে বলা হয়েছে তাদের কৃতকর্মসমূহ বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে। কিন্তু তাদের সম্পর্কে এরকম কথা বলার কারণ এবং ক্ষতির হাত থেকে উত্তরনের জন্য কি করতে হবে সে বষয়সমুহ এ আয়াতটির ঠিক পুর্বের কতিপয় আয়াত দ্বারা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে । নীচে সুরাটির ৪৬ তম আয়াত থেকে ৬০ তম আয়াত সমুহ আবলোকন করা যেতে পারে । আয়াতগুলি স্বব্যখাত ।

''আমি তাদের পেছনে মরিয়ম তনয় ঈসাকে প্রেরণ করেছি। তিনি পূর্ববর্তী গ্রন্থ তওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। আমি তাঁকে ইঞ্জিল প্রদান করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। এটি পূর্ববতী গ্রন্থ তওরাতের সত্যায়ন করে পথ প্রদর্শন করে এবং এটি খোদাভীরুদের জন্যে হেদায়েত উপদেশ বানী। '' [( সুরা মায়িদা আযাত ৪৬)৫:৪৬]

''তওরাতের সত্যায়ন করে পথ প্রদর্শন করে এবং এটি খোদাভীরুদের জন্যে হেদায়েত উপদেশ বানী''। [( সুরা মায়িদা আযাত ৪৬)৫:৪৬]

''ইঞ্জিলের অধিকারীদের উচিত, আল্লাহ তাতে যা অবতীর্ণ করেছেন। তদানুযায়ী ফয়সালা করা। যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী''। [( সুরা মায়িদা আযাত ৪7)৫:৪৭]

''আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে এক উম্মত করে দিতেন, কিন্তু এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে ধর্ম দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। অতএব, দৌড়ে কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন কর। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অতঃপর তিনি অবহিত করবেন সে বিষয়, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে'' [(সুরা মায়িদা আযাত ৪৮)৫:৪৮]

''আর আমি আদেশ করছি যে, আপনি তাদের পারস্পরিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তদনুযায়ী ফয়সালা করুন; তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না এবং তাদের থেকে সতর্ক থাকুন-যেন তারা আপনাকে এমন কোন নির্দেশ থেকে বিচ্যুত না করে, যা আল্লাহ আপনার প্রতি নাযিল করেছেন। অনন্তর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে নিন, আল্লাহ তাদেরকে তাদের গোনাহের কিছু শাস্তি দিতেই চেয়েছেন। মানুষের মধ্যে অনেকেই নাফরমান।'' [( সুরা মায়িদা আযাত ৪৯)৪:৪৯]

''তারা কি জাহেলিয়াত আমলের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী কে?'' [( সুরা মায়িদা আযাত ৫০)৫:৫০]

''হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না''।[( সুরা মায়িদা আযাত ৫১)৫:৫১]

''বস্তুতঃ যাদের অন্তরে রোগ রয়েছে, তাদেরকে আপনি দেখবেন, দৌড়ে গিয়ে তাদেরই মধ্যে প্রবেশ করে। তারা বলেঃ আমরা আশঙ্কা করি, পাছে না আমরা কোন দুর্ঘটনায় পতিত হই। অতএব, সেদিন দুরে নয়, যেদিন আল্লাহ তা’আলা বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দেবেন-ফলে তারা স্বীয় গোপন মনোভাবের জন্যে অনুতপ্ত হবে''। [ (সুরা মায়িদা আয়ত ৫২)৫:৫২]
সুরার এই আয়াত এ এসে দেখা যায় যে, আল্লাহ বলেন, সেদিন দুরে নয়, যেদিন আল্লাহ তাআলা বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দেবেন-ফলে তারা স্বীয় গোপন মনোভাবের জন্যে অনুতপ্ত হবে। আল্লা যা ইচ্ছা করেন তা অবশই ঘটে , তা রদ করার ক্ষমতা কারোরই নেই । আল্লার বিজয় আসবেই এবং আল্লার নির্দেশ অনুসারেই তারা তাদের নীজ গোপন মনোভাবের জন্য় অনুতপ্ত হবে । এবং তাদের এই অনুতপ্ত হওয়ার অবস্থা দেখেই নীচে প্রদত্ত ৫৩ নং আয়াতের বর্ণনা অনুযায়ী মুসলমানরা বলবেঃ এরাই কি সেসব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করত যে, আমরা তোমাদের সাথে আছি? তাদের কৃতকর্মসমূহ বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে।

''মুসলমানরা বলবেঃ এরাই কি সেসব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করত যে, আমরা তোমাদের সাথে আছি? তাদের কৃতকর্মসমূহ বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে''।[( সুরা মায়িদা আযাত ৫৩)৫:৫৩)
এরপরের কয়েকটি আয়াতে মুসলমানদের বন্ধুত্বের প্রসংগে আল্লা কি বলেন তা গভীর মনযোগের সাথে অনুধবান করতে হবে , এগুলিতে রয়েছে তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং ঈমানদার হওয়ার সহজ সরল পন্থা ও কারা বিজয়ী হবে তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা । যেমনটি বলা হয়েছে :

''তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ-যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র''। [( সুরা মায়িদা আযাত ৫৫)৫:৫৫]

''আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর অনুসারী এবং তারাই বিজয়ী''। [( সুরা মায়িদা আযাত ৫৬)৫:৫৬]

৭) সুরা তাওবার ৩০ নং আয়াত এর খন্ডিতাংশ ব্যবহার করে বলা হচ্ছে :
ইহুদি এবং খ্রিস্টানগন বিপথগামী । আল্লাহ নীজে তাদের সাথে যুদ্ধ করবেন । (Christians and Jews are perverse. Allah himself fights against them. 9:3০)
কিন্তু সুরা তাওবার ৩০ নং পরিপুর্ণ আয়াতটি নিম্মরূপ :

''ইহুদীরা বলে ওযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে ‘মসীহ আল্লাহর পুত্র’। এ হচ্ছে তাদের মুখের কথা। এরা পূর্ববর্তী কাফেরদের মত কথা বলে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন, এরা কোন উল্টা পথে চলে যাচ্ছে''।[( সুরা তাওবাহ আয়াত ৩০ ( ৯:৩০) ]
আর যুদ্ধ প্রসংগে কি বলা হয়েছে তা সুরার ২৯ নং আয়াতে দেখা যাক ।

''তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে''।[( সুরা তাওবাহ আয়াত ৩০ ( ৯:৩০) ]

এ আয়াতটির তাফসির করতে গিয়ে মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর মোহাম্মদ মুস্তফা আল মারঘি নিম্মোক্ত ব্যাখ্যা দিয়েছেন “
"fight those mentioned when the conditions which necessitate fighting are present, namely, aggression against you or your country, oppression and persecution against you on account of your faith, or threatening your safety and security, as was committed against you by the Byzantines, which was what lead to Tabuk. (Tafsir al-Maraghi . p. 95.
আল আজহার ইসলামী বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেকটর প্রনীত তাফসির এ সুন্দরভাবে এই আয়াতের তাৎপর্য বুঝানো হয়েছে , বলা হয়েছে নীজ দেশ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে , ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে নিপীরণের সম্মুখীন হলে এবং দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি শৃংখলা হুমকির সম্মুখীন হলে যুদ্ধ করার জন্য , যেমন একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ৬৩০ খৃ: বা্‌ইজানটাইনদের বিপক্ষে যা তাবুত যুদ্ধ নামে খ্যাত । তাই অকারণে কোন যুদ্ধে কিংবা শুধুমাত্র ধর্মীয় আগ্রাসন বা রাস্ট্রিয় পরিধি সম্প্ররসারণের নিমিত্ত যুদ্ধের কথা বলা হয়নি । সে সময়ে ইসলামের প্রাথমিক যুগে ধর্মীয় ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার স্বার্থে বাইজানটানদের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ যুদ্ধের প্রেক্ষিতে নাযিলকৃত এই আয়াতটির যতার্থ প্রয়োগ অনুধাবন না করে এটিকে অযৌক্তিকভাবে ব্যবহার করে ইসলামকে যুদ্ধবাজ বা ধর্মীয় আগ্রাসনবাদী হিসাবে অভিহিত করার কোন যুক্তিকতাকি আছে! আক্রান্ত হলে যে কেও যুদ্ধ করবে যতক্ষন পর্যন্ত না সে পুর্ণ বিজয়ী হয় এবং বিজীত পক্ষ তার প্রতি সংপুর্ণ সমর্পিত না হয় এটাইতো একান্ত স্বাভাবিক যেমনটি আল্লাহ তাঁর পাক কালামে বিবৃত করেছেন ।

৮) সূরা আল মু’মিনূন এর ১১৭ নং আয়াতের খন্ডিতাংশ ব্যবহার করে বলা হচ্ছে :
অবিশ্বাসীরা সফলকাম হবেনা (Disbelievers will not be successful. 23:117)
এখন দেখা যাক সূরা আল মু’মিনূন এর ১১৭ নং আয়াতে কি আছে

''যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ নেই, তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না''( রা আল মু’মিনূন আয়াত ১১৭)।

অবিশ্বাসীদের প্রতি আল্লাহ তায়ালার এরকম সতর্কতামুলক বাণী প্রেরণের পুর্ববর্তী আয়াতে আল্লা কি বলেছেন তার দিকে দৃষ্টি দিলে বুঝা যাবে এধরণের সতর্কবার্তা দানের নিগুঢ় রহস্য । এ সুরার ১১৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন:

''অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক [(সূরা আল মু’মিনূন এর ১১৬) ২৩:১১৬].

উপরে বর্ণিত স্বব্যখাত আয়াতে আল্লা তাঁর পরিচয় বর্ণনা করেছেন, তারপরের আয়াতে সতর্ক করে বলেছেন কেউ যদি তার পরেও আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডেকে আনে তবে তো তারা অবিশ্বাসী এবং তারা সফলকাম হবেনা । এর পরে এই সুরারই ১১৮ নং আয়াতে বান্দাদের প্রতি পরম ক্ষমাশীল পরম দয়ালু আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য বলেছেন যেন পরিনামে সুখ ও শান্তির পথে তারা ধাবিত হতে পারে । এটা অবিশ্বাসীদের জন্য সত্যপথে এসে সফলকাম হওয়ার জন্য আল্লার পক্ষ থেকে একটি পরম ক্ষমাশীল আহবান । এতে বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীলদের জন্য রয়েছে তাৎপর্যময় দিক নির্দেশনা ।

''বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী''।
[(সূরা আল মু’মিনূন এর ১১৮) ২৩:১১৮].

৯) সুরা আন-নুর এর ৫৫ নং আয়াতের খন্ডিতাংশ ব্যবহার করে বলছে :
অবিশ্বাসীরা দুস্কৃতিকারী (Disbelievers are miscreants. 24:55)
কিন্তু সুরা আন-নুরের ৫৫নং আয়াতে কি বলা হয়েছে তা এখন দেখা যাক :

তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন। যেমন তিনি শাসনকতৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য [ সুরা আন –নুর আয়াত ৫৫)২৪:৫৫]

প্রকৃতপক্ষে স্বব্যাখ্যাত এ আয়াতের উপসংহারে বলা হয়েছে যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারাই হবে অবাধ্য , তাদেরকে দুস্কৃতিকারী হিসাবে অবিহিত করা হয় নাই । শুধু শুধু নিজেদেরকে দুস্কৃতিকারী হিসাবে স্বিকৃতি দিয়ে বিভেদের দেয়াল তুললে নিজেদেরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে । অথচ এ সুরার পরবর্তী ৫৬ নং আয়াতেই পরম দয়ালো আল্লাহ অকৃতজ্ঞ ও অবাধ্যদেরকে তাঁর অনুগ্রহ লাভের জন্য নামাজ কায়েম, যাকাত দান এবং রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য বলেছেন । পরম দয়ালু আল্লা কত ভাবেই না তার সৃষ্ট সকল মানুষকে তার দিকে আহবান করেছেন যেন প্রতিটি মানুষই ইহকাল ও পরকালে পরম সুখ শান্তিতে থাকতে পারে ।

নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও। [ (সুরা আন –নুর আয়াত ৫৬)২৪:৫৬]

ক্যাটাগরী (খ) এর আওতাভুক্ত বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সম্বলিত কোরানের অপরাপর আয়াত নিয়ে লিখা বিষয়সমুহ পরবর্তী পর্বে দেখার আমন্ত্রণ রইল ।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৬

মহা সমন্বয় বলেছেন: জয় হোক সত্যের : বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দন্ধ - হোক চিরতরে বন্ধ

২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: বিশ্বাস করি একদিন সত্যের জয় হবে । এটাই তো সত্যের বৈশিষ্ট ।

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩২

বিজন রয় বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা। কিছুদুর পড়লাম। শেষ করতে পারিনি।

২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ । জানতাম এ পরিসরে পাঠকের ধর্যচ্যুতি হবে । ভাবতে পারিনি লিখাটা এত বড় হয়ে যাবে । ছোট্ট প্রবন্ধ আকারেই লিখার ইচচ্ছা ছিল । পরে মত পাল্টালাম। স্ট্রাকচারটা বই আকারে করার ধারণা জেগে উঠল । তার আগে মনে হোল লিখাটির একটি পিয়ার রিভিউ হলে উপকার হয় । আর এ ক্ষেত্রে সামুর বিজ্ঞ ভাই বোন দের কাছ থেকে যদি সমালোচনামূলক মন্তব্য পাওয়া যায় তাহলে অনেক ভাল হয় । যাহোক ধন্যবাদ , এবিষয়ে অনেক নিরপেক্ষ গবেষণা ধর্মী লিখার প্রয়োজন অাছে । সকলেই যদি এগিয়ে আসে তাহলে মনে হয় সত্যিই ধরার বুকে একদিন বিধাতার সৃস্ট সকল মানুষকে নিয়ে একসাথে শান্তিপুর্ণভাবে বসবাস করে বিধাতার প্রতি দেয়া শয়তানের চ্যালেন্জকে ব্যার্থ করে দেয়া যাবে ।

৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২৮

কালনী নদী বলেছেন: সংগ্রহ করে রাখার জন্য দীর্ঘায়িত ব্লগের বিকল্প নাই। অনেক তথ্য একসাথে পাওয়া যায়। মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। মন্তব্য পাঠান্তরে শুকরিয়া জানবেন ভাই!

৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩০

কালনী নদী বলেছেন: বই আকারে এধরণের সুন্দর লেখা তুলনাহীন, শোভ কামনা রইলো। আর বই বের করলে অবশ্যই জানাবেন।
আবারও ধন্যবাদ!

০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: এ ব্লগে নতুন হওয়ায় রিপ্লাই বাটন চাপতে ভুল হওয়ার কারণে এই উত্তরটির নোটিফিকেশন পৌঁছাইনাই । তাই বিলম্বে হলেও পুণ: পাঠালাম। দু:খিত এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ।
আপনার আর্শিবাদ হৃদয়ে ধারণ করে নিলাম । একসাথে আনেকগুলি ফ্রন্টে কাজ করতে হচ্ছে এর সাথে কিছু ফরমায়েসি কাজও আছে । তাই লিখাটা কখন শেষ করতে পারব তা সঠিক করে বলতে পারছিনা । সমস্যা হলো বাংলা টাইপ , ঘন ঘন ফনট বদলায়, এক অক্ষর টাইপ করলে আসে অন্য আর একটা, একি ব্যবহৃত বাংলা সফট ওয়ার না আমার লেপটপের দোষ ধরতে পারছিনা । ফলে লিখার গতি স্লথ হয়ে যায় তবে বইটি দু এক মাসের মধ্যে ইনসাল্লা বের করতে পারব বলে আশা রাখি বই বের হলে অবশ্যই জানাব ।
ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এ শুভ কামনা থাকল ।

৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৩৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ । আপনার আর্শিবাদ হৃদয়ে ধারণ করে নিলাম । একসাথে আনেকগুলি ফ্রন্টে কাজ করতে হচ্ছে এর সাথে কিছু ফরমায়েসি কাজও আছে । তাই লিখাটা কখন শেষ করতে পারব তা সঠিক করে বলতে পারছিনা । সমস্যা হলো বাংলা টাইপ , ঘন ঘন ফনট বদলায়, এক অক্ষর টাইপ করলে আসে অন্য আর একটা, একি ব্যবহৃত বাংলা সফট ওয়ার না আমার লেপটপের দোষ ধরতে পারছিনা । ফলে লিখার গতি স্লথ হয়ে যায় তবে বইটি দু এক মাসের মধ্যে ইনসাল্লা বের করতে পারব বলে আশা রাখি বই বের হলে অবশ্যই জানাব ।
ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এ শুভ কামনা থাকল ।

৬| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:০৪

বিবেক ও সত্য বলেছেন: [link|http://www.somewhereinblog.net/blog/wise/30134885|বিশ্বাস (ঈমান) করার পূর্বে আগে ভাল করে জানুন বিশ্বাস বলতে কি বোঝায়
পৃথিবীতে মোট ধর্মের সংখ্যা-১(এক)/প্রামান্য ব্যখ্যা

০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৫৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ । লিংক ফলো করে লিখাটি পড়ে আসলাম । জানা ও শিখা গেল অনেক কিছু । অআমার এই লিখাটিতে অআপনার কিছু কিছু বিষয়ের সাথে মিল পেতে পারেন ।

ঈমান ও ইহসানের উৎকর্ষতাই ইহকাল ও পরকালের মুক্তি : মৌলবাদিদের কর্মপন্থায় তা কি সঠিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে ?
http://www.somewhereinblog.net/blog/ali2016/30119607।

৭| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:০২

কালনী নদী বলেছেন: বইয়ের অগ্রগতি কেমন ?

০২ রা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৬:৩৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: বইটার কিছু অংশ বাংলায় এখানে দিয়ে দেখলাম এর পাঠক একেবারেই নেই । বুবতে পারলাম এ ধরণের আতি সাধারণ মামুলী বিষয়ে আমার বিজ্ঞ সামুর ভাই বোনেরা আমার থেকে অনেক বেশী ওয়াকেবহাল । মাত্র গুটি কয়েক পাঠক এধরনের মামুলী লিখা পাঠ করেছেন । ফলে কস্টকরে এটাকে বাংলায় লিখার উৎসাহ কমে যায় । তাই ইংরেজীতে শুরু করা মুল বইটাতেই বেশি মনযোগী হলাম । লক্ষ বিধর্মী ওরিয়েন্টালিষ্ট লিখকদেরকে মোকাবেলায় অনান্য গবেষক ও লিখকগন যেন প্রয়োজনে রেফারেন্স দিতে পারে । ৩৬৫ পৃষ্ঠায় লিখা বইটি এখন প্রকাশের অপেক্ষায় প্রিনটিং এ আছে । দোয়া করবেন বইটা যেন দিনের অালো দেখে ।
ভাল থাকার শুভ কামনা রইল ।

৮| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: পোস্ট টা দুটো সিরিজে দিলে পারতেন। কারন পরের ইলেবোরেট অংশটা আলাদা করে পড়তেই বেশী ভালো লাগবে। সর্বোপরী খুবই ইনফরমেটিভ পোস্ট

০২ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ উদাসী ভাই । কস্টকর একাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলাম , আবার লিখা শুরু করব ইনসাল্লা । আপনার দুটো মন্তব্যই আমলে নিলাম । এ ব্লগে এটা আমার প্রথম দিককার পোষ্ট তাই বুঝতে পারিনি পোষ্টের অবয়ব কি রকম করলে ভাল হয় । যাহোক বড় লিখার বিষয়ে এর পর থেকে তাই করব , পর্বগুলিকে ছোট ছোট করে দিব ।
ভাল থাকার শুভ কামনা থাকল ।

৯| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সবটুকু পড়িনি তবে যতটুকু পড়েছি ভাল লেগেছে।

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:০৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ ফরিদ ভাই ,
শুভেচ্ছা রইল

১০| ১৬ ই জুন, ২০১৯ রাত ৯:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "রূহ আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন এর একটি আদেশ বা কমান্ড" - ফুলস্টপ!
অধ্যায়-২ এর আগে পর্যন্ত পড়ে গেলাম। খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন।
জাযাকাল্লাহু খায়রাঁ। পোস্টে প্লাস + +

১৬ ই জুন, ২০১৯ রাত ১০:৫৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় খায়রুল আহসান ভাই ,
সুপরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
আলোচনা সুন্দর হয়েছে শুনে অনুপ্রাণীত হলাম ।
শুভেচ্ছা রইল

১১| ২৪ শে জুন, ২০১৯ সকাল ১১:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: পবিত্র ক্বুর'আন থেকে খন্ডিত উদ্ধৃতি অধিকাংশ সময় মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে দিয়ে থাকেন, খুব কম সময়েই সেটা 'না বুঝে' করা হয়ে থাকে।
অধ্যায়-২ পাঠ করে আরও বেশী চমৎকৃত হ'লাম।

২৬ শে জুন, ২০১৯ রাত ২:৫৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ আরো একবার এসে দেখার জন্য ।
ঠিকই বলেছেন পবিত্র ক্বুর'আন থেকে খন্ডিত উদ্ধৃতি অধিকাংশ সময় মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে দিয়ে থাকেন, খুব কম সময়েই সেটা 'না বুঝে' করা হয়ে থাকে
শুভেচ্ছা রইল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.