![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ২৩শে জুন, পলাশী দিবস। বিশ্বকাপের ধাক্কায় প্রায় ভুলতে বসেছিলাম,কিন্তু শেষ অবশেষে মনে পরল। প্রিয় ব্লগে গিয়ে দেখলাম কোন লেখা নাই। তাই নিজেই লিখতে বসে গেলাম।
১৭৫৭ খৃস্টাব্দের ১২ জুন কলকাতার ইংরেজ সৈন্যরা চন্দননগরের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়। সেখানে দুর্গ রক্ষার জন্য অল্প কছু সৈন্য রেখে তারা ১৩ জুন অবশিষ্ট সৈন্য নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করে। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের পথে হুগলি, কাটোয়ার দুর্গ, অগ্রদ্বীপ ওপলাশীতে নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ ইংরেজদের পথ রোধ করল না। নবাব বুঝতে পারলেন, সেনাপতিরাও ষড়যন্ত্রে শামিল।
বিদ্রোহের আভাস পেয়ে সিরাজ মিরজাফরকে বন্দি করার চিন্তা বাদ দিলেন। তিনি মিরজাফরকে ক্ষমা করে তাকে শপথ নিতে বললেন। মিরজাফর পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে অঙ্গীকার করলেন যে, তিনি শরীরের একবিন্দু রক্ত থাকতেও বাংলার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন হতে দেবেন না। গৃহবিবাদের মীমাংসা করে তিনি রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফ, মিরজাফর, মিরমদন, মোহনলাল ও ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রেঁকে সৈন্য চালানোর দায়িত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধযাত্রা শুরু করলেন।যেখানে সারা ইউরোপের দেশ গুলোর এদেশে মোট সৈন্য ছিল প্রায় ৪ হাজার সেখানে বাংলায় সৈন্য ছিল ৫০০০০ এর মত।
২৩ জুন সকাল থেকেই পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজরা মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো।১৭৫৭ সালের ২২ জুন মধ্যরাতে রবার্ট ক্লাইভ কলকাতা থেকে তাঁর বাহিনী নিয়ে পলাশী মৌজার লক্ষ্মবাগ নামে আম্রকাননে এসে তাঁবু গাড়েন। বাগানের উত্তর-পশ্চিম দিকে গঙ্গা নদী। এর উত্তর-পূর্ব দিকে দুই বর্গমাইলব্যাপী আম্রকানন। বেলা আটটার সময় হঠাৎ করেই মিরমদন ইংরেজবাহিনীকে আক্রমণ করেন। তাঁর প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ক্লাইভ তার সেনাবাহিনী নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নেন। ক্লাইভ কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন। মিরমদন ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। কিন্তু মিরজাফর, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ যেখানে সৈন্যসমাবেশ করেছিলেন সেখানেই নিস্পৃহভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তাদের সামান্য সহায়তা পেলেও হয়ত মিরমদন ইংরেজদের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করতে পারতেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে সিরাজদ্দৌলার গোলা বারুদ ভিজে যায়। তবুও সাহসী মিরমদন ইংরেজদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গোলার আঘাতে মিরমদন মৃত্যুবরণ করেন।
গোলান্দাজ বাহিনীর প্রধান নিহত হওয়ার পর সিরাজদ্দৌলা মীরজাফর ও রায় দুর্লভকে তাঁদের অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে তীব্র বেগে অগ্রসর হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু উভয় সেনাপতি তাঁর নির্দেশ অমান্য করলেন। তাঁদের যুক্তি হলো গোলন্দাজ বাহিনীর আশ্রয় ছাড়া অগ্রসর হওয়া আত্মঘাতী ব্যাপার। কিন্তু কোম্পানি ও নবাবের বাহিনীর মধ্যে তখন দূরত্ব মাত্র কয়েক শ গজ। বিকেল পাঁচটায় সিরাজদ্দৌলা বাহিনী নির্দেশনার অভাবে এবং ইংরেজ বাহিনীর গোলন্দাজি অগ্রসরতার মুখে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেন অর্থাৎ পরাজয় স্বীকার করেন। নবাবের ছাউনি ইংরেজদের অধিকারে আসে। ইংরেজদের পক্ষে সাতজন ইউরোপিয়ান এবং ১৬ জন দেশীয় সৈন্য নিহত হয়। তখন কোন উপায় না দেখে সিরাজদ্দৌলা রাজধানী রক্ষা করার জন্য দুই হাজার সৈন্য নিয়ে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু রাজধানী রক্ষা করার জন্যেও কেউ তাঁকে সাহায্য করেনি। সিরাজদ্দৌলা তাঁর সহধর্মিণী লুৎফুন্নেসা ও ভৃত্য গোলাম হোসেনকে নিয়ে রাজধানী থেকে বের হয়ে স্থলপথে ভগবানগোলায় পৌঁছে যান এবং সেখান থেকে নৌকাযোগেপদ্মা ও মহানন্দার মধ্য দিয়ে উত্তর দিক অভিমুখে যাত্রা করেন। তাঁর আশা ছিল পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে পারলে ফরাসি সৈনিক মসিয়ে নাস-এর সহায়তায় পাটনা পর্যন্ত গিয়ে রামনারায়ণের কাছ থেকে সৈন্য সংগ্রহ করে ফরাসি বাহিনীর সহায়তায় বাংলাকে রক্ষা করবেন।কিন্তু ঠিক এর দশ দিন পরে সিরাজকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে বন্দী সিরাজকে ছিন্ন বস্ত্রে নগরের রাজপথে ঘোরানো হয়। কূট বুদ্ধির ব্রিটিশেরা এবং তাঁদের ভাব শিষ্যরা, সিরাজকে হিংস্র, বুদ্ধিহীন, চপলমতির খলনায়ক হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভবিষ্যতের বাঙালি তাঁকে একজন প্রকৃত বীর, দেশপ্রেমিক এবং শহীদের মর্যাদা দেবে।
কৃতজ্ঞতাঃ গুগল এবং উইকি মামা...
২৪ শে জুন, ২০১৪ রাত ১:৪৬
আলী ইমাম বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:৩০
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সুন্দর পোস্ট প্রসব করার জন্য ধন্যবাদ