নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রহস্য বই
নিচু তলার উকিল
'
অতঃপর গ্রামের মোড়ল মুখার্জী পুরকায়স্থ আমার বাড়ীতে হাজির হইলেন।সমাজের নানাবিধ সমস্যাদি লইয়া কথাবার্তার প্রাক্কালে হঠাৎ করিয়া মুখার্জী দা বলিয়া উঠিলেন-
-দাদা আছে কি?যদি দিতেন তবে কিয়ৎকাল পড়িয়া মনের তৃপ্তি মিটাইয়া লইতুম।দয়া করিয়া দাদা না করিবেন না।
-আলবৎ দিব দাদা,কিন্তু কী আছে কী চাচ্ছেন দাদা?কোনরূপ ঠাওর করিতে পারতেছিনা?
-দাদা ঐ যে সেইদিন যে পড়িলেন।
-ওতো রোজই পড়িয়া থাকি।
-জ্বী দাদা আমিও পশ্চাৎ কালে প্রচুর পড়িতুম।এক খানা ১০ টাকার দরে কিনিয়া আনিতুম।এক নিঃশ্বাসে পড়িয়া উহা ৫ টাকায় হারাধনের নিকট বিক্রি করিয়া দিতুম।হারাধন ৫ টাকায় পাইয়া যে খুশি হইতো দাদা,আবেগে আমারে জড়াইয়া ধরিয়া বলিত,হারাধন দা চলনারে আমরাও একটু উহা করিয়া নিজেদের জ্ঞান বাড়াইয়া লই,,,,,,,,,,,,,ইত্যাদি ইত্যাদি
-তাই নাকি দাদা ১০ টাকায় পাওয়া যাইতো,বলিয়া ভাবিতে লাগিলুম তৎকালীন সময়ে তো আমিও ছিলুম,কই কোথাও তো এত কম দামে কিনিতে পেতুম না। নিশ্চয় এই ব্যাটা চুরি করিয়া আনিয়া ছিল।
-দাদা কী ভাবিতে আরম্ভ করিলেন?দাদা জ্ঞাত আছেন কিনা বোধগম্য নহে, একদা ঐ বই পড়িয়া হারাধন কী এক কাণ্ড ঘটাইয়াছিল?
-কী কাণ্ড?
--কৈলাশের বউকে গিয়া বলিয়াছিল,বৌদি আমি তোমাকে ভালবাসি।
-ঐ রূপ বইয়ে কি ঐ গুলান লেখা থাকিত?মনে মনে পৃষ্ঠা উল্টাইতে থাকিলুম।নাহ্ তো কোথাও তো উহার দর্শন পেলুম না।কোন রকমেই বুঝিতে পারিলুম না রহস্যটা কি?রহস্যভরা কন্ঠে বলিয়া উঠিলুম
-দাদা কোন বইখানার কথা বলিতেছেন?
'
মুখার্জী দাদা উল্টো একখানা রহস্যের হাসি দিয়া চ্যাপ্টা মুখখানা বাঁকা করিয়া তাচ্ছিল্যের সহিত বলিয়া উঠিলেন-
-দাদা"সাধু সাজা হইতেছে তাই না ন্যাকা ন্যাকা অভিনয় করা হইতেছে,ইত্যাদি ইত্যাদি।
মুখার্জী দার কথা শুনিয়া আমার বুকের ভিতরটা কেমন জানি মচকাইয়া উঠিল,বইখানার রহস্যতা ভেদ করিবার ইচ্ছাটাও ক্রমশ বহুগুণ বাড়িয়া উঠিবার দরুন বলিয়া উঠিলুম
-হ্যাঁ হ্যাঁ দাদা মনে পড়িয়াছে অনেক সুন্দর বইখানা তাই না?
-(উচ্চস্বরে)হুম তাই।
-দাদা প্রথম গল্পটা যেন কি ছিল?মনে পড়িতেছেনা।
-ও এই কথা দাদা(কিছুক্ষণ ভাবিয়া)দুলা ভাই আর শালীর প্রেম।ইত্যাদি ইত্যাদি
মুখার্জী দার কথা শুনিয়া এইবার বুঝিতে আর বাকি রহিল না,ইনি এক জন পেশাদার চটিবাজ। কি বলিবার চাইতেছিল,বলিলুম-
-দাদা এই বয়সেও,আপনি,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,!!!
-আরে দাদা বয়স হয়েছে তাতে কি মন টা তো আর বয়সের ভারে নুজ্ব্য হইয়া পড়েনি।
-জ্বী দাদা ঠিকই বলিয়াছেন।তবে দাদা সেইদিন তো আমি চটি পড়িতেছিলুম না
ওহ নাই!বলিয়া মুখ খানা লজ্জায় লাল করিয়া বলিতে শুনিলুম।ভাবিয়াছিলুম আপনিও ...................................
'
বেচারার যে চটি পড়ার নেশাটা ভাল করিয়াই মাথা চাড়া দিয়া উঠিয়াছে উহা ঠিক বুঝিতে পারিলুম।সমাজের সম্মানিত একজন মানুষ, এই সামান্য একজন ছাপোষা নিচু তলার উকিলের কাছে আসিয়াছে,ওনাকে কি আর খালি হাতে ফিরাইয়া দিতে পারি?তাই তো পিছন থেকে ডাক দিয়া বলিলুম
-দাদা তসলিমা নাসরিনের"লজ্জা"আছে চলিবে নাকি?
-হাসিতে গদ গদ হইয়া বলিতে শুনিলুম চলিবে চললিবে আলবৎ চলিবে সে ও তো আর কম চটিবাজ নহে।
'
যথারীতি বইখানা লইয়া মুখার্জী দার প্রস্থান ঘটিলো।আর আমি ভাবিতে লাগিলুম ইহারা সেই জীব মাইরি বৃদ্ধ হইতে চলিল কিন্তু এখনো দুরন্ত পথিকের মত নিজের ভাঁজ পড়া কপালের চামড়াখানি টান টান করিয়া,নিজেদের কি রূপে অন্যদের কাছে উপস্থাপন করিয়া নিজেদের জাত উদ্ধার করা যাইবে?বড় গলায় সালিশি বৈঠকে বলাৎকার কারীকে বলিবে ইহারা সমাজের কীট, ইহাদের ৫০০ টা বেত্রাঘাত করা হোক।ভিকটিম কে বলিবে যাও এই কয়টি টাকা লইয়া অনত্র বিবাহ দাও। ইহাদের বিচার দেখিয়া উৎসুক জনতা ভাবিবে আহা কি সুন্দর বিচার হইয়াছে আর সমাজে বলিয়া বেড়াইবে জয় মুখার্জী দার জয়।এদিকে নির্যাতিত পরিবার সঠিক বিচার পাক আর না পাক চুপটি করিয়া বসিয়া নিজেদের একই রূপে আবিষ্কার করিতে থাকিবে।অন্যদিকে মুখার্জী দাদারা নিশিকালে চটি পড়িতে পড়িতে হারিয়ে যাবে সমুদ্রের অতল গভীরে,সাঁতার কাঁটিতে কাঁটিতে বলিবে এইতো আমার ছেলেবেলা আমি কিশোর হইয়াছি।কই গেলিরে ভুপেন,এইবার আমায় আর একটা কচি পাঁঠী খাওয়াস রে বাবা।
১৯ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:২৩
নিচু তলাৱ উকিল বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা
২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫
তারেক ফাহিম বলেছেন: আ..হা, কি চমৎকার।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদরে দেশের লোকদের সম্পত্তির উপর টান বেশি থাকে।
১৯ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:২৪
নিচু তলাৱ উকিল বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা
৩| ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার লেখনীর কারনে, আপনার পোষ্ট পড়তে বিরক্ত লাগে না।
১৯ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৩৫
নিচু তলাৱ উকিল বলেছেন: কৃতজ্ঞতা দাদা আপনারা পড়েন বলেই পোস্ট করার সাহস পাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:১৫
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: বড়ই চমৎকার লিখিয়াছেন। পড়িয়া মুগ্ধ হইলাম।