![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার বিবেক আমাকে যা শিক্ষা দেয় সেটাই প্রকাশ করার চেষ্টা করি
কেন জানি বিদেশ যাত্রা আমার কাছে নাস্তিকের মত। শুক্রবার সারাদিন সুস্থ আমি, যখনই এয়ারপোর্টে এলাম আমার প্রসাবে জ্বালা পোড়া অনুভব করতে লাগলাম। যেহেতু আমার কিডনির পাইপ লাইনে স্টোন ধরা পড়েছিল যা আমি তেমন পাত্তা দেই নাই। সারাদিন প্রচন্ড ধকল গেছে সবকিছু ঠিক ঠাক মতো গুছিয়ে নিত। শরীরে পর্যাপ্ত পানি পড়ে নাই তাই হয়তো জ্বালা পোড়া করছে ভেবে এয়ার পোর্টের ভিতরই দুই বোতল পানি নগদে খেয়ে নিলাম। এটাই আমার জন্য কাল হল, দীর্ঘ সময় লাইনে থেকে যখন প্লেনের ভিতর গিয়ে উঠলাম তখন আমার প্রচন্ড প্রসাবের বেগ ঠিক যেন এখনই কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে। সীটে বসার আগেই বাথরুমের দিকে ছুটলাম। কেবিন ক্রু পথ আটকে দিল! প্লেন টেকঅফ না করা পর্যন্ত বাথরুম খোলা হবে না। অনেক রিকোয়েষ্ট করলাম, কাজ হল না। সীটে বসে শুরু হল আমার টাইমের কাউন্ট ডাউন আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে প্রসাব চেপে রাখার পালা। মনে হচ্ছিল গোপাল ভাড়ের সেই গল্পটার কথা, যখন রাজা মশাই তাকে জিজ্ঞেসা করেছিল "ওহে গোপাল, আমার ছেলে হয়েছে শুনে তুমি কেমন খুশী হয়েছ?" উত্তরে গোপাল বলেছিল, হাগা মোতার পর যেমন ভাল লাগে তেমন" এ কথা শুনে রাজা মশাইতো গোপালকে শুলে চড়ানোর দশা। বাকিটা আর নাই বললাম, আমি ৪০ মিনিট ঐ অবস্থায় সীটে বসে ছটফট করছিলাম আর আল্লাহকে বলছিলাম হে আল্লাহ আর একটু সহ্য করার ক্ষমতা দাও।
মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টে নামার পর আমার লাগেজ খুলে এক মহিলা পুলিশ ভিতরে মামার জন্য বয়ে আনা টাটকা গরুর মাংস রেখে দিল। আমি যখন বললাম চায়না যাব ব্যবসায়ের কাজে তখন মাংসটা আবার ফিরিয়ে দয়া দেখাল। যথারীতি বাসে উঠলাম কেএল সেন্টার আসার জন্য। লাগেজ বক্সে আমার বড় ব্যাগটা রেখে ভিতরে গিয়ে একটা সীট নিলাম। আশ পাশের যাত্রীদের বেশীরভাগই বাঙ্গালী। এয়ার পোর্ট থেকে কেএল সেন্টার এক ঘন্টার পথ। মাঝ পথে বেশ কয়েকজন যাত্রী নামল। আমিও ভুল করে নামতে গিয়েছিলাম কিন্তু ড্রাইভার জানাল এটা কেএল সেন্টার না। আমার চোখ চড়কগাছে উঠল যখন কেএল সেন্টার নেমে দেখতে পেলাম বক্সে আমার লাগেজ ব্যাগটা নাই ! ওর মধ্যে আমার মূল্যবান ডকুমেন্টস ছিল। জামা কাপড় চোপড়, লুঙ্গি-গামছা ছাড়াও আমার প্রিয় কোরআনশরীফ এবং বেশ কিছু শুকনা খাবার, সকল মোবাইল, ক্যামেরার চার্জার এবং আমার মেডিসিন। মামার জন্য আমার স্ত্রী সারাদিন পরিশ্রম করে দুই প্রকার পিঠা বানিয়ে দিয়েছিল। মনে হচ্ছিল ঠিক যেন কেউ আমাকে ল্যাংটা করে দিল। অপরিচিত জায়গা সংগে মোবাইলের সীমও নাই। কয়েকজনকে রিকোয়েষ্ট করলাম এক মিনিট মোবাইলটা ব্যবহার করে আমার মামাকে একটা ম্যাসেজ দেবার জন্য কিন্তু কেউ রাজী হল না।
অবশেষে একটা সীম কিনে মামার সংগে যেগাযোগ করে তাকে পেতে সক্ষম হলাম। দুজনে মিলে পুনারয় কেএল বাস স্ট্যান্ডে এলাম, কিন্তু কোন লাভ হল না। এমন রেকর্ড আমাদের সায়েদাবাদ টু বাগেরহাটের লোকাল গাড়িতেও কোনদিন হয়েছে বলে আমি শুনি নাই। দুর্ভাগ্য আমার, তা না হলে এত মানুষ থাকতে আমার ব্যাগই বা চুরি হবে কেন? পুলিশের কাছে গেলাম, রিপোর্ট লেখালাম, ঐদিকে মামার অফিস থেকে বার বার মালিক ফোন দিচ্ছিল। বেচারা আমার জন্য না জানি বসের কাছে কতটা নাজেহাল হয়েছে।
ভাগ্যিস আমার ক্যামেরা এবং ডলার কাছেই ছিল। তা-না হলে মালয়েশিয়া থেকে আমাকে বালাতকারী নারীদের মত মুখ লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যেতে হত।
কোন ব্লগার ভাই যদি মালয়েশিয়া থেকে থাকেন এবং আমার ব্যাগের কোন খোঁজ পেয়ে থাকেন দয়া করে আমার ০১৪৬৪৩৪০৬৮ নম্বরে এবং আমার মামা যিনি সর্বদা এখানেই থাকেন তার ০১৩৩৫৫৯১৭৮ নম্বরে যোগাযোগ করলে কৃতজ্ঞ হব।
সম্ভবত আমার ব্যাগটা কেউ ভুলে নিয়ে গেছে। কারন আমি যখন কেএল সেন্টারে নামি এবং সকল যাত্রি নেমে চলে যাচ্ছিল তখন এক কর্ণারে একটা ব্যাগ দেখতে পাই। সংগত কারনে আমি ওটা টাচ করি নাই পিছে কেউ আমাকে চোর বাটপার না ভাবে। এমন ক্যাসলিং সিনেমায় দেখেছি অনেক আজ আমার বেলায় খেটে গেল। ব্যাগের ভিতর আমার ভিজিটিং কার্ড ছড়াও আমার হংকং কোম্পানীর সকল অরিজিনাল ডকুমেন্টস রয়েছে। যে ডকুমেন্টস শো করে আমি হংকংএ একটা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যাচ্ছি। হে আল্লাহ আমার ব্যাগ তুমি ফিরিয়ে দাও এবং আমাকে ধৈর্যশীলদের অর্ন্তভূক্ত কর।
প্রতিদিন আমি তাহাজ্জোত নামাজ শেষে ফজরের পূর্বে দুই পাতা করে কোরআন শরীফ অর্থ সহকারে পড়ি, গতকাল ১৫ পারা শেষ করেছি, ইচ্ছা ছিল টুরের মধ্যে দু'এক পারা পড়ে ফেলব, হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে দোয়া করছি যেন আমার প্রিয় কোরআন শরীফের বদৌলতে আমার হারানো ব্যাগটা ফিরে পাই। ব্যাগের মধ্যে তোমার যে পবিত্র কালাম রয়েছে; তুমি ফিরিয়ে না দিলে কি করে আমি পাব বল;
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৮
েবনিটগ বলেছেন: got back the lost documents?