![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার বিবেক আমাকে যা শিক্ষা দেয় সেটাই প্রকাশ করার চেষ্টা করি
আমাদের দেশের বেকার সমস্যা এতটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে যা ভাষায় প্রকাশ করবার মত না। গত পাঁচ বছরে মানব সম্পদ রপ্তানীতে সরকারের আশাতীত সাফল্যের দরুন এই মাত্রা আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। হতাশ যুবকগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশ। কেউবা নদী পথে আর কেউ বা স্থল। খেয়ে না খেয়ে অনেকেই দিচ্ছেন জীবন, তার পরেও থেমে নেই সেই যাত্রা। গত ১৪ তারিখে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরার পথে চোখে পড়ল এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। আমরা তখন প্লেনের সীটে সীট বেল্ট পরায় ব্যাস্ত। হঠাৎ চোখে পড়ল ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দলকে কেবিন ক্রু গণ খালি সীটগুলোতে বসতে বলছেন। আমি ভাবলাম দেশের মাটিতে ঈদ এবং কোরবানীর সময় দেখেছি বাসের হেলফাররা যাত্রী ধরে এনে মাদুর বিছিয়ে হলেও টু পাইস কামায়। তাহলে কি বিমানেও এমন কারবার শুরু হইল নাকি? এক যুবককে জিজ্ঞেসা করলাম, ভাই আপনারা কারা? আপনাদের টিকিটে সীট নম্বর নাই?
টলটলে চোখ নিয়ে যা শোনাল আমার চোখে পানি এসে গেল; এই ছেলে গুলোকে দালাল চক্র মালয়েশিয়া পার করার কথা বলে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। মাত্র ১৪০০ টাকা খরচ করে টুরিষ্ট ভিসা লাগিয়ে প্লেনের টিকিট কেটে উঠিয়ে দিয়েছে রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়ে। যুবকদের প্রত্যেকের পরনে নতুন জামা কাপড়, কোমরে নতুন বেল্ট, গলায় ঝুলানো নতুন ফ্রেমের চশমা। ওদের কেউ বা জমি বেঁচে আর কেউ বা ধার কর্জ করে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন সুদূর মালয়েশিয়ায়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, মালয়েশিয়ান পুলিশ ওদের টুরিষ্ট বলে গণ্য করেননি। ওদের চেহারাই বলে দেয় যে ওরা টুরিষ্ট না। বিষয়টা চেনা খুব সহজ, তাইতো এতবড় দেশে ওদের একটু জায়গা হল না শ্রমের বিনিময়ে দুটো পয়সা কামানোর। সকল স্বপ্ন ঝরে গেল যখন পুলিশ ওদের জেলখানায় ঢুকিয়ে দিল। এই জেল সেই জেল না যে তিন বেলা দু মুঠো ডাল ভাতের ব্যবস্থা আছে।
ছেলেটার চোখের কোনে পানি চলে এল, ওরা ছিল চারদিন না খাওয়া। এক গ্লাস পানিও পেটে পড়েনি আর গোসলের অভাবে শরীর থেকে উটক গন্ধ বের হচ্ছে। বিমান বালা সকালের ব্রেকফাষ্ট নিয়ে এল ট্রেতে সাজিয়ে। সেই সংগে জুস, পানি এবং কফি। আমরা সবাই খাবার নিয়ে নিলাম কিন্তু ক্ষুধার্ত ছেলেটা কিছুই নিল না। ওকে জিজ্ঞেসা করলাম, আপনি না ক্ষুধার্ত? ও জবাবে বলল, দেশের মাটিতে নেমে গোসল না করে মুখে কিছু দিবে না। আমি ওর মনে অবস্থা বুঝতে পারলাম; মানুষ অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর হয়। বিষয়টা এমনই, ওর ক্ষুধার যন্ত্রনাকে মনের যন্ত্রনা গ্রাস করে ফেলেছে অনেক আগেই।
আমরা যখন ইমিগ্রেশন সেরে বেল্টে লাগেজের অপেক্ষায় রইলাম তখন দেখলাম ওর লাগেজের উপর একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগেনো। আমাদের লাগেজ আসতে বেশ দেরী করলেও ওরটা শুধু ঘুরেই যাচ্ছিল কিন্তু ওকে আশে পাশে কোথাও দেখলাম না। হয়ত ওর ভাগ্যের ঘুর্ণমান চাকা আগেই বন্ধ হয়ে গেছে তাই লাগেজ বহন করা ঘুর্ণায়মান বেল্টের দিকে ওর নজর নাই।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২৯
সুচিন্তিত মতবাদ বলেছেন: সরকারকে গালি দেবার মতো হিম্মত আমার নাই। আমি লিখেছি দালালের বিরূদ্ধে। ভিকটিমের সাথে কথা হয়েছে বিমানের সীটে বসে, দালালের ছবি কালেকশন করতে পারিনাই বলে দুঃখিত। দোষ শুধু দালালের নয়, আমাদের সমাজে যারা বিদেশ বিদেশ করে পাগল তারাও সমান দোষে দোষী। বিএনপি আর আওয়ামীলীগ বড় কথা নয়, যে দোষ করবে সে-ই দোষী। যেদিন আমরা অকপটে সেই সত্যটা স্বীকার করতে পারব সেদিন এই দেশ হবে সোনার বাংলাদেশ।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৩
নানাভাই বলেছেন: আল্লাহ আমাদের জুলুমের হাত থেকে বাচাক।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৬
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: একটা জিনিস লক্ষ করলাম আমরা অনেক চোর বাটপার প্রতারকদের নিয়ে লিখি কিন্তু রহস্যজনক ভাবে এসব আদমব্যাপারীর বাটপারী নিয়ে কোনো কাউকে তেমন লিখতে দেখিনি।
এমনকি দেখা যায় কোনো সরকারই এসব আদমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা না নিয়ে উল্টো মন্ত্রী এমপি গুলা (বিএনপির তৎকালীন এমপি ইন্জ্ঞিঃ মোশাররফ বে ইস্টার্ন ইত্যাদি) এসব বাটপারী ব্যাবসায় সরাসরি জড়িত।
লীগ সরকার পররাস্ট্রমন্ত্রনালয় দিয়া আন্ডা করতে পারলে তারাই সর্বপ্রথম এসব আদম ব্যাপারীর ব্যাবসা লাটে উঠাইছে দেইকা সাধুবাদ। যেখানে নেপালী ভারতী রা মাত্র ৪০-৪৫ হাজারে মালয়েশিয়া যায় সেখানে এসব আদম ব্যাপারী যে আড়াই লাখ টাকা নিলো সেটা নিয়া পোস্টের লেখক সরকারকে গালি দিলেও যে আদম ব্যাপারী এই কুকর্ম করলো তার ছবি স হ কোনো ঠিকানা দিলো না।
আমরা এখন নিজেরাই বুঝি না সামনে যে চুরি হলো এর জন্য আমরা কাকে ধরবো চোরকে না জায়গায় দাড়িয়ে সরকারকে দুষবো?