![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার বিবেক আমাকে যা শিক্ষা দেয় সেটাই প্রকাশ করার চেষ্টা করি
গ্যানটিং পর্বত মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত। এর উচ্চতা ১৭৪০ মিটার বা ৫৭০৮ ফিট। এখানকার তাপমাত্রা দিনের বেলায় ২০ ডিগ্রি সেঃ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেঃ এবং রাতে বেলা ১৫ ডিগ্রি সেঃ থেকে ২০ ডিগ্রি সেঃ। তবে তাপমাত্রা আরো নীচে নেমে আসে যখন মেঘ আপনার চতুরদিকে আচ্ছন্ন করে রাখে। কুয়ালালামপুর কেউ বেড়াতে গেছেন অথচ গ্যানটিং যাননি এমন ব্যক্তির মত হতবাঘা আর কেউ নাই।
কিভাবে যাবেনঃ
কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে নেমেই আপনাকে কেএল সেন্টার যেতে হবে এয়ারপোর্ট বাস সার্ভিসে করে। ভাড়া মাত্র ১০ রিংগিত অর্থাৎ ২৫০ টাকা। তিতিওয়ানশা নামক জায়গা থেকে গ্যানটিং এর বাস ছেড়ে যায়। কেএল সেন্টার থেকে তিতিওয়ানশা যেতে পারেন ট্যক্সিতে বা মেট্রো ট্রেন করে যা মালয়েশিয়ায় এলআরটি নামে পরিচিত। ট্যাক্সি ভাড়া ওখানে ১০/১২ টাকা হলেও আপনাকে হিসাব করতে হবে বাংলা টাকার হিসাবে। আমার সাজেশন মেট্রো ট্রেনে করে যাওয়া। মাত্র ১.৭০ টাকা ভাড়ায় আপনি বাসস্ট্যান্ড পৌঁছে যাবেন নিমিষেই। মালয়েশিয়ায় অনেক ট্রাফিক কারন শহরের ভিতরে রাস্তাঘাট খুবই সরু। গ্যানটিং যাওয়ার ভাড়া বাসে মাত্র ৫.৯০ টাকা। বাসের সীটগুলো খুব সুন্দর ভাবে বসানো, ঠিক যেন গ্যালারী। আপনাকে সামনের বা পাশের দৃশ্য দেখতে মোটেও বেগ পেতে হবে না।
আপনি অবশ্যই খুব সকালে গ্যানটিং যাবার পরিকল্পনা করবেন, বাসের টিকিট হাতে আসার পর দেখবেন আপনার গাড়ীর টাইম এক ঘন্টা পরে। শহুরে কোলাহল পার হবার পরেই শুর পাহাড়ী রাস্তা। দুই পাশে ঘন সবুজ পাম গাছ আপনার চোখের জোতিকে স্থীর করে দিবে। ঘুরানো পেঁচানো রাস্তা আপনার মাথাকে না ঘুরিয়ে ছাড়বে না। রাস্তার ডিজাইন এমনভাবে তৈরী করা হয়েছে যে আপনার মনে হবে গাড়ী শুধু নীচের দিকেই নামছে। অথচ আপনি ক্রমে উপরে উঠে যাচ্ছেন।
কখন যে আপনি ৫,৭০০ ফিট উপরে উঠে গেছেন ঠিকই পাবেন না। উপর থেকে গ্যানটিং এর রস্তা দেখতে সাপের মতো পেঁচানো অসম্ভব ভয়ঙ্কর।
বাসস্ট্যান্ডে রয়েছে বেশ কয়েকটি খাবরের দোকান। বসার জন্য সারি সারি চেয়ার টেবিল। বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হবার কাজটা এখানেই সেরে নিতে পারেন। মালয়েশিয়ায় পাবলিক টয়লেটে ঢুকলে আপনাকে ২ রিংগিত গুনতে হবে অর্থাৎ মূত্র বিসর্জন চার্জ বাংলা টাকায় ৫০ টাকা !! তবে এখানে আপনাকে পয়সা দিতে হবে না।
আপনি যদি একা হন তাহলে গ্যানটিং আপনাকে দেখে হাসবে তাই যথাসম্ভব বন্ধু বান্ধব বা ফ্যামিলি সংগে নিতে ভুল করবেন না। বলা বাহুল্য এ যাত্রায় আমি ছিলাম সম্পূর্ণ একা। ওখানে নেমেই একজন অল্প বয়ষ্ক ছেলেকে দেখলাম একাকী ঘুরছে। প্রথমে একটা ছবি তুলে দেবার জন্য রিকোয়েষ্ট করলাম পরে তার পরিচয় জানতে চাইলাম। খুব সুন্দর ইংরেজী ভাষায় সে জানাল যে সে পাকিস্তান থেকে এসেছে, গ্যানটিংয়ে প্রায় দু বছর। ছেলেটিকে আমার খুব স্মার্ট মনে হল। কথায় কথায় আমাদের ক্ষণিকের বন্ধুত্ব জমে উঠল, আর আমিও চাইছিলাম আমার ক্যামেরার শার্টার টেপার জন্য একজন সংগী অন্তত দরকার। তাছাড়াও সে এখানকার এ টু জেড সবই চেনে। আমার গাইড হিসাবে সে পারফেক্ট।
থাকার জন্য গ্যানটিংয়ে পাঁচটি হোটেল রয়েছে। ১) ফার্ষ্ট ওয়াল্ড ২) গ্যানটিং গ্রান্ড ৩) রিসোর্ট হোটেল ৪) ম্যাক্সিমাস এবং ৫) হোটেল থিম পার্ক। এর মধ্যে সব থেকে বিলাসবহুল এবং বড় হোটেল হচ্ছে "ফার্ষ্ট ওয়াল্ড" যার রুমের সংখ্যাই ৬,১৮৮ টি। এখানে এক রাতের ভাড়া ৫,০০০ রিংগিত অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ১,২৫,০০০ টাকা মাত্র!!
পাঠক ভাই-বোনগণ আমি লেখায় ছবি সংযোগ করতে পারছি না সামুর ট্যাকনিক্যাল সমস্যার কারনে তাই এটাকে আমার দুই ভাগে ভাগ করতে হচ্ছে। আমার সাথে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
------চলবে।
©somewhere in net ltd.