নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমাপ্রেমী । ট্র্যাভেলার । বইপোকা । রন্ধনশিল্পী

আলভী রহমান শোভন

খাই, দাই, ব্লগ লিখি ।

আলভী রহমান শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুতোষ গল্পঃ ভেটো ভূতের কৃতকর্ম

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪


ইদানিং দিনকাল ভাল যাচ্ছে না ভেটো ভূতের। যাবেই বা কেমন করে? যতই দিন যাচ্ছে মানুষের মন থেকে ভূতের ভয়ও কমে যাচ্ছে। বিগত কয়েক মাস যাবত মানুষের খাটের নিচে লুকিয়ে নানা ভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে নানা বয়েসি মানুষকে। কিন্তু তাদের ভয় পাওয়ার কোন নামই নাই। এইতো সেদিন ভেটো আশ্রয় নিয়েছিল ভুঁড়িওয়ালা হোঁৎকা এক ব্যাটার বাসার খাটের নিচে। গভীর রাতে ভুঁড়িওয়ালা যখন নাক ডেকে ঘুমের দেশে আচ্ছন্ন ভেটো তখন খাটের নিচে লুকিয়ে পাটাতনে বাড়ি মেরে শব্দ করার চেষ্টা করে। কোন কাজ হচ্ছেনা দেখে লোকটার কানের কাছে এসে ফুঁ দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস ছেড়ে দিল। এরপর লোকটার ঘুম ভাঙল বটে কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ মেলে আবার হারিয়ে গেল ঘুমের রাজ্যে।
ভেটো ভূত হয়ে মানুষকে ভয় দেখালে কি হবে? মনটা তার খুব নরম। সেই জন্যই তো বাচ্চাদের কখনো ভয় দেখায় না, এমন কি বৃদ্ধদেরও না। যেইসব লোকের আচার ব্যবহার তার পছন্দ না, যাদের কর্ম তার ভাল লাগেনা ভেটো শুধু তাদেরই বাসার খাটের নিচে থাকে আর রাত হলে খাটের নিচ থেকে বের হয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ইদানিং সে ভয় দেখাতে ব্যরথ বলে মন খারাপ থাকে সবসময়। হয়ত তার ভয় দেখানোর থিওরি পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু কিভাবে?
সপ্তাহখানেক পর দিনেরবেলা একটু হাওয়া খাওয়ার জন্য যে বাসার খাটের নিচে আশ্রয় নিয়েছে সেখান থেকে বের হয়ে বাসার সামনের তেঁতুল গাছটায় একটু বসলো। গাছটার নিচেই ছোট্ট একটা চায়ের টঙ দোকান । সারাটা দিন নানা ধরনের মানুষ আসে চা খেতে। চা খেতে খেতে নানা ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা- সমালোচনাও হয়। ভেটো মনোযোগ দিয়ে তাদের কথাগুলো শুনে বোঝার চেষ্টা করে। এইতো যেমন এখন বৃদ্ধ মতন যে দাদুটা লাল চা খেতে খেতে গল্প করছে। অনেক দুঃখ নিয়ে বলছে অন্যদের যে সে একজন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। চাকরি জীবনে অনেক সৎ ছিলেন। নিজের কাজের দায়িত্বটুকু ঠিকঠাক ভাবে পালন করতেন। কখনও কোন রকম দুর্নীতি করেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও অবসর গ্রহনের কয়েক বছর হয়ে গেল তবুও পেনশনের টাকাগুলো আজও হাতে পাননি। অন্যদেরকে শুনিয়ে আক্ষেপ করে বললেন,‘আমার সততার কি এইরকম মূল্যায়ন করা হল?’ পাশ থেকে আরেকজন বলে উঠল,‘কি আর করবেন? দেশ তো রসাতলে গেলো। তবুও দেখেন পান কিনা পেনশনের টাকাগুলো। আর একটা কথা মনে রাখবেন,চোরের দশ দিন গেরস্তের একদিন। আজ না হয় দুর্নীতি করে আপনার পেনশনের টাকা গুলো দিচ্ছে না কিন্তু এরকম আর কত দিন করবে? মাথার উপরে ঈশ্বর আছেন। যে যত বেশি অপকর্ম-দুর্নীতি করে সে সব সময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকে ধরা পরার ভয়ে। দেখেন কি হয়।’
গল্প করতে করতেই দাদুর চা খাওয়া হয়ে গেল। সে আবার ছুটল অফিসের দিকে পেনশনের জন্য। তেঁতুল গাছের উপরে বসে দাদুর কথা শুনছিল ভেটো। খুব মায়া হল দাদুর জন্য। সে চাইল দাদুকে সাহায্য করতে। কিছু করতে পারুক বা না পারুক চেষ্টা করতে তো দোষ নেই। সেও দাদুর পিছু পিছু পেনশনের জন্য অফিসে গেল। কিন্তু প্রতিদিনের মত একই চিত্র আজও। কর্মকর্তাদের গড়িমসি ভাব পুরোটাই। ভেটো প্রধান কর্মকর্তাকে চিনে রাখল। সিদ্ধান্ত নিলো, আজ এই কর্মকর্তার বাসায় থেকে তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। আর দাদুর সাথে চা খেতে বসা লোকটা তো বলেই দিয়েছে, দুর্নীতিবাজ লোকেরা সবসময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকে।
যেই ভাবা সেই কাজ। সেই রাতেই ভেটো বড় কর্মকর্তার বাসার খাটের নিচে আশ্রয় নিলো। রাতে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে লাইটটা অফ করতেই খেটো খাটের নিচ থেকে বের হয়ে কর্মকর্তার কানে কানে ফিস ফিস করে নাকি সুরে বলল, ‘দুর্নীতি,দুর্নীতি...পেনশনের টাকা,পেনশনের টাকা...ধরা খাবি, ধরা খাবি।’ হঠাৎ করে কানের কাছে এমন কথা শুনে চমকে উঠল কর্মকর্তা। লাইট জ্বালিয়ে রুমে খোঁজাখুঁজি করলো কিন্তু কাউকে দেখা গেল না। লাইটটা আবার অফ করতেই আবার সেই একই কথা কানে বাজতে লাগলো। ভয়ে সারা রাত কর্মকর্তা লাইট জ্বালিয়েই ঘুমাল রাতে।
ঠিক তার কয়দিন পর দাদুকে আবার দেখা গেল চায়ের টঙে। হেসে হেসে জানালো যে অবশেষে সে তার পেনশনের টাকাটা পেয়েছে। শুধু সেই নয়, তার সাথে আরও যারা বঞ্চিত ছিল তাদেরও পেনশন দেওয়া হয়েছে।
ভেটো ভূতের এখন রমরমা অবস্থা। সে এখন জানে কিভাবে মানুষকে ভয় দেখাতে হয়। এইতো গতকাল বাংলার এক শিক্ষককে ভয় দেখাল, সে ছাত্রদের ক্লাসে কিছু পড়াত না,প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করতো । আর প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় আণ্ডা দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হতো। রুনি নামের মেয়েটি যার বাংলায় অনেক দখল, ভাষা প্রতিযোগ বা গল্প লেখার প্রতিযোগিতায় যে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে তাকে ফেল করে দেওয়া হয়েছে প্রাইভেট না পড়ার অপরাধে। রুনির মন খারাপ দেখে সেই শিক্ষককে ভয় দেখাল ভেটো। ফলে যা হল, শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান বাদ দিয়ে ক্লাসে সুন্দর ভাবে পড়ানো শুরু করল। টিচারের এমন হটাৎ পরিবর্তনে একটু অবাকই হয়েছিলো রুনি।
আজ আবার এক মায়ের সন্তান আর তার বউকে ভয় দেখাবে। মা বৃদ্ধা বলে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে চায় ছেলে আর ছেলের বউ। কিভাবে ভয় দেখানো যায় তারই পরিকল্পনা করছে খাটের নিচে বসে ভেটো।
ইদানিং দিনকাল ভাল যাচ্ছে না ভেটো ভূতের। যাবেই বা কেমন করে? যতই দিন যাচ্ছে মানুষের মন থেকে ভূতের ভয়ও কমে যাচ্ছে। বিগত কয়েক মাস যাবত মানুষের খাটের নিচে লুকিয়ে নানা ভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে নানা বয়েসি মানুষকে। কিন্তু তাদের ভয় পাওয়ার কোন নামই নাই। এইতো সেদিন ভেটো আশ্রয় নিয়েছিল ভুঁড়িওয়ালা হোঁৎকা এক ব্যাটার বাসার খাটের নিচে। গভীর রাতে ভুঁড়িওয়ালা যখন নাক ডেকে ঘুমের দেশে আচ্ছন্ন ভেটো তখন খাটের নিচে লুকিয়ে পাটাতনে বাড়ি মেরে শব্দ করার চেষ্টা করে। কোন কাজ হচ্ছেনা দেখে লোকটার কানের কাছে এসে ফুঁ দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস ছেড়ে দিল। এরপর লোকটার ঘুম ভাঙল বটে কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ মেলে আবার হারিয়ে গেল ঘুমের রাজ্যে।
ভেটো ভূত হয়ে মানুষকে ভয় দেখালে কি হবে? মনটা তার খুব নরম। সেই জন্যই তো বাচ্চাদের কখনো ভয় দেখায় না, এমন কি বৃদ্ধদেরও না। যেইসব লোকের আচার ব্যবহার তার পছন্দ না, যাদের কর্ম তার ভাল লাগেনা ভেটো শুধু তাদেরই বাসার খাটের নিচে থাকে আর রাত হলে খাটের নিচ থেকে বের হয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ইদানিং সে ভয় দেখাতে ব্যরথ বলে মন খারাপ থাকে সবসময়। হয়ত তার ভয় দেখানোর থিওরি পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু কিভাবে?
সপ্তাহখানেক পর দিনেরবেলা একটু হাওয়া খাওয়ার জন্য যে বাসার খাটের নিচে আশ্রয় নিয়েছে সেখান থেকে বের হয়ে বাসার সামনের তেঁতুল গাছটায় একটু বসলো। গাছটার নিচেই ছোট্ট একটা চায়ের টঙ দোকান । সারাটা দিন নানা ধরনের মানুষ আসে চা খেতে। চা খেতে খেতে নানা ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা- সমালোচনাও হয়। ভেটো মনোযোগ দিয়ে তাদের কথাগুলো শুনে বোঝার চেষ্টা করে। এইতো যেমন এখন বৃদ্ধ মতন যে দাদুটা লাল চা খেতে খেতে গল্প করছে। অনেক দুঃখ নিয়ে বলছে অন্যদের যে সে একজন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। চাকরি জীবনে অনেক সৎ ছিলেন। নিজের কাজের দায়িত্বটুকু ঠিকঠাক ভাবে পালন করতেন। কখনও কোন রকম দুর্নীতি করেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও অবসর গ্রহনের কয়েক বছর হয়ে গেল তবুও পেনশনের টাকাগুলো আজও হাতে পাননি। অন্যদেরকে শুনিয়ে আক্ষেপ করে বললেন,‘আমার সততার কি এইরকম মূল্যায়ন করা হল?’ পাশ থেকে আরেকজন বলে উঠল,‘কি আর করবেন? দেশ তো রসাতলে গেলো। তবুও দেখেন পান কিনা পেনশনের টাকাগুলো। আর একটা কথা মনে রাখবেন,চোরের দশ দিন গেরস্তের একদিন। আজ না হয় দুর্নীতি করে আপনার পেনশনের টাকা গুলো দিচ্ছে না কিন্তু এরকম আর কত দিন করবে? মাথার উপরে ঈশ্বর আছেন। যে যত বেশি অপকর্ম-দুর্নীতি করে সে সব সময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকে ধরা পরার ভয়ে। দেখেন কি হয়।’
গল্প করতে করতেই দাদুর চা খাওয়া হয়ে গেল। সে আবার ছুটল অফিসের দিকে পেনশনের জন্য। তেঁতুল গাছের উপরে বসে দাদুর কথা শুনছিল ভেটো। খুব মায়া হল দাদুর জন্য। সে চাইল দাদুকে সাহায্য করতে। কিছু করতে পারুক বা না পারুক চেষ্টা করতে তো দোষ নেই। সেও দাদুর পিছু পিছু পেনশনের জন্য অফিসে গেল। কিন্তু প্রতিদিনের মত একই চিত্র আজও। কর্মকর্তাদের গড়িমসি ভাব পুরোটাই। ভেটো প্রধান কর্মকর্তাকে চিনে রাখল। সিদ্ধান্ত নিলো, আজ এই কর্মকর্তার বাসায় থেকে তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। আর দাদুর সাথে চা খেতে বসা লোকটা তো বলেই দিয়েছে, দুর্নীতিবাজ লোকেরা সবসময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকে।
যেই ভাবা সেই কাজ। সেই রাতেই ভেটো বড় কর্মকর্তার বাসার খাটের নিচে আশ্রয় নিলো। রাতে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে লাইটটা অফ করতেই খেটো খাটের নিচ থেকে বের হয়ে কর্মকর্তার কানে কানে ফিস ফিস করে নাকি সুরে বলল, ‘দুর্নীতি,দুর্নীতি...পেনশনের টাকা,পেনশনের টাকা...ধরা খাবি, ধরা খাবি।’ হঠাৎ করে কানের কাছে এমন কথা শুনে চমকে উঠল কর্মকর্তা। লাইট জ্বালিয়ে রুমে খোঁজাখুঁজি করলো কিন্তু কাউকে দেখা গেল না। লাইটটা আবার অফ করতেই আবার সেই একই কথা কানে বাজতে লাগলো। ভয়ে সারা রাত কর্মকর্তা লাইট জ্বালিয়েই ঘুমাল রাতে।
ঠিক তার কয়দিন পর দাদুকে আবার দেখা গেল চায়ের টঙে। হেসে হেসে জানালো যে অবশেষে সে তার পেনশনের টাকাটা পেয়েছে। শুধু সেই নয়, তার সাথে আরও যারা বঞ্চিত ছিল তাদেরও পেনশন দেওয়া হয়েছে।
ভেটো ভূতের এখন রমরমা অবস্থা। সে এখন জানে কিভাবে মানুষকে ভয় দেখাতে হয়। এইতো গতকাল বাংলার এক শিক্ষককে ভয় দেখাল, সে ছাত্রদের ক্লাসে কিছু পড়াত না,প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করতো । আর প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় আণ্ডা দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হতো। রুনি নামের মেয়েটি যার বাংলায় অনেক দখল, ভাষা প্রতিযোগ বা গল্প লেখার প্রতিযোগিতায় যে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে তাকে ফেল করে দেওয়া হয়েছে প্রাইভেট না পড়ার অপরাধে। রুনির মন খারাপ দেখে সেই শিক্ষককে ভয় দেখাল ভেটো। ফলে যা হল, শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান বাদ দিয়ে ক্লাসে সুন্দর ভাবে পড়ানো শুরু করল। টিচারের এমন হটাৎ পরিবর্তনে একটু অবাকই হয়েছিলো রুনি।
আজ আবার এক মায়ের সন্তান আর তার বউকে ভয় দেখাবে। মা বৃদ্ধা বলে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে চায় ছেলে আর ছেলের বউ। কিভাবে ভয় দেখানো যায় তারই পরিকল্পনা করছে খাটের নিচে বসে ভেটো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.