নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪ এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করার পর পরই বিতর্কিত হন সেরা চলচ্চিত্র এবং সেরা সংলাপ ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্য পরিচালক মুরাদ পারভেজ। ভারতীয় লেখক সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের লেখা গল্প ‘গাছটি বলেছিল’ থেকে মুরাদ পারভেজ ‘বৃহন্নলা’ ছবিটি নির্মাণ করেছেন। অথচ ছবিতে গল্পকার হিসেবে পরিচালক নিজেকে দাবী করছেন। বলা বাহুল্য পরিচালক তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘চন্দ্রগ্রহন’ও একই লেখকের গল্প থেকে নির্মাণ করেছিলেন। তবে সে সময় লেখকের অনুমতি নিয়েই গল্পটি থেকে ছবিটি নির্মাণ করা হয়, যদিও সেখানেও অভিযোগ ওঠে যে গল্পকার হিসেবে যথাযথ সম্মানী দেওয়া হয়নি সৈয়দ মুস্তফা সিরাজকে। এই ব্যাপারগুলো তো পুরাতন খবর। এখন আসল কথা হচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন গভীর ভাবে বিশ্লেষণ ছাড়া কিভাবে একটা ছবিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করতে পারে?
ব্যাপারটা শুধু এখানেই নয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৩ এর কথা যদি বলি তাহলে দেখা যাবে সেখানে সিংহভাগ পুরস্কারই পায় ইমপ্রেস টেলিফিল্মসের অধিনে নির্মিত ছবিগুলো। যদিও সে বছর অন্যান্য প্রডাকশন হাউজ থেকে নির্মিত বেশ কিছু ছবি ছিল যেগুলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতার দাবী রেখেছিল। কিন্তু কমিটির এবং বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর স্বজনপ্রীতির কারণে ব্যাপারটাই অন্য রকম হয়ে যায়।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আরও কিছু ব্যাপার লক্ষ্য করা গেছে। যেমন, প্রতি বছর সরকারি অনুদান পাওয়া কিছু ছবিকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পুরস্কার গছিয়ে দেওয়া হয়, যদিও ছবিগুলো কোনভাবেই পুরস্কার পাওয়ার দাবী রাখেনা। অনুদান দিয়ে সরকারি কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য পুরস্কারগুলো দেওয়া হয় বোধ করি।
সাম্প্রতিক বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের আরেক খবর হল কাহিনী চুরির দায়ে পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী এবং অনন্য মামুনের উপর চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে পরিচালক অনন্য মামুনের ছবি ‘ব্লাক মেইল’ বলিউডের ছবি ‘গুণ্ডা’র অনুকরণে নির্মিত হয়েছে। আবার ইফতেখার চৌধুরীর ‘অ্যাকশন জেসমিন’ ছবিটিও বলিউডের ‘রাওরি রাঠোর’ ছবির কপি পেস্ট বলে দেখা গেছে। বুঝলাম এই দুই পরিচালকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে কিন্তু তবুও নকলবাজ পরিচালকেরা তো ঠিকই ছবি বানিয়ে চলেছেন। দেবাশিষ বিশ্বাসের কথাই বলি। প্রতিভাবান (!) এই পরিচালকের ‘ভালবাসা জিন্দাবাদ’ ছবিটি তামিল ছবি ‘কুঠু’ যেটা ভারতীয় বাংলায় ‘চ্যালেঞ্জ’ নামের ছবির নকল। কলকাতা না হয় ‘চ্যালেঞ্জ’ ছবিটি নির্মাণের পূর্বে ‘কুঠু’র কাছ থেকে কাহিনীর সত্ত্ব কিনে নিয়েছিল। কিন্তু দেবাশিষ বিশ্বাস কি সত্ত্ব কিনেছিলেন? এই পরিচালকের পূর্বে নির্মিত ছবি ‘শুভ বিবাহ’তেও বলিউডের বিভিন্ন ছবির ছায়া পাওয়া গেছে। কিন্তু নকলের দায় তার উপর পরেনি কখনোই। খুব শীঘ্রই তিনি নতুন ছবি ‘মন জ্বলে’র কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। নতুন এই ছবিটি কোন বলিউডের ছবির নকল সেটা মুক্তির পরই বোঝা যাবে। একের পর এক কাহিনী নকল করে কিভাবে উনি ছবি নির্মাণ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন তা বোধগম্য হয় না। তার ওপর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের বোদ্ধারা কিভাবে ছবির ছাড়পত্র দেন, বোনাস হিসেবে সাথে বাহ বাহও দেন? নাকি এক সময়ের প্রখ্যাত পরিচালক দিলিপ বিশ্বাসের সুপুত্র বলে পার পেয়ে গেলেন তিনি?
এই হল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের চিত্র। স্বজনপ্রীতির ডালা সাজিয়ে বসে আছে তারা। শুধু মুখে চলচ্চিত্রের উন্নয়নের কথা বললেই হবে না, কাজেও দেখাতে হবে। দূর করতে হবে যাবতীয় স্বজনপ্রীতি।
০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
আলভী রহমান শোভন বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৭
মহা সমন্বয় বলেছেন: এই হল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের চিত্র।